নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পাগলা গারদ

ব্যাঙাচী

ভয় লাগে নাকি ভয় করে

ব্যাঙাচী › বিস্তারিত পোস্টঃ

অন্যরকম বাংলাদেশ: খাগড়াছড়ি-২

১২ ই জুন, ২০১৩ ভোর ৪:০৮

Part 2:

রিসাং ঝর্ণা

আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্র থেকে তিন কিলোমিটার পশ্চিমে (খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম সড়ক হতে এক কিমি দূরে) রিসাং ঝরনা। মূল রাস্তা থেকে উত্তরে গেলেই ঝর্ণার কলধ্বণি শুনতে পাবেন। এখানে পাশাপাশি দুটি ঝরনা রয়েছে। পর্যটকদের সুবিধার জন্য একটি ঝরনায় যেতে পাকা সিঁড়ি দিয়ে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। তাই সহজে এই ঝরনায় যাওয়া যায়। প্রথমটি থেকে আরও ২০০ গজ ভেতরে আরও একটি ঝরনা। জেলা শহর থেকে ঝর্ণা স্থলের দুরত্ব সাকুল্যে ১১ কি: মি: প্রায়। নিজস্ব পরিবহন নিয়ে আপনি অনায়াসেই চলে যেতে পারেন একেবারে ঝর্ণার পাদদেশে। সামান্য পায়ে হাঁটা পথ যাত্রার আকর্ষণকে আরো বাড়িয়ে দেবে। উঁচু পাহাড়ের গা ঘেঁষে পায়ে হেঁটে যেতে যেতে যে কারো দৃষ্টি আটকে যাবে পাহাড়ী সবুজ আর জীবনধারায়। হাজার ফুট নীচের উপত্যকায় দৃষ্টি পড়লে কোন অপূর্ব মুগ্ধতায় যে কেউ শিউরে উঠবেন।

খাগড়াছড়ি থেকে সকাল বেলা বাসে বা চাদের গাড়িতে করে রওনা দিন। ঢাকার দিকে ১০ কিলোমিটার এসে আলুটিলার গুহা পার হলেই রিসাং ঝরণা। মূল রাস্তা থেকে ঝরনাটি প্রায় ২ কিলোমিটার ভেতরে। পুরোটাই পায়ে হাঁটাপথ।

প্রাকৃতিক এই ঝরনাটি প্রায় ৩০ মিটার উঁচু থেকে আছড়ে পড়ছে নিচে। পুরোটাই পাথুরে পরিবেশ। পাহাড়ের প্রায় ১০০ ফুট উপর হতে ঝর্নার পানি নিচে পড়ছে। নিচে পড়ার পর তা আবার আরও ১০০ ফুট পাথরের ওপর গড়িয়ে নেমে আসে সমতলে। এটি এর একটি স্বাতন্ত্র রূপ যা আপনার কল্পনাকেও ছাড়িয়ে যাবে।

কবে থেকে এই ঝরনা ধারাটি বয়ে চলেছে তা কেউ বলতে না পারলেও ২০০৩ সালে এটি ভ্রমণপিপাসুদের চোখে পড়ে। তখন থেকেই মানুষ আসছে এখানে। রিসাং ঝরনার জলে নেমে আপনি সাঁতার কাটতে পারবেন, ঝরনার ঝরে পড়া পানিতে প্রাকৃতিক শাওয়ার নিতে পারবেন, এমনকি যারা একটু দুরন্ত প্রকৃতির তাদের জন্য এখানে ওয়াটার রাইডের ব্যবস্থাও রয়েছে। সবই বিনা পয়সায়।

ঝরনার পানিটা যেখান থেকে পড়ছে সেই মাথায় চলে যাবার রাস্তা আছে তাই সেখানে চলে যান, জায়গাটা সমতল বিধায় গোসলের পার্টটা সেখানে সারাই ভালো। ওই জায়গা থেকেই ফেরার জন্য আরেকটা উচু পথ দেখতে পাবেন। ওই পথ ধরেই হাটতে থাকুন দেখবেন এক সময় সেই পরিচিত আসার রাস্তায় আপনি চলে এসেছেন। এবার যে পথে এসেছেন সেই পথেই ফিরে যান হোটেলে।



নুনছড়ি দেবতা পুকুর / ধর্মপুকুর

ত্রিপুরাদের ধারণা, স্থানীয় ব্যক্তিদের আশীর্বাদস্বরূপ দেবতা নিজে এ পুকুর করে দিয়েছেন। তাদের মতে, এ পুকুরে গোসল করলে মনোবাসনা পূরণ হবে। কারো কারো মতে, স্থানীয় বাসিন্দাদের জল তৃঞ্চা নিবারণের জন্য স্বয়ং জল-দেবতা এ পুকুর খনন করেন। পুকুরের পানিকে স্থানীয় লোকজন দেবতার আশীর্বাদ বলে মনে করে। দেবতার অলৌকিকতায় পুকুরটি সৃষ্ট বলে এতো উঁচুতে অবস্থানের পরও পুকুরের জল কখনও শুকোয় না। বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর।

যাই হোক, খাগড়াছড়ি শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে হাজার ফুট (কোথাও আছে ৭০০ ফুট) উচ্চতায় পাহাড়ের ওপর ৫ একর জায়গা জুড়ে এই পুকুরের অবস্থান। প্রতিবছর বৈসুকে এখানে তীর্থ মেলা বসে। খাগড়াছড়ি-মহালছড়ি-রাঙামাটি সড়কের সাত কিলোমিটার গেলে মাইচছড়ি। এই মাইচছড়ি থেকে চার কিলোমিটার পশ্চিমে গেলে নুনছড়ি গ্রাম। এই নুনছড়ি গ্রাম থেকে এক কিলোমিটারের পাহাড়ি পথ বেয়ে পাহাড়ের চূড়ায় উঠলেই দেবতা পুকুর। পাহাড়টির নাম খতা পাহাড়।

সমুদ্র সমতল হতে ১০০০/৭০০ ফুট উচ্চতায় পাহাড়ের চূড়ায় দেবতার পুকুর রূপকথার দেবতার আশীর্বাদের মতো সলিল বারির স্রোতহীন সঞ্চার। বাংলাদেশের আর কোথাও এত উঁচুতে এমন সলিল সঞ্চিত বারির আধার আর নেই। পুকুরের চতুর্দিকে মালভুমি দ্বারা বেষ্টিত বলে পাড়ে দাঁড়িয়ে এর সঠিক উচ্চতা অনুভব করা যায় না। পাঁচ একর আয়তনের এ পুকুরটির স্বচ্ছ জলরাশির মনভোলা প্রশান্তি মুহূর্তের মাঝে পর্যটকদের হৃদয় মন উদাস করে দেয়। পুকুরের চতুর্দিকে ঘন বন, যেন সৌন্দর্যের দেবতা বর নিয়ে দাঁড়িয়ে। প্রতি বছর চৈত্র সংক্রান্তিতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের হাজার হাজার নরনারী পূণ্য লাভের আশায় পুকুর পরিদর্শনে আসে। কিংবদন্তীর দেবতার পুকুরটি ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর কাছে পূজনীয়, খাগড়াছড়িবাসীর কাছে গৌরব এবং পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষনীয় প্রতীক।

যেভাবে যেতে হবে

ঢাকা থেকে প্রথমে যেতে হবে খাগড়াছড়ি। খাগড়াছড়ি হতে মহালছড়ি যাবার পথে মাইসছড়ি। এখানে আলুটিলা হয়ে আরো সামনে এগিয়ে গেলে পিচঢালা পথ শেষে শুরু হবে ইটের রাস্তা। চান্দের গাড়ী নিয়ে সেই পথে আরও কিছুটা এগুলে গাড়ীর রাস্তা শেষ। তারপর পায়ে হেটে যেতে হবে প্রায় ২/৩ কিলো পথ।

কোথায় থাকবেন

রাত যাপন করার জন্য খাগড়াছড়ির প্রধান বাজারে রয়েছে হোটেল মাসুদ। এখানে ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকার মধ্যে রুম রয়েছে। আদালত রোডে চৌধুরী বোর্ডিং, খাগড়াছড়ি বাজারে সম্প্রীতি হোটেল এবং কোর্ট রোডে রয়েছে শিল্পী বোর্ডিং। হোটেল থ্রিস্টার নারায়ণ রোডে অবস্থিত। এছাড়া পর্যটনের মোটেলও রয়েছে।

অন্যরকম বাংলাদেশ: খাগড়াছড়ি

:((

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.