নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাযাবর রাজা রিটার্নস

যাযাবর রাজা রিটার্নস › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি ও বকধার্মিক।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:২২

আজকাল রাষ্ট্রের ও সমাজের ঘাড়ে সিন্দাবাদের ভূত হয়ে,জগদ্দল পাথরের মত একটি বিষয়টি চেপে আছে। এই চেপে থাকা বিষয়টির নাম হলো ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি।এই বাড়বাড়িটি বাড়তে বাড়তে বর্তমানে বাড়াবাড়ি রকমের বেড়ে গেছে ও যাচ্ছে।কোনো ক্রমেই তা কমছেনা।এই বাড়াবাড়ি ফলও আমরা ইতমধ্যে পরিপক্বভাবেই পাচ্ছি।এখন অনেকের প্রশ্ন ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করে কে?কেন করে?এ বিষয়ে আমার মতামত নিম্নরুপঃ
মূলত ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়িটা ধার্মিকরাই করে,অন্য কেউ করতে আসেনা। তবে এই ধার্মিকরা সাধারন ধার্মিক নয়।এরা একটি বিশেষ গোত্রের ধার্মিক এবং এই ধার্মিকদের নামের আগে আমাদের সবার অতিসুপরিচিত একটি পাখির নাম যুক্ত আছে,যে পাখিটির ঠোট লম্বা হয় ও রং সাদা হয়। যে পাখিটি জলে এক পায়ে দাড়িয়ে ধূর্ততার সাথে মাছ শিকারের অপেক্ষায় থাকে ।যে পাখিটির নাম আমি আমরা এবং তাহারা সবাই জানে।পাখিটির নাম বক। আর এই বক শব্দটিই ঐ ধার্মিকদের নামের আগে সুন্দর, সুশৃংখলভাবে যুক্ত।রাষ্ট্রে এবং সমাজে এরা অতি সম্মানিত এবং এদের দ্বারা ইতরবিশেষ থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপ্রধান পর্যন্ত প্রভাবিত।ঠিক একারণেই এদের বাড়াবাড়িটা ফলপ্রসু হয়ে থাকে।
এই বকযুক্ত ধার্মিকরা কথায় কথায় ধর্মের দোহাই দিয়ে থাকে।এরা নিজেদের মহান আল্লাহ তাআলার সাচ্চা বান্দা ও নবী (সাঃ) এর অকৃত্রিম উম্মত বলে দাবীদ্বার ও জাহির(এরা জাহিরীতেই বিশ্বাসী,বাতেনীতে নয়) কারক।এদের অন্তরে যতটা না আল্লাহ'র নাম বিরাজ করে তার চেয়ে বেশী বিরাজ করে এদের মুখে।এরা মূলত ধর্মকে নিজেদের স্বার্থস্বিদ্ধির সবল হাতিয়ার হিসেবে ব্যাবহার কারী।এরা ধর্মকে নিজেদের স্বার্থেদ্ধারের রসদ হিসেবে ব্যাবহার কারী।এরা যতটা না নিজেদের ধর্মের জন্য ব্যাবহার করে থাকে, তার চেয়ে বেশী এরা ধর্মকে সুপরিকল্পিতভাবে নিজেদের জন্য ব্যাবহার করে থাকে। শাপলা চত্ত্বরের সহিংসতার পানে লক্ষ করলেই আমরা তা জলের মতো পরিষ্কার ও মধুর মতো গাড়োভাবে বুঝতে পারবো।
এদের ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়িতে(জংগীবাদ,সাম্প্রদায়িক দাঙা,উস্কানিমূলক বক্তব্য) অতিষ্ট হয়ে বিভিন্ন শ্রেনীর মনে একটি ধারনা বলবৎভাবে বদ্ধমূল হয়ে আছে। আর তা হলো ধর্ম মানুষকে নষ্ট করেছে।আসলে তাদের এই ধারনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। সত্যটা হলো,'মানুষই ধর্মকে নষ্ট করেছে, ধর্ম মানুষকে নয়।।আর এই মানুষগুলোই হচ্ছে এই বকযুক্ত ধার্মিকগুলো।
এই বকধার্মিকদের আচরণ নিয়ে একটি গল্প বলি।আমার এক ছোটভাই আছে যে চরমভাবে মৌলবাদী এবং স্বাধীনতাযুদ্ধের বিরোধিতাকারী মৌলবাদী দলটির অন্ধভক্ত।সে হেফাজতে ইসলামের শাপলা চত্তরে সহিংসতার প্রতি সবলভাবে পক্ষপাতী,গনজাগরনের প্রতি ছিলো তীব্র বিরোধিতাকারী,যুদ্ধাপরাধীদের প্রতি চরম মাত্রায় সহানূভুতিশীল এবং তাদের ফাসীতে সে মাত্রাতিরিক্ত মর্মাহত হয়ে জাকারবার্গের তৈরী বিশাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিনা পয়সায় খোলা তার ব্যাক্তিগত এ্যাকাউন্টে বসে বসে দিবস নিশি কান্নাকাটিতে রত থাকতো,রাজাকারের বিচারের দাবীদার সমস্ত বাঙালীদের নাস্তিক ও কাফের আখ্যায়িত করে অভিসম্পাত করতো এবং তাদের সবাইকে সে জাহান্নামের টিকেট প্রদানে ব্যাস্ত থাকতো।আর এই কারনে তার সাথে আমার বন্ধুত্বপূর্ন কিউট সম্পর্কটির ইতি টানি।তাকে আমার ভার্চুয়াল ফ্রেন্ডলিস্ট থেকেও ছেটে ফেলি।
তারপর বহুদিন গত হয়েছে। বহু জায়গার জল বহু জায়গায় গড়িয়েছে। তার সাথে কথা নেই,তার খোজও রাখা হয়নি। গত পরশু রাতে আমি স্টুডিওতে বসে আছি।হঠাৎ মেসেন্জার টুং করে জানান দিলো কেউ বার্তা পাঠিয়েছে।আমি যথারীতি বার্তা দর্শনের নিমিত্তে মেসেন্জারে প্রবেশ করে আবিষ্কার করলাম ঐ ছোটভাইটি বার্তা পাঠিয়েছে।দীর্ঘদিন পরে তার বার্তা পাওয়া স্বত্তেও আমি বিরক্তিবোধ করছিলাম।কেননা আমি ভাবছিলাম সে নিশ্চয়ই স্বভাবসুলভ ভংগীতে মৌলবাদী গোত্রের কোনো বার্তা আমার উদ্দেশ্যে প্রেরন করেছে।বিরক্তিবোধ করা স্বত্তেও তার বার্তার প্রতি মনোনিবেশ করলাম।তার বার্তাটি পড়েআমার বিশ্বাস হচ্ছিলোনা বার্তাটি তার।একজন আপাদমস্তক মৌলবাদী ছেলে যে এভাবে লেবাসধারী ধার্মিকদের প্রতি প্রখর বিষেদাগার ঢালতে পারে তা জানতে আমি নিতান্তই অপ্রস্তুত ছিলাম।ভুল পড়েছি ভেবে বারংবার পড়ে অবশেষে আবিষ্কার করলাম আমি যাহা পড়িয়াছি সত্য পড়িয়াছি, সত্য বই মিথ্যা পড়ি নাই এবং প্রথমবার যা পড়েছিলাম বারবার তাই পড়ছি।যাই হোক তার এহেন মনোভাবের কারন উদঘাটনের নিমিত্তে আমি তাকে ফোন দিলাম।ফোন মাররফত আমি জানতে পারলাম, তা নিম্নবর্নিতঃ
এ বছর তার পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য মনোস্থির করেছিলো তারা পবিত্র হজ্বব্রত পালনের উদ্দেশ্যে মক্কা গমন করবে।আর তাই উক্ত কার্যসাধনের বন্দোবস্তো সম্পন্ন করতে যোগাযোগ করেছিলো তাদের গ্রামের একজন সবার পরিচিত ও শ্রদ্ধেয় হুজুরের সাথে। যিনি গ্রামবাসীর নিকট আলেম পরিচয়ে অত্যন্ত পরিচিত এবং সম্মানীয় ব্যাক্তি।গ্রামের সবাই জ্ঞাত ছিলো ঐ আলেম ব্যাক্তিটি হজ্বে লোক পাঠানোর বন্দোবস্তের সাথে কোনো না কোনোভাবে জড়িত।অতএব সে ও তার পরিবারের সদস্যরা এ ব্যাপারে তার সাথে যোগাযোগ করে এবং তার হাতে নয় লাখ টাকার একটি চেক তুলে দেয়এবং নিশ্চিন্ত মনে (হুজুর লোক বলে অতিমাত্রায় নিশ্চিত হয়ে) হজ্ব যাত্রার মানসিক প্রস্তুতি নিতে নিতে অপেক্ষা করতে থাকে।এভাবে অপেক্ষা করতে করতে হ্জ্ব চলে যায়, কোরবানীর ঈদ চলে যায়,কিন্তু তাদের আর হজ্ব পালনের উদ্দেশ্যে মরুর দেশটিতে যাওয়া হয়না।কেননা চেক প্রদানের পর থেকে সেই আলেম ব্যাক্তিটির কোনো খোজ নেই।তাদের অপেক্ষার বাধ ভেঙে যায় কিন্তু সেই শ্রদ্ধেয় মওলানার টিকিটি পর্যন্ত তাদের হজ্ব নিতে আসেনা।তাদের অপেক্ষাও আর শেষ হয়না।অবশেষে তারা জানতে পারে সেই আলেম ব্যাক্তিটি,সেই মওলানা ব্যাক্তিটি লাপাত্তা।খোজ নিয়ে তারা আরও জানতে পারে যে আলেম ব্যাক্তিটি শুধু তাদের টাকা নিয়েই লাপাত্তা হয়নি,আরো হজ্বযাত্রায় ইচ্ছুক বহু লোকের টাকা নিয়ে সে লাপাত্তা হয়েছে এবং তার আত্মসাৎকৃত টাকার পরিমান নাকি কোটি অধিক।অতঃপর উক্ত ঘটনায় একজন আলেম লোকের এহেন ব্যাবহারে এলাকা তোলপাড়,জনসাধারন নির্বাক অবাক হতবাক। তাদের চোখে বিষ্ময়,মুখে বিষ্ময়,মনে বিষ্ময়।টাকা খোয়ানোদের মাঝে এক ব্যাক্তি ছিলেন যিনি নাকি মোটামুটি প্রভাবশালী এবং সচিবালয়,মন্ত্রনালয়ও তার জানাশোনা।উক্ত ব্যাক্তিটি ঐ আলেমকে দেখে নেবে টাইপের হুমকি ধামকি উপহার দিলে আলেমটি হুমকি ধামকিওয়ালা লোকটিকে একটি দুই লাখ টাকার চেক উপহার দেয়।লোকটি এতে কিছুটা শান্ত হয়ে চেক ভাঙাতে ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারে চেকটি ভূয়া।
বুঝুন তাহলে অবস্থা।ঘটনাটির এখনও কোনো সূরাহা হয়নি।ঐ প্রতারক ব্যাক্তিটি এখনও পলাতক।
আর এই ঘটনায় আমার ঐ ভুক্তভূগী ছোট ভাইয়ের লেবাসধারী ধার্মিকদের প্রতি মনোভাব আমূলে পরিবর্তন হয়েছে।সে এখন বিশ্বাস করে সব ধার্মিকই ধার্মিক না বকধার্মিকও বটে।
লেবাসধারী ধার্মিক গোষ্ঠীর একটি বিশাল অংশ মূলত বকধার্মিক এবং সমাজে এদেরই আস্ফালন বেশী।এরা বিভিন্নভাবে সমাজ ও রাষ্ট্রকে ধোয়া দিয়ে নিজেরা লাভবান হচ্ছে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৩০

ফারদীন নিশ্চিন্ত বলেছেন: ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি নির্বুদ্ধিতা

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৩৫

যাযাবর রাজা রিটার্নস বলেছেন: হুম

২| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৫৯

কানিজ রিনা বলেছেন: খুব ভাল বলেছেন, একজন অসৎ পাঞ্জেগানা
নামাজী থেকে একজন সৎলোক উত্তম।
কত কত চোর ব্যবসায়ী ঘুসখোর সুদ খোর
দূর্নীতিবাজ গাড়ি বাড়ি ওয়ালারা জীবন শেষে
এসে নিজের অন্যায় ঢাকতে মসজিদে তজবী
হাতে যাতায়াত। এমন কি হজ্জ পালন করে
ভাবে সব পাপ ক্ষমা হয়ে গেছে। কত কত
রাস্তার পীর ঘর বানায়ইয়া ধর্ম ভাঙায়ইয়া
মানুষকে ধোকা দেয়। যাদের জন্য আসল
পীরদের বদনাম।
আপনি যে লোকের এক্সাম্পল দিলেন সে
রকম হাজার হাজার ধার্মীক আছে তারা
লেবাচ পড়া ধার্মীক। সাধারনত ধর্ম নিয়ে
মানুষের দুর্বলতা থাকবেই। ধন্যবাদ।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:১৫

যাযাবর রাজা রিটার্নস বলেছেন: দারুন বলেছেন আপনি।আপনাকেও ধন্যবাদ।

৩| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:১৮

আবু তালেব শেখ বলেছেন: আলেমটি হুমকি ধামকিওয়ালা লোকটিকে একটি দুই লাখ টাকার চেক উপহার দেয়।লোকটি এতে কিছুটা শান্ত হয়ে চেক ভাঙাতে ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারে চেকটি ভূয়া।
/// এটা কেমন হলো চেকটা কিভাবে পেলো? চেক প্রদানন করলো কিভাবে?
তখন তো পাকড়াও করা যেত বক দাদারে।
তবে সবাই কিন্তু বক শ্রেনির নয়।
একটু মেধা ব্যবহার করলে বোঝা যাবে কোন বক আর কোন শালিক।
হুজুর দেখলেই যে সবকিছু সপে দিতে হবে এরকম কোন হাদিস নেই।
আসলে তারাই প্রকৃত বোকা যারা এতোগুলো টাকা ঐ বাটপারকে দিছে।
হজ এজেন্সি মনে হয় বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

৪| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:১৭

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আমিও বিশ্বাস করে একজন ধর্মপ্রাণ(আলেম নয়,তবে অনেক ধার্মিক) ব্যক্তিকে অনেক টাকা দিয়েছিলাম ব্যবসায়িক পার্টনার হিসেবে। কিন্তু ব্যবসা বন্ধ হওয়ার পরও ফেরত পাচ্ছি না অনেক দিন হলো...
বাংলাদেশে এখন ধার্মিক লোকরাও প্রতারণা শুরু করেছে।
ফেসবুকে একজনের লেখায় এসেছিল বন্দরের কাস্টম অফিসের মসজিদের অভিজ্ঞতা। যেখানে অনেক মুসুল্লি অথচ একটু আগেই এদের মধ্যে অনেক লোক ঘুষ দেয়া ছাড়া কাজ করেনি...
এভাবে ওয়াসা, বি আর টি এ, পুলিশ, তিতাস সব জায়গায় দেখবেন। বিশ্ব ইজতেমার ভীড় দেখলে মনে হয় কতই না সৎ মানুষের দেশ বাংলাদেশ...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.