নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গল্প ছাড়া আর কিছু না

বলতে চাই না। লিখতে চাই।

রাগিব নিযাম

আমি সাদাসিধে, সাধারণ টাইপের মানুষের দলে। তবে রাজনৈতিক অপরিপক্ক্বতা আমার অপছন্দ।

রাগিব নিযাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প- দশবজ্র (নতুন সুপারহিরো সিরিজ সূচনা)

১৯ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:৫৯

-দোস্ত যাবি?
-কই?
-ছোট মেরুং।
-জোশ আইডিয়া। কবে?
-কাল?

রিফাত ওর বন্ধু বিশ্বজিৎ এর কথা ফেলতে পারেনা। মির্জাকে ফোন করলে রাজি হবে কিনা কে জানে। সে আসলে ফিমাকে টান দিবে আর ফিমার সাথে রিজু, রিজু টান দিবে তাহসিবকে। ওদিকে জন-ক্রিস্টিনা, আর বিশ্বজিৎের সাথে মৃদুলা। আর তারেক তো আছেই। ব্যস রাজি হয়ে গেলো রিফাত।
-চল, দারুণ মজা হবে। রিফাত উচ্ছ্বসিত কন্ঠে বললো।

ছোট মেরুং খাগড়াছড়ির একটা এলাকা। ছবির মতো দেখতে পাহাড়ি ছোট শহর। কয়েকটা বাংগালি পরিবার মিলে একটা জায়গাকে কলোনি বানিয়েছে। চারপাশ পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত। আশেপাশে পাহাড়িরাও আছে। যেনো মনে হয় কোনো শিল্পীরর তুলিতে আকা এক ছবি।

রাত পার হতেই সবাই মিলে রওনা দিলো। ভোর ছটায় বাসস্টপেজ এ এসে সবাই জড়ো হয়েছে। সবার চোখে মুখে পাহাড় জয়ের প্রত্যয়। বিশাল বড়ো ব্যাগ প্যাক। রিফাত ভারি খুশি খুশি কন্ঠে সবাইকে ব্রিফ করলো। এরপর বাস রওনা হলো।

দুপুরেই পৌঁছে গেছে। রিফাতের এক আত্নীয়ের কোয়ার্টার এর বাইরে ক্যাম্প গাড়লো। পাচটা তাবু। আত্নীয় লাঞ্চ তৈরিই করে রেখেছে। খেয়ে খানিক বিশ্রাম নিয়ে বিকালে বের হলো সবাই। ঘুরে ঘুরে এখানে সেখানে সবকিছু দেখছে।

সন্ধ্যা নাগাদ ক্যাম্পে ফিরে এলো। আত্নীয় সগীর সাহেব একজন ভূমি রেজিস্টার। কোয়ার্টারটার পাশে ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে টিলা। টিলা পঁচিশ ফিট উচু হবে। সেখানেই ক্যাম্পিং করা হয়েছে। ক্যাম্পফায়ারের ঘোষণা দিলো রিফাত। তার নেতৃত্বসুলভ আচরণ সবার পছন্দ হয়েছে। রাত ঘন হতেই রিফাত বলে উঠলো
-এই আয় সবাই একটা জিনিস দেখি।
-কি দেখবো যে? তারেকের কন্ঠে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক টান।
-আমাদের দশজনের মোবাইল এক জায়গায় জড়ো করা হোক।
-আচ্ছা? ক্রিস্টিনা কৌতুহলের স্বরে বললো।
-তারপর? দীর্ঘদেহী সুন্দরী রিজু প্রশ্ন চোখে নিয়ে তাকিয়ে রইলো।
-দেখোই না।

মোবাইলগুলো গোল করে রাখা হলো। প্রতিটা সেটের ফ্রন্ট ক্যামেরার পাশে ছোট করে সিগন্যাল লাইট জ্বলে। এবং কাকতালীয়ভাবে সবগুলো ধারাবাহিকভাবে জ্বলছে। একটার পর একটা। বীপ। বীপ। বীপ বীপ...

হঠাৎ আকাশে আগুনের গোলা দেখা দিলো। পৃথিবীর দিকেই ছুটে আসছে। আরো ভেংগে বললে ছোট মেরুং এর দিকে। রিফাত চোখ ডলতেই আরো স্পষ্ট চোখে দেখলো আরো নয়টা ছুটে আসছে।

কখনো কখনো আকাশকে বীভৎস লাগে। তারাগুলোও একসময় অবসরে যায়। তখন মাঝে মাঝে ধুমকেতু ছুটে যায়। আকাশ চিরে ছুটে যাওয়া সেই আলোর দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ স্পেস রিসার্চ সেন্টারের গবেষক মাজহারুল ইসলাম ভাবছেন কি অদ্ভুত এই জগত সংসার। বেতবুনিয়া এসছেন। সুন্দর তারাময় রাত।

সাইইই।

একি?! একটু আগে ওটা কি ছিলো? ধুমকেতু না? তাহলে এদিকে পৃথিবীর
দিকে কেনো আসছে?
-স্যার অবজেক্ট ডিটেক্ট করে জানা গেলো ওটা উল্কা না।
-তাহলে কি?
-আমিও বুঝতে পারছি না।
-গড ড্যাম ইট।

ওটা ছুটে যাচ্ছে চট্টগ্রামের দিকেই! একটা নয়। আরো নয়টা!

বুম বুম বুম বুম। প্রকান্ড নয়। জাম্বুরা সাইজের গোলা দশটি আছড়ে পড়লো রিফাতদের ক্যাম্প এরিয়ায়। পলকেই দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে উঠলো। পুরো পাচশ গজ এলাকায় বৃত্তকার আগুনে পুড়ে যাছে। ওই গোলকের ভেতরে মাটি ধ্বসে গর্ত হয়ে গেলো।

-২৩-৪৫ সেকশন! ছোট মেরুং এ আগুনের গোলা ধ্বসে পড়েছে। আজ ওখানে দশজন ট্যুরিস্ট ক্যাম্প গেড়েছেন। আই সাস্পেক্ট দে আর নট আ্যালাইভ। সেন্ডিং টু আ্যাপাচি আ্যান্ড আ্য মেডিক ভলান্টিয়ার গ্রুপ। সেনাবাহিনীর একজন কমান্ডার মেজর তালহার সাথে কথা বলছেন।
-ওখানে এজেন্ট রিশাদ, আরমিন, আসিফ, সাদিয়া আছে। কন্ট্যাক্ট দেন। অল ক্লিয়ার। ওভার আ্যান্ড আউট।

রিশাদ আর টিম রওনাই দিয়েছিলো। এতোটা দক্ষ না হওয়াতে, ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার ভয়ে নবীন এই কমান্ডো গ্রুপকে জেলা হাসপাতালে অবস্থান নিতে নির্দেশ দিয়েছেন তালহা। একটা পাইলট প্র‍্যাক্টিস প্রজেক্টে আসার কথা ছিল। একটা কম্পিটিশন এ যোগ দিয়েছিলো। এক একটা টিম চারজন করে। যে টিম আগে খাগড়াছড়ি পৌছাতে পারবে সেই এই প্রজেক্টে জয়ী। তবে রিশাদ আর ওর টিম ট্রেনে ঢাকা থেকে আসার পথে একটা ছোটখাটো যুদ্ধ করেছে আখাউড়ায়। ট্রেনে ডাকাত পড়ায় ছ ঘন্টা দেরি হয় রিশাদের। তারপরো তার টিমের এই অসম সাহসী পারফরমেন্স এ তালহা বেজায় খুশী। তাই তাদের ছুটি দিয়েছেন।

উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে দশজনকেই। তাদের প্রত্যেকেই কম বেশি আহত হয়েছে। রিফাত সহ অনেকেই অজ্ঞান হয়ে আছে। হঠাৎ কারেন্ট চলে গেলো। হাসপাতালের করিডোরের বেঞ্চিতে বসে আছে আরমিন আর রিশাদ।

চির চির চির। ঝিঝি পোকার একটানা আওয়াজে চারপাশ মুখর।
-কেমন অদ্ভুত না। কারো বেশি ক্ষতি হয়নি।
-আমিও তাই ভাবছি।

হঠাৎ শর্ট সার্কিটের আওয়াজ হলো।
-কি ব্যাপার? সাদিয়া হেলান দিয়েছিলো একটা পিলারে। সিধে হলো।

চিরর। আসিফ কান খাড়া করে ফেললো।
-মির্জার কেবিন থেকে।

বিদ্যুৎ এর আলোয় গোটা বিল্ডিং সচকিত হয়ে উঠলো। রিশাদ আরমিনের দিকে তাকালো।
-নোট করো এর কোডনেম। শক বজ্র।
-ওকে।

তাহসিবের কেবিন থেকে মেঝের উপর আর্থিং এর ঝলক দেখা গেলো। সাদিয়া আসিফ দুজন দুজনের দিকে তাকালো।
-আর্থিং!

ফিমার কেবিন থেকে একজন নার্স হাউমাউ করে বেরিয়ে গেলো। রিশাদসহ টিমের সবাই দৌড়ে গেলো। গিয়েই চোখ হা হয়ে গেলো সবার। বেডে ফিমা নেই! কিন্তু বজ্র দেখা যাচ্ছে।
-অদৃশ্য বজ্র! আরমিন লিখে চলেছে।
-আসিফ! ভীত কন্ঠে সাদিয়া আসিফের কাঁধে হাত দিয়ে রিজুর কেবিনের দিকে হাত দেখালো। ওখানেও বিজলি চমকানোর মতো দেখা গেলো। কেবিনের সামনে আসতেই সবাই ঠান্ডায় জমে যাওয়ার মতো অবস্থা!
-শীতল বজ্র!

-এদিকে আসো। কে যেনো বলে উঠলো।
-সবাই শুনছো? কে এটা? পুরোই অদৃশ্য কন্ঠ। সাদিয়া বলে উঠলো।
-পাশের কেবিন!

জনের কেবিন এটা। এবং ঢুকেই সবাই বুঝতে পারছে এটা জনের কাজ।
-মগজের মাধ্যমে কথা বলে। সুতরাং এর নাম মগজ বজ্র। আরমিন টুকে ফেললো।

বুম!

পাশের কেবিনে বিশ্বজিৎ! অনবরত বুম বুম শব্দ। ডাক্তার নার্স সবাই পালাচ্ছে।
-লেখো ধ্বংস বজ্র। রিশাদের চোয়াল শক্ত হয়ে উঠছে।

সাইইইইই! কি একটা যেনো উড়ে বের হলো!
-মৃদুলা! ওটা মৃদুলা!
-নাইস! উড়ন্ত বজ্র। লিখছি।

কড় কড় কড়াত!
তারেকের কেবিন ঝড় হচ্ছে, প্রচুর বাতাস সাথে বজ্র। রিশাদ তাকালো আরমিনের দিকে।
-কি আর? ঝড় বজ্র।

হুশশ!

একটা বৃত্ত তৈরি করে কে যেনো করিডোরের মাঝে স্পার্ক তৈরি করলো।
-ওটা ক্রিস্টিনা! বৃত্ত বজ্র। ভালো নাম হতে পারে। টুকে রাখলাম।
-সবারই একটা বৈশিষ্ট্য আছে আলাদা করে। এরপর কে? আসিফ উৎসুক হয়ে উঠেছে।
-রিফাত। সাদিয়া বললো।

সাইইইইই।
-কেবিন থেকে কি একটা যেনো ছুটে বেরুলো না?
-ওটাই রিফাত।
-গতি বজ্র। আরমিন কলমের ক্লিপ বন্ধ করতে যাচ্ছিলো।
-আর সবাই মিলে দশবজ্র।
-দশবজ্র টেন থান্ডার!
-হুম টেন ঠান্ডার!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.