নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গল্প ছাড়া আর কিছু না

বলতে চাই না। লিখতে চাই।

রাগিব নিযাম

আমি সাদাসিধে, সাধারণ টাইপের মানুষের দলে। তবে রাজনৈতিক অপরিপক্ক্বতা আমার অপছন্দ।

রাগিব নিযাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

এজেন্ট রিশাদ- ব্লাডশট ডেডস্পট [বড়ো গল্প]

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:১০

বিশাল ফ্যাকরা না বাজলে শুধু শুধু ডিজিএফআই এনএসআই ডিবি নামে না মাঠে। ঘটনার শুরু একেবারে একটা মামুলী ডকুমেন্ট যেটা পরে অত্যন্ত দামী হয়ে ওঠে আমেরিকা, চীন, রাশিয়া, ভারতের কাছে। ঘটনাটা মোড় নেয় আন্তর্জাতিক ট্রাইবুন্যালে যখন বঙ্গোপসাগরের সীমানা নির্ধারণ করা হয়। হুঁশ করে জানানো হয় ব্রিটিশ আমলে ভারত ভাগের সময় বাংলাদেশ অঞ্চলের বঙ্গোপসাগরের রেঞ্জ কতটুকু তার ম্যাপটাই লোকপ্রসাশন কর্তৃপক্ষের কাছেই আছে। এতে মিয়ানমার ও ভারত ওই দূর্লভ ম্যাপটি উদ্ধার করে লুকিয়ে ফেলতে উদ্যোগ নেয়। যদি এটা লুকাতে পারে তাহলে বাংলাদেশ তার ন্যায্য অধিকার পাবেনা। সেটা টের পেয়ে ডিজিএফআই সব গোয়েন্দা সংস্থাকে তলব করা শুরু করেছে।





শরৎ এর মনোরম বিকেল। ক্যাম্প বেজে সবার সাথে হালকা আড্ডায় মেতে উঠেছে রিশাদ। জীবনের ২৭টা বছর কেটে গেছে কিন্তু পরিপূর্ণতা পাচ্ছে না। সে এমন জীবন আশা করেনি। চেয়েছিল অ্যাডভেঞ্চারপূর্ণ একটা জীবন, প্রতি ক্ষণে ক্ষণে বিপদ, রোমাঞ্চকর মূহুর্ত। মা বাবার চাপে সেনাবাহিনীতে এসে ভর্তি হয়েছিল। এরপর ৭বছর পেরিয়ে গেছে। কর্ণেল পদে বহাল থেকে জীবনটাকে আর উপভোগ করতে পারছে না।





"ক্যাপ্টেন রিশাদ" কেউ একজন ডাকলো পেছন থেকে।

"ইয়েস, কে আপনি?" পেছন ফিরে তাকালো।

"ডিজিআইএফ এজেন্ট মেজর তালহা" মধ্য গড়নে সুঠামদেহী একজন এগিয়ে এসে ব্যাজ দেখালো।



"বলুন" রিশাদ বললো।

"ইমার্জেন্সি কলআউট ফ্রম হেডকোয়ার্টার" তালহা বললেন "ইয়ু হ্যাভ অ্যান ইমিডিয়েট অর্ডার টু কাম উইদ মি" (চলবে)



ডিজিএফআই হেডকোয়ার্টার, ঢাকা।



ইলশে গুঁড়ি বৃষ্টি। কার্ণিশ ক্ষণ ক্ষণ পর ধুয়ে যাচ্ছে, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তা দেখছে ক্যাপ্টেন রিশাদ। পাশে চেয়ারে বসে পেপার পড়ছেন মেজর তালহা।



ক্যাঁচ করে দরজাটা খুলে গেলো। দাঁড়িয়ে পড়লেন তালহা। স্যালুট দিলেন দরজা খুলে আসা আগন্তুককে। রিশাদও দিলো।



"ইয়াংমেন প্লীজ হ্যাভ আ সীট" আগন্তুকের গম গম গলায়... "আই অ্যাম কর্নেল তানভীর, ডিরেক্টর, গভর্ণিং বডি, ডিজিএফআই।"



"স্যার দিস ইজ রিশাদ" তালহা।

"রিশাদ, ইউ উইল নাও ওয়ার্ক ফর ডিজিএফআই" তানভীর বললেন। "তোমার পোর্টফোলিও দেখা হয়েছে। ইয়ু ওয়্যার কোয়ালিফাইড ইন কমব্যাট ফর্ম এক্সাম টেকেন লাস্ট ইয়ার।"



রিশাদঃ স্যার আমার কাজ কি হবে?

তানভীরঃ এখনো পর্যন্ত তোমার কোনো রিপোর্ট ফাইল আসেনি। বাট সুন উই উইল অ্যাপয়েন্ট ইয়ু ইন অ্যা মিশন। এখন তুমি তোমার কেবিনে যেতে পারো। তালহা ওকে ওর নতুন কেবিনে নিয়ে যাও।

তালহাঃ ইয়েস স্যার।



প্রশস্ত চিত্তে সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ডিরেক্টরের রুম থেকে বেরিয়ে এলো রিশাদ। লাইফ অফ অ্যা স্পাই বিগিনস। এখান থেকেই ক্যারিয়ার শুরু এক চতুর তীক্ষবুদ্ধি সম্পন্ন দেশপ্রেমিক এজেন্ট এর। (চলবে)

টিঁটিঁটিঁটিঁটিঁটিঁটিঁ...

হঠাৎ দাঁড়িয়ে গেলো রিশাদ। কি ব্যাপার এমন সাইরেনের শব্দ কেনো? দরজা খুলে দেখলো অফিসার সব দৌড়াচ্ছে।



সেও কেবিন ছেড়ে দৌড় দিলো সিধা সামনের দিকে। এমন সময় ধাম করে ধাক্কা খেলো পেছন থেকে। মেয়েলি কন্ঠে ভেসে এলো, "ওয়াচ ইওর স্টেপ অফিসার"। গোটা জীবনে এমন সুললিত কঠোর কন্ঠ শোনেনি আগে। "স্যরি ম্যাম" রিশাদ বললো।

"ইটস ওকে, অ্যাম নট ইওর বস। আই অ্যাম জুনিয়র অ্যান্ড লেস দ্যান ইওর রেংকিং। অ্যানিওয়ে অ্যাম আরমিন।"

"অ্যান্ড অ্যাম..."

"রিশাদ :)" আরমিন বললো।

"হাউ ডু ইউ নো দ্যাট। হিয়ারড অ্যাবাউট মি বিফোর?" রিশাদ।

"আই হ্যাভ জয়েনড টুডে। মাই ডিউটি ইজ টু বি অ্যাসোসিয়েটেড উইথ ইওর ওয়ার্ক।" আরমিন বললো।

"ও আই সি। সবাই কই যায়? এমন দৌড় দিচ্ছে কেনো?" রিশাদ বললো।

"ফার্স্ট ফিল্ড ওয়ার্ক।" আরমিন বললো। "কিপিং প্র্যাকটিসিং ফর দ্য লং ওয়ে টু বি এ পারফেক্ট এজেন্ট, পারফেক্ট স্পাই।"

"হোয়াট! প্র্যাকটিস রীতিমতো যুদ্ধের মতো?!" রিশাদ বললো।

"এক্সাক্টলি, প্রত্যেককে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে। প্রতিপক্ষ থাকবে। কাজ করতে হবে ধীরে সুস্থে।" আরমিন বললো।



ডিরেক্টর তানভীরের রুম। পঞ্চাশ বছরের দীর্ঘদেহী বয়স্ক মানুষটির চেয়ারের উল্টোদিকে বসে আছে মেজর তালহা। কয়েকটা কেস হাতে এসেছে। বোঝা যাচ্ছে না কোনটা দেবে রিশাদকে। এদের প্রত্যেকটাই কনফিডেনশিয়াল। খুব সুক্ষভাবে শেষ করতে হবে প্রতিটা মিশন। একটু ভুল হলে হয়ে যেতে পারে বিশাল বিপর্যয়। তাই রিশাদকে একলা না পাঠিয়ে পাঠানো উচিত টিম ম্যানেজমেন্ট আকারে। চারজনের একটা টিম থাকবে। তবে এই গুরুত্বপূর্ণ চার মিশনের ভেতর রিশাদের জন্য একটা বাছাই করার আগে একটা ছোট্ট পাইলট মিশনে পাঠানো উচিত। চারজনের ভেতর রিশাদ ও আরমিন দুজন সিলেক্টেড। বাকী দুজন?



"স্যার" তালহা বললেন।

"ইয়েস। হোয়াট ইজ ইওর চয়েস রাইট নাউ?" তানভীরের গম গম গলা।

"বিফোর আই অ্যাপয়েন্ট দেম, আই নিড টু সেন্ড দেম ইন আ পাইলট মিশন।" মেজর তালহা।

"ওয়েল দ্যাট ইজ আ গুড ডিসিশন। লেট'স রোল" তানভীর বললেন। (চলবে)



"লিসেন আপ এভ্রিওয়ান"

প্র্যাকটিস ফিল্ডে কমান্ড অফিসার মেগাফোনে, "চারজন করে পাঁচটি টিম। তোমাদের টাস্ক- আজ থেকে আগামী সাতদিন পর্যন্ত। এই ডিউ টাইমে খাগড়াছড়িতে আমাদের বেস স্টেশনে যেতে হবে। থিং ইজ টু ডু আফটার ইউ রিচ খাগড়াছড়ি। আমাদের আরেক কমান্ড অফিসার সেখানে আছেন। তিনিই জানেন কি করতে হবে। যে টিম আগে সেখানে কমান্ড মেনে ছোট্ট একটা মিশন জিতবে তাদেরই একটা গুরুত্বপূর্ণ মিশনে পাঠানো হবে।"





"হোয়্যার আর আওয়ার অ্যানাদার টু মেম্বার, আমরিন?" রিশাদ।

"ওহ স্যার, আসিফ আর সাদিয়া? তারা কি যে করে। সবসময় লেট। কাপল কিনা :D" আমরিন।

"হুম, এখন কি করবো। এরা না আসলে তো কিছুই শুরু করা যাবেনা।" রিশাদ।

"এইতো চলে এসেছে..." আমরিন বলতে না বলতেই দেখা গেলো একজন দীর্ঘদেহী রোদে পোড়া সুঠাম দেহের যুবককে, তার সাথে পেটানো শক্ত শরীরের একজন তরুণীকে।



"রিপোর্টিং আসিফ অ্যান্ড সাদিয়া" আসিফ বললো।



"গো কুইক ফর ব্যাক প্যাক গাইজ" রিশাদ বললো "সময় থাকতে খাগড়াছড়ি পৌঁছাতে হবে।"। (চলবে)



"ট্রেন ছাড়তে আর বেশিক্ষণ নাই। সবার সবকিছু নেয়া হয়েছে তো? আমার সব ক্লিন অ্যান্ড ক্লিয়ার।" রিশাদ বললো।



"জ্বি স্যার, আমার সব কিছু ঠিক আছে। বাকীদের সবকিছু ঠিক আছে আশা করছি।" আরমিন বললো।



নরসিংদী পেরিয়ে প্রায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনের কাছাকাছি চলে এসেছে ট্রেন। দুপুর গড়াতে বাকী। এমন সময় ঝাঁকি দিয়ে ট্রেন থেমে গেলো। অজায়গায় ট্রেন থেমে বেমক্কা বাড়ি খেলো চারজনে। আরমিনের খোলা চুল হুমড়ি খেয়ে পড়লো রিশাদের মুখের উপর। একটা মিষ্টি ঘ্রাণ নাকে লাগলো রিশাদের। আরমিন মুখের উপর চুল সামলে নিয়ে লজ্জা রাঙা চেহারায় মাথা নিচু করে নিলো।



রিশাদও মুখটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিলো। এই প্রথম মায়ের পর কারো চুল ওকে ছুঁয়ে গেছে। বয়েজ স্কুল ও কলেজ লাজুক ছেলে হিসেবে মেয়েদের অ্যাভয়েড করে গেছে। আরমিনের এ ব্যাপারটায় একটা আলাদা অনুভূতি এসে গেছে।



"বি কেয়ারফুল। স্মল ফায়ার আর্মসের আওয়াজ শুনলাম" আসিফ বলে উঠলো।



"হোয়াট?! ডাকাত পড়লো নাকি?" সাদিয়া বলে উঠলো। (চলবে)



"ইজ দ্যাট এমফোর কারবাইন?" রিশাদ বললো।

"শীট! আই বেট সামথিং ভেরি ব্যাড উইল হ্যাপেনিং"। আসিফের মুখে চোখে উত্তেজনা।



"গার্লস? সেফটি গান আছে ব্যাগে? লেটস নট বি নার্ভাস। যা বলি তা করো। ফিল দিজ অ্যাজ এ ব্যাটেলগ্রাউন্ড। টেক কভার"। রিশাদ বলে চলেছে "আমি আর আসিফ ক্রল পজিশনে দরজা খুলে বের হবো। দরজার দুই পাশে তোমরা থাকবে।"



"সার্টেনলি।" সাদিয়ার দিকে তাকালো আরমিন। অজানা আশংকা উত্তেজনায় মুখ লাল হয়ে গেছে মেয়ের।



মিনি ফোরটিন হালকা পিস্তল বহনের অনুমতি আছে। অথবা .২২ ক্যালিবারও ব্যবহার করা যায়। রিলোড করার জন্য দুই ম্যাগাজিনের বেশি বহন করা যায় না।



এই ভর দুপুরে রোদ অসম্ভব তেতে উঠে। রেললাইনের দুই ধারের স্লিপারের ভেতর থেকে হলকা বেরিয়ে ধুঁ-ধু করে ওঠে। হিসেব কষতে কষতে আসিফ রিশাদ মুখোমুখি তাকায়। কি করতে হবে বোঝা হয়ে গেছে। খড়খড় করে দরজাটা খুলে দিলো আরমিন। পাঁচ সেকেন্ড সময় নিলো রিশাদ। এরপর আঙুল দিয়ে আসিফকে ইশারা করে ক্রল করা শুরু করলো।



ওয়ার্ণিং সিগন্যাল হিসেবে যদি একই সাথে ৮টা গুলি ছোঁড়া হয় তাহলে আটজন অস্ত্রধারী ধরা যায়। কিন্তু এক সেকেন্ড পরে আরো দুটি গুলির আওয়াজ শোনা গিয়েছিলো।



সর্বোচ্চ সতর্কতা নিয়ে ইঞ্চি গুনে সামনে এগোতে হবে। মৃত্যুর ফরমান জারি হয়ে গেছে। (চলবে)



ট্রেন থেমেছে এমন জায়গায় যেখানে পাশাপাশি দুজন কখনোই হাঁটতে পারবে না। ক্রল করারও সুযোগ নাই। তাই আসিফকে দুই বগির মাঝখানে দাঁড়াতে বলে রিশাদ একটু স্থির হলো।



গোটা ট্রেন যেনো মৃত্যুপুরী। বেশির থেকে বেশি যে কোন মানুষ কি একটা শিশুও বুঝতে পারে যে ট্রেনে ডাকাত পড়েছে এই গুলির শব্দে। তাই এতটা নিস্তব্ধ চারপাশ। খুব সম্ভব ইঞ্জিন মাস্টারকে ওরা পাকড়াও করেছে।



আরমিন তাকিয়ে রয়েছে সাদিয়ার দিকে। নতুন রিক্রুটেড এজেন্ট হিসেবে মেয়েটাকে আনাড়ি লাগছে।



"লিসেন গার্ল" আরমিনের কন্ঠে আদেশের সুর "একটু শক্ত হতে হয়। ইউ আর এ সোলজার। প্র্যাকটিস ফিল্ড আর প্র্যাকটিকাল ফিল্ডে আকাশ পাতাল তফাৎ। আনআইডেন্টিফাইড মিশন ধরতে পারো এটা। দেশপ্রেমের প্রমাণ এখনই দিতে হবে।"



"ইয়েস ম্যাম।" সাদিয়ার গোমড়া মুখ।



এতোকিছু বলে আরমিন নিজেই থতমত খেলো। কারণ এটা তারও প্রথম প্র্যাকটিকাল ফিল্ড মিশন। ভেতর ভেতর প্রচন্ড নার্ভাস ফিল করছে সে নিজেই।



ইঞ্জিন বগি থেকে আওয়াজ আসছে হই হই করে। ডাকাতরা কি তাহলে ট্রেন নিজেদের দখলে নিয়ে ফেললো? (চলবে)



একেবারে ফেলে না দিলেও প্ল্যানটা মাঠে মারা যাচ্ছে না। রিশাদ সব কিছু না হলেও অন্তত নব্বই শতাংশ বুঝতে পারছে কি করা উচিত। প্ল্যানটা তাই প্রেডিকশান ও ক্যালকুলেশনকে ঘিরেই।



আধা কিলো লম্বা সেই রেলগাড়িটার ইঞ্জিন বগিতে ডাকাত সর্দার কামরুল পান খেয়ে বসে আছে ভাব ধরে। পাশে দুই সাগরেদ লিটু ও টিটু। এদের ডান বাম ও বলা চলে।



"এই মোট যাত্রী কতো রে?" কামরুলের গলার বাঘের গম্ভীরতা বনের ভয়াবহতাকেও হার মানায়।



"উস্তাদ আধ হাজার তো অইবোই।" লিটু বললো।

"আর ট্রেনের গার্ড?" কামরুল।

"অইবো সাত আট জন উস্তাদ" এবার টিটু।

"ট্রেন থামাইচি ভালা কথা অহন শালার সব বগির দরজা বন কইরা থুইচে।" কামরুলের গলায় ক্ষোভ।



পাশে ইঞ্জিন মাস্টার এর হাত পা বাঁধা। চোখ বড়ো বড়ো করে তাকিয়ে আছে বিশালদেহী ডাকাত সর্দারের দিকে। এরা কি করবে সেটাই সে বুঝে উঠতে পারছে না।



"অই কাইল্লারে পাডাইছোত? গোটা টেরেন চক্কর দিতে ক।" (চলবে)



"ইউ গট দিজ?" রিশাদের ফিসফিস।

"কোনটা?" উৎসুক চোখে তন্ময়।

"ট্রেনের উপর দিয়ে দৌড়ে আসছে কেউ" রিশাদ বললো।

"সান অফ আ বুল। অ্যাম রেডি স্যার" আসিফ বললো।



ট্রেনের উপর দিয়ে হেঁটে মাঝপথে এসে থেমে গেলো কালু ডাকাত। খানিকটা অবিশ্বাস চোখে মুখে। ট্রেনে ডাকাত পড়েছে ভেবে কি কেউ বের হতেও সাহস পাচ্ছেনা?



এই বলতে না বলতে যখনই অন্য বগিতে পা দিতে যাবে হেঁচকা টান খেয়ে নিচে হুড়মুড় করে পড়লো কালু। গদাম করে উপুর্যপুরি লাথি এসে পড়লো চোখে মুখে। এরপরই সে জ্ঞান হারালো।



"ছিইইইস"... এক গাদা পানি এসে পড়লো মুখে। দুজন বিশালদেহী সুঠাম শরীরের মানুষ কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।



"আরেক জগ মারবো?" আসিফ বললো।

"না থাক। এই যথেষ্ট" রিশাদ বললো। আড়চোখে তাকিয়ে আছে কালু। এরা কি পুলিশ না ডিবি? কিন্তু শরীর দেখে তো মনে হচ্ছে। ছাঁটা চুল। বড় কোন গোয়েন্দা সংস্থার লোক।



"কতোজন তোরা?" ভ্রুঁ কুঞ্চিত চেহারা রিশাদের।

"আমনে কেডা" কালুর জিজ্ঞেস "আপনারে ঠিক চিনলাম না।"

"লাথি আরো কয়টা দিবো?" আসিফের ক্রুদ্ধ কন্ঠ "যেইটা জিজ্ঞেস করছে ঐটার উত্তর দে!"

"আসিফ" রিশাদ বলছে "থাক কিছু করার দরকার নাই।"



"আমি এজেন্ট রিশাদ। ডিজিএফআইয়ের লোক। ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি যাচ্ছি। মাঝপথে তোমরা ট্রেন দখল করেছো।" (চলবে)



"আফনেরা এরাম বাইন্দা রাখছেন ক্যান ছার?" কালু বললো।

"বলদ কোথাকার কেনো বেঁধে রেখেছি তাও বলতে হবে?" আসিফ বলে উঠলো।

"দেখো আমাদের কিছু ইনফরমেশন দিতে হবে।" রিশাদ বলছে "কেনো বেঁধে রাখছি কারণ তোমরা কেনই বা এমন করে ট্রেন দখল করলে?"

"এইডা তো কৈবার পারুম না।" কালুর গটগট উত্তর "উস্তাদে কইলো ট্রেন দখল হইবো তাই আমি এইদিক দিয়া চেক করতে আইছিলাম"।

"তোমরা দশজন না?" রিশাদের প্রশ্ন।

"আপনে কেমতে জানলেন?" হাঁ হয়ে গেলো কালুর মুখ "আরও দশ জন আইবো উস্তাদ কইছে।"

"উস্তাদের নাম কি রে?" আসিফ প্রশ্ন করলো।

"কামরুল" কালু বললো।



বেশ অনেকক্ষণ হয়ে গেছে কালুকে পাঠানো হয়েছে কালুকে এখনও আসছে না। লিটু টিটু মুখ কাঁচুমাঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।



"তগোরে কইছি হুদায় লগে আরেকজনরে দিতে? বলদডা এতোক্ষণ লাগায় ক্যারে? আমি কইছি টাইম নষ্ট না করার লিগা। এহন আধাঘন্টা পার হয়া গেলো আইবার নাম গন্ধ নাই। যাহ আরেকডারে পাডা।"



হুট করে নতুন দশজন আসা মানে নতুন করে প্ল্যান করা কিভাবে ধরাশায়ী করা। একজন এজেন্ট নিমিষেই দশজনকে ধরাশায়ী করতে পারে না। খুব আস্তে আস্তে সামনে এগোতে হয়।



"আসিফ, বগির ভেতর গিয়ে কাছের কোন ক্যাম্পের সাহায্য চাও। অবস্থা সুবিধার মনে হচ্ছে না।"





"কি হলো?" আরমিন বললো।

"আরে এখন ডাকাত বিশ জন হয়ে গেছে" আসিফ বললো।

"আমার তো কিছুই ভালো লাগছে না। রিশাদ ভাই কই?" সাদিয়া বললো।

"এইতো একটাকে পাকড়াও করে আমাকে পাঠালো বেজ ক্যাম্পে খবর দিতে" আসিফ বললো।

"বেজ ক্যাম্প দিয়ে কি হবে?" আরমিন বললো।

"আরে আরো দু তিনজন থাকলে এদের ধরতে সুবিধা হবে।" আসিফ বললো।



যোগাযোগ করেই আসিফ ফিরে এলো আগের জায়গায়। রিশাদকে দেখলো না। কালুকে বাঁধা অবস্থায় পেলো।

"স্যার কই গেলো?" আসিফ বললো।

"সামনের দিকেই তো গেলো" কালু বললো।



তিন নম্বর বগির উপর দাঁড়িয়ে আছে একজন। পাঁচ নম্বর বগির নিচ থেকে তাকে দেখে নিলো রিশাদ। আস্তে আস্তে এগিয়ে আসছে এদিকে। একেবারে কাছে আসতেই...



"দড়াম" রিশাদের কিক খেয়ে ছিটকে পড়লো দুই বগির মাঝখানে।

"আল্লাহরে" বলে কঁকিয়ে উঠলো লোকটা।

"বাকীরা কই?" রিশাদ বললো।

"হেরা ইঞ্জিন বগির ভিত্রে আছে" লোকটা বললো।

"তোরা কয়জন আছোস?" রিশাদ বললো।

"কয়জন মানি? আমরা তিনজন।" লোকটা বলে উঠলো।

"তুই ডাকাতের দলে না?" রিশাদের চোখে বিস্ময়।

"কি কন আমরা তো রেলের লোক। আমি ইঞ্জিন মাষ্টারের অ্যাসিস্ট্যান্ট।"



রিশাদ প্ল্যান বুঝে ফেলেছে। ডাকাত সর্দার নিজেদের লোক না পাঠিয়ে রেলের লোক পাঠাচ্ছে। হিতে বিপরীত হতে যাবে না তো?



আরমিন একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে জানালার বাইরে। দুপুরের উত্তপ্ত ভাব এসে ঝাপটা মারছে। কখনো সখনো কোকিলের ডাক শোনা যায়। ইচ্ছে হলো মোবাইলটা বের করে গুগল ম্যাপে খুঁজতে তারা কোথায় আছে। হ্যাঁ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আগেই আছে। মোবাইল লক করে উঠলো। সাদিয়াকে বললো পাহারায় থাকতে। নীচে নামলো।



"ট্রেন থেকে নামলে কেনো? এখন এতো রোদের ভেতর আসার কি দরকার?" রিশাদ বলে উঠলো।

"আসলে বসে থাকলে বোর লাগে কিনা তাই। প্ল্যানে কোন অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে?" আরমিন বললো।

"নাহ। এরা এখন রেলের লোকদের ব্যাবহার করছে।" রিশাদ বলছে "এখন একটু এক্সট্রিম কিছু করা দরকার।"

"যেমন?" আরমিন বললো।

"দেখতে থাকো।" রিশাদের দৃঢ়চেতা কন্ঠ।



"ঐ তগোরে কইছি গোটা ট্রেন ঘুইরা নিতে এহনও কিছু করতাছোস না ক্যান? বুঝছি আমারেই কিছু করন লাগবো। খাড়া।" ডাকাত সর্দার কামরুল বলে উঠলো।



ঘটনার আপেক্ষিকতায় হিসেব নিকেশ খুব জটিল হয়ে উঠতে পারে। এখন পর্যন্ত কেউ এদিকে আসছে না। রিশাদকে অ্যামবুশ করতে হলে এখনই করতে হবে। কিন্তু আসলেই কি সেটা সম্ভব?



“চাইইইইইইইইইই” বহুদুরে কোথাও গুলির শব্দ হচ্ছে।

আসিফ রিশাদের দিকে তাকালো।

-হচ্ছে টা কি?

-বুঝতে পারছি না। কিছু একটা গন্ডগোল লেগেছে নিশ্চিত।

-সামনে গিয়ে দেখবো নাকি স্যার?

-আগে আরমিন আর সাদিয়াকে ডাকো এখানে।



আরমিন আর সাদিয়া নিচে নেমে এসেছে। জামা কাপড় পালটে টাইট অপারেশন স্যুট পড়েছে। যেনো মিশনের জন্য তৈরি।



“আরমিন, সাদিয়াকে নিয়ে এই কালু ডাকাতকে পাহারা দাও। আর এই রেল ক্লার্কের দেখাশোনা করো। আমরা সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছি।“ রিশাদ বললো।

“ওকে স্যার’। আরমিন বললো।





কিছু একটা তো হয়েছে। না হলে কেনো গুলির শব্দ হবে? হয় বেজ ষ্টেশন থেকে সাহায্য এসেছে না হয় রেল পুলিশ এসে বাগড়া দিয়েছে ডাকাতদের ব্যাপারে। কিন্তু এতো তাড়াতাড়ি তো বেজ থেকে সাহায্য আসার কথা না।



কামরুল সর্দারের মাথা প্রচন্ড খারাপ হলে আকাশে ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এটা তার অভ্যাস না। সবসময় তো আর মেজাজ ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখা যায় না। বগির বাইরে পা রেখেই গুলি করলো। ব্যস অমনি গোটা ট্রেনে শোরগোল। বয়স্করা গুঞ্জন শুরু করে দিয়েছে। বাচ্চারা জুড়ে দিয়েছে কান্না। তারেক সাহেবের পাঁচ বছরের ছেলে তো ভ্যা ভ্যা করে কেঁদেই দিলো। মা তো তার কোনো মতোই কান্না থামাতে পারছে না। এদিকে রিশাদ উঠেই দেখে এই বগি হট্টগোল।



“সবাই একটু শুনুন”। রিশাদ বলে চলেছে জোর গলায় “ডাকাত পড়েছে ট্রেনে এটা এতো বিশাল কিছু না। আমরা চারজন সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা অফিসার আছি সাহায্য করতে...”



“ভ্যাঅ্যাঅ্যাঅ্যাঅ্যা”



ভালো মুশকিলে পড়া গেলো। এখন বাচ্চা গুলো কে থামাতে না পারলে বগি গুলোকে কন্ট্রোল করা দুঃসাধ্য ব্যাপার। বুদ্ধি একটা মাথায় এসেছে রিশাদের। এখন কি করতে হবে তা জলদিই করে ফেললে ভালো হয়।





"এই পিচ্চি শোনো" রিশাদের কন্ঠে গাম্ভীর্যতা।

"ভ্যাঁঅ্যাঅ্যাঅ্যা" পিচ্চির কান্না বেড়েই চলেছে।

"শোনো শোনো।" রিশাদ বলেই চলেছে "একটা গেইম খেলবে?"



পিচ্চি কান্না থামিয়ে তাকালো রিশাদের দিকে। দুপুর শেষ হওয়ার পথে। রোদ এসে কান্নায় প্রতিফলিত হচ্ছে। যেন বৃষ্টি শেষ পানির ওপর সূর্যের ঝিকিমিকি।



"কি গেইম?" পিচ্চি বলে উঠলো।

"গেইমটা হলো এখানে দাঁড়িয়ে, ঠিক এখানে দাঁড়িয়ে বলটা আমি যেখানে মারতে বলবো সেখানে মারবে। ওকে?" রিশাদ বললো।

"কি বলছেন আপনি? পিচ্চি একটা বাচ্চাকে বল ছুঁড়তে বলছেন যেখানে কিনা ডাকাত পড়ছে। এটা কি সম্ভব?" পাশ থেকে একজন চিৎকার করে উঠলো।



বগিতে গুঞ্জন উঠলো। দুতিনজন হইহই করে উঠলো।



"থামুন। শান্ত হোন" বলে চলেছে রিশাদ "ও বগি থেকে বল ছুঁড়ে মারবে আমি যেখানে গিয়ে দাঁড়িয়ে ইশারা করবো।"



জানে বিপদ ঘটতে পারে। তাই টেকনিক খাটিয়ে পিচ্চিকে ঠান্ডা করে কাজে লাগালো। এখন শুধু সামনে প্ল্যান আগানোর কাজ।



যদিও প্ল্যানিং এ পিচ্চি ছিলো না, রিশাদ একটু শঙ্কায় পড়ে একে নিতে বাধ্য করেছে। অদ্ভুতুড়ে একটা পরিস্থিতি যেখানে রেল কর্মীকে ব্যাবহার করে কামরুল সর্দার স্পাইং করতে চাইছিলো সেটা কি ধরণের একটা নিচু মন মানসিকতার পরিচয় হতে পারে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাও আসিফের মতো একজন দক্ষ সহযোগী এজেন্ট থাকাতে প্ল্যান বি সি করতে হচ্ছে না।



সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে দিলো আরমিন। এই অধঃস্তন অফিসারগুলোর এক বিব্রতকর অবস্থা। কোথাও লাইভ ভায়োলেন্স হচ্ছে তো সোজা গর্তে লুকানোর পাঁয়তারা করে। আজও যে এমন হবে না, তা না। রিশাদ আর আসিফ মিলে যদি একটু কষ্ট করে তাহলে হয়তো তাদের অতদূর আগাতে হবে না।



"ঐ ইঞ্জিন মাস্টারের মুখ খুইলা দে।" ডাকাত কামরুল সর্দারের গম গম গলা।

"পানিইইইইই! পানি খামু" ইঞ্জিন মাস্টার বলে উঠলো।

-ঐ এই বলদেরে বোতলটা আগায় দে তো। টেরেনের কিছুই করবার পারলাম না। অহন সইন্ধ্যা ঘনায়ে আইতাছে। তগোর আর কিছু করা লাগতো না। বইয়া বইয়া ডিম পাড়।

-উস্তাদ কি কন এডি! আমি বাইর অমু একটু পরে। লিটু জানালো।

-হ হ দেখন যাইবো। ডাকাত কামরুল বলো।

-ভাই আমি তো কিছু করি নাই। আমারে ছাইড়া দেন। ইঞ্জিন মাস্টার আকুতি করে উঠলো।

-হ তরে জন্মের ছাড়ান দিমু। ইট্টু খাড়া।



"এই পিচ্চি শোনো" রিশাদ বলে উঠলো।

-জ্বি আংকেল?!

-তোমার জন্য এই বল্টা কিনেছি।

-সত্যি?!!!

-হ্যাঁ। তবে এই বল দিয়ে আমরা ডাকাত ধরবো!



চোখ বড়ো বড়ো হয়ে গেছে পিচ্চির। হয়তো আবার "ডাকাত" শব্দটা শুনে একটু ভড়কে গেছে। কোনোমতে সামলে হাসি মুখে জিজ্ঞেস করলো, "কিভাবে?"

-তুমি এই বগির এখান থেকে এই বলটা ছুঁড়ে মারবে যেখানে আমি মারতে বলবো। ওকে?

-ওকে।



জানে অতটুকু দুরত্বে বল ছুঁড়ে দেয়া সম্ভব নয় তাই বলটা কেটে গান পাউডার আর স্প্লিন্টার দিয়ে আবার জোড়া লাগিয়েছে। এটা কমসে কম দুটা গ্রেনেডের ক্ষমতা রাখতে পারে, তাই আন্দাজ মতো সার্বিক পরিস্থিতি বুঝে ক্ষমতা কমাতে সক্ষম হয়েছে।



আসিফের দিকে ফিরে একটা হাসির রেখা দেখতে পেলো। এই টাইপের অ্যাসোসিয়েট গুলো থাকলে অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ গন্ধ পালটে যায়। বাকিটা অ্যাকটিভিটির উপর নির্ভর করে।



যুদ্ধের দামামা বাজতে দেরি...



"ঠক"...

ইঞ্জিন বগির পাশে নিচে এসে একটা বল লাগলো। "বুউউম"...



"অই কেডারে? টিটু দেইখা ল তো কেডায় এরাম করলো।" কামরুল সর্দার বললো।

"আইচ্ছা দেখতাছি" টিটু বললো।



নেমে পড়লো নিচে। হাতে একটা মেশিনগান। এই টাইপের মানুষগুলো একটু মোটা মাথার মানুষ হয়। তাই কামরুল সর্দার একটু বুদ্ধি করেই দুজনকে নীচে নামিয়ে দিয়ে ঝোঁপে পাঠিয়েছে।



এদিকে আসিফ কিট নিয়ে নিয়ে নেমে পড়েছে। রিশাদ একটা .33 নিয়ে এগিয়ে আসছে ইঞ্জিনের দিকে।



"ঐ কেডারে?" টিটু অবজার্ভ করছে। একটা বিস্ফোরণের পর সব কিছু তাড়াতাড়ি ঠান্ডা হওয়া একদম সাধারণ কোনো ব্যাপার না। তাই আশেপাশে কেউ না থাকাটা সন্দেহজনক।



কেউ একজন এগিয়ে আসছে। দীর্ঘদেহী।



-কেডারে তুই?



"স্নুইপ!" ছোট্ট একটা পিন এসে বিঁধলো টিঁটুর গলায়।



"শালা...এইডা কি মার..." জড়ানো গলায় ঢলে পড়লো লিটু।



যে কোনো কিছু প্ল্যানিঙয়ের আগে রিশাদ ভাবে যে সামনে কি হতে পারে। সম্ভাব্য যে কোনো কিছুকে নিরীক্ষা করা ও তার ভেতর কতটুকু বিপদ লুকিয়ে থাকতে পারে তার ও একটা হিসাব করে ফেলে। এখন পর্যন্ত আসিফের অ্যাক্টিভিটি দেখে মনে প্ল্যান সফল হচ্ছে। তাছাড়া সে কনফিডেন্টলি টিটুকে অজ্ঞান করেছে টাইমিং এ। তবে যে কোনো কিছু ঘটে যেতে পারে এই মুহূর্তে।



"হইইইইইইইইইইইইইই" একসাথে রব উঠলো।

টিটুকে একপাশে টেনে আনবে কিন্তু সে কাজ করার আগেই আসিফ পেছন থেকে এই আওয়াজ শুনে ঘুরে তাকালো। দেখলো পেছনে তিনজন দাঁড়ানো। সবগুলোর চেহারাই বলে দিচ্ছে তারা ডাকাত। অবশ্য মধ্যজন খুব একটা না। চলনে-বেশভুষায় একটু আভিজাত্য তো আছেই। লোকটা আর কেউই না। লিটু। আসিফকে দেখে পরখ করে কয়েক সেকেন্ডের ভেতর পিস্তল উঁচিয়ে ধরলো।



-হাত উপ্রে তুল

-কারা আপনারা?

-ট্রেন থামাইছে কেডায়?

-ওহ।



অগত্যা সারেন্ডার করতে হলো। আসিফ এই ব্যাপারটা মাথায় রাখে নি তাই আশে পাশের ঝোপে যে ডাকাতদের কেউ লুকিয়ে থাকতে পারে তা জানা ছিলো না। প্ল্যান "এ" মানেই অন্য কিছু। তাই এক্ষেত্রে প্ল্যান বি ধরে আগাতে হবে। প্ল্যান বি রিশাদ ছাড়া কেউ জানে না।



তিন নম্বর বগি'র ছাদ। রিশাদ উপর থেকে সব খেয়াল করলো। আসিফ ধরা খেয়েছে তার মানে এই না যে তাদের প্ল্যান ফেইল যাবে। তবে ব্যাপার হলো রিশাদের এখন হ্যান্ড বলতে আরমিন আর সাদিয়া। তারা এখন পাঁচ নম্বর বগিতে আছে।



আসিফকে ইঞ্জিন বগিতে তোলা হলো।



ঘুরিয়ে তাকিয়ে দেখছে আসিফকে সবাই। গড়নে, চেহারায় মনে হচ্ছে সামরিক বাহিনীর লোক। কামরুল সর্দার ভাবতেই পারেনি যে এমন অ্যাম্বুশ করা হতে পারে। তাছাড়া এরা যে মাপে জোখে অনেক পরিকল্পনা করেই উদ্ধারে নেমে যাবে এমনটা আশা করা হয় নি।



-তরা কয়জন?

-কয়জন মানে?

-তরা কয়জন আসোস দলে?

-আমাদের কোনো দল নাই। আমরা অনেক।

-অনেক মানে? ওই শালা তরাও কি ডাকাত?

-আমি ট্রেন যাত্রীদের একজন... বলেই থুঃ করে উঠলো আসিফ।



আসিফের দিকে তাকিয়ে আছে ইঞ্জিন মাস্টার। এমন ভাবে তাকালেন যেনো সর্ষের ভেতর ভূত দেখলেন। তাঁর ধারণা ছিলো পুলিশ আসবে, একটা বন্দুক যুদ্ধ হবে। তাই এই বিষয়টা এখনো পরিষ্কার হলো না যে কেনো পুলিশ আসছে না। তাঁর মানে কি কোনো বড়ো সড়ো অপারেশন হতে যাচ্ছে?



-ওই সডিরে ডাক দে। দ্বেবিদ্বার থিকা আরো দশজনরে আইতে ক। এহন কয়জন আছে?

-গুইনা নিলাম ১৯জন। তাগো আইতে আরো আধাঘন্টা লাগবো।



লিটু জানে তাঁর উস্তাদ একবার ক্ষেপে গেলে যে কোনো কিছু করতে পারে। এমন অ্যাপ্রোচ নিতে পারে যার কারণে বিপদ এর মাত্রা বেড়ে যেতে পারে প্রতিপক্ষের। কারণ এর আগেও কালিবাজারের ডাকাতির ঘটনায় দুজন সাধারণ মানুষ তাঁর হাতে এমন মার খেয়েছে যে কবর খোঁড়া বাকী ছিলো তাদের জন্য। আপাতঃ দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে এরকম কিছুই একটা হতে যাচ্ছে।



-তর দলে কেডা কেডা আছে। ভ্রূঁ কুঁচকে তাকিয়ে রয়েছে কামরুল সর্দার আসিফের দিকে।

-বললাম না আমরা গোটা ট্রেন জুড়ে। আমরা কি সেটা টের পাবে কিছুক্ষণের ভেতর।

-আইজকা গোটা ট্রেন খাইয়ালামু। ঐ ১৯ জনরে দুই ধারে নামা। সাহস বাইড়া গেছে এগো।



বিশাল ট্রেন।

বিভাগীয় এক্সপ্রেস।

বছরের পর বছর রেলওয়ে কর্পোরেশন জনগণের সেবায় নিয়োজিত আছে। এমনকি আলাদা রেলওয়ে পুলিশ নিয়োজিত আছে যাত্রীদের জানমালের নিরাপত্তায়। আখাউড়া রেলের পুলিশ সুপার তমিজ উদ্দিন একটু বেকায়দা অবস্থানে পড়ে গেছেন। এ ধরণের যাচ্ছেতাই অবস্থানে যে কোনো জাতীয় বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে। তাছাড়া দেশ ও দশের কথা চিন্তা করে তাঁকে যে একদম অ্যাকশনে যেতে হবে সেটা স্পষ্ট প্রতীয়মান। দশ জনের একটা দল নিয়ে অগ্রসর হলেন ট্রেনের দিকে। বোঝা যাচ্ছে না কতজন ডাকাত সেখানে আছে।



বিকেল আসি আসি অবস্থা। দুধারে অবস্থান নিয়েছে ডাকাতরা। তাদের কাছে এতোটাই কনফিডেন্স যে তারা শতকরা একশ ভাগ নিশ্চিত যে ট্রেনের ভেতর থেকে বড়ো ধরণের দাও মারা যেতে পারে এই সময়ে।



-লিটু

-জ্বি ওস্তাদ। লিটু জানে এখন উস্তাদ ট্রেনের বগি গুলোতে সার্চ করতে ঢুকবে।

-দুই নম্বর থেকে শুরু কর।



এদিকে রিশাদ তিন নম্বর বগিতে ঢুকে গেছে আগেই। আঁচ করা খুবই সোজা যে ডাকাতরা সার্চ করতেই বেরুবে।



কামরুল আর লিটু বাইরে ডাকাতদের দাঁড় করিয়ে ঢুকে গেলো দু নম্বর বগিতে।



এমন সময় বাইরে থেকে হুড়মুড়। একটানা তীব্র ভাইব্রেশন। থর থর করে গোটা ট্রেন কেঁপে ঊঠলো বোধহয়।



"আহহহ" বলে সমস্বরে চীৎকার। একবার কাছে একবার দূরে। মনে হচ্ছে ভুমিকম্প...



কড় কড় কড়...



ট্রেনের আশপাশ থেকে মাটির চাকের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। মনে হচ্ছে যেনো কোনো দৈত্য একবার ভূমিতে সজোরে ঘুষি মারছে। গোটা ট্রেন স্তব্ধ। বাইরে থেকে অনেক চিৎকার, আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে। দুই নম্বর বগিতে কামরুল সর্দার রাগে ফুঁসছে কে এ ধরণের কাজ করছে বলে।

-লিটু

-হ উস্তাদ।

-দরজা খুইল্লা দেখ তো কেডায় এমন করতাছে



তখন বিকাল। সূর্যের লাল আভা নেমে আসছে পৃথিবীতে। দরজাটা খুলে বাইরে বেরিয়ে এসে মাথায় হাত পড়লো লিটুর। কে এই পৈশাচিক বীভৎস দৃশ্য দেখতে চায়? এখানের মাটি পুরো পাতাল পর্যন্ত দেখা যায় তো ওখানে উচু ঢিবি। এক জায়গার মাটি সরিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে গেছে কেউ যেনো। ডাকাতেরা আহত হয়ে কোঁকাচ্ছে।



দৌড়ে ছুটে গেলো বগিতে।



এদিকে রিশাদ এই ধ্বংসযজ্ঞ দেখে বিশ্বাসই করতে পারছে না। কে এমন কাজ করতে পারে? সাদিয়া বলো উঠলো, "একটু আগেও এখানে ওখানে কতো সবুজের সমারোহ, গাছের চারা ছিলো। সব কোথায় চলে গেছে।"



ইঞ্জিন বগিতে হঠাৎ দশজন লোক ঢুকে পড়লো।

-ওস্তাদ কই ওস্তাদ?

-জানিনা।



একটা বিশাল দেহী লোক। কমসে কম ছয় ফিট শরীর। দরজায় এমন জোরে বাড়ি দিলো যে খানিক অংশ তুবড়ে গেলো। এরপর হুড়মুড় করে নিচে নেমে গেলো।



লিটুর মুখে ঘটনা শুনে চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়লো কামরুল সর্দার। এসেছিলো ডাকাতি করতে, এখানে আরেক কাহিনী।

-এইটা কেডা করছে দেখছোস?

-কেমতে কমু? পুরা এলাকার খোমা পাল্টায়া দিছে।

-মানে কি?

-এই জায়গার মাটি ঐ জায়গায়, কোনো জায়গায় গর্ত, কোনো জায়গায় লাঙ্গল দিয়া টান দিলে যেমন অয় তেমন।

-কস কি কোন হারামী এই কাম করলো।

-কইতারিনা।



রিশাদ বাইরে নেমে দেখলো। কিছুই বাদ রাখে নি। মাটির উপর বর্বরতা চালিয়েছে কে যেনো। হঠাৎ সামনে পাঁচজন লোক চলে এলো।

-তুই ট্রেন থিকা নামলি ক্যা?

-এইখানে কি হচ্ছিলো তা দেখার জন্য

-বগিত ফেরত যা।

-পারলে ঠেকাও...



একজন তেড়ে এলো। আপারকাট মেরে দিলো রিশাদ। বক্সিং প্র্যাকটিস ভালো আছে। ধুম ধুম। পরের দুজন ও তেড়ে এলো।



-পুলাপান আইসা গেছে মনে অয়। কামরুল সর্দার কান পাতলো।

-তাই তো মুনে অইলো।

-তয় নাম দেখি চল।



নেমে এলো কামরুল আর লিটু।



"আবাআবাআবাআবা" একটা সংকেত দিলো কামরুল। এবার রিশাদের দিকে তেড়ে এলো দীর্ঘদেহী বিশাল লোকটা। হঠাৎ একটা মাটির দেয়াল তৈরি হয়ে গেলো। ধুউউউউম



ধোঁয়াশা। ধুলির তীব্রতায় নাক বন্ধ হবার দশা। তার সামনে একজন লোক দাঁড়িয়ে আছে।



-ইঞ্জিন বগিতে কিছু লোক বন্দী আছে। ওদের উদ্ধার করুন।

-আপনাকে ঠিক চিনলাম না।

-আমাকে চেনা এতো জরুরি না।

-কিন্তু পরিচয় না জানলে যে বুঝবো না আমার উপকারী বন্ধুটির নাম কি।

-আমি মাটিমানব...



সূর্য ডুবে যাবে।



হয়তো আরেকটি দিন থাকবে আসার অপেক্ষায়।



হয়তো বা প্রকৃতি ঝড়রূপে রূঢ় হবে অথবা শান্ত থাকবে।



কিন্তু ট্রেনযাত্রীদের কেউই আজ শান্ত নয়। ট্রেন ডাকাতির কবলে পড়েছে। আর এই ডাকাতদল যেই সেই ডাকাতদল নয়। এরা একদল চিহ্নিত লোক যাদের রাষ্ট্র চরমপন্থী হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। রিশাদ যাচ্ছে ইঞ্জিন বগিতে রেসকিউ করতে।



-আহ্ রিশাদ ভাই!

-ফাইনালি। এই যে ইঞ্জিন মাস্টার এইদিকে।

-ভাই আমনে আইসা কি যে উপকার করছেন। কৃতজ্ঞ থাকুম সারাজীবন।

-অমন বলে লজ্জা দেবেন না। যতো দ্রুত পারেন ট্রেন ছাড়েন। আসিফ টেক পজিশন।



ক্যাঁচ কোঁচ কোঁচ।

-আরেহ আরমিন আপু! ট্রেন ছাড়ছে বোধহয়?

-তাইতো মনে হচ্ছে। দাঁড়াও স্যারকে ফোন করি।



মোবাইলটা হাতে নিয়েই দেখলো রিশাদের কল।



-হ্যালো আরমিন।

-রিশাদ ভাই ট্রেন ছেড়েছে নাকি?

-আমি ইঞ্জিন বগিতে।

-থ্যাংক গড। আপনি আর আসিফ তাহলে ইঞ্জিন বগিতে?

-হ্যাঁ। টেক পজিশন। ওরা যে কোনো সময় হিট করবেই। তাই সময় সুযোগ থাকতে...



দুপ্ দুপ্। কথা শেষ না হতেই বগির দরজায় আওয়াজ। ঠান্ডা শীতল স্রোত বয়ে গেলো বগির প্রত্যেকটি যাত্রীর।



লিটু দরজায় বাড়ি মারছে। কিন্তু খোলে না। তার মানে এখানে উদ্ধারকারীদের কেউ আছে!



ধুম ধুম ধুম।



রিশাদ আসিফকে ইঞ্জিনে বসিয়ে নেমে পড়লো।



-জায়েক তুই আবার আইছোছ। মাটি লইয়া ঘাঁটাঘাটি করনের লাইগা।

-তগোরে শিক্ষা দেওনের লাইগা বইয়া আছি।

-তুই জানোছ আমি পাত্থরের মতোন শক্ত। আমার ঘুঁষিতে দেয়াল ভাইঙা যায়। ল খা!



হঠাৎ গায়েব হয়ে যায় মাটিমানব। হুড় মুড়! হুড় মুড়!



"জায়েক তুই মাটিতে মিশ্যা যা আর আমার সামনে চইলা আয় কোনো লাভ নাই। তরে ফাইট দিতেই অইবো।"



"অই মন্তাজ! শুইনা রাখ তরে গুঁড়া গুঁড়া করনের ক্ষমতা আল্লাহ তাআলা আমারে দিছে। যেদিন তুই আমার বাপের ক্যাশ ভাইঙা আব্বার পেটে ছুরি চালাইছোস, খোদার কসম তরে মারবার এন্তেজাম করছি আমি। আমার হাতে তর মরণ লিখা আছে।"



ধুম। ধুম। ধুম।



বড়ো কয়েকটা ঢিল এসে পড়লো গায়ে মন্তাজের। জায়েকের এই ধরণের আচরণের সাথেই মোটেই পরিচিত নয় সে। আরো একটা ছুটে এলো মুখ বরাবর। এবার আর সহ্য করা গেলো না। পরেরটা ঘুঁসি মেরে মাটির চাকতিটা গুঁড়ো করে দিলো।



-তুই?

-আমি আমিই

-তুই এই বগিত উঠলি কেমতে? আমারে চিনোস?

-না চিনিনা। এই বগি কি স্পেশাল? যে অনুমতি নিয়ে উঠতে হবে।

-তর নাম কি রে? কন মার পেটের পোলা তুই?

-আমি রিশাদ। ট্রেনের যাত্রীদের উদ্ধার করতে আসছি।

-হাহাহা।



রিশাদের দিকে আড়চোখে তাকালো টিটু। তার কাছে এই লোক সুবিধার মনে হচ্ছে না।



"ট্রেনে ডাকাত পড়েছে এই কথায় হাসলেন কেনো?" বললো রিশাদ।

"কারণ আমিই ডাকাত সর্দার কামরুল। আয় ল পারলে ঠেকা।"



এই বলে ঠেলে দিলো দুজনকে।



পায়ে বাড়ি মেরে দুজনকেই ফেলে দিলো। ধপাস! অসহায় চোখে তাকালো কামরুল। তার মানে তাকেই আগাতে হচ্ছে। কিছুটা সমীহ করছে রিশাদকে।



যেটাই হোক এখন রিশাদকে ধরাশায়ী করতে হবে।



-মন্তাজ আইজ তর শেষদিন। এই ল।

-পারলে ঠেকা।



মুর্হুমুহু মাটির চাকতি এসে পড়ছে। সাধ্য নেই মন্তাজের তা ঠেকানোর। একসময় বাধ্য হলো তার গর্বের পাথর সম শক্তির আত্নসমর্পণের। যে হাত দিয়ে ঘুঁষি বাগাতো তা আজ রক্তাক্ত। ধীর লয়ে শুয়ে পড়লো মাটির উপর। গ্লানি তার চোখ বুজে দিলো।



হঠাৎ দরজা খুলে যাওয়ায় সাদিয়া বিস্ফোরিত চোখে দরজায় দাঁড়িয়ে গেলো। লিটু ডাকাত ঢুকছে। ধাঁইইই করে পিস্তলের বাঁট পড়লো তার মাথার উপর।



"ওউউপস" বাবল গাম ফুলিয়ে বললো আরমিন।



এদিকে রিশাদের উপর চড়ে বসেছে কামরুল। একসময়ের বাঘা কুস্তিগীর মার্শাল আর্ট কুংফু না জানলেও রিশাদের যে ঘাম ছোটাতে পারবে তার নমুনা দেখতে পাচ্ছে। বদমাশটা দুই কাঁধে ঘুঁষি মেরে হাড় নড়িয়ে দিয়েছে। এখন নড়তে কষ্ট হচ্ছে।



হঠাৎ তাল হারিয়ে ফেললো কামরুল। সুযোগ পেয়ে গেলো রিশাদ। হুক কষে উঠে গেলে। আপারকাট। একবার দুবার তিনবার!



মাটিতে পড়ে আছে জ্ঞান হারিয়ে ফেলা কামরুলের দেহ।



"স্যার আমারে মাইরেন না। আমারে জোর কইরা এইহানে নিয়া আসছে। আমি কিছু করি নাই!" ভয়ার্ত চোখে টিটু।

"না তোমাকে মারবো না" স্মিত হাসিতে রিশাদ।



আখাউড়া স্টেশন। ডাকাতের দলকে পুলিশের হাতে স্থানান্তর করেছে রিশাদ ও যায়েক।



"সময় নেই। ট্রেন ছেড়ে দিবে।" রিশাদ বললো।

"দেশের জন্য" বললো জায়েক ওরফে মাটিমানব।

"দেশের জন্য" রিশাদ হাসছে।



ব্রেভারি ফর কান্ট্রি। সলিড সোলজার। এই ছিলো এজেন্ট রিশাদের অনির্দিষ্ট মিশন। সাড়ে আট ঘন্টার লেট। এই ট্রেন চট্টগ্রাম পৌঁছাবে। তারপর যেতে হবে রাঙামাটির দেশে। টিম বসে আছে বগিতে। জায়েককে হাত দেখিয়ে বিদায় নিলো। আবার দেখা হবে বন্ধু আবার দেখা হবে।





মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ১০:৪১

ফা হিম বলেছেন: বাহ্‌, ভালোই তো। তবে এই টাইপের গল্পে ইংরেজি'র ব্যবহারগুলো পছন্দ হয় না। কেমন ছেলেমানুষী মনে হয়।

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:২৭

রাগিব নিযাম বলেছেন: আমার অন্যান্য গল্পে বাংলা নামকরণ খুব প্রাধান্য পেয়েছে। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

২| ২৬ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৫

মামুন রশিদ বলেছেন: বুকমার্কড

২৭ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৮:৫৫

রাগিব নিযাম বলেছেন: ধন্যবাদ মামুন। :-)

৩| ২৭ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৪

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ডিটেইলস মন্তব্য করছি পড়ে এসে।

যতটুক পড়লাম, ভাল লাগল।

৪| ২৭ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:১৮

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: গল্পে একটু অবাস্তবতা এবং লেখায় কাঁচা ছেলেমানুষি এসে পড়েছে অনেক জায়গায়, গতির সাথে তাল রাখতে গিয়ে। বর্ণনায় আরও মনোযোগ প্রয়োজন। ফাইট সিনগুলো ধোঁয়াটে মনে হচ্ছে, কি ঘটছে সেটা অনুসরণ করা কষ্টকর। রিশাদ এবং অন্যান্য এজেন্টদের অবস্থান আরো পরিষ্কার করা দরকার, এরা এক লাইনের চরিত্র হয়ে গেছে। দেশের জন্য আবেগটা দায়সারাভাবে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে লেখায়, পাঠকের মাঝে সেটি সঞ্চারিত হচ্ছে না।

অন্য দিকে, লেখার মাঝে সতেজ, সাবলীল একটা ধরন আছে, পাঠক টেনে রাখতে সক্ষম। বিভিন্ন সিনের মাঝে যা বর্ণনা করতে চাইছেন, সেগুলো যথেষ্ট রোমাঞ্চকর। সব মিলিয়ে আরেকটু যত্ন নিয়ে লিখলে অবশ্যই সুখপাঠ্য হবে লেখাটি।

শুভকামনা।

০১ লা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:১৬

রাগিব নিযাম বলেছেন: গঠনমূলক সমালোচনা ও হীরকসম মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ। চেষ্টা করবো আরো উন্নত করতে লেখাগুলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.