নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গল্প ছাড়া আর কিছু না

বলতে চাই না। লিখতে চাই।

রাগিব নিযাম

আমি সাদাসিধে, সাধারণ টাইপের মানুষের দলে। তবে রাজনৈতিক অপরিপক্ক্বতা আমার অপছন্দ।

রাগিব নিযাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প: কিলিং ডিসেম্বর || সিরিজ: দুর্ধর্ষ সংঘ

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫০

এক.

১৫ ডিসেম্বর, ভোর সাতটা।

-নাম কি?
-সলিম শেখ।
-কদিন ধরে পঙ্গু?
-দুই বছর ধইরা।
-সাথে কে?
-আমার তালতো ভাই।
-আচ্ছা যান ভেতরে যান।
ঘটনা হলো নেতার শখ চেপেছে পঙ্গু, অসহায় লোকদের সুস্থ সবল মানুষে পরিনত করার। তাই চেপে ধরেছেন এক ভদ্রলোককে। ভদ্রলোকের নাম পরে বলি। ভদ্রলোক বিজ্ঞানী। দেশের নামকরা ল্যাবের হর্তাকর্তা। তার কাছে, সবার যা ধারণা তার চেয়েও বেশি পরিপক্কতা আছে বলে মনে করি আমি। কারণ অমরত্ব নিয়ে গবেষণা করেছেন বহুজন, কিন্তু ইনার আবিষ্কার বিজ্ঞানী মহলের ভেতর আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন এবং তার অমরত্ব নিয়ে গবেষণা মানব ইতিহাসে এক অনন্য সংযোজন।
-যারা এখানে উপস্থিত আছেন তাদের জ্ঞাতার্থে জানানো যাচ্ছে, আজ এখানে শুধু একটি মহৎ উদ্দেশ্যে আমরা সমাবেত হয়েছি । যাদের হাত-পা নেই তাদের নিয়ে আমাদের কিছু করার ইচ্ছা। ইচ্ছাটা হলো তাদের হারিয়ে যাওয়া হাত-পা আমরা ফিরিয়ে আনবো।
-এই ব্যপারের সত্যতা কতটুকু?
-১০০% গ্যারান্টি দিচ্ছি।
সলিম বারবার ফিরে তাকাচ্ছে ঘড়ির কাঁটার দিকে। ঘড়ির কাঁটা যেন চলতে চায় না। একটা একটা সেকেন্ড যেনো এক একটা বছর মনে হয়। কি যে হলো। চোখ বন্ধ করে ফেললো সে। মনে পড়ে গেলো দু মাস আগের সেই ভয়ংকর ভোরের কথা। আই-কে আর্মির আক্রমণে কারওয়ান বাজার এলাকায় প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি সাধন হয়। চোখের সামনে ছোট দুই ভাইকে মাটিয়ে লুটিয়ে পড়তে দেখে। ইকবালের এই আক্রমণে আতাতায়ী সংঘের কেউই বুঝে ঊঠতে পারে নি যে বিশাল ধরণের ধাক্কা পেতে হবে। খোদ দুইজন জোন লর্ড এর জীবন চলে যায় প্রথম রাউন্ড গুলি বর্ষণে।
ভাবনা থেকে ফিরে এলো সলিম। ক্রোধে চোখ মুখে উন্মত্ততা এসে যাচ্ছে তার। ওইদিনের ঘটনায় তার বাঁ হাত হারিয়েছে আর একটা পা পুরো অকেজো। রাগটা সরকারের উপর। কেনো সাধারণ জনগণকে এই পরিস্থিতির শিকার হতে হলো। ছদ্মবেশে এসেছে সে আজ। পকেটে করে সিরামটা নিয়ে এসছে।
-আসুন।
-জ্বি।
একটা কেবিনে ঢুকানো হলো তাকে। একটা গ্লাস কম্পাউন্ডে শোয়ানো হলো এরপর। চোখ বন্ধ করে ফেলেছে সে।
বিকট ফ্যানের ঘড় ঘড় আওয়াজ শুরু হলো। একটানা পাঁচ মিনিট আওয়াজ হলো এভাবে। এরপর বন্ধ হয়ে গেলো।
চোখ মেলে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলো সে। এটা কি করে সম্ভব?! তার হত গজিয়ে রীতিমতো নড়াচড়া করছে! তার পাও নড়ছে!
এক লাফে সে সামনের টেবিলে পৌছে গেলো। চেয়ারের উপরে থাকা তার শার্টটা একটানে নিয়ে, তার ভেতর হাত দুটো গলিয়েই প্রথমেই হাত পকেটে দিলো। সিরামটা আছে তাহলে আছে! প্যান্টের পকেট থেকে সিরিঞ্জটা বের করে সিরামের বোতলে সুঁই ঢোকালো।
-এই কি করছেন? ল্যাবের কর্মীরা বেকুব হয়ে গেলো।
পাত্তা দিলো না সলিম। এরপর একটানে শার্টের হাতা গুটিয়ে সুঁইটা ফোটালো রগের ভেতর। সবাই দৌড়ে এলো। ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে। ঘরের বাতি জ্বলতে নিভতে শুরু করেছে ততক্ষণে। সলিমের শরীরটা আস্তে আস্তে বড় হতে শুরু করলো। লাফ দিলো একটা। পরক্ষণেই মাটি ফুঁড়ে নীচের দিকে চলে গেলো।
-_-_-_-_ফ্ল্যাশব্যাক:১৯৭১-_-_-_-_
১৯৭১ সাল। এপ্রিল মাস। রাকানকে মোনার খুব ভালো লাগে। সুন্দর সুশ্রী চেহারা। ফর্সা, লম্বা। গাল টিপে দিলে লাল হয়ে। মোনার মা আমেরিকান, বাবা বাংলাদেশি। পূর্ব পাকিস্তানে আমেরিকান কনস্যুলেটে কাজ করতে গিয়ে রাকানের সাথে পরিচয় মোনার। আস্তে আস্তে পরিচয়। এখন একটু ভাব জমছে।
আজ হঠাৎ ঝড় তুফান শুরু হয়ে গেছে। অবশ্য সবাই চলে গেছে। পিয়ন আর তারা দুজন।
নিজের কামরায় মোনাকে ঢুকতে দেখে রাকান একটু হেসে ফেললো।
-হাসো কেনো?
-এমনি।
-পাজি।

একটা সময় রাকান উত্তেজিত হয়ে ওঠে। ধীরে ধীরে মোনার কাছে আসতে শুরু করে। মোনা প্রথমে বাধা দিলেও পরে সম্মতি দেয়।
আদিম লীলায় মত্ত হতে হতে তারা খেয়াল করে না কখন ঝড় থেমেছে। কারণ তাদের ঝড় এখন মাত্র শুরু হয়েছে।

দুই.
-_-_-_-বর্তমান:২০১৫-_-_-_-
১৫ ডিসেম্বর। ভোর আটটা বেজে চুয়াল্লিশ সেকেন্ড।

টি টি টি।

একটানা সাইরেন বাজছে। ফায়ারের না। এটা ন্যাশনাল সিকিউরিটি ব্রিচের আওয়াজ। এবং একটা জায়গায় সবাইকে ব্যস্তসমস্ত হয়ে পড়তে দেখা গেলো। জায়গাটা ডি টাওয়ার। অনেক বড় খোলামেলা জায়গা জুড়ে দোতলা কোয়ার্টার গুলোর মাঝখানে এই ২০তলা টাওয়ার। ধারণা করা বাংলাদেশের যতো আর্মি ইনটেলিজেন্স আর অতিমানবদের কেন্দ্রস্থল এই জায়গা। ডিজিএফআই এর তত্ত্বাবধানে এই এলাকায় প্রায় সাড়ে পাঁচশ এজেন্ট আর অসংখ্য অতিমানব এখানে কাজ করে। যদিও বলা হয় পর্যাপ্ত তবুও এদের অনেকেই এখনো ঢোকেনি অতিমানব ইনস্টিটিউটে। সরকার আছে খোঁজাখুজিতে।
হুট করে আওয়াজ হওয়ায় ভড়কে গিয়ে যন্ত্রমানব চেয়ার থেকে প্রায় লাফ দিয়ে উঠলেন। রশ্মিমানব, পাহাড়মানব আর জুজুমাবব কথা বলছিলো। সাইরেনের আওয়াজ শুনে অবাক হয়ে গেলো।
-আরে ন্যাশনাল সিকিউরিটি কল!
-এই সময়?
-বুঝলাম না কিছুই!

মিটিং হলে প্রায় সবাই সমবেত হলো। শুধু রণিণ আসে নি। আশ্চর্য জুতোজোড়ার মালিক। যে জুতোয় ভর করে সে উড়ে যেতে পারে। বাংলাদেশের একেবারে কচি বয়সী তরুণ স্পাই। যদিও তাকে অতিমানবের কোটায় ফেলা যাবে না। কারণ অতিমানবের সংজ্ঞা হলো সাধারণ মানুষের যা নেই তা অতিমানবদের থাকবে। কি থাকতে পারে? হাত,পা থেকে যে কোন কিছু নির্গত হতে পারে। সেটা রশ্মি, আগুন বা তুষার ও হতে পারে। অতিমানবেরা উড়তে পারে, আবার মাটি ফুঁড়ে বেরও হতে পারে, ভোজবাজির মতোও উদয় হতে পারে। এদের সোজা কথায় সুপারহিরোও বলা হয়।
দশ মিনিট পার হওয়ার পর রণিন এসে ঢুকলো। পাশে কপিরানার। কপিরানার হলো কপিমাস্টার আর রানারের সম্মিলিত রূপ। অবশ্য এই রূপে আনতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে বুয়েট প্রফেসর ডক্টর তানভীরকে। তারপরো একটা সামান্য ভূলের কারণে পুরুষ দুইজনের বায়োলজিক্যাল চেইঞ্জে মেয়ে হয়ে মার্জ করেছে এই রূপ বা সত্ত্বাটি। প্রথম প্রথম সবাই অস্বস্তিতে ভুগলেও এখন সহজ হয়ে এসেছে কপিরানারের সাথে।
-ঘটনা খারাপ।
-কি রকম?
-আতাতায়ী সংঘের সলিম শেখ আমাদের ল্যাব থেকে প্রত্যেক অতিমানবের ডিএনএ মাল্টি-জেনারাইজড করে সিরাম বানিয়ে চুরি করে নিয়ে গেছে।
-মানে এখানে উপস্থিত সকলের সুপার পাওয়ার ওর কাছে এখন? ধপ করে চেয়ারের উপর বসে পড়লেন ডক্টর তানভীর। সব শেষ হয়ে গেছে। গত নয় মাসের গবেষণা শেষ হয়ে গেলো।
-টেরও পেলাম না ও সিকিউরিটি ব্রিচ করে গেছে। তথ্যমানব মুখ হা করে ফেললো।
-কারণ আপনার স্পেশালিটি গেছে ওর কাছে।
-_-_-_-_ফ্ল্যাশব্যাক:১৯৭১-_-_-_-_
কাপড়-চোপড় পরে মোনা তৈরি হয়ে নিলো। রাকান আর সে বের হলো রাস্তায়। হঠাৎ পাক আর্মির জিপ এসে পড়লো তাদের সামনে। মোনা আঁতকে উঠলো।
-আদম কে সাথ হাওয়া হ্যায়। তো দোনোকো লে যানেকা অর্ডার ভি হ্যায়। ক্যাম্প মে লে চালো।
রাকান রিকোয়েস্ট করছে ঘন ঘন।
-হামলোক আম আদমি হ্যায় জ্বি।
-সালে চোপ রাহো।
টর্চারের পর টর্চার চলছে।
-সালে ক্যায়া নাসারা হো?
-ছোড় দো হামে। হাম মামুলি লোগ হ্যায়।
-ইয়ে ইতনা যাদা বোল দিয়া কি ইসে মার্ডার কারনেকি খোয়াইশ আ গায়া মুঝে। কোই রাইফেল তো দো।
রাকানের বুক বরাবর সই করলো।
মোনা চোখ বন্ধ করে ফেললো। ফুঁপিয়ে কাদতে শুরু করলো।
ঠুশ!
এক জওয়ান দৌড়ে এসে বললো-
-আরে ইয়ে কেয়া কার দিয়া আপনে?! ইয়ে লোগ আমেরিকান অ্যাম্বাসিতে কাম কারতে হ্যায়। খাস কার জিসকো গোলি কিয়া ও তো স্পেশাল মোসাদ অপারেটর হ্যায়।
-ওত্তেরি ইয়ে ইসরায়েলি ছুপ ছুপকে কেয়া কাররাহেতে ইয়াহা? ইস ম্যাডাম কো ছোড় দো।

তিন.
-_-_-_-বর্তমান:২০১৫-_-_-_-
বোয়িং ৭৭৭। ঢাকা থেকে রওনা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। হুট করে ভোজবাজির মতো উদয় হলো কেউ। লোকটার আগমনে হকচকিয়ে গেলো বিমানের বিজনেস ক্লাসের যাত্রীরা। এতো জোরে বাতাসে ধাক্কা দিয়েছে উদয়ের সময় যে সামনে থাকা হোস্টেস উপড়ে পড়েছে লাঞ্চ করা এক ব্যাক্তির উপরে।
-এক সেকেন্ড। টেলিপোরটেশন করে নিজের ডেরায় ফিরলো। তার সাঙ্গপাঙ্গদের হাতে রাইফেল ধরিয়ে দিয়ে, তাদের ভেতর দুজনকে টেলিপোর্ট করে দিলো বিমানের ভেতর। এবার বলতে শুরু করলো, "দিজ প্লেন ইজ হাইজ্যাকড"!
ঘুম থেকে যেনো লাফ দিয়ে উঠেছে ডিজিএফআই সদর দপ্তর। বোয়িং এ তাদের একজন মেজর যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রে। খবর পৌঁছে গেলো ম্যাকাপে।
-টেলিপোরটেশন? টেলিপ্যাথি? এইরকম কিছু তো আমাদের ছিলো না। কান লাল হয়ে গেছে ডক্টর তানভীরের।
-ইকবালের ল্যাব থেকে নাকি? যন্ত্রমানব বললেন।
-হতে পারে। এখন কি করা যায়? তানভীরের দিকে তাকিয়ে তথ্যমানব বললো। বলতে বলতে বোয়িং এর ভেতরের কমিনিকেশন হ্যাক করে ফেলেছে সে। সিসিটিভিতে দুইজনকে বন্দুক হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো সে। ক্যামেরা দিয়ে জানালার বাইরে দিয়ে চোখে পড়লো রণিন বোয়িং এর পাশ ঘেঁষে উড়ে চলেছে।
-রণিন ট্রেস করো না। পেছন পেছন উড়ে চলো।
-ওক্কে।
এদিকে সলিমের হুট করে একটা নকল বেরিয়ে আসলো তার শরীর থেকে। যাত্রীরা সব ভয় পেয়ে আঁতকে উঠলো।
-এবং যেই এক চুল নড়ার চেষ্টা করবে তারই বারোটা বেজে যাবে।
ভোজবাজির মতো হাওয়া গেলো সলিম আবার। প্লেন থেকে।
দুপুর একটা। হেমন্ত শেষের অপরাহ্ণ। ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের মতিঝিল ব্রাঞ্চ। ক্যাশিয়ার অগুনতি অর্থ গুণছে। এমন সময় প্রচন্ড বাতাসের ধাক্কায় ক্যাশের গ্লাস ফেটে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পড়লো। সিকিউরিটি বেকুব হয়ে তাকিয়ে ঘটনাস্থলে আবিষ্কার করলো একজন আগন্তুকের আগমন ঘটেছে।
শুধু তাই না। তার সাথে এমন দুজন মানুষ এসেছে যারা সাধারণ কোনো মানুষ না। হাতে এসএমজি রাইফেল আর বেশভূষা কমান্ডোর। বুঝতে পারলেও এর সাথে আবিষ্কার করলো তার হাত থেকে বন্দুকটা তুলে রাখা হয়েছে।
-সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে এই ব্যাংক আমাদের কব্জায় এখন। ব্যাংক ডাকাতি করা হলো।
এভাবে আরো নয়টি ব্যাংক ডাকাতি করা হলো।
শহর নরক হয়ে উঠছে। দশ ব্যাংকে একই সাথে হামলা। একই সাথে প্লেন হাইজ্যাক। তার সাথে একই চেহারা মানুষ ভিন্ন স্থানে। সরকার মহল আর জনমনে আতংক সৃষ্টি করেছে। এসবই যখন ঘটছে তখন হুট করে পিলে চমকানোর মতো একটা কান্ড ঘটলো। "মেজর বাংলাদেশ"কে ব্যাংক জিম্মিদের রেসকিউ করতে গিয়ে এক জনের সাক্ষাৎ পেয়ে গেলো। সাক্ষাৎটা সাধারণ না। ব্যাপারটা হলো সেই ভদ্রলোককে সে যতো ব্যাংকেই গেছে সেখানেই দেখতে পেয়েছে। এ যেনো একেবারে সলিমের মতো অবস্থা!
-নেগেটিভ। নতুন কিছু ঘটছে না। তবে একটা অদ্ভুত জিনিস দেখতে পাচ্ছি। আমি বিষয়টা হ্যান্ডেল করছি। হ্যাং অন ব্ল্যাক অপ্স ট্রুপ।
কিছুক্ষণ চিন্তা করে লোকটার সামনে এগিয়ে গেলো মেজর।
-_-_-_-_ফ্ল্যাশব্যাক:১৯৮১-_-_-_-_
-মা আমার বাবা কে ছিলো?
-হতচ্ছাড়া না পড়ে ফাকি দেয়ার মতলব। যা পড়তে বয়।
-মা। আজ ইশকুলে না এক ছেলে এই কথা জিজ্ঞেস করেছিলো।
-উফফ এই ছেলে জ্বালিয়ে মারলো। যাহ পড়তে বয়।
চোখের কোনে পানি ধরে গেছে।
আর সামলাতে পারছে না।
ঝরঝর করে ঝরে পড়লো ক ফোঁটা।

চার.
-_-_-_-বর্তমান:২০১৫-_-_-_-
হাতে বাবার শার্টের এক টুকরো ছেঁড়া অংশ নিয়ে পাকিস্তান হাইকমিশনের ভেতর দাঁড়িয়ে আছে সলিম। হ্যাঁ এই সেই সলিম যে কিনা মোনা-রাকানের ফসল। শরীরে বইছে ইসরাইয়েলি উষ্ণ প্রবাহ।
-আই অ্যাম সলিম। আজ এখানে বাংলাদেশের হয়ে আসিনি। এসেছি আমার বাবার হত্যার প্রতিশোধ নিতে। হুট করে এক জোড়া ছেলে মেয়ের দিকে চোখ গেলো।
-ওউ! কাপল বুঝি?! বিশ কদম দুরত্বে হুট করে চোখের পলকে তাদের কাছে চলে এলো চোখের পলকে।
-বালক কতোদিনের প্রেম? তোমার প্রেমিকা দেখছি ডাসা মাল।
পাকিস্তান কনস্যুলেটের সবাই স্থির হয়ে গেছে। বুঝতে পারছে কিছু একটা ঘটতে চলেছে।
-জুলিয়েট মাস্ট ডাই।
একথা বলার মুহূর্ত খানেকের ভেতর মেজর বাংলাদেশের দেখা সেই ব্যাক্তি ভোজবাজির মতো উদয় হলো। খপ করে ধরে সলিম সহ উধাও হয়ে পড়লো।
১৫ ডিসেম্বর বিকাল চারটা ত্রিশ।
ম্যাকাপ হেডকোয়ার্টারে সবাই উপস্থিত। স্ক্রীণের দিকে তাকিয়ে আছে সবাই। এমন সময় রুফটপ ছাদটা অটোমেটিক খুলে গেলো। চারজনকে দেখা গেলো ফ্লাক্স রোপ বেয়ে নিচে নামতে।
-এভাবে অনুপ্রবেশের মানে কি?
-যন্ত্র! স্টপ! ওদের আসতে দাও। প্রফেসর তানভীর বললেন।
-আমরা ভেদাভেদ ভুলে একসাথে কাজ করা উচিত। আইকে আর্মির সাথে সংঘাতের সময় আমাদের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিলো। আজ সেটা ভুলে যেতে চাই।
-আমাদের তাহলে একতা হচ্ছে।
-তাতো হবে। তবে দল হিসেবে আত্নপ্রকাশ হবে।
-আমরা তো দল হিসেবে আছিই।
-তাই? নাম আছে কোনো?
-অবশ্যাই। আমাদের নাম দুর্ধর্ষ সংঘ।
-গ্রেট।
বিপ বিপ বিপ বিপ!
একটানা সংকেত পেয়ে ব্যঘ্রমানব শরীফের চোখ ঘুরে গেলো সংকেতটার দিকে। তিনি বুঝতে পারলেন যে এই সংকেত কার।
-হ্যা মেজর বলুন।
-একটা অদ্ভুত ঘটনা ঘটলো এইমাত্র। একজনকে দেখলাম সলিমকে নিয়ে উধাও হয়ে গেছে।
-উধাও মানে?
-মানে লোকটাকে ম্যাকাপে দেখেছি, ল্যাবে। এই লোক সলিমকে নিয়ে উধাও হয়ে গেছে।
-ওরা কোথায় গেছে বলতে পারেন?
-এখনো জানিনা। তবে ব্যাপারটা দেখছি।
-ওকে।
-ওহ নো!
-আবার কি হলো?
-গুলি করে বসেছে সলিমের দুই সঙ্গী।
-হোয়াট!!!
-শীট! আমি ডিফেন্ড করতে যাচ্ছি। সবাইকে অ্যাকশনে নামতে বলুন।
রাজপথেও নেমে গেছে সলিমের সাঙ্গরা। তবে বসে নেই দুর্ধর্ষ সংঘ। এরই মধ্যে নেমে গেছে সুপার সেভেন গ্রুপ। তাদের এমন আক্রমণে প্রথম দিকে ঠেকাতে পারলেও, এবার সমানে এগিয়ে যাচ্ছে সলিমের দলবল। মুহুর্মুহু আক্রমণ চালাচ্ছে নিরীহদের উপর। এর সাথে তো রয়েছে স্থাপনার উপর আক্রমণ। কি হবে এবার?
পাঁচ.
অতিমানব আর এজেন্টরা নেমে পড়লো কাজে। প্রথমে পথ দেখিয়ে নিরীহ মানুষদের নিয়ে গেলো একটু নিরাপদ জায়গায়। এর পর আক্রমণ শুরু করলো সলিমের লোকজনের উপর। প্রহরী গ্রুপ থেকে প্রথম আক্রমণটা এলো মিরপুরেই। এতো মানুষ পোষে যে তার কোন ঠিক ঠিকানা নাই সলিমের। একসাথে বিশজন এসে আক্রমণ করলো তাদের।
ব্যাংকগুলোতে দুজন করে অতিমানব আর এজেন্ট ঢুকে পড়লো। অবশ্য ম্যাকাপ সদর দপ্তর থেকে নিউজ চ্যানেলে প্রচার করে আহ্বান করা হয়েছে ম্যাকাপের বাইরের অতিমানবদের। এদের মধ্যে নীলমানব, অগ্নিকন্যা, পিচমানব, অশরীরীকে রাজপথে নেমে পড়েছে। পিল পিল করে বেরিয়ে আসছে সলিমের লোকজন। সবাই আতংকগ্রস্থ হয়ে পড়েছে।
-অল ইউনিট! কিল দ্য আর্মড পিপল হু আর নট আওয়ারস। দ্য ব্ল্যাক মাস্কড ওয়ান্স। ফায়ার! ব্যাটেলিয়ন কমান্ডার নির্দেশ দিলেন।
ব্যটেলিয়নের গুলি বর্ষণে বন্দুকধারীরা মারাত্নক আহত হয়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেলো। লাশ এতো পরিমাণে ঝরে পড়েছে যে রক্তের স্রোত পুরো রাস্তায় রাস্তায় । সলিম যেভাবে একটা আর্মি দাঁড় করালো তার পুরো ইউনিট খতম করতে এক ঘন্টার বেশি লাগলো না। বিপুল পরিমাণে অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে প্ল্যানে নেমেছিলো সলিম। তবে সফল হয়নি সে।
-সলিম মরে নি। দস্তানা ওরফে দ্য গ্লোভ বললেন।
-জানি এটা আসল সলিম না। মেজর বাংলাদেশ বলে উঠলেন।
-হুম আমাদের আরো সতর্ক হতে হবে। যন্ত্রমানব আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন।
রাজপথ রক্তাক্ত হয়ে গেছে। আপনহারাদের শোকে সন্ধ্যা কেঁদে হয়রান। বাংলাদেশের ইতিহাসে ঘটে গেছে রক্তক্ষয় যুদ্ধ। হাইজ্যাক করা প্লেনটাতে তিনজন যাত্রী মারা গেছে। দশ ব্যাংকে কত খুন হলো তার হিসাব নেই। রাস্তায় আর্মি নেমে এসেছে। কিন্তু কিছুই করার নেই। যা হওয়ার হয়ে গেছে। সলিমের নকলগুলো মারা পড়লেও আসল সলিম গা ঢাকা দিয়েছে।
এক ছাদের উপর প্রায় ষাটজনের উপর এসে জড়ো হলো। তারা অকুতোভয়, আজ বুঝিয়ে দিলো দেশের যে কোনো বিপদে তারা ঝাঁপিয়ে পড়তে পারবে। বোঝাতে পারলো খোদ শয়তান এসে মহাযজ্ঞ আরম্ভ করলেও তাদের সাথে পারবেনা। কারণ এর নাম "দুর্ধর্ষ সংঘ"...

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:১৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: উরিব্বাস!!!!!!!!!!!!!

এক লেখায় এত প্লট! মনে হয় দশটা মুভি একসাথে দেখে ফেল্লাম :)


তারা অকুতোভয়, আজ বুঝিয়ে দিলো দেশের যে কোনো বিপদে তারা ঝাঁপিয়ে পড়তে পারবে। এটাই আমাদের চেতনা!

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:১৪

রাগিব নিযাম বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। অসংখ্য ধন্যবাদ।

২| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:২২

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ফুসসসস! হেব্বি গল্প

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:১০

রাগিব নিযাম বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই অসংখ্য ধন্যবাদ

৩| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৩০

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: এক্সসিলেন্ট। চমৎকার একটা গল্প।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:২৩

রাগিব নিযাম বলেছেন: ধন্যবাদ। অসংখ্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.