নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হেয়ালি

জসীম উদ্দিন রাসেল

জসীম উদ্দিন রাসেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভিকি ডোনার (Vicky Doner): নিঃসন্তান দম্পতিদের মুখে হাসি ফোটানো চেষ্টা

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫৬

বিয়ের পরে মেয়েরা মা ডাক শুনার জন্য ব্যাকুল থাকেন। তারা মনে করেন, মা হতে না পারলে মেয়েদের জীবনে পূর্ণতা আসে না। কিন্তু বিভিন্ন কারনে একজন মেয়ে মা নাও হতে পারেন। এর ফলে তার জীবনে নেমে আসে এক গভীর কালো ছায়া। জীবন হয়ে উঠে বিবর্ণ।

কিন্তু একটা সময় পর্যন্ত মেয়েদের মা না হওয়ার পেছনে শুধু তাদেরই অপবাদ দেওয়া হতো। আর এজন্য পুরুষদের একাদিক বিয়ের প্রবণতাও ছিলো। পরে ডাক্তারি পরীক্ষায় জানা যায় স্বামী বা স্ত্রী যে কারো কারনে সন্তান ধারণ করার ক্ষমতা নাও থাকতে পারে। তাই আগে সমাজে শুধু মেয়েদেরকে যে অপবাদ দেওয়া হতো তার এখন নিরসন হয়েছে।

আগে যারা দীর্ঘ দিন ধরে সন্তান ধারণ করতে পারতেন না তারা বিভিন্ন ধরনের কবিরাজি চিকিৎসা করাতেন। কিন্তু বর্তমানে আধুনিক চিকিত্সা পদ্ধতি উদ্ভাবনের ফলে অনেকেই সন্তানের মা-বাবা হতে পারছেন। ইনফার্টিলিটির কারনে যে দম্পতি সন্তানের মা-বাবা হতে পারছেন না সেক্ষেত্রে একজন পুরুষের স্পার্ম ডোনেশন হিসেবে নেওয়া হয়। সেই স্পার্ম বৈজ্ঞানিকভাবে প্রতিস্থাপন কর হয়। এর ফলে যারা মা-বাবা হওয়ার আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছিলেন তারা আবার নতুন করে মা-বাবা হওয়ার আশা করতে পারছেন।

এই থিমের উপর ইনডিয়াতে ২০১২ সালে সুজিত সরকার একটি মুভি নির্মাণ করেন যার নাম ছিলো ভিকি ডোনার। মুভিটির গল্পের মিল আছে কানাডিয়ান-ফ্রেঞ্চ মুভি স্টারবাক-এর সাথে। ডা. বলদেব চাড্ডা একটি ইনফার্টিলিটি ক্লিনিকের মালিক। কিন্তু তার বর্তমান সাকসেস রেট ভালো না। তাই সে একজন নতুন স্পার্ম ডোনার খুজছে। যে হবে তার মতে ইনডিয়ার অ্যালেকজান্ডার। একদিন সে সফল হয়। পেয়ে যায় ভিকি-কে। সে বেকার। পারিবারিক আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো না। তার মা একটি বিউটি পার্লার চালায়। বাবা নেই। তার মা তাকে তার চাচার সাথে কাজ করতে বলে। কিন্তু সে চায় ভালো একটি চাকরি। সেই চাকরি তার আর হচ্ছে না।

প্রথমে চাড্ডার অফার পেয়ে প্রচন্ড রেগে যায় ভিকি। কারন এই ধরনের কাজ এই উপ-মহাদেশে সহজভাবে কেউ দেখে না। আর এটার কোনো সামাজিক স্বীকৃতিও নেই। তাই সে প্রথমে শুনেই না করে দেয়। কিন্তু ডা. চাড্ডাও ছাড়ার পাত্র নয়। ভিকির পিছনে লেগে থাকে। এক সময় সফল হয় ডা. চাড্ডা। ভিকি রাজি হয় স্পার্ম দিতে। এবং এর ফলে ডা. চাড্ডার ক্লিনিকের অবস্থা আবার ঘুরে যায়। প্রতিটি দম্পতির বেলায়ই সফল হয় ভিকির স্পার্ম।
এদিকে ভিকির হাতে নগদ অর্থ আসতে থাকে। তার বাড়ির আর্থিক অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন হতে থাকে। একদিন ভিকি ব্যাংকে টাকা জমা রাখার জন্য গেলে সেখানে এক ব্যাংকার বাঙালী মেয়ে অসীমার সাথে দেখা হয়। তার ভালো লাগে অসীমাকে। অসীমার আগে একবার বিয়ে হয়েছিলো তা জেনেও ভিকি রাজি হয় অসীমাকে বিয়ে করার জন্য।

তাদের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরে ভিকির ব্যাপারে জানতে পারে অসীমা। অসীমা চলে যায় ভিকিকে ছেড়ে। এদিকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায় ভিকিকে তার রাতারাতি টাকার উত্স জানার জন্য। ডা. চাড্ডা জানতে পেরে জেল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে ভিকিকে। আর এদিকে ডা. চাড্ডার ক্লিনিকের ২৫-তম বার্ষিকী উত্জাপনে ভিকিকে বলা হয় যে করেই হোক অসীমাকে যেন রাজি করিয়ে নিয়ে আসে তার ক্লিনিকে। ভিকি অনেক অনুরোধ করার পর অসীমা আসতে রাজি হয়। আর আসীমা যে মা হতে পারবে না এটাও জেনে যায় সে। ২৫-তম বার্ষিকীতে এসে অসীমার চোখে আনন্দে পানি চলে আসে। সে জানতে পারে সেখানে ৫৩টি পরিবার এসেছে যারা মা-বাবা হয়েছে ভিকির ডোনেট করা স্পার্ম থেকে। প্রতিটি পরিবারের আনন্দ দেখে অসীমার ধারনা বদলে যায়। এবং সেখানে ডা. চাড্ডার কাছ থেকে তারা জানতে পারে ভিকিরই দেওয়া স্পার্মে একটি ফ্যামিলি মা-বাবা হয়েছিলো তারা একটি কার এক্সিডেন্টে মারা গেছে। শুধু বেচে আছে তাদের সন্তান। তখন ভিকি এবং অসীমা পিতামাতা হারানো সেই সন্তান-টিকে তাদের সাথে নিয়ে যায়।

মুভিটি দেখার পর অনেকেরই কুসংস্কার কমবে। মুভিটিতে পাঞ্জাবী এবং বাঙালী দুইটি ভিন্ন কালচারের সমন্বয় হওয়াতে দুইটি কালচার ভিন্নতা সম্পর্কে জানা যাবে। জন আব্রাহাম মুভিটি প্রডিউস করেন। খুবই অল্প বাজেটের অর্থাৎ ৫০ মিলিয়ন রুপির মুভি ভিকি ডোনার। কিন্তু বক্স অফিসে মুভিটি হিট করে। এখন পর্যন্ত সর্বমোট ৬৪৫ মিলিয়ন রুপি আয় করে মুভিটি।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:২৬

কলমের কালি শেষ বলেছেন: ভাল রিভিও ।

২| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৯

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: রিভিউের জন্য ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.