নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গল্প ছাড়া আর কিছু না

বলতে চাই না। লিখতে চাই।

রাগিব নিযাম

আমি সাদাসিধে, সাধারণ টাইপের মানুষের দলে। তবে রাজনৈতিক অপরিপক্ক্বতা আমার অপছন্দ।

রাগিব নিযাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প সিরিজ: দ্য হিডেন্স [সিরিজ সূচনা]

২৪ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৫৮

-কাভার মি! খুবই গম্ভীর গলা।

হাত মুঠো করে যন্ত্রমানবের পেছন পেছন যাচ্ছে একজন। পাশে কপিরানার। কপিরানারটা কে পরে বলছি। সাথে একটা অ্যান্ড্রয়েড পুলিশ। বুয়েটের বানানো। ফাজলামো করে একজন চিপের মেমোরিতে "রূপবান নাচে কোমর দুলাইয়া" অ্যাড করে দিয়েছে। বোঝেন পিউর বিনোদন কাকে বলে। হারামজাদা এই ঘোরতর যুদ্ধেও গুণগুণ করে গানটা গাইছে।

ঠাং করে তিন চারটা সাত ফিট বিশাল শরীর লোহার মেঝেতে পড়ে দাড়ালো। এটা একটা ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়া। পরিত্যক্ত। ওই গুলার চেহারা লালচে। পটেমাস গ্রহের বাসিন্দা। আর যন্ত্রমানব যার সাথে আছে সে ক্লিটোয়া গ্রহ থেকে এসেছে। এর চেহারা নীলচে।
-লিভ হিম টু আস।
-রূপবান নাচে কুংফু দেখাইয়া। চিচি করে উঠলো বাঁদর অ্যান্ড্রয়েড এর গলা। হাত দুটোর ভেতরের কলকব্জা টান টান হলো। ধামাধাম বাফাকোয়ান স্টাইলে ১.২৫ ন্যানোসেকেন্ডে সবকটার গায়ে বিশালাকারের লাথি বসিয়ে দিলো।
-ইউ আর ওরথ টু পে ইট। রূপবান মিয়া অ্যান্ড্রয়েড এবার গম্ভীর হয়ে বললো।

---------সাত দিন আগের কথা---------

-কপিমাস্টার অ্যান্ড রানার। আজকে বিশেষ কারণে তোমাদের ডেকেছি।
-কেনো স্যার? দুজন খুব উৎসুক হয়ে তাকালো। এদের একজন পিলখানা হত্যাকান্ডে বেচে যাওয়া যে ঐ সময় নিউক্লিয়ার পার্টিকেল প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছিলো। ব্লাস্ট রেডিয়েশনে কপিমাস্টার ওরফে আফনানের শরীরে এক অদ্ভুত ক্ষমতা জন্মায়। সে নিজের ডুপ্লিকেট বের করতে পারে। অন্যদিকে রানার ওরফে আবদুল হাকিম আঠারোশো শতক থেকে টাইম ট্রাভেলে উড়ে আসা একজন অতিমানব যাকে সুপার পাওয়ার প্লান্টে স্থানাস্তরিত করা হয়। এই প্লান্টে তার দৌড়ানোর গতি সর্বোচ্চ প্রতি সেকেন্ডে ৩৬০ কি:মি: উঠে যা বাংলাদেশ নয়, গোটা বিশ্বেই বিস্ময়কর।
-আজ তোমাদের দুজনকে এক ও অভিন্ন করা হবে।
-কি?!
-হ্যা। এখন থেকে দুজনের এক নাম কপিরানার। তবে দুজন যেকোন সময় আলাদা হয়ে যেতে পারবে।
-মাইগুডনেস! এসব কি বলছেন?
-হুম। ঘাবড়াবার কিছু নেই।

ট্রান্সপ্লান্টেশন মেশিনটা বিশাল, এটা ড: তানভীরের ব্রেইনচাইল্ড। এর ভেতরে যেকোন সাধারণ মানুষকে ঢুকিয়ে মেটাহিউম্যানে কনভার্ট করা যায়। আজকে এখন বিশাল এই মেশিনের দুটো কম্পার্টমেন্টে দুজনকে ঢোকানো হলো।
-কসমিক এনার্জি বুস্টেড। মেশিন প্রসেসড ইন ৯১ পারসেন্ট। কাউন্টডাউন বিগিন্স ৫৪৩২১....

ঘওওও করে মেশিনটা শব্দ করা শুরু করলো। সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। হঠাৎ টিটিটিট করে বিপ দিয়ে মেশিন অফ হয়ে গেলো।
-কি হলো?!
-মেবি মেশিনের বৈদ্যুতিক গন্ডগোল!
-তাড়াতাড়ি করেন! দে আর সাফোকেটিং!
হঠাৎ করে আওয়াজ হলো আবার।
-যাক কষ্ট করতে হলো না।
-প্রসেস অটো অফ হবে ৩২১..

খুট করে শব্দ হলো।
-দরজা খুলে দিন।

পুরো শুনশান নীরব পরিস্থিতি ল্যাব জুড়ে। আউটপুট কেবিনের দিকে চোখ সবার।
-নামছে নাকি?
ধুপ! একটা বডি মাটিতে গড়িয়ে পড়লো।
-কি হলো?
-দাড়ান ডক্টর গিয়ে দেখছি।

কিছুক্ষণ পর...
-ইয়া আল্লাহ! এযে অবিশ্বাস্য!
-ককিক্কি হয়েছে?! ডক্টরের নাড়ির গতি বেড়ে গেছে।
-একটা মেয়ে। ওখানে একটা মেয়ে!
-হোয়াট?!
-শরীরে কাপড় চোপড় নেই।জ
-কাভার হার উইথ ড্রেস!

দুদিন সময় লাগলো সবার সহজ হতে। সামনে গিয়ে কথা না বললে মেয়েটা চুপ থাকে। যন্ত্রমানব সমাধান করলেন ব্যাপারটা।
-কপিরানার।
-জ্বি আমাকে বলছেন?।
-শো আস সাম ফিউরিয়াস মার্শাল আর্ট টেকনিকস।

মেয়েটা হুট করে আকাশে উঠে গেল। নানকোয়ান কুংফুর বিশাল হাই জাম্প কসরত দেখিয়েই নেমে আসলো মাটিতে। এমন সময় গম্ভীর একটা বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসলো মাটিতে।
-কিসের আওয়াজ? ডক্টর তানভীর বললেন।
-পতনের। ইউএফও এর।
-হোয়াট?! ভিনগ্রহের?!

আওয়াজটা পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে এসেছে। রাঙ্গামাটির একটা এলাকা জুড়ে বিশাল খাদ হয়ে গেছে। টেলিভিশন চ্যানেল গুলি ব্রডকাস্ট করতে না পারলেও স্যাটেলাইট ভিউতে দেখানো হচ্ছে।
-আমি গেলাম। যন্ত্রমানব বললেন।
-আমিও যাচ্ছি। কপিরানার বললো।

দুজনেরই উড়ার গতি একই। সুন্দরমতো নেমে এসে খোজা শুরু করলো সূত্র।
-এইখানে তো কিছু নেই। কপিরানার বললো।
-তাই তো আমিও ভাবছি।
-হুম।

------------ষষ্ঠ দিন রাত-------------

চট্টগ্রামে ঝমঝমে বৃষ্টি। কাদায় স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ। হঠাৎ করে রাতের স্তব্ধতা চিরে আকাশ আলোকিত ও শব্দের তীব্রতায় নরক গুলজার হয়ে উঠলো। যন্ত্রমানব, কপিরানার, আর একটা আ্যান্ড্রয়েড পুলিশ "রূপবান" ইনভেস্টিগেশন এ মরিয়া হয়ে ঘুরছে। একটা সূত্র পেয়েছে ভিনগ্রহের অধিবাসীর। কিন্তু আজ আরো একটা ইউএফও এর খবর পাওয়া গেলো।

আগেরটার সূত্র খুঁজতে গিয়ে চট্টগ্রামের শহর এলাকার একটা শিল্প এলাকায় চলে এসেছে।
-ঢোকো। যন্ত্রমানবের গম্ভীর স্বর।
-হিয়ার উই আর।

এক কোণে আলো ফেলতেই সবার চোখ বড়ো হয়ে গেলো।
-মাদার অফ হোলি... উই নিড ইমিডিয়েট ব্যাক আপ! ইটস আ্যলিয়েন আই রিপিট ইটস আ্যলিয়েন!
-ইটস ব্লিডিং। নীল গায়ের রক্ত।
-আমি ঠিক আছি। এটা এতোটা বড় জখম নয়।
-বাংলা বলতে পারে আবার!
-তোমাদের ভাষার আর মাতৃভূমির জন্যে যুদ্ধের খবর আমরা হাজার বছর আগে থেকে দেখেছি ফিউচার কিউবে। তোমাদের প্রতি শ্রদ্ধা এসে গেছে।
-কিন্তু এখানে কি করে এলে? আর তোমার নাম কি? কপিরানার বললো।
-আমি সায়াম! আমি চার গ্যালাক্সি দুরে ক্লিটোয়া গ্রহের অধিবাসী। পটেমাস নামে আরো একটি গ্রহের সাথে যুদ্ধ লেগেছে একটা মূল্যবান খনিজ নিয়ে। তারই সূত্র ধরে ওদের সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে আমার সহযোগীরা মারা যায় আর আমি সেল্ফ স্পিন করে তোমাদের পৃথিবীতে কোর্স সেট করে ইমারজেন্সি ল্যান্ডিং করি। জানি আর কয়েক ঘন্টার ভেতর ওরা আমাকেও মেরে ফেলবে।
-আমরা থাকতে সেটা হতে দেবো না। যন্ত্রমানব অতি আত্নবিশ্বাসের সাথে বললেন।

--------আজ, সপ্তম দিন, ভোর--------

রূপবান পটেমাস যোদ্ধাদের মেরে আটক করে রেখেছে। সায়ামের ক্ষত পরিষ্কার করে ঔষধ লাগিয়ে দিয়ে মেডিকরা। বীপ সিগনাল শো করছে সায়ামের হাতের ছোট্ট একটা ডিভাইসে। একটা স্কাউট শীপ এসে গেছে।
-ধন্যবাদ।
-তোমাদের। না জানালে বুঝতামনা আমরা কতটুকু অনিরাপদ। বন্ধুত্বের খাতিরে এই আ্যান্ড্রয়েড গিফট করলাম।
-সেকি রূপবান না তোমাদের প্রথম আ্যান্ড্রয়েড পুলিশ?!
-আমার চোখের সামনে এমন অনেক আ্যান্ড্রয়েড পুলিশ তৈরি হচ্ছে। নিয়ে যাও।
-আবার দেখা হবে বন্ধু।
-আবার দেখা হবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.