নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাযাবর রাজা রিটার্নস

যাযাবর রাজা রিটার্নস › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার কিছু নাই

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৪১

আমার কিছু নাই
সবাই প্রেম করে।কিন্তু সবাই কি প্রেমকে অবলম্বন করে বাচতে পারে?কারো হাত ফসকে প্রেমিকার হাত সরে গেলে সে বাধ্যতামূলক অন্য কারো হাত ধরে বাচে।আর কেউ প্রেমিকের হাত ছেড়ে দিয়ে নিজেকে অন্যের হাতে সপে দিয়ে বাচে।
যেমন বেচে আছে শিমুল রুবির হাত ধরে রাখতে না পেরে নিয়তির দাস হয়ে অন্যের হাত ধরে।যেমন বেচে আছে রুবি শিমুলের হাত ছেড়ে অন্যের হাতে নিজেকে সপে দিয়ে।দুজনের সাথেই কথা হয় আমার।শিমুলকে পাই অফলাইনে,আর রুবিকে অনলাইনে।অফলাইনের শিমুলের সাথে কথা বলতে গিয়ে এখনও খুজে পাই কিছু দীর্ঘশ্বাস,কিছু হাহাকার।যেগুলো বায়বীয় অথচ খুবই শক্তিশালী। মাঝে মাঝে তা আমার সেলফোনকে বিস্ফোরিত করে দিতে চায়।আমাকে দগ্ধ করে দেয়।ওর ভাষায় এগুলো উপহার,এগুলো পুরষ্কার,যা একান্ত আপনজন ছাড়া কেউ কাউকে দিতে পারে না,দেয় না।
শিমুলের সেই সৈকতে পথ হারিয়ে ফেলা এখনো আমার স্মৃতিতে জীবন্ত। সেবার ছিলো আমাদের শিক্ষাজীবনের শেষ শিক্ষা সফর।দুইজন শিক্ষকসহ আমরা মোট আঠেরোজন একটি বাসে চেপে পৌছেছিলাম কক্সবাজার। বিকেল বেলা হোটেলকক্ষে বসে দু'বছর আগে কক্সবাজারে সংগঠিত আমাদের পূর্বের শিক্ষাসফরের স্মৃতিচারণা করছিলাম আমরা পাঁচজন।সেই স্মৃতিগুলো ছিলো শিমুলের মাখা মাখা প্রেমের কৌটো।আর যখন স্মৃতিচারণ করছিলাম তখন শিমুল প্রেমিকার হাত ধরে রাখতে অক্ষম এক ব্যার্থ প্রেমিক।স্মৃতিগুলো তখন তাকেএতটাই আবেগী করে তুলেছিলো যে সে ফোন দিয়ে কথা বলতে লাগলো তার প্রাক্তন প্রেমিকা ও এখন কারো পতিব্রতা সুখী স্ত্রী সেই রুবির সাথে।
কক্সবাজার এসেছি বিচে যাবো না,ভিজবো না তা কি হয়?আমরা কি আনসারী নাকি?আনসারী আমাদের এক বন্ধু,যে এর আগে আমাদের সাথে সাতদিন কক্সবাজার থেকেও সমুদ্রের জলে স্নানতো দূরের কথা পাও ভেজায় নি।সবাই হোটেল ছেড়ে বের হলাম সমুদ্র সংগমের নিমিত্তে সমুদ্রের উদ্দেশ্যে।আমরা যাচ্ছি হাসছি গাইছি হাটছি। শিমুল তখন আমাদের থেকে কিছুটা পিছনে ছিলো,কেননা ও তখনো রুবির সাথে কথা বলছিলো।আমরা ভাবলাম আসুক ও ওর মতো,আমরা এগোই।
সমুদ্রে ভিজছি,সৈকতে দৌড়াদৌড়ি করছি,ছবি তুলছি শিমুলকে রেখেই।ও তখন আমাদের আশেপাশে নেই। ভেজা টেজা শেষে যখন হোটেলে ফিরবো তখন শিমুলকে খুজে পেলাম না।সৈকতের জনঅরন্যে যতটুকু খোজা যায় খুজলাম।ওদিকে ওকে ফোন করাও যাচ্ছিলো না।ভিজবো বলে আমরা সবাই যারা যার মুঠো ফোন হোটেলে রেখে এসেছিলাম।একটি মুঠোফোন সাথে নিয়েছিলাম যেটা ওর কানে ছিলো।ওকে খুজে টুজে শেষমেশ 'দুধের শিশুতো আর না, ঠিকই হোটেলে ফিরে আসবে' ভেবে আমরা সিগারেট টানতে টানতে হোটেলে ফিরে এলাম।তার কিছুক্ষন পর শিমুল এলো।তার নিখোজ হওয়ার কারণ জানতে চাইলে সে যা শোনালো তা হলো,সে মেয়েটির সাথে কথা বলতেবলতে সে আমাদের ভুলে নিরুদ্দেশে হাটা শুরু করেছিলো সৈকতের শরীর বেয়ে।ওর যখন হুশ হলো তখন সে অচেনায় রাস্তায়,চারপাশে অন্ধকার।অনেক কষ্টে হোটেলে এসে পৌছেছে।তার জবাব দেয়ার ভাষা আমার ছিলো না।আমি ওর হাতে জ্বলন্ত একটি সিগারেট তুলে দিলাম।কেননা সিগারেট কাউকে ছেড়ে যায় না।সে পোড়ায় তবু বিশ্বাসঘাতকতা করে না।ও নিজেও পোড়ে।আমি জানি শিমুলের ক্ষত সিগারেট মুছে দিতে না পারলেও ছেড়ে যাবে না কখনো স্বার্থপর প্রেমিকার মতো।যেমন আমাদের কাউকে ছাড়েনি,ওকেও না।
এবার আসি রুবির কথায়।রুবি এখন পুরোদস্তর সংসারী।স্বামীর সাথে দিব্যি আছে সুখী সংসারের চাদরে নিজেকে মুড়িয়ে।
শিমুলও সংসারী হয়েছে কারো হাত ধরে।কোথাও চাকুরীতে নিজেকে নিয়োজিত করে ভবিষ্যতের স্বপ্ন বুনতে ব্যাস্ত সে এখন।শিমুল যার হাত ধরেছে, আমি জানি সে শিমুলকে খুবই ভালবাসে।ভালবেসে ভুলিয়ে দিতে চায় শিমুলের পূর্ববর্তী জীবনের কষ্টগুলো,বেদনাগুলো।শিমুল তার ভালবাসায় কষ্টগুলো ভুলতে ভুলতে হঠাৎ করেই যেন বলে ওঠে
আগুনে পোড়ালে তবু কিছু রাখে
কিছু থাকে।
হোক না তা শ্যামল রং ছাই
মানুষ পোড়ালে কিছুই রাখে না
কিচ্ছু থাকে না।
খা খা বিরান,আমার কিছু নাই।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.