নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জয় পাঠক

সহজ আলোয় দেখা...

জয় পাঠক

যন্ত্রের জন্যে পদ্য, মানুষের জন্যে গদ্য - এই নিয়ে ভাবাভাবির সারাবেলা

জয় পাঠক › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবন নিয়ে সিরিয়াস দর্শন

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:৫৩

মৃত্যু নিয়ে মার্ক টোয়াইন বলেছিলেন, আমার জন্মের আগে আমাকে ছাড়াই লক্ষ বছর পেরিয়ে গেছে। কাজেই আমি চলে গেলে কি হবে এটা নিয়ে চিন্তিত হবার কিছু নেই।



যে মানুষটি একদিন সারা পৃথিবী কাঁপিয়েছেন, যার ওপর নির্ভর করতো লক্ষ-কোটি মানুষের আনন্দ-বেদনা-উচ্ছ্বাস, সে মানুষটির হৃদয়ের স্পন্দন থেমে গেলে আলোড়ন ওঠে জগৎজুড়ে।



তারপর কয়েকদিন, কয়েক সপ্তাহে সবকিছু আগের মতো হয়ে যেতে থাকে। কোন এক বিষন্ন মুহূর্তে প্রিয়জনের চোখের পানি, তাকে ঘিয়ে নানা স্মৃতির দীর্ঘশ্বাস, সবই ফিকে হয়ে আসতে থাকে। জীবনের গতিপথের এই ভয়ংকর সৌন্দর্যে হারিয়ে যায় মানুষটি। জীবদ্দশায় যতো প্রতিভাবান হোন না তিনি, যতো প্রভাবশালী হোন না কেন, একটা সময় এই সত্য মুচকি হাসে, তাকে ছাড়া কোন কিছুই থেমে থাকবে না।



মৃত্যু স্বাভাবিক, কিন্তু তার নিষ্ঠুর ও বিস্ময়কর রূপটি একজন মৃত্যুপথযাত্রীর কাছে বিচিত্র সব জীবন দর্শন নিয়ে আসে, তা তিনি হোন মহাপ্রাক্রমশালী রাজা-রাজেশ্বর, কিংবা ছাপোষা কেরানী। পেরিয়ে আসা বিগত দিনগুলি ফেসবুকের লুপব্যক মুভির মতো ভাসতে থাকে। কারো কাছে আক্ষেপের, কারো কাছে বর্ণময়, কারো কাছে দু'টোই। সুদীর্ঘ একটা কাল পেরিয়ে এলেও মনে হয় এইতো কয়েক পলকেই পেরিয়ে গেল জীবনটা। যদিও মহাকালের হিসেবে আর কয়েকক্ষণ পরেই তাদের প্রত্যেককেই একই সত্য বরণ করে নিতে হবে, তবুও পৃথিবীর যাবতীয় জীবিত মানুষদের সৌভাগ্যবান মনে হতে থাকে।



রবীন্দ্রনাথের কথায় "বিচ্ছেদের মুখে প্রেমের বেগ বাড়িয়া যায়"। একজন মৃত্যু পথযাত্রীর কাছে জীবন যতো তীব্র মোহনীয় রূপে আসে, তা আর কারো কাছে আসে কিনা সন্দেহ। জীবন সায়াহ্নের এই উপলব্ধিগুলোর সবটুকুই প্রতিদিনের বাস্তবতার খাপে মিলবে তা নয়, কিন্তু আমার ধারণা এর অনেক কিছুই জীবনকে বুঝতে সাহায্য করবে।



কিছুদিন আগে এইরকম বিষয়ে একটা আর্টিকেল পড়েছিলাম, যেখানে কয়েকজন নার্স তুলে ধরেছিলেন, তাদের দেখা মৃত্যুপথযাত্রীদের শেষ মুহূর্তের আক্ষেপ বাণী গুলো। কেউ বলেছে কেবল আয়-রোজগারের পেছনে না ছুটে প্রিয় মানুষদের সাথে আরো বেশি সময় কেন কাটালো না। কারো কাছে মনে হয়েছে চাইলেই সে জীবনে সুখী হবার পথটা বেছে নিতে পারতো যেটা করা হয়ে ওঠেনি, অন্য কে কি ভাববে এই ভয়ে। নিজের অনুভূতি সাহসের সাথে প্রকাশ করতে পারেনি এটাও আক্ষেপের করণ হয়েছে অনেকের। তবে বেশির ভাগ মানুষই আক্ষেপ করেছে তাদের নিজেদের স্বপ্নগুলোর অর্ধেকেরও কাছাকাছি না যেতে পেরে। জর্জ বার্নার্ড শো'র ভাষায়ঃ “most people go their graves with their music still in them.”



মৃত্যুপথযাত্রীর জীবন দর্শন নিয়ে আমার বেশ কৌতুহল আছে। সেই দৃষ্টিতে ঠিক কেমন একটা জীবন পার করলে মনে হবে আমার এই মানব জীবন বৃথা গেল না?



একেকজনের কাছে প্রশ্নটার একেক উত্তর থাকতে পারে। আমার কাছে মনে হয় জীবনের তিনটি বিষয়ের ভারসাম্য থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণঃ



কাজঃ জ্ঞান হবার পর প্রতিটা মানুষকেই দিনের মূল অংশটিতে কিছু না কিছু করতে হয়, যেটা সাধারণত বৈষয়িক বিষয়ে কেন্দ্রীভূত। শৈশব, কৈশরে পড়াশুনা, পরিনত বয়সে উপার্জন কিংবা সংসার-পালন। যে বিষয়টা সবচে' গুরুত্বপূর্ণ এই কাজটির মাধ্যমে সে নিজেকে পরিপূর্ণ বিকশিত করতে পারছে কিনা। তার নিজস্ব-ভালো লাগার সুরের তালে যেতে পারছে কিনা। জীবন পুষ্পশয্যা নয়। ভালো লাগার বিষয় সহজেই জুটে যাবে তাও নয়, কিন্তু সেটাকে পেতে চেষ্টা-শ্রম দিয়ে যাওয়াটাও সেই ভ্রমণের অংশ। সাধারণত ৮ ঘন্টার নিত্যদিনের এই অংশটিতে নিজের ভালো লাগার ও নিজস্বতার স্পর্শ না থাকলে জীবনের অর্ধেকটাই বৃথা (কারণ আরো প্রায় ৮ ঘন্টা চলে যায় ঘুমে!)।



প্রিয়জনের সাথে সময়ঃ পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধবের সাথে সময়টা জীবনের সেরা ও প্রয়োজনীয় সময়।



বিনোদনঃ নিতান্তই অলস কিংবা হুল্লোড় করার সময়, ঘোরাঘুরি, মুভি দেখা বা অবসরে যা কিছু ভালো লাগার এমন কিছু করা। হতে পারে নিয়ম ভাঙ্গা। তবে এ নিয়ম ভাঙ্গাও হতে হয় নিয়ন্ত্রিত। কারণ জীবনে অনিয়মটাও একটা নিয়ম মেনে চলে, এখানেই নিয়মের আধিপত্য!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:১২

পাঠক১৯৭১ বলেছেন: মৃত্যু নিয়ে কোন দর্শন নেই, সেলের মরণ আছে।

২| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:৫১

কসমিক- ট্রাভেলার বলেছেন:



ভিজিট করুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.