নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গল্প ছাড়া আর কিছু না

বলতে চাই না। লিখতে চাই।

রাগিব নিযাম

আমি সাদাসিধে, সাধারণ টাইপের মানুষের দলে। তবে রাজনৈতিক অপরিপক্ক্বতা আমার অপছন্দ।

রাগিব নিযাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প: রশ্মি-২

২১ শে জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৪

১১:৪৯ শুক্রবার রাত।
 
ঢাকা সেনানিবাস এ বৃষ্টি ধুয়ে দিয়ে গেছে গরমের সংকীর্ণতা। হেলেদুলে হেটে যাওয়া নেড়ি কুকুরের দিকে তাকিয়ে আনমনা হয়ে থাকা রক্ষী হঠাৎ দূর থেকে ক্ষীন আলো দেখতে পায়।
 
ততোক্ষণে রশ্মি বেরিয়ে এসেছে বাইরে। গাড়িটা গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। ওটা রশ্মিকে বাসায় পৌঁছে দেবে। সিএমএইচের পাশ দিয়ে যাবে। নিশাতকে তুলে নিতে হবে। আজ দুদিন হলো। ওর এক আংকেল স্ট্রোক করে হাসপাতালে পড়ে আছেন। হাসপাতাল শব্দটার কথা মনে পড়তেই পাগলা জাদুকরের কথা মনে পড়লো। ঠিকমতো জেলহাজতে আছে তো তানজীম? শেষবার একটা ট্রাক উল্টে দিয়ে রাস্তায় গাড়িগুলোর বেহাল অবস্থা করেছিলো। যন্ত্রমানব আর মাটিমানব ভাগ্যিস পাগলাকে ধরতে সাহায্য করেছিলো।
 
অল ইউনিট আ্যটেনশন! তানজীম এস্কেপড!
 
কোন কুক্ষণে যে গাড়লটার নাম নিতে গেলাম! মনে মনে নিজেকে গাল দিলো। তানজীম যে সে ট্রিক্স খাটানো জাদুকর নয়। দস্তুর মতো ওয়েভ শক খাওয়ানোর মতো মানুষ যে। মানুষ পেট্রনাইজ করে ফেলার মতো ক্ষমতা তার আছে।
 
-নিশাত কোথায় তুমি?
-রশ্মি অবস্থা ভালো না। আমি চার নম্বর কেবিনে আছি। পাশের বিল্ডিংটাতে হইচই। কে যেনো ওখানে গোলমাল পাকাচ্ছে শুনলাম। আচ্ছা তানজীম নাকি জেল থেকে পালিয়েছে...হ্যালো হ্যালো?
 
লাইন কেটে দিয়ে ম্যাকাপ সাপোর্ট সেন্টারে কল দিলো।
-স্পিকিং?
-শাটাপ! ম্যাকাপ সেকেন্ড ইন কমান্ড!
-স্যরি স্যার! কি করতে হবে?!
-স্নায়ু নিয়ন্ত্রককে লাগবে।
 
ততোক্ষণে ওয়্যারলেস এ কথা বলতে বলতে বিল্ডিংটাতে ঢুকলো। আসিফ নেওয়াজকে মারতে এসেছে তানজীম। ওই যে তানজীমের স্ত্রী পুত্রকে বাঁচাতে পারেনি যে ডাক্তার সেই ভদ্রলোক।
 
-আসিফ ভাই কোথায় আপনি?
-ওয়েল, হেল্লো নটবর! আমি তোমার জাতশত্রু তানজীম।
-শালা খবিশের পয়দা, ছেড়ে দে উনাকে। আজকে তোকে ফ্রাই করে ফেলবো।
-কুউল বেবি কুউল! এতো উতলা হচ্ছো কেনো? তোমার জানুকেও বেধে রেখেছি।
 
থমকে পথচলা বন্ধ করে দিলো রশ্মি। নিশাতকেও টার্গেট! মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করতে হবে। স্নায়ু নিয়ন্ত্রক আসতে আরো দশ মিনিট লাগবে।
-কই তুমি?!
-ভাই আসতেছিতো পথে!
-আরে জলদি আসো। নিশাত জিম্মি।
-কি?!
 
হুট করে সিএমএইচের সামনে রাজপথ স্থবির হয়ে পড়লো। গাড়ি সব দাঁড়িয়ে গেছে। একটা সিএনজি তুলোর মতো উড়ে নেমে বিল্ডিংটার পাশে ঘেঁষে দাড়ালো।
 
চোখ দিয়ে ইশারা করতেই স্নায়ু সম্মতি দিলো। রশ্মি চোখ থেকে লাল রংয়ের রশ্মি ফেলে দরজা পুড়িয়ে দিলো। এই ঘরটাতেই  বন্দী আসিফ ভাই আর নিশাত।
-হাহাহা!
-বিদঘুটে এক খনখনে হাসি বের হলো। গোটা ঘরজুড়ে রিভার্ব হচ্ছে আওয়াজ।
 
বুউম করে একটা শক্তিশালী তরঙ্গ এসে আঘাত হানলো রশ্মির গায়ে। ছিটকে পড়লো দশ হাত দুরের মেঝেতে। আশপাশ ধোঁয়াটে হয়ে গেছে। স্নায়ু সামনে আগ বাড়িয়ে তানজীমকে সতর্ক করে দিলো।
-প্লিজ বন্ধ করেন!
-না! ও শুরু থেকেই আমার সাথে শত্রুতা তৈরি করেছে। তাই এসব ওর প্রাপ্য।
-না! এমন করবেন না। স্নায়ু তাকিয়ে রয়েছে তানজীমের দিকে। যেনো ওর মনের মাধ্যমে কথা বলছে তানজীমের সাথে।
-না আ আ! তানজীম শক ওয়েভ পাঠালো স্নায়ু বরাবর।
 
হুম্মম্মম্ম!
-স্নায়ু না! নো কিলিং! রশ্মি চিৎকার করে বললো।
 
শক ওয়েভ পাল্টা ফিরে গেলো। তানজীমের মুখ তার তিন সেকেন্ড আগ পর্যন্ত ফ্যাকাসে হয়ে থাকলো। এরপরই আর্তচিৎকার বেরিয়ে এলো।
 
নেওয়াজ আর নিশাতকে বাঁধনমুক্ত করে বাইরে নিয়ে আসা হলো। রশ্মি তানজীমের আহত হওয়ার জায়গায় এসে আতিপাতি করে খুঁজতে লাগলো।
 
একটা টেবিলের নীচে চাপা পড়ে আছে তানজীম। বিধ্বস্ত অবস্থা। তবে মরেনি। নিয়ে তোলা হলো আ্যাম্বুলেন্সে। কালপ্রিটেরা যুদ্ধ বন্ধ করে না কখনো। তানজীম হয়তো সুস্থ হয়ে আবার যুদ্ধু শুরু করবে। সেই যুদ্ধে আরো অনেকে থাকবে। গল্পটা না হয় আরেকদিন বলবো।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.