নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছাইয়ের নেই আগুনের ভয়

জুলিয়ান সিদ্দিকী

জগতের সব কাজই আমি পারি না। অনেক কাজে অলস হলেও লিখতে কখনও ক্লান্তি বোধ করি না। এতে করে আমার সময়গুলো ভালো কাটে।

জুলিয়ান সিদ্দিকী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটোগল্প _ ক্ষত

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:১০





(ফোটো-গুগুল)


বলা যায় চোখের দেখাতেই রেহানার রূপে মজেছিল আরেফিন। কিন্তু এ যে মাকাল ফল হবে, আগে থেকে কী করেই বা জানবে সে। টিয়া পাখির সবুজ গাত্রাবরণ আর লাল ঠোঁটের আড়ালে বোঝা কঠিন যে, সে দেহে কোনো মরণ ব্যাধি বাসা বেঁধে আছে আছে কিনা। রোগের বিস্তার ততক্ষণ বোঝা যায় না, চিকিৎসক তা পরীক্ষা করে যতক্ষণ বলে না দিচ্ছেন।

ঠিক তেমনই হয়তো আরেফিন বুঝতে পারেনি মাদার কাঠ দিয়ে শক্ত-পোক্ত কোনো আসবাব হয় না। বার্নিশের চাকচক্যের আড়ালে গোপনে আত্মগোপন করে থাকে প্রকৃত কাঠের পরিচয়। জাঁকজমকপূর্ণ সাজ-পোশাকের আড়ালে লুকিয়ে থাকা নারী বুড়ি কি ছুড়ি হঠাৎ দেখে ঠাহর করতে পারে না যৌবনের উন্মাতাল রক্ত তঞ্চনে অস্থির কোনো যুবক।

বিয়ে বাড়িতে দেখা টসটসে গোলাপি ঠোঁটের ফাঁকে ঝকঝকে দাঁতের ঝিলিক আর প্রসাধনের চমকে আরেফিন ভুলে গিয়েছিল যে, সব ঝিনুকের পেটেই মুক্তা থাকে না। কোনো কোনো ঝিনুক, যারা মৃত, তাদের বাইরের খোলসটা ছাড়া আর কিছু থাকে না।

মাঝরাতে নিবিড় ঘুমে বিচিত্র শব্দে নাক ডাকতে থাকা রতি-ক্লান্ত নববধূর দিকে তাকিয়ে এমন অনেক কিছুই মনে হচ্ছিল আরেফিনের। বিত্তশালী বাপের আইবুড়ো মেয়ে যেহেতু কুমারী, নিশ্চয় সে বিয়ে করে ভুল করেনি। যদিও প্রবাসে দেহজ ক্ষুধা নিবারণের অবাধ সুযোগের ভেতর স্বদেশের মেয়ে ছাড়া ভিনদেশী বিয়ে করতে মন থেকে কোনো সাড়া পায়নি।

অবিবাহিত আর কুমার পুরুষের পার্থক্যটা বেশিরভাগ মানুষই হয়তো বুঝতে পারেন না। এমন কি কুমারত্বের চেয়ে অবিবাহিত কথাটাতেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। নিজের ভুল বুঝতে পারলেও আরেফিন এও বুঝতে পারছিল যে, নারকেল গাছের সব নারকেলেই শাঁস হয় না। কোনোটা শাঁস বা পানিশূন্যও হতে পারে।

ছোটবেলা একবার নানার বাড়িতে সমবয়সীদের পাল্লায় পড়ে তামাক ব্যাপারী মকবুলের গাছ থেকে সাতটা ডাব চুরি করেছিল। জনপ্রতি একটি করে ডাব ভাগে পাওয়া গিয়েছিল। বাড়ি ফিরে ডাবটি কাটার পর দেখতে পেয়েছিল, ভেতরটা খটখটে শুকনো।

চোখের দেখাটাই যে সবটা নয়, সে কথাটা চুরি বিদ্যার প্রভাবে সেই ছোটবেলাতেই শিখে গিয়েছিল সে। আজও সে সেই পুরোনো শিক্ষাতেই যেন দীক্ষিত হয়েছিল নতুন করে। একবার ঘুমন্ত স্ত্রীর দিকে ভালো করে তাকিয়ে নিজেকে ধিক্কার দিতে দিতে বিছানা থেকে নেমে জানালার পাশে গিয়ে দাঁড়ায় আরেফিন।

প্রবাস জীবনের যাবতীয় সঞ্চয়ের বড় একটা অংশ দিয়ে তিনরুমের এ ফ্লাটটি কিনেছিল। ভেবেছিল, নিজের ফ্লাটে নতুন করে একটি দেশীয় জীবন যাপন করবে। কিন্তু কেন যেন তার মনে হচ্ছে, যে জীবনটা সে যাপনের উদ্দেশ্যে দেশে ফিরে এসেছিল তা হয়তো আর হবে না।

ঘরের বাতিটি নিভিয়ে দিতে জানালার কাছ থেকে সে ফিরে আসে। ফের একবার স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে চমকে ওঠে। সে কি সত্যি সত্যিই কোনো বুড়ি বিয়ে করে ফেলল? অবশ্য আরিফ একবার ফোনে বলেছিল বার্থ-সার্টিফিকেট দেখে নিতে। আইবুড়ো কথাটার মানে সময়মতো বিয়ে না হওয়াটাই শুধু নয়, সে বয়সটা নব্বই হতে পারে আবার চল্লিশও হতে পারে। এখন সে বুঝতে পারছিল যে, আরিফের কথাটাকে ইয়ার্কি মনে করাটা মোটেও ঠিক হয়নি।

অতৃপ্ত, বিক্ষিপ্ত আর অনুতপ্ত আরেফিন ঘরের বাতি নিভিয়ে দিয়ে ফের জানালার পাশে হেঁটে যায়। অন্ধকার ঘরের জানালার পর্দা সরিয়ে বাইরের দিকে তাকায় সে। আজকাল আকাশছোঁয়া আবাসিক বহুতল বাড়িগুলো একেবারেই অন্ধকারে ছেয়ে যায় না। কোথাও না কোথাও আলো জ্বলতেই থাকে। এমন কি মনের গহীনে গহন আঁধারের নিষ্ঠুর উল্লাস থাকলেও জোনাকির মতো বিন্দু বিন্দু আলো কোথাও না কোথাও ফুটেই থাকে রাতভর।

জানালার একটি অংশ খুলে দিতেই মধ্য ফেব্রুয়ারির শীতল আর মিষ্টি বাতাসের আদরে গলে যেতে চায় আরেফিন। কিন্তু তার বদলে আরো বিক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে তার মন। মনে পড়ে যে, বিয়ের প্রাথমিক প্রস্তাব পেয়েই রাজি হয়ে গিয়েছিল মেয়ে পক্ষ। এমন কি তার ব্যক্তিগত কোনো খোঁজখবরের প্রতিও তাদের কোনো আগ্রহ দেখা যায়নি। এমন কি তাদের গ্রাম বা পূর্বপুরুষের ব্যাপারেও কোনো জিজ্ঞাসা ছিল না তাদের। জন্ম-পরিচয়হীন আরেফিন বরং মনেমনে একটি গল্প বানিয়ে রেখেছিল। তাদের ব্যাপারে জানতে চাইলে ট্রলার ডুবিতে বাবা-মা-ভাইবোন নিখোঁজ হবার কাহিনীটা বলবে। কিন্তু এ নিয়ে মেয়ে পক্ষের কোনো আগ্রহ ছিল না, যতটা আগ্রহ ছিল বিয়ের তারিখটা কবে হবে তা নিয়ে। আর তাই হয়তো প্রস্তাবের পরদিনই ছেলে-মেয়ের একান্তে সাক্ষাৎ ও আলাপের ব্যবস্থা করেছিল তারা।

কথা ছিল, আরেফিন যেখানেই মেয়ের সঙ্গে আলাপ করতে চায়, তারা সেখানেই ব্যবস্থা করবে। তেমন একটা সুযোগ পেয়েই পদ্মা রিসোর্টে নিয়ে গিয়েছিল রেহানাকে। অবশ্য সঙ্গে রেহানার দুটো ভাইও ছিল সঙ্গে। একটির বয়স আঠারো-উনিশ, আরেকটি বারো কি তের। আরেফিন সেদিন তাকে বলেছিল যে, বিয়ের পর তাকে যদি কানাডায় নিয়ে যেতে চায়, তো সে যাবে কিনা।

সে ভেবে রেখেছিল, বাংলাদেশের যে কোনো মেয়েই আমেরিকা-কানাডা যাবার সুযোগ পেলে না করবে না কোনোদিন। কিন্তু তাকে অবাক করে দিয়ে রেহানা বলেছিল, নাহ, সম্ভব না।

- কেন, কোনো সমস্যা?

- হ্যাঁ। আমার পিচ্চি ভাইটা ইমানকে দেখলেন না? আমাকে ছাড়া সে থাকতে পারে না। আমিও তাকে ছেড়ে থাকতে পারবো না। তার বড় ঈশানও আমার অনেক ন্যাওটা।

- একই সঙ্গে বউ আর শ্যালকদের জন্যে অ্যাপ্লাই করবো কিভাবে?

অবাক হয়ে বলেছিল আরেফিন। কিন্তু রেহানাও নির্বিকার ভাবে বলেছিল, তাহলে বিয়েটা হবে না। নয়তো আমার কানাডা যাওয়া হবে না।

রেহানার কথা শুনে আর কিছু ভাবতে পারেনি আরেফিন। তবু বলেছিল, বছর তিনেক তাকে কোথাও রাখবার ব্যবস্থা করা যাবে না?

- না। সম্ভব হবে না।

- এমন কোনো আত্মীয়-স্বজন নেই যাদের কাছে রাখা যাবে?

রেহানা বলেছিল, মা মারা যাবার পর থেকে তারা আমার কাছেই আছে।

- অ।
আগ্রহ হারিয়ে আরেফিন প্রসঙ্গ বদলে বলেছিল, তারা করছে কি, পড়াশুনা?

- বড়টা ইন্টার পরীক্ষা দেবে মার্চে। ছোটটা সবে পিএসসি পাশ দিয়ে হাইস্কুলে ভর্তি হলো।

- হুম!
বলে, খানিকটা ভেবে নিয়ে আরেফিন বলেছিল, আমারও ছুট আর বেশিদিন নেই। স্পাউজের জন্য যদ্দিন অ্যাপ্লাই করতে না পারছি ততদিন অবশ্য সমস্যা হবে না। কিন্তু পরে আবার...

মাঝ পথেই বাধা দিয়ে রেহানা বলে উঠেছিল, পরেরটা পরে। আগে তো বিয়েটা হোক। বিয়েটা না হলে অতটা দুশ্চিন্তার কী বা ফল?

- তা অবশ্য ঠিক!
বলেই, বোকার মতো হেসে উঠেছিল আরেফিন। রেহানার ভাই দুটোর দিকে তাকিয়ে ভাবছিল যে, তার ভাবী শ্বশুরকে দেখে যতটা বয়স্ক মনে হয়, সে তুলনায় তার ছোট ভাইটার বয়স খুব কমই মনে হয়। একবার ইচ্ছে হয়েছিল জিজ্ঞেস করে যে, তার মা যখন মারা যান তখন তার বয়স কত ছিল? তিনি কি দ্বিতীয় বা তৃতীয় স্ত্রী ছিলেন? কিন্তু তখনই মনে মনে হাল ছেড়ে দেবার ভঙ্গিতে বলে উঠেছিল, আচ্ছা, ঠিক আছে। আগে বিয়ে, তারপর অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা।

ভাবতে ভাবতে একটি সিগারেট ধরাতে ইচ্ছে হয় আরেফিনের। সঙ্গে একটি বিয়ার হলে খুব ভালো হতো। অবশ্য পাশের রুমে দুটোই আছে। সে ইচ্ছে করলে ওখানে গিয়েই পান পর্ব সেরে ফেলতে পারে একই সঙ্গে। কিন্তু হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলে রেহানা তাকে দেখতে না পেলে ভয় পেতে পারে।

মনে মনে নানা রকম যুক্তি সাজায় সে। তারপর কী মনে করে পাশের রুমটাতে ঢুকে পড়ে দরজা বন্ধ করে ভেতরের লাইটটা জ্বালিয়ে দেয়।


খুবই ক্লান্ত দেখায় রেহানাকে। যেন এক রাতেই তার বয়স আরো পনের বছর বেড়ে গেছে। অবাক হয়ে আরেফিন ভাবে, এও কি সম্ভব? তাহলে কি রেহানা নিজেও এ বিয়েতে সুখী নয়?

আরেফিনকে তার দিকে নির্নিমেষ তাকিয়ে থাকতে দেখে রেহানা বলে, কিছু বলবেন?

কথা শুনে চমক ভাঙে আরেফিনের। বলে, নাহ, কিছু না।

- তাহলে ওভাবে দেখছিলেন কী?

- ভাবছিলাম, আপনার ভাই দুটি করছে কি এখন? ফোন-টোন করেছিলেন?

- কী আর করবে? হয়তো পড়াশুনায় ব্যস্ত আছে। বলেই হেসে ওঠে রেহানা।

- হাসছেন কেন? অবাক হয়ে জানতে চায় আরেফিন।

- বউকে কেউ আপনি আপনি করে? এই প্রথম শুনলাম। তাও আবার সভ্য দেশে থাকা কোনো মানুষের মুখে! বলে, আরো বেশি করে হাসতে থাকে রেহানা।

আরেফিন কী বলবে ভেবে পাচ্ছিল না। তারপরও গতরাতে যে ভাবনাগুলো তার মাথায় ঘুরেফিরে আসছিল, সেগুলোর রেশ কাটিয়ে উঠতে পারছিল না। তাই হয়তো কথায় কথায় তার মুখ ফসকে বেরিয়ে আসে, শাশুড়ি মারা যাবার পর শ্বশুর সাহেব আবার বিয়ে করতে পারতেন।

আরেফিনের কথা শেষ হতে না হতেই রেহানার মুখটা কেমন এক বিষাদে ছেয়ে যায়। সেই বিষাদ মাখা মুখটার দিকে তাকাতে খুব খারাপ লাগছিল তার। তাই আবার বলে, না বুঝেই হয়তো আপনাকে দুঃখ দিয়ে ফেললাম।

- নাহ। দুঃখ পাবার কী আছে!

বেশ শব্দ করেই একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে রেহানা। তারপর বলে, সুখ-দুখ ব্যাপারটা রক্তের সঙ্গেই মিশে থাকে। মানুষের গায়ে রক্ত না থাকলে যেমন বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে, তেমনি হয়তো খানিকটা দুঃখ না থাকলে জীবনটা একঘেয়ে আর পানসে মনে হতে পারে।

- বাহ, বেশ বলেছেন তো! এভাবে কোনোদিনই ভাবতে পারবো না আমি। অবসরে কি খুব বই-টই পড়েন? খুব বেশি পড়াশুনা থাকলে মানুষ এভাবে ভাবতে পারে।

- পড়াশুনার সুযোগ আর পেলাম কোথায়। জীবনটাকে এমনি এমনিই খরচ করে ফেললাম।

- তা তো আর আপনার দোষে ঘটেনি!

রেহানা সঙ্গে সঙ্গেই আরেফিনের কথার জবাব না দিয়ে মনে মনে ভাবে, দোষ তো আমারও আছে। একজনের দোষ থাকলে কি আর এতটা সমস্যা হতো? তাকে শোধরানো যেতো। কিন্তু নিজের দোষটা আগে চোখে পড়লো না বলেই জীবনটা আবার এলোমেলো হয়ে গেল আবার।

রেহানার নীরবতা আরেফিনের ভালো লাগে না। বলে, কিছু বলছেন না যে?
- বলার কিছু নেই, তো কী আর বলব? সবই আমার ভাগ্য।

- আপনার খুব একা লাগলে ভাই দুটোকে চলে আসতে বলে দিচ্ছেন না কেন? ওরা এলে হয়তো আপনার ততোটা খারাপ লাগবে না। আমাকে একবার বাইরে যেতে হবে। তখন হয়তো একা একা কষ্ট পাবেন।

- আমি যদি আপনার সঙ্গে যাই?

- ব্যাপারটা তেমন নয়। অনেক জায়গায় যেতে হবে আমাকে। নানা রকম মানুষ। আপনাকে সেখানেও হয়তো একা একা বোর হতে হবে।

আসলে আরেফিনের ভালো লাগছিল না। রেহানার সামনে থেকে কিছুক্ষণ দূরে থাকতে পারলে হয়তো একান্ত ভাবনার কিছুটা সুযোগ পেতো।

রেহানার কেন যেন মনে হচ্ছিল, আরেফিন আসলে তার সামনে থেকে পালাতে চাচ্ছে। হতে পারে তার সঙ্গটা ঠিক উপভোগ করতে পারছে না। একজন কম বয়স্ক পুরুষ তার স্ত্রীর কাছ থেকে যতটা চাপল্য প্রত্যাশা করে, একজন প্রায় প্রৌঢ়া নারী তা কখনো দিতে পারবে না। আসলে আরেফিনকে ফাঁদে ফেলে বিয়ে করাটা হয়তো মেটেও ঠিক হয়নি। যে কারণে নিজেকেও সে উজাড় করে দিতে পারছে না।

গ্রামের বাড়িতে বয়স্ক বাবা কখন খাচ্ছে, কখন ঘুমাচ্ছে, ঠিকমতো ওষুধ-বড়ি খাচ্ছে কিনা কে জানে। তার বোনদের কেউ সেখানে আছে কিনা তাও বলতে পারছে না। সকাল থেকেই বিদ্যুৎ নেই বলে ফোনটাও চার্জে দিতে পারছে না। অবশ্য ইচ্ছে করলে আরেফিনের ফোন থেকেও একটা কল করা যেতো। কিন্তু সে নিজেই চাচ্ছে না যে, আরেফিনের কাছে তার বোনদের কারো নাম্বার থাকুক। বলা যায় না কে কখন মুখ ফসকে চরম সত্যটা প্রকাশ করে ফেলবে। তখন নতুন করে আরেকটা জটিলতা র সৃষ্টি হবে। তাই হঠাৎ করেই সে বলে ওঠে, বাইরে কোনো কাজ থাকলে আপনি যান না। সেই ফাঁকে আমি না হয় বড় আপার ওখানে চলে যাবো। তা ছাড়া এমনিতেও তো আমরা আজ বাবার ওখানে যাবার কথা। আপনি আপনার কাজ সেরে বাবার ওখানে চলে যাবেন। আমি চলে যাবো আপার ওখান থেকে।

- তা অবশ্য করা যায়। তা হলে আপনার ভাই দুটোকে আসতে বলে দেন। তাদের সঙ্গে চলে যাবেন। কাজ সেরে সন্ধ্যার দিকে আমিও চলে আসবো।

- সেটাই ভালো হবে।

মুহূর্তেই যেন রেহানার মুখ থেকে অন্ধকার ভাবটা অদৃশ্য হয়ে যেতে দেখে আরেফিন।

- তাহলে আমি তৈরি হয়ে এখনি বের হচ্ছি।

বলে, আরেফিন পাশের রুমে গিয়ে চট করেই যেন তৈরি হয়ে আসে। বলে, চলেন, বাইরে থেকে নাস্তা করে আসি। মনের ভুলে ঘরে নাস্তা বা খাবারের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। আপনিও চট করে তৈরি হয়ে নেন। আমার বেশ খিদে পেয়েছে।

তৈরি হতে বেশি সময় লাগে না রেহানার। চুলটাকে গুছিয়ে নিয়ে মুখে হালকা প্রসাধন লাগিয়ে বলে, আমি রেডি।

দুজনে একসঙ্গে বের হয়ে দরজা লক করে দিয়ে লিফটের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।

হাতের চাবির গোছা থেকে একটি চাবি বের করে রেহানার কাছে দিয়ে আরেফিন বলল, আপনার কাছেও একটা চাবি থাকা দরকার।

চাবিটা হাতে নিয়ে রেহানা পার্সে রাখতে রাখতেই লিফটের দরজা খুলে যায়। দুটো অচেনা মানুষ বের হয়ে তাদেরকে পাশ কাটিয়ে পাশের ফ্লাটের দরজায় গিয়ে দাঁড়ায়।

আরেফিন আগে আগে লিফটে চড়ে বলে, চলে আসেন।

লিফটে ঢুকে আয়নার মতো স্বচ্ছ দেয়ালে নিজের প্রতিবিম্ব দেখতে পেয়ে হঠাৎ চমকে ওঠে রেহানা। একবার আরেফিনের দিকে তাকিয়ে ফের নিজের দিকে তাকায়। সে সঙ্গে ভেতরে ভেতরে কুকরে যেতে যেতে ভাবে যে, এমন ভেঙে পড়া রূপ-যৌবন দিয়ে আরেফিনকে কিছুতেই বেঁধে রাখা যাবে না। তা ছাড়া আরেফিনের পাশে স্ত্রী হিসেবে তাকে কেউ মেনে নিতে পারবে না সহজে। এমনকি তাড়াহুড়ো করে বিয়ে করলেও ভুলটা বুঝতে দেরি হবে না তারও। আর তখনই শুরু হবে মূল সংকট।

ভাবতে ভাবতে নিজের প্রতিবিম্বের দিকে তাকাতে সাহস পায় না রেহানা। মাথা নিচু করে রাখে যাতে প্রতিবিম্বে আর চোখ না পড়ে।

কাছাকাছি একটা ভালো রেস্টুরেন্ট আছে। ওরা হেঁটেই সেখানে পৌঁছে যায়। দেয়ালের পাশে একটি শূন্য টেবিল দেখে বসে পড়ে আরেফিন। কিন্তু এগিয়ে গিয়ে আরেফিনের মুখোমুখি বসতে সাহস হয় না রেহানার। একটি চেয়ার বাদ দিয়ে পাশের চেয়ার টেনে বসে সে। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মেনু হাতে ছুটে আসে ওয়েটার। আরেফিনের দিকে ঝুঁকে পড়ে একটি মেনু বাড়িয়ে ধরে বলে, ভাইয়া, কী দেবো? তারপর দাঁড়িয়ে পড়ে রেহানাকে বলে, আন্টি, আপনার আলাদা চয়েস থাকলেও বলবেন।

ওয়েটারের কথা শুনে মরে যেতে ইচ্ছে হয় রেহানার। না তাকিয়েও সে স্পষ্ট বুঝতে পারছিল যে, আরেফিন তার দিকেই তাকিয়ে আছে। সম্ভব হলে সে পালিয়ে যেতো এখান থেকে।

অবশ্য আরেফিনের চোখ রেহানার দিকে ছিল না। ওয়েটারের কথা শুনে তারও মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল বলে, সে ইচ্ছে করেই মেনুর দিকে ঝুঁকে পড়েছিল বেশি করে। মেনু দেখার ভান করছিল, রেহানা যাতে কোনো রকম অস্বস্তিতে না পড়ে। আর তাই ঝটপট অর্ডার দিয়ে বলে, দুজনের জন্যই নিয়ে আসেন।

রেহানার মনে হয় আরেফিনের কণ্ঠে ভিন্ন রকম একটা স্বর। যা স্বাভাবিক বলে মনে হলো না।


ঠিক কোথাও যেন সমানে সমানে মিলছিল না। আরেফিনের মতে ক্লিক করছে না। দুদিনেই যেন হাঁপিয়ে উঠেছে। মনটা কেমন পালাই পালাই করছিল। সে যখন একটা ভুল করেই ফেলেছে, তার খেসারত তাকেই দিতে হবে। অযথা রেহানাকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। ঈশান আর ইমানের ব্যাপারে যে রেহানা মিথ্যে বলেছিল তা নিয়ে কোনো রকম বাড়াবাড়ি করতে ইচ্ছে হয়নি তার। তারপরও অনেক ভেবেছে, একবার বলতে পারতো যে, নিজের গর্ভজাত সন্তান দুটোকে ভাই বলে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল তার বিয়েটা যাতে না ভাঙে? একবারও কি ভাবনা হয়নি, এত বড় একটা মিথ্যেকে বেশিদিন চাপা দিয়ে রাখা যাবে না?

অবশ্য প্রবাসীদের সঙ্গে নানা রকম প্রতারণার গল্প অনেক শুনেছে সে। পত্রিকায় পড়েছে। এমন কি একবার প্রীতম বলেছিল যে, লোভের বশে কোনো কোনো পুরুষ নিজের স্ত্রীকে প্রবাসীর পেছনে লেলিয়ে দেয় প্রেমিকা সাজিয়ে। এক সময় ঘটা করে বিয়েও দেয়। স্ত্রীর প্রবাসী স্বামীটা দেশে এলে নিজের স্বার্থেই দূরে সরে থাকে স্থানীয় স্বামীটা। ছুটি কাটিয়ে প্রবাসী স্বামীটা প্রবাসে ফিরে গেলে ফের নিজেদের সংসারে থিতু হয় তারা। কখনো যদি শোনে যে, প্রবাসী স্থায়ীভাবে দেশে ফিরে আসছে। তখনই নতুন করে নাটক সাজায় তারা, পরকীয়ার গল্প নয়তো অন্যের হাত ধরে পালিয়ে গিয়ে টাকা-পয়সা আত্মসাৎ করা।

আসলে একজন প্রবাসী খুব বেশি কিছু জানে না বলে তাকে ঠকানোটা অনেকের জন্যেই সহজ। প্রবাসীর টাকায় স্ফূর্তি করতে অতটুকু হৃদয় কাঁপে না সেসব নারী-পুরুষদের। ইউটিউবে সে দেখেছে, পতিতা পল্লীর কারো কারো স্বামী-সন্তান থাকে। রাতের বেলা কোনো খদ্দের এলে, স্বামী-সন্তান বাইরে গিয়ে অপেক্ষা করে। তাদের ভদ্রতার মুখোশ নেই বলে, তাদের গল্পগুলো বাইরের মানুষ জেনে যায়। কিন্তু ভদ্র-পল্লীর সে সব নোংরামির কাহিনী বাইরের খুব কম মানুষই জানে। আর তাই হয়তো তাদের মুখোশটা সহসা খুলে পড়ে না বা তাদের প্রকৃত চেহারাটা সমাজের চোখে তেমন একটা পরিচিতি লাভ করে না।

আরেফিনের মনে এমনই নানা বিচিত্র গাল-গল্প আর সংবাদপত্রের কাহিনীগুলো তাড়া খাওয়া ইঁদুরের মতো দৌড়-ঝাপ করে তাকে ক্রমশ অস্থির করে তুলছিল। সে ভেবে পাচ্ছিল না যে, রেহানার সঙ্গে বিষয়টা নিয়ে কীভাবে আলাপ শুরু করবে। তাকে ঠকিয়ে বিয়ে করবার ব্যাপারটা খুব বেশি আহত করতে পারেনি তাকে। যতটা আহত করেছিল রেহানার নিজের দু সন্তানকে ভাই বলে পরিচয় করিয়ে দেওয়াটা। আসলে তার কাছে কোনটা জরুরি ছিল বিয়ে, নাকি একটা স্বামী আছে তা অন্যকে বলতে পারা?

অথচ দীর্ঘ আট বছর ধরে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও স্বামী-স্ত্রীর মতো এক ছাদের তলায় থেকে স্ত্রীর দাবী প্রতিষ্ঠায় কোনোদিন মরিয়া হয়ে ওঠেনি জিনিয়া। আফ্রো-আমেরিকান মেয়েটিকে কখনো বুঝতে চেষ্টা করেনি সে। জিনিয়াও কোনোদিন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়নি ব্যাপারটা। ভেবেছিল ভিন্ন সংস্কৃতি আর ভিন্ন জাতির মেয়ে জাতির মেয়ে জিনিয়ার চেয়ে তার নিজের দেশের মেয়েরাই অনেক নির্ভরযোগ্য হবে। কিন্তু স্বজাতির মাঝেই যে ভেতরে ভেতরে অতটা পচন ধরে গেছে, দেশে না এলে হয়তো বুঝতেই পারতো না আরেফিন। শেষটায় নিজেকেই যেন সান্ত্বনা দেবার ভাষা খুঁজে পায় না সে।

রেহানার বড় ছেলে ঈশান বলেছিল, অনেকদিন হয়ে গেল, তার বাবাও আরেকটি বিয়ে করেছে। মায়ের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে।

- তাহলে তোমরা কেন বাবার কাছে থাক না? বাবা কি মানা করেছে?
কথায় কথায় বলেছিল আরেফিন।

ঈশান বলেছিল, বাবার এখন অনেক অভাব। খাওয়া-পরার কষ্ট হয় বলে মা কসম দিয়ে বলেছে বাবার সঙ্গে সম্পর্ক না রাখতে।

- তাহলে কি ভালো খাওয়া-পরার লোভেই তোমরা মায়ের কথায় রাজি হয়ে গেলে?

ঈশান কেমন স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়েছিল আরেফিনের দিকে। তারপর বলেছিল, মা কসম দিয়েছে। মাকে কষ্ট দিতে মন চায় না।

- বাবার মনে কষ্ট দিতে আছে, না?

খানিকটা রূঢ় কণ্ঠেই বলেছিল আরেফিন। তারপর আবার বলেছিল, তুমি তো পড়াশুনা করছ, এ কথাটা কোথাও পাওনি যে, পিতার আনন্দে ঈশ্বর খুশি?

- কিন্তু আমি তো পড়েছি মায়ের পায়ের নিচে বেহেশতের কথা!

অবাক হয়ে বলেছিল ঈশান।

- সেটাও ঠিক আছে।

বলেছিল আরেফিন। সঙ্গে সঙ্গে আরো বলেছিল, জন্ম দিলেই যেমন পিতা হওয়া যায় না, গর্ভে ধরলেই মা হওয়া যায় না।

ঈশান হঠাৎ ছটফট করে বলে উঠেছিল, এ বিষয়টা নিয়ে কথা বলতে ভালো লাগছে না। মা বলছিল, আপনি তাকে কানাডা নিয়ে যাবেন। মা গিয়ে আমাদের দু ভাইকেও নিয়ে যাবে সেখানে।

- তাই?

- হ্যাঁ।

- বেশ তো! তাহলে তোমার নানাভাইকে কে দেখাশুনা করবে?

- খালামনিরা। অবশ্য মায়ের ভালো একটা কিছু হয়ে গেলে নানাভাইকে ওলড-হোমে দিয়ে দেবে।

সেই থেকে আরেফিনের মনটা তেতো করল্লা হয়ে আছে। কিছুতেই মন বসাতে পারছিল না।

রেহানা তার দিকে চোখ রেখে বলে ওঠে, কিছু নিয়ে ভাবনা হচ্ছে? আজ তো আমরা বাবাকে দেখতে যাবার কথা। তাই না?

- কথা অনেক রকমই থাকে। কিন্তু পরিস্থিতি কি সব সময় এক রকম থাকে?

সকাল থেকে জিনিয়াকে খুব মনে পড়ছে, কথাটা অনেক চেষ্টা করেও বলতে পারেনি রেহানাকে। মনে মনে সে ঠিক করে ফেলেছে রেহানার সঙ্গে আর একটি দিনও নয়। প্রতারণার বিনিময়ে প্রতারণা করবে না সে। রেহানা যাতে সবার কাছে ফ্যালনা হয়ে না যায়, সে জন্যে ফ্লাটটা তার নামে করে দিয়ে এসেছে। রেহানা যদি আবার বিয়ে করতে চায় বা অন্য কাউকে বিয়ের জন্য নতুন করে ফাঁসাতে ইচ্ছে হয়, তাহলে ফ্লাটের মালিকানা দেখিয়ে লোভী আর নির্বোধ কাউকে হয়তো পেয়ে যাবে।

নীরবতা ভেঙে রেহানা ফের বলে ওঠে, কিছু বললেন না তো?

- কী যেন বলছিলেন?

দৃষ্টিতে জিজ্ঞাসা ফুটিয়ে তাকিয়ে থাকে আরেফিন।

- আজ আমাদের যাবার কথা।

- কোথায়?

- বাবার বাড়ী।

- হ্যাঁ হ্যাঁ, যাবো তো।

খানিকটা অন্যমনস্ক ভাবে বলে ওঠে আরেফিন।

তার ফ্লাইট কনফার্ম করা আছে। রাত দুটো বিশ মিনিটে। রেহানাকে তার বাবার বাড়ি রেখে এসেও সে সময় মতোই বিমানে উঠতে পারবে। তবে, একটা আক্ষেপ তার থেকেই যাবে। মনের গায়ে একটা ছোট্ট ক্ষত নিয়েই তাকে ফিরে যেতে হচ্ছে। যেটা জিনিয়ার কাছে প্রকাশ করতে পারবে না কোনোদিন। জগতের কোনো আনন্দ দিয়েও নিরাময় করা যাবে না সে ক্ষত।

-------

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:২১

ওমেরা বলেছেন: গল্পটা বাস্তব !! আমাদের এখানে থ্যাইল্যান্ডীরা এরকম করে ,স্বামী সন্তান রেখে সুইডিশ বিয়ে করে এখানে আসে, এখানে পার্মানেন্ট হয়ে যাওয়ার পর ডিভোর্স দিয়ে নিজের স্বামী সন্তানকে নিয়ে আসে। বাংলাদেশীদের অনেক কিছু শুনলেও এটা এখনো শুনিনি ।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৩৩

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ ওমেরা।

যে কোনো গল্পই কোথাও কখনো অনেকটা সত্যির সঙ্গে মিলে যায়। তাই বলে এভাবে মিলে যাবে?

এবারও লিখতে পারলাম না একটা কাল্পনিক গল্প।

ভালো থাকুন সব সময়।

২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:২৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


খুবই সাম্প্রতিক বাংলার ভয়ংকর এক কষ্টকে একটি বলিষ্ট প্লটের মাঝে এনেছেন।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৩৪

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ চাঁদগাজী।
ভালো থাকুন সব সময়।

৩| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ভোর ৪:৫৪

মলাসইলমুইনা বলেছেন: জুলিয়ান ভাই, ভালো হয়েছে | জীবনের জটিলতার (কুটিলতার কি ?) সুন্দর গল্প | এর কাছাকাছি কিছু ঘটনা আমিও শুনেছিএখানে আসার পর |

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:২৭

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ নাইমুল ইসলাম।

জীবন কোথাও কোথাও কুটিল তো বটেই, কোথাও কোথাও খুবই নোংরা। সভ্যতা আর সামাজিকতার আবরণে ঢাকা পড়ে থাকে।

ভালো থাকুন সব সময়।

৪| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: প্রিথিবীর কোথাও কি শান্তি নাই?

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:২৯

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর।

শান্তি নাই, শান্তি নাই।

ভালো থাকুন সব সময়।

৫| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৫২

চাঁদগাজী বলেছেন:


ভালো লাগছে, ঋদ্ধ-২'তে আপনার "মুক্তুিযুদ্ধ ও মানসংক" প্রকাশিত হয়েছে।

উহাকে আপনি একটি উপন্যাসে পরিণত করতে পারেন।

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:২১

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ চাঁদগাজী।
এ যে বিশাল ব্যাপার। আচ্ছা সময় সুযোগে অবশ্যই চেষ্টা করবো। কথা দিলাম।

৬| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:৪৩

চাঁদগাজী বলেছেন:



মুক্তিযুদ্ধের উপর নতুন প্লট নিয়ে ভেবে দেখতে পারেন।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:৫৭

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ চাঁদগাজী। সেই ভাবনা তো আছে।

মুক্ত সময়টা ইদানীং কম পাচ্ছি। আগের কটি লেখা এখন টাইপ করছি।
নতুন গল্প লেখার আগে কিছুটা ভাবনা চিন্তা আর পড়াশুনা দরকার। তাই সময় নিচ্ছি।

ভালো থাকুন সব সময়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.