নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এই শহরে অনেক হাজার হাজার ছেলে আছে যারা চুপচাপ থাকে, কথা কম বলে। পৃথিবীতে তারা বোকা, লাজুক, হাঁদারাম নামে পরিচিত। আমাকে এর সাথে তুলনা করলে তেমন একটা ভুল হবে না। নিজের ব্যাপারে বলাটা অনেক কঠিন। তবে নিজেকে মাঝে মাঝে অনিকেত প্রান্তর ভাবি।

জাহিদুল হক শোভন

এই শহরের বোকা ছেলেটি।

জাহিদুল হক শোভন › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প: টি ব্যাগ

১২ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১:৫৩


”এই নিন আপনার চা।
.
আমি দরজা খুলতেই আফ্রিদা আমার নিকট চায়ের মগটা বাড়িয়ে দেয়। আমি একটু অবাক হয়ে বলি “আমার জন্য? আমার কথার উত্তর না দিয়ে সে বলে “জানিনা, দাঁড়িয়ে থাকবো নাকি? কি হলো ধরুন। খাওয়া শেষ হলে জাফর ভাইয়াকে দিয়ে মগ পাঠিয়ে দিবেন।” এইটা বলেই আমার হাতে চায়ের মগটা দিয়ে চলে যায়। আমি অনুধাবন করে কিছুই বুঝলাম না। হঠাৎ আমাকে চা দিল কেন? মাঝে মাঝে এই বিল্ডিং এর সব কিছুর সাথে মানুষ গুলোকেই অদ্ভুত রহস্য মনে হয়। যে রহস্যের মাঝে কত প্রশ্ন লুকিয়ে আছে। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চায়ের মগটার দিকে তাকিয়ে আস্তে আস্তে হেটে রেলিং এর কাছে গিয়ে চারপাশটার দিকে একটু চোখ বুলালাম। কি চমৎকার একটা সকাল। চায়ের মগে চুমুক দিতেই তৃপ্তির একটা সাধ আমাকে শিহরিত করলো। আমি নির্ঘাত বলতে পারি আজকে আমার দিনটা ভালো যাবে। যদিও চায়ের সাথে দিন ভালো কাটার কোন সংমিশ্রন বা যুক্ত নয়। কিন্তু এই চা মনকে সতেজ করার মত। আর মন সতেজ থাকলে দিন এমনিতেই ভালো কাটবে।
.
পাঁচ তলা বিল্ডিং এর ছাদ থেকে এই শহরটা যতদুর দেখা যায় ততদুর নিরব হয়ে আমি হারিয়ে যাই এই শহরের সাথে। দীর্ঘ নিশ্বাস নিয়ে এই শহরের বাতাস নিজের মাঝে সংমিশ্রন করার চেষ্টার ঘাটতি নেই আমার। আমি এই বিল্ডিং এর একদম ছাদে থাকি। সেই সুবাধে যখন ইচ্ছা তখন এই শহরটাকে দেখতে পারি। এই বিল্ডিং এর জমিদার মোশারফ সাহেব। আমি যখন বাসা ভাড়ার জন্য কথা বলতে আসি তখন মোশারফ সাহেব আমার সাথে কথা বলেনি। বাসা ভাড়া সংক্রান্ত যাবতীয় কথা দাড়োয়ান জাফর ভাই এর সাথে হয়েছে। উনি এই বিল্ডিং এর সব কিছু দেখা শোনা করে। আমি উনাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম “মোশারফ সাহেব কি কথা বলতে পারেন না? উনি আমায় বলে “পারে। ভাইজান, যা কথা বলার প্রয়োজন মনে করবেন আমার সাথে বলবেন। উনার সাথে কথা বলার দরকার নাই। আমারে বললে আমি খবর পৌছায় দিমু। মাসের পাঁচ তারিখ হইলে আমি আপনার থেইকা ভাড়া নিয়া আসমু।” তখনি বিষয়টা আমার কেমন যেন মনে হয়। আমি একটু চুপ হয়ে তারপর বলেছিলাম আচ্ছা ভাই ঠিকাছে। বাসা নেওয়ার পর মোশারফ সাহেব বা তার পরিববারের সদস্যদের সাথে আমার কখনো কথা হয়নি। শুধু সিড়ি দিয়ে উঠা নামার সময় কয়েকবার দেখা হওয়াতে সালাম বিনিময় দিয়েছিলাম। একদিন উনার স্ত্রী আমায় জিজ্ঞেস করেছিল “থাকতে অসুবিধা হচ্ছে নাতো? কিছু লাগলে বলিও।” আমি উনার কথার উত্তরে বলেছিলাম “জ্বি না আন্টি কোন অসুবিধা হচ্ছে না। বরং বাসাটা আমার পছন্দ হয়েছে। ঘুম থেকে উঠেই দরজা দিয়ে বের হলে শহরটাকে দেখা যায়।
.
মাস অতিক্রম করে পাঁচ তারিখ আসলেই জাফর ভাই আমার থেকে ভাড়া নিয়ে যায়। মাঝে মাঝে উনি আমাকে বলে “কিছু লাগলে বইলেন, আপনি তো আবার একা থাকেন।” আমি একটা হাসি দিয়ে বলি নিজের কাজ নিজে করা ভালো জাফর ভাই। অন্যের উপর নির্ভর করা ঠিক নয়। একটা সময় এটা অভ্যাসে পরিনত হয়। চা নাস্তা খেতে ইচ্ছে হলে আমাকে নির্ভয়ে বলবেন। জাফর ভাই একটা হাসি দিয়ে চলে যায়।
.
কিভাবে যেন তিন মাস এই বাসাটার সাথে পার করে ফেলি। খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ ধুয়ে চা খাওয়ার বদ অভ্যাস তৈরি হয়েছে আমার। আগে সাদেক ভাই এর সাথে থাকতাম। মূলত উনি ঘুম থেকে উঠে চা বানিয়ে খেত। উনার সাথে থেকে এই অভ্যাসটা আমার ঘাড়ে চেপে বসে। উনার চাকরি বদলি হওয়াতে আমিও বাসাটা বদলিয়ে ফেলি। আর নতুন বাসাটা আমার অফিসের অনেক কাছে। কিন্তু এই সকাল বেলা চা বানানোর ইচ্ছা আমার নেই। তাই বাজার থেকে টি ব্যাগের প্যাকেট কিনে এনেছিলাম। রাতে পানি গরম করে প্লাসে ভরে রাখতাম। সকাল হলে টি ব্যাগ দিয়ে চা বানিয়ে কিছুটা হলেও তৃপ্তি মিটাই। গত মাসের মাঝখানে কখন যে টি ব্যাগ শেষ হয়ে গিয়েছিল বুঝতে পারিনি। ভেবেছিলাম অফিসে গিয়ে খাব, বা রাস্তায় কোন একটা হোটেলে খেয়ে নিব। কিন্তু ঘুম থেকে জাগা একটা মনোভাবে চা খাওয়া আলাদা একটা তৃপ্তি। কিছু ভেবে না পেয়ে কি মনে করে যেন তিন তলায় গিয়ে আমি বাড়িওয়ালার দরজার কলিং বেল চাপলাম। দু বার বাজার পর দরজাটা সামন্য একটু খুলে ওপাশ থেকেই কেউ একজন বললো “কি চাই?” আমি একটু ইতস্তত হয়ে বললাম “না মানে কিছু না। আপনাদের বাসায় টি ব্যাগ আছে? আসলে আমার টি ব্যাগের প্যাকেটে টি ব্যাগ যে শেষ হয়ে গেছে খেয়াল ছিল না। এখন চা খেতে পারছি না।” দরজার ভিতরের ওপাশ থেকে কোন সাড়া শব্দ পেলাম না। তার কিছুক্ষন পর বললো “আমরা তো চাপাতা দিয়ে চা বানিয়ে খাই। টি ব্যাগ নেই।” আমি আচ্ছা ঠিক আছে বলে চলে আসি।
.
জাফর ভাই থেকে শুনেছিলাম মোশারফ সাহেবের দুই মেয়ে। বড় মেয়ে তিয়ানা আর ছোট মেয়ে আফ্রিদা। জাফর ভাইকে যখন বললাম “উনারা এইভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে থাকে কেন? সহজ ভাষায় বললে উনাদের কি কোন প্রবলেম আছে?” উনি আমায় বলে “ভাইজান আপনি যা ভাবতাছেন আসলে তা না। উনারা সবাই মিশুক টাইপের মানুষ। আসলে আমাদের সাব একটু হুজুর টাইপের তো তাই। তবে এটা ঠিক উনারা নিজে গায়ে পরে কথা বলে না। তবে তিয়ানা আপা সবার সাথে কথা বলে। একদম ভোরে উঠে ছাদে যায়। আপনি উনাকে দেখেন নাই? আপনার সাথে কথা হয় নাই?” আমি বলি “কই নাতো।” জাফর ভাই আবার বলে “তাইলে আপনি তখন ঘুমে মগ্ন থাকেন।”
.
এরপর থেকেই আমি খুব ভোরে উঠে বসে থাকি। কেন উঠি জানি না। তবে মনে কৌতুহল জাগতো মোশারফ সাহেবের বড় মেয়েকে দেখার। ঠিক ঠিক একদম ভোরে আমি তিয়ানাকে দেখতে পাই। ছাদে পায়চারি করে। কিন্তু আমার সাহস হয় না উনার সামনে গিয়ে কথা বলার। আমি আমার রুমের জানালার আড়ালে উনাকে দেখি। একদিন দুদিন তিন দিন এভাবে চলতে থাকে। আর এই চলতে থাকাটা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। হঠাৎ আমার মনে হতো চা খাওয়ার মত তিয়ানাকেও প্রতিদিন ভোরে দেখা লাগবে। আচ্ছা এই মেয়েকে দেখার এতো কৌতুহল জাগলো কেন? আর গতকাল উনি আাকাশের দিকে তাকিয়ে হাটতে হাটতে বলে “বাহিরে আসুন।” আমি একটু ভয় পেয়ে যাই। আমি ঠিক বুঝতে পারলাম আমাকে বলেছে। বিষয়টা যে উনি খেয়াল করে ফেলবে আমার ধারনা ছিল না। না শোনার ভান করে চুপ করে বসে ছিলাম। উনি আবার বললো “কি ভয় পাচ্ছেন? আমি বাঘও না ভাল্লুক না যে আপনাকে কামড় দিব। আসেন বলছি।” তারপর আমি স্বাভাবিক হয়ে উনার সামনে গিয়ে মাথা নিচু করে বলি “দুঃখিত। আসলে এই ভাবে আপনাকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখা আমার উচিৎ হয়নি।” তিয়ানা আমার কথা শুনে হাসতে থাকে। তারপর বলে “আকাশটা দেখেছেন কত শান্ত। চারপাশ যেন কেমন নিশ্চুপ। শুধু কাকের কা কা শব্দ। সূর্যটাও যেন আস্তে আস্তে উকি দিচ্ছে। যান্ত্রিক এই শহরে যানবাহনের কোন শব্দ শোনা যাচ্ছে না। পৃথিবীটা যেন এখনো ঘুমিয়ে আছে।” আমি শুধু চুপ করে শুনতে লাগলাম। জাফর ভাই এর কথাটা আসলে মিথ্যা না। কেমন একটা ভয় কাজ করছিল লুকিয়ে লুকিয়ে দেখাতে কিনা কি বলবে। কিন্তু তিয়ানার কথা শুনে মনে হলো আমি কিছুই করিনি। আমার চুপ থাকা দেখে তিয়ানা আবার বলে…
ঘুমে থাকা শহরে উধিত সূর্যের আলোয় দাঁড়িয়ে
কাক ডাকা ভোরে নিশব্দ অনুভূতিতে আমার একান্ত শোক…
.
আমি তিয়ানার মুখে কাব্যিক কথা শুনে একটু অবাক হয়ে বললাম “বাহ আপনি তো চমৎকার করেও কথা বলতে পারেন। ও হাসতে থাকে। আমি শুধু অবাধ্য অবুজ বালকের মত তার দিকে তাকিয়ে থাকলাম। তারপর বললাম “যদি কিছু মনে না করেন। এমন সকালে এই রকম কাব্যিক ভাষার জন্য আপনাকে আমি এককাপ চা খাওয়াতে চাই। আপনি না করতে পারবেন না।” সে বলে “এখন চা কোথায় পাবেন?” আমি একটু অপেক্ষা করতে বলে আমার রুমের ভিতরে চলে গিয়ে চা বানিয়ে তাকে দেই। অবশ্য এই চা বানাতে তেমন সময় লাগেনি। যেহেতু পানি প্লাসে ছিল। আর টি ব্যাগ ছিল। চায়ের জন্য সে আমাকে ধন্যবাদ জানায়। তারপর চায়ে চুমুক দিয়ে বলে “চা টা ভালো হয়েছে। তবে সত্য বলতে কি টি ব্যাগের বানানো চা দিয়ে তৃপ্তি পাচ্ছি না।” আমি চুপ করে রইলাম। তিয়ানা চায়ে চুমুক দিয়ে আবার বললো “আগামীকাল আপনাকে আমি চা খাওয়াবো কেমন? খেয়ে দেখবেন।” আজকে আমি ঘুম থেকে উঠতে পারিনি। উনি গতকাল বলেছে আমাকে চা বানিয়ে খাওয়াবে। আর সেই কারনে উনার ছোট বোন আফ্রিদাকে দিয়ে চা পাঠিয়েছে যা এখন বুঝলাম। আমি এখনো তৃপ্তি নিয়ে চা টা খাচ্ছি।
.
ইদানিং কাজের প্রতি অন্যমনষ্ক হয়ে যাচ্ছি। রাইসুল ভাই একটা ফাইল নিয়ে আামার কাছে এসে বলে “জাহেদ ভাই কি কিছু নিয়ে ভাবছেন? আপনার কি কিছু হয়েছে?” আমি উনার দিকে তাকিয়ে বলি “হঠাৎ এই কথা?” উনি একটু হেসে বলে “না মানে এবার মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টের এ্যাটেড্যান্স শিটটা সাবমিট করেন নি। অন্যগুলা দিয়েছেন।” আমি মাথার চুল চুলকিয়ে বলি “আসলেই কি তাই?” তারপর উনার হাতের ফাইল চেক করে দেখি আসলেই দেওয়া হয়নি। দুঃখিত বলে আমি মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টের এ্যাটেন্ড্যান্স শিট প্রিন্ট দিয়ে বের করে দেই। রাইসুল ভাই বলে “আরেকটা কথা, নতুন যে প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করতে যাচ্ছি ওটার বিস্তারিত আপনার কাছে আছে না?” আমি বলি “হ্যাঁ আছে। কিছুক্ষন পর আমি আপনাকে মেইল করে দিচ্ছি।” আমি অনুধাবন করে বুঝতে পারলাম না, কাজের প্রতি মনভুলা এমনটা তো কখনো হয়নি। কি হচ্ছে কি আমার?
.
নতুন দিনের সূর্যের জন্য আমি অপেক্ষা করতে থাকি। কখন আবার সকাল হবে। উড়ে যাওয়া কাক রা কা কা করে শব্দ করবে। তিয়ানা ছাদে আসবে। আমি উদ্ভেগপূর্ণের সহিত তার দিকে তাকিয়ে থাকবো। আমার মাথায় উদ্ভট চিন্তা কাজ করে। একদিন আমি চায়ের কাপ হবো। কাক ডাকা ভোরে ও যখন চা বানিয়ে চায়ের কাপে চুমুক দিবে তখন আমি শিতল হয়ে যাবো। আমি হাসতে থাকি। কি ভাবছি আমি এইসব? আমার মাথা কি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে? কেন উনাকে নিয়ে ভাবান্তর হই? এইসব ভাবতে ভাবতে আমি ঘুমিয়ে যাই।
.
ঘুম ঘুম চোখ নিয়ে সকালে জেগে দরজা দিয়ে বের হয়ে দেখি ও গাছে পানি ঢালছে। খানিকটা অবাক হলাম। হঠাৎ গাছ আসলো কোথা থেকে। আমি কিছুটা সামনে অগ্রসর হতেই ও আমার দিকে না তাকিয়েই বললো “কি অবাক হচ্ছেন গাছ দেখে?” আমি চুপ করে আরো কিছুটা সামনে গেলাম। ও আবার বললো “গতকাল বিকেলে এনেছি। আপনি সন্ধ্যার নাগাত বাসায় ফিরেছেন তো হয়তো ঠিক মত খেয়াল করেন নি। আমি বললাম “ভালো করেছেন। আমার যখন নিশ্বাসের অভাব হবে তখন দৌড়ে এসে আপনার গাছ থেকে অক্সিজেন নিব।” ও আমার কথা শুনে হাসতে থাকে। আমি একটু ইতস্তত করে বললাম “কি মায়াময় হাসি। তিয়ানা বলে “ কিছু বলেছেন? আমি বলি “না মানে হয়েছে কি আপনি চা চমৎকার বানান। গতকাল আমার সারাটা দিন ভালো কেটেছে।” ও আবার হাসতে লাগলো। কিন্তু কিছু বলে নি। আমিও আর কিছু বললাম না। কয়েক মিনিট দুজনেই চুপ করে রইলাম। ও ওর কাজ করে যাচ্ছে। আমি বললাম “আমি ভিতরে চলে যাচ্ছি।” ও আমার দিকে তাকিয়ে বলে “কেন অস্বস্থি লাগছে?” আমি মাথার চুল চুলকিয়ে বললাম “না তা না। আসলে আপনাকে আড়ালে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতেই ভালো লাগে।” আমার কথা শুনে ও উঠে দাঁড়ায় তারপর বলে “কি বললেন?” আমি কিছুনা বলে চুপ করে থাকি। তারপর সে গাছে পানি ঢালতে ঢালতে বলে “আপনি কি জানেন আপনি একটা নিম শয়তান। যেদিন আমি বুঝতে পেরেছি আপনি আমায় লুকিয়ে লুকিয়ে দেখেন সেদিনই আমি তা আন্দাজ করেছি।” আমি উনাকে বলি “নিম শয়তান মানে কি?” তিয়ানা আমার দিকে কিছু্ক্ষন তাকিয়ে থেকে বলে “যারা চুপচাপ থাকে। মনে হয় কিছু জানে না। কিন্তু ভিতরে ভিতরে বহুদুর তারাই নিম শয়তান। ” ওর কথা শুনে আমি এহেম এহেম করে কাশতে থাকি। তারপর আর কিছু না বলে আমি আমার রুমে চলে আসি। কি একটা লজ্জায় না পড়লাম। নিজেকে কেন যেন খুব ছোট মনে হচ্ছে। মেজাজটাও কেন যেন খিটখিটে বিরাজ করছে। তারপর দরজার সামনে গিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে একটু শব্দ করে বললাম “আমি আর কখনো আপনাকে দেখবো না। লুকিয়ে লুকিয়েও দেখবো না। আপনার সাথে যদি আমার কখনো সামনা সামনি হয় তখনও আমনার দিকে তাকিয়ে কথা বলবো না। এই যে এখন যেভাবে নিচের দিকে তাকিয়ে কথা বলতেছি ঠিক সেভাবে।” এটা বলেই আবার ভিতরে চলে যাই। এর পাঁচ কি দশ মিনিট পর ও দরজায় টোকা দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলে “আরে বাবা আপনার তো দেখি অনেক অভিমান? ছেলেদের বুঝি এতো অভিমান থাকতে হয়?” এটা বলেই ও হাসতে থাকে। আমি ওর দিকে একটু থাকলাম। ও চুল কিছুটা কানে গুজে বলে “যাকে নিয়ে ভাবেন তাকে আড়ালে লুকিয়ে দেখতে নেই।” এটা বলেই ও চলে যায়। আমি অবাক হয়ে চুপ করে রইলাম। কি বলে গেল ও? হঠাৎ এক প্রফুল্লতার আভা আমাকে স্পর্শ করলো। যেন ওর প্রতি আমার কোন অভিমান তৈরি হয়নি। আমি অনুধাবন করে এর সূত্র মিলাতে পারলাম না। ও কিভাবে বুঝলো আমি ওকে নিয়ে ভাবি? এই বাড়ির সব কিছুই রহস্য। ও এই কথাটা দিয়ে কি বুঝাতে চেয়েছে? আচ্ছা ও কি বুঝাতে চেয়েছে আমার টি ব্যাগ দিয়ে চা বানানোর দিন শেষ? আগামী দিন গুলোর জন্য চাপাতা দিয়ে চা বানানোর জন্য তার আগমন হবে? এতো তাড়াতড়ি তো এই পর্যন্ত আসা পসিবল না। না আমাকে একটু ভাবতে হবে…

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:০৫

বিজন রয় বলেছেন: গল্পটা কি শেষ হলো??

১২ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:২৯

জাহিদুল হক শোভন বলেছেন: জ্বি ভাইজান। এখানেই শেষ।

২| ১২ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:৫১

ভুয়া মফিজ বলেছেন: গল্প ভালোই হয়েছে, তবে বানানের দিকে একটু নজর দিয়েন। আপনার বাড়ী কি চট্টগ্রাম?

১৩ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:০০

জাহিদুল হক শোভন বলেছেন: জ্বি ভাইজান চট্টগ্রাম।

৩| ১২ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:০২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



আশা করি আগামী দিনগুলোতে আপনার কাছ থেকে আরো ভাল গল্প পাব।

৪| ১২ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর গল্প।

৫| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:৪৭

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: গল্পের নামটা সুন্দর। গল্পটাও। গল্পের প্রেমটাও। প্রেমের বর্ণনাটাও।
টি ব্যাগের চা আমারও ভাল লাগে না। আপনারও চা পাতার চা খাওয়ার দিন আসুক প্রতিসকালে।

৬| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৫:৪২

খাঁজা বাবা বলেছেন: এত এডভান্স চিন্তা করবেন না
ধরা খাবেন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.