নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি সাদাসিধে, সাধারণ টাইপের মানুষের দলে। তবে রাজনৈতিক অপরিপক্ক্বতা আমার অপছন্দ।
টিক টক। টিক টক। টিক টক।
দেয়াল ঘড়িটার সাথে টিকটিকিটার কি সম্পর্ক জানা নেই বিজ্ঞানীর। তবে রাত বারোটা বাজলেই নিচের ফ্ল্যাটে গিয়ে বৌ ছেলের সাথে গিয়ে ডিনার করাটা জরুরি কাজ হয়ে যায়। একটা জ্যামার তৈরি করছিলেন যেটা কিনা একসাথে সমস্ত ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতিকে নিমিষেই পংগু করে ফেলতে পারে মুহুর্তেই। বৈশাখের অর্ধেক পেরুনো পিপাসাকাতর পরিবেশ। যেনো বৃষ্টি ঝরলেই শুষে নেবে আর মাটির কয়েক স্তর নিচ পর্যন্ত চলে যাবে প্রবহমান জলস্রোত।
বলছিলাম বিজ্ঞানী সিরাজুল ইসলামের কথা। সাতচল্লিশ এর কোঠায় পা রাখা তারুন্যদীপ্ত এই উত্তর ঢাকার মানুষটা বেড়ে উঠেছেন মিরপুরে। ধন্যাঢ্য বনেদি বংশের ছেলে বলে বাড়ির তেতলায় বানিয়েছেন বিশাল ল্যাব। কখনো কখনো কাজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে গেলেই ল্যবের ভেতরে ছোট্ট রুমটাতে ঘুমিয়ে পড়েন।
বারোটা বাজতেই সিড়ি বেয়েই নামতে যাবেন হঠাৎ ডাস্টবিনের দিকে চোখ পড়লো। ওটা কি?! মানব দেহ!
"মিনি এই মিনি"
-আ্যই কি হলো চেঁচাচ্ছো কেনো?
-জলদি নীচে চলো!
-আরে কি হলো?! আ্যই শিপলু আয় তো।
নীচে ডাস্টবিনের কাছটায় এসে মুখটা থমথমে হয়ে গেলো সবার। একজন শান্ত সৌম্য উজ্জ্বল দীপ্তিময় চেহারার তরুন। চোখে মুখে অজস্র ক্ষত। বাম পাজরের খাজটায় মারাত্নক ক্ষত, ছুরি দিয়ে অনেক খোঁচানো হয়েছে। সেল ফোনটা হাতে নিলেন মিসেস। ফোনটায় ডায়াল করবেন এমন সময় বাধা দিলেন বিজ্ঞানী।
-করছো কি?
-পুলিস ডাকবো।
-পাগল নাকি? পরের বার খুনিরা হাসপাতালে গিয়ে মেরে আসবে। এখন আপাতত ল্যাবে নিয়ে চলো।
টেস্টিং বেডটায় শুইয়ে দেয়া হলো। মেডিক্যাল ফার্স্ট এইড জ্ঞান আছে ঘরের সবার। আর শিপলুর এক খালাতো বোন মেডিকেল এ পড়ছে বেসরকারিতে। ওকে ফোন করা হলো।
-নাহিদ। জলদি বাসায় আসো।
-জ্বি খালু?
-তাড়াতাড়ি বাসায় আসো।
-কোন সমস্যা হয়েছে খালু?!
-মা একটা সমস্যা হয়েছে। প্লিজ আসো।
খুব দ্রুত চলে এলো নাহিদ। ব্লিডিং বন্ধ হলেও অবস্থা ভালো না। শরীর প্রায় নিস্তেজ। ব্লাড স্যাম্পল নিয়ে নিলো। গ্রুপ জানার জন্য। বাসায় চলে গেলো।
-এখন? শিপলু জিজ্ঞেস করলো।
-ফার্মেসি যাও। বলবা রোগির পালস রেট অনেক কম। ১ লিটার এর স্যালাইন দিতে। আর লিকুইড কার্বোহাইড্রেট এর ব্যবস্থা করবো তুমি আর আমি। কুইক।
দুই হাতে ডাব আর স্যালাইন দেখে বিজ্ঞানী ছেলের বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পেলেন। স্যালাইন দেয়া হলো এক হাতে, অন্য হাতে আরেকটি স্যালাইনে ডাবের পানি দিয়ে নাক দিয়ে কন্ঠনালীতে প্রবেশ করানো হলো।
-এখন অপেক্ষা করা যাক। বিজ্ঞানী চেয়ে রইলেন ছেলেটার দিকে। মিসেস আর শিপলুকে ইশারা দিলেন ঘুমাতে যেতে। খুব দুশ্চিন্তায় পড়লেন যে তা না। এই আঘাত যে কোন ছোট খাটো ছিনতাইকারী দিয়েছে তাও নয়। গলার কাছে পোচ আর পাজরের মারাত্নক ক্ষত দেখে বুঝেই গিয়েছিলেন কোন গ্যাং এর কাজ হবে।
এসব চিন্তা করতে করতে যখন ঘুমিয়ে পড়েছেন তার দু ঘন্টা পরের কথা। তন্দ্রায় চোখ ঢুলু ঢুলু এমন সময় আহহহ করে উঠলো ছেলেটা। ঘুম ছুটে গেলো সায়েন্টিস্ট এর। দৌড়ে গেলেন তিনি।
-নড়বে না। একদম নড়বে না।
-আমি কোথায়?
-বিজ্ঞানী সিরাজুল ইসলামের বাসায়। কি হয়েছিলো তোমার সাথে?
-এখন কটা বাজে? আজ পরীক্ষা আছে। আমার প্রোগ্রামিং সাবজেক্ট এর ফাইনাল।
-তোমার পরীক্ষা দিতে হবে না। আমি ফোন করে দেবো। কাল রাতে কি হয়েছিলো? কারা তোমাকে মেরেছে?
-লস আঞ্জেলসের একটা পোকার টিমের সাবসিডিয়ারির আ্যাকাউন্ট হ্যাক করে ছিলাম। ওরা ওদের আইটি এক্সপার্ট দিয়ে আমাকে ট্র্যাকিং করে খুঁজে বের করে এই হাল করেছে।
-আচ্ছা এখন ঘুমের ঔষধ দিচ্ছি। তোমার কিছুটা ঘুম দরকার। তোমার নাম কি?
-হুম? মিশু। যন্ত্রণাকাতর ছেলেটি উত্তর দিলো।
-একটু ব্যাথা করবে। সিরিঞ্জটা ফোটালেন মাংসপেশিতে।
-আহহ! কটা বাজে?
-৭ টা বেজে ১৪ মিনিট।
১২ ই মে, ২০১৫ সকাল ১১:১৮
রাগিব নিযাম বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই :-)
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই মে, ২০১৫ রাত ৯:১৫
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: দারুন দারুন!!!!!!!!!!!!!!!!!