নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জয় পাঠক

সহজ আলোয় দেখা...

জয় পাঠক

যন্ত্রের জন্যে পদ্য, মানুষের জন্যে গদ্য - এই নিয়ে ভাবাভাবির সারাবেলা

জয় পাঠক › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান: ঘুরিয়ে দিতে পারে জীবনের মোড়

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:২৭

শুনতে অবাক হলেও এটা সত্যি যে নিজের প্রযুক্তি ভিত্তিক স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান শুরু করার সেরা সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পেরুনোর পরপর।



নতুন প্রতিষ্ঠান মানেই প্রচুর শ্রম-মেধা ও সময় ব্যয় করতে হয়। নিজের প্রতিষ্ঠান বলে প্রাথমিক ব্যবসায়িক পর্যায়ের ঝুঁকি থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পেরুনোর পরের সময়টা যেমন উদ্যম থাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে, তেমনি সংসার জীবনের দায়-দায়িত্ব কম থাকে বলে এসময়ে ছোট-বড় ঝুঁকি নেয়া সহজ হয়। আজকের যেই মাইক্রোসফট, ফেসবুক, গুগল সারা পৃথিবী কাঁপাচ্ছে, তা ঐ বিশ্ববিদ্যালয় পেরুনো (এবং না পেরুনো!) তরুণদের উদ্যোগের ফসল। শুধু মাইক্রোসফট, ফেসবুক, গুগলই নয়, এই কাতারে প্রতি মাসেই যুক্ত হচ্ছে আরো শত শত প্রতিষ্ঠান।



আজকের প্রযুক্তি দুনিয়ায় স্টার্টআপ বলতে বোঝায় মানুষের দৈনন্দিন জীবনের এক বা একাধিক সমস্যা সমাধান করতে পারে, এমন একটা ওয়েব সাইট বা সফটওয়্যার তৈরির প্রতিষ্ঠান ।



ওয়েব সাইট বা সফটওয়্যার তৈরি করতে প্রথমেই আসে ওয়েব হোস্টিং আর ডেভেলপমেণ্ট টুলের লাইসেন্সিং খরচের কথা। সুখের বিষয় আজ থেকে দশ বছর আগে তুলনায় তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক স্টার্টআপ করা এখন অনেক সহজ, এবং কম ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ মাইক্রোসফট, আমাজন সহ বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠান স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের সহায়তা করার জন্যে একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিনেপয়সায় লাখ লাখ টাকার সমপরিমাণ সফটওয়্যার লাইসেন্স, ক্লাউড কম্পিউটিং ও স্টোরেজ রিসোর্স দিয়ে থাকে। যেসব স্টার্টআপকে এইরকম সহয়তা দেয়া হয়, তার একটা ছোট অংশও যদি সফল হয়, সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানটি পেয়ে যাবে বছরের পর বছরের নিশ্চিত কাস্টমার। কাজেই স্টার্টআপের টার্গেট প্রোডাক্ট মোটামুটি প্রতিশ্রুতিশীল হলেই সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো আগ্রহের সাথে এধরণের সহায়তা বিনা মূল্যে দিয়ে থাকে।



স্টার্টআপের পরের খরচ জনশক্তি। সবচে’ ভালো হয়, প্রতিষ্ঠানটির মূল উদ্যোক্তারা যদি কাজগুলো ভাগাভাগি করে নেন। দু'জন হয়ত সফটওয়্যার প্রকৌশলের দিকটা দেখলো, ব্যবসা প্রশাসন থেকে পাশ করা আরেকজন দেখল মার্কেটং কিংবা বিজনেস ডেভেলপমেন্টের কাজগুলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পেরুনোর পরের সময়টায় বেতন ছাড়া মাসের পর মাস থাকাটা খুব কঠিন নয়, কারণ বাবার হোটেলতো আছেই। সন্তান নিজেই নিজের একটা প্রতিষ্ঠান দাঁড় করাচ্ছে, জেনে বাবা-মায়ের খুশীই হওয়ার কথা!



এর পরের খরচ অফিস স্পেস। সেটা নিজের পড়ার ঘর বা বাড়ির গ্যারেজ নিয়েই শুরু হতে পারে। এবং ব্যাপারটাকে মোটেও হালকাভাবে নেয়ার কিছু নেই। সত্যি বলতে কি মাইক্রোসফট, ফেসবুক, গুগলের মতো আজকের বিলিয়ন ডলার প্রতিষ্ঠান গুলো শুরু হয়েছে ঐরকম গ্যারেজ স্পেস থেকে। প্রযুক্তি দুনিয়ার "গ্যারেজ স্টার্টআপ" কনসেপ্টটি অনেক জনপ্রিয়।



মাস কয়েকের পরিশ্রমের পর প্রোডাক্টটির প্রথম ব্যবহারযোগ্য ভার্সনটি দাঁড় হয়ে গেলে শুরু হয়ে যাবে প্রতিষ্ঠানটির পরবর্তী পর্যায়। প্রোডাক্টি থেকে সরাসরি উপার্জন শুরু হতে পারে, ক্রেতাদের কাছে প্রোডাক্টির লাইসেন্স বিক্রি কিংবা এডভার্টাইজিং-এর মাধ্যমে। এ পর্যায়ে যদি প্রোডাক্টটি মোটামুটি মানের সফলতা দেখাতে পারে, এবং সেটিকে আরো সম্প্রসারণের মাধ্যমে বৃহত্তর মাপে ব্যবসার সম্ভাবনা দেখানো যায়, তাহলে নতুন নতুন বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ আসতে পারে প্রতিষ্ঠানটির জন্যে। প্রযুক্তি বিশ্বে দায়িত্ব ও শর্ত ভেদে এদেরকে এঞ্জেল ইনভেস্টর ও ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ইনভেস্টর বলে। আমাদের দেশে এধরণের বিনিয়োগকারীদের ধারণা বেশ নতুন হলেও, প্রযুক্তি ভিত্তিক স্টার্টআপগুলো থেকে ভালো কিছু সফলতা দেখাতে পারলে অনেক স্থানীয় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান আগ্রহী হবে আমার বিশ্বাস।



বেড়ে ওঠার একটা পর্যায়ে স্টার্টআপটি উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে কিনে নিতে পারে বড় কোন প্রতিষ্ঠান, কিংবা স্টক মার্কেটে আসতে পারে Initial Public Offering (IPO)-এর মাধ্যমে, যেখানে সাধারণ মানুষও বিনিয়োগ করার সুযোগ পাবে প্রতিষ্ঠানটিতে।



একনিষ্ঠা ও কঠিন পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজের স্টার্টআপ সফল করতে পারলে ঘুরে যেতে পারে নিজের জীবনের মোড়। নিজের প্রতিষ্ঠানে, স্বকীয়তায় নিজের পছন্দের কাজ করার সুযোগ, সাথে অর্থ উপার্জনের সৎ উপায় - জীবনের এতো সব চাহিদা পূরণ হতে পারে কর্ম-জীবনের শুরুতে পরীক্ষামূলক কিছু ঝুঁকি নেয়ার মাধ্যমে।



প্রযুক্তি ভিত্তিক স্টার্টআপ করে সবাই যে সফল হচ্ছে তা নয়, কিন্তু একেবারে গোড়া থেকে একটা প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে যে পরিমান সৃষ্টিশীলতার সুযোগ এবং স্বাধীনতা থাকে, সেখান থেকে শিক্ষার অভিজ্ঞতা থেকে নিজেকে ক্যারিয়ারের অনেকদূর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া সহজ হয়।



উন্নত বিশ্বের অর্থনীতিতে প্রযুক্তি ভিত্তিক স্টার্টআপ খুব গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এটিকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠছে আলাদা একটি শিল্প। সম্ভাবনার দিক থেকে প্রযুক্তি ভিত্তিক স্টার্টআপ কনসেপ্টটি আমাদের দেশেও গুরুত্বের সাথে বিবেচনার সময় এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তথ্যপ্রযুক্তি এবং ব্যবসায় প্রশাসনের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে এ বিষয়ে আলাদা একটি কোর্স রাখা গেলে নিকট ও সুদূর প্রসারী সুফল পাওয়া যাবে দেশের অর্থনীতিতে।



আমি যে প্রতিষ্ঠান এখন কাজ করছি, এটাও একটা স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান। প্রথম বিশ্বের একটি দেশে এইরকম স্টার্টআপ কালচারে কাজ করার আগ পর্যন্ত আমারো তেমন পরিস্কার ধারণা ছিল না এ সম্পর্কে। গত কয়েক মাসে এ ক্ষেত্রে অর্জিত আসাধারণ কিছু অভিজ্ঞতাই উদ্বুদ্ধ করলো এ বিষয়ে কিছু লেখার। আমি বিশ্বাস করি অসাধারণ এই কালচার আমাদের দেশেও গড়ে উঠবে খুব শিগগির। কারণ আমাদের দেশের মতো এতো মেধবী ও পরিশ্রমী তরুণ পৃথিবির আর কোথাও দেখিনি!

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:০৪

ব্লগার রানা বলেছেন: অনুপ্রেরণা পেলাম,,,,থ্যাংকস

২| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:০৪

অলওয়েজ এ্যান্টি গর্ভণমেন্ট বলেছেন: দরকারী।

৩| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৩

মোঃ সাইফুল ইসলাম সজীব বলেছেন: ভালো লাগলো পোস্টটি। মূল ধারনা পাওয়া গেল, আরো একটু বিস্তারিত হলে ভালো হতো। আশা করি বুঝতে পারছেন। মানে একটা স্টার্ট আপ ব্যাবসার উদাহরণ দেয়া যেতে পারতো। অবশ্য আমাদের দেশ এখন আগের চেয়ে অনেক এগিয়েছে, তাই সম্ভব, সব সম্ভব।

ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.