নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছাইয়ের নেই আগুনের ভয়

জুলিয়ান সিদ্দিকী

জগতের সব কাজই আমি পারি না। অনেক কাজে অলস হলেও লিখতে কখনও ক্লান্তি বোধ করি না। এতে করে আমার সময়গুলো ভালো কাটে।

জুলিয়ান সিদ্দিকী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটগল্প- দাসত্ব

০৯ ই মে, ২০১৮ রাত ১০:৩৮


(ফোটো- গুগুল)


বাচ্চু কোচোয়ান তাকে গরিব বলেই ডাকে। অথচ সে ভেবে পায় না কী এমন গরিবি তার মাঝে আছে? এ মহল্লায় এবং আশপাশে তার সমগোত্রের যে কটা প্রাণী আছে, তাদের সবার চেয়ে তার আকৃতি, শক্তি, সাহস আর সৌন্দর্যের দিক দিয়ে সে-ই সেরা। তবু কেন যেন বাচ্চু কোচোয়ান তাকে গরিব বলেই ডাকে সব সময়।

এ নামটি মোটেও পছন্দ নয় তার। আগের মালিক শরিফ মহাজন তাকে ঠিকমতো খেতে থাকতে দিতে না পারলেও যত্ন আর আদর দিয়ে ঠিকই পুষিয়ে দিতো। মহাজনের অবস্থা আগের মতো আর রমরমা নেই। তারপরও লোকজন তাকে ভালোবেসে এখনো ঘোড়ার বাপ বলে ডাকে। ঘোড়ার জাত, স্বভাব-চরিত্র খুব ভালো বোঝে বলে তার সুনাম সেই প্রথম থেকেই।

ব্যক্তিগত জীবনে নিঃসন্তান হলেও এ নিয়ে যেন কোনো দুঃখ বা আক্ষেপ ছিলো না শরিফ মহাজনের। মাঝে মাঝে শরীর দলাই-মলাই করবার সময় বিড়বিড় করে বহুবার তাকে বলতে শুনেছে, তরে ঠিক মতন খাইবার দিবার পারি না বইলা মন খরাব করিস না বাপ! তুই তো জানোস তরে আমার পোলার লাহান পেয়ার করি। পোলারা যেমুন বাপ-মায়েরে কাম-কামাই কইরা খাওয়ায়, তুই ভি আমার কাছে এমুন।

এমন কথা শুনলে মনটা যেন মোমের মতো গলে যেতো গরিবের। গলাটা উঁচু করে বাড়িয়ে দিতো মহাজনের গলার কাছে। এমনটাই ছিল তার কৃতজ্ঞতা জানানোর ধরন।

প্রতিদিন ভোরে, ফজরের নামাজ শেষে মসজিদ থেকে ফিরে মহাজন যখন আস্তাবলের দরজায় মুখ বাড়িয়ে বলতো, খোকন, কেমুন আছস বাপ?

ডাকটা শুনবার জন্যে যেন অধীর হয়ে প্রতীক্ষায় থাকতো সে। মানুষের মুখে একটি বোবা প্রাণীর উদ্দেশ্যে এমন মধুর সম্ভাষণ সত্যিই একটি পরম প্রাপ্তি। অথচ ফেকু বাবুর্চির ছেলে খোকন কোচোয়ানের আসনে বসেই প্রথম সপাং সপাং করে হাতের চাবুকটি দিয়ে কয়েকটি আঘাত করে বলতো, হমুন্দির পো হমুন্দি, মহাজন তরে আমার নাম লিয়া ডাকে ক্যালা? তুই হইলি গিয়া ঘোড়ার বাচ্চা ঘোড়া। জংলী জানোয়ার। আমি হইলাম গিয়া খানদানী বাবুর্চির পোলা। মহাজন হালায় কি বুঝবার পারে না, মানুষের আর জানোয়ারের নাম এক হইবার পারে না?

গরিবের মুখে লাগাম আর গলার বেড়ি টমটমের সঙ্গে বাঁধা না থাকলে হয়তো পেছনের পায়ে জোড়া লাথি মেরে ভেঙে দিতো বাবুর্চির ছেলে খোকনের বুকের হাড়-গোড়। মহাজনের সামনে সারাদিন ভালো মানুষের মুখোশ পরে থাকা এই হারামিটাকে এ পর্যন্ত সে বাগে পায়নি কখনো। কিন্তু খুরের তলায় তারকাটা দিয়ে আটকে দেয়া লোহার নালের মতোই তার মনের ইচ্ছেটাও চাপা পড়ে থাকে। তারপরও সদরঘাট যাবার পথে ইংলিশ রোড পাশ কাটিয়ে যাবার সময় দুবার হ্যাঁচকা টানে গাড়িটা উলটে ফেলেছিল। প্রথমবার তেমন একটা ব্যথা পায়নি শয়তানটা। ছিটকে পড়েছিল একটি ভ্যানের ওপর। দ্বিতীয়বার ফেলতে পেরেছিল কালো রাস্তার ওপর। একটি পা ভেঙে গিয়েছিল। আর সেটাই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে খোকনের বাকি জীবনে।

গরিব আরো ভাবে যে, যাদের মস্তিষ্ক আছে তাদের সবার ভাবনাই এক। কেবল শিক্ষা, অভিজ্ঞতা আর প্রকাশ ভঙ্গির কারণেই ভাবনা-চিন্তার ভিন্নতা দেখতে পায় মানুষ। যে মানুষ যত বেশি শিক্ষিত তার ভাবনা-চিন্তাতেও কুটিলতা কম। অশিক্ষিত মানুষ কুটিল আর অসৎ বেশি হয়। মানুষরা কি ঘোড়াদের ভাবনা বুঝতে পারে? অবশ্যই পারে না বলেই গরিবের ধারণা। নয়তো মানুষরা যাদের জানোয়ার বলে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে তাদের চেয়ে অনিয়ম, অনাচার আর অনৈতিক কর্মকাণ্ড বেশি পরিমাণেই আছে মানুষের ভেতর। অথচ সভ্য বলে কত অহংকার তাদের। নানা রঙের পোশাকে ঊর্ধ্বাঙ্গ আর নিম্নাঙ্গ আড়াল করলেই যদি সভ্য হওয়া যেতো, তাহলে যাদের পুচ্ছ আছে তারা সবাই জানোয়ার বলে চিহ্নিত হতো না।

হঠাৎ বাচ্চু কোচোয়ানের গলার স্বর শুনতে পায় গরিব। হেই, হ্যাট, হ্যাট! ডাইনে, ডাইনে!

লাগামের ডান দিকের রাশে টান পড়ে আর বাঁয়ের রাশ ঝাঁকি খায় ঘনঘন। গোলাপ শাহ’র মাজার থেকে সদরঘাট পর্যন্ত যাত্রী তুলবার আশায় বসে আছে বাচ্চু কোচোয়ান। মাঝেমাঝে শোনা যায় এমন ব্যস্ত সড়কে ঘোড়ার গাড়ি বা টমটম চালানো ঝুঁকিপূর্ণ। কোনদিন তা বন্ধ হয়ে যায় ঠিক নেই। এমন কথা প্রথমবার শুনতে পেয়ে বেজায় ভয় পেয়েছিল গরিব। টমটম না চললে বাচ্চু খাবে কী? আর বাচ্চু খাবার না পেলে তার খাবারও জুটবে না। কিন্তু এ পর্যন্ত তেমন খারাপ কিছু ঘটেনি। আরো বাহারি টমটম আর ঘোড়ার গাড়ি নেমেছে রাস্তায়। যেদিন হরতাল হয় সেদিন তার পরিশ্রমটা বেশি হয়। সেদিন বাস-সিএনজি চলে না। রিকশায় বেশি যাত্রী আঁটে না বলে টমটম আর ঘোড়ার গাড়িতেই যাত্রীদের আগ্রহ বাড়ে তখন। বাচ্চুর আয়-রোজগার বেশি হলে খাবারটাও ভালো জোটে। ভরপেট খেতে পায় দু বেলা।

পিঠের ওপর ঝপাং করে চাবুক পড়তেই ছুটতে আরম্ভ করে গরিব। শহরের পাকা রাস্তায় জোর কদমে ছুটতে ইচ্ছে করলেও পারে না। লাগামের হ্যাঁচকা টানে ঘাড় উলটে যাবার মতো অবস্থা হয়। সে বেশ ভালোই বুঝতে পারে যে, যাত্রীরা যতটা না ভয় পায়, তার চেয়ে আরো বেশি ভয় পায় বাচ্চু। ব্যস্ত রাস্তায় জোরে ছোটালে অন্যান্য যান-বাহনের সঙ্গে সংঘর্ষ হতে পারে। ভেঙে যেতে পারে পুরোনো আমলের কাঠের চাকা। খুলে যেতে পারে চাকায় লাগানো লোহার বেড়ি। তা ছাড়া সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো তার পেছনের ডান পায়ের তারকাটার মাথা ক্ষয়ে গিয়ে লোহার নালটা বেশ আলগা হয়ে গেছে। দৌড়ানোর সময় খটর-খটর করে বলে ক্ষুরে বেশ ব্যথা হয়।

আগে প্রায়ই পা তুলে নালগুলোর অবস্থা পরখ করে দেখতো বাচ্চু। কিন্তু বেশ কিছুদিন হয়ে গেল এদিকটায় কোনো মনোযোগ দেখা যাচ্ছে না লোকটার। ঘরে কিছু একটা চলছে হয়তো। মাঝে মাঝে রাতের বেলা বাচ্চুর উত্তপ্ত কণ্ঠস্বর শুনতে পাওয়া যায়।

বংশালের কাছাকাছি আসতেই খোকনকে দেখতে পায় গরিব। মুখটা ব্যাজার করে ফুটপাতে বসে আছে। সামনে একটি টিয়ার খাঁচা। শেষবার সদরঘাট যাবার পথে বাংলা বাজারের বাঁকে টমটম কাত করে ফেলে দিয়ে ভালো রকম শায়েস্তা করা গেছে শয়তানটাকে। পড়ে গিয়ে গাড়ির চাকার নিচে চলে গেছিল একটি পা। পা হারানোর সঙ্গে সঙ্গে কোচোয়ানের চাকরিটাও চিরতরে হারিয়েছে সে। পা হারিয়ে কিছুদিন বাপের চিকিৎসার নাম করে লোকজনের কাছে টাকা চাইত। একদিন শরিফ মহাজন দেখতে পেয়ে বলেছিল, আরে চোরের জাত, মরা বাপের হাড্ডি ব্যবসা শুরু করছস? তর বাপ তো মরছে তর গ্যান্দা বয়সে, অখন জিন্দা আর বিমারঅলা বাপ পাইলি কই?

শরিফ মহাজনের কথাটা বেশ পছন্দ হয়েছিল গরিবের। অনেক মানুষ আছে যারা তাদের মরা বাপের আশা আর স্বপ্ন বলে নিজের ইচ্ছেকে চালিয়ে দেয়। জেনে বুঝে মরা বাপের কথা নিয়ে স্বার্থ সিদ্ধি এক ধরণের প্রতারণা। এটাকে শরিফ মহাজন মরা বাপের হাড্ডি ব্যবসা নাম দিয়েছে। গরিবের ইচ্ছে হচ্ছিল পেছনের পা দিয়ে খোকনকে একটা জোরসে চাটি মারে। কিন্তু সে আছে রাস্তায় আর খোকন বসে আছে অনেকটা দূরে, ফুটপাতে।


বংশাল ছাড়িয়ে তাঁতিবাজারের মোড়টা পার হবার সময় বেশ একটা অস্বস্তিতে ভোগে গরিব। বড় রাস্তায় ডিজেল-চালিত কালো ধোঁয়া ছাড়ে এমন পুরোনো যানবাহন চলতে পারে না। কিন্তু এদিকটায় কালো ধোঁয়া ছাড়ে এমন অনেক গাড়ি জ্যামে আটকা পড়ে থেকে পরিবেশটাকে বিষাক্ত করে ফেলে। গরিবের তখন শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়। যতটা দ্রুত সম্ভব এলাকাটা পার হয়ে যেতে চাইলেও পারে না। রিকশা, বাস, ট্রাক, টেম্পো মিলে সারাদিনই একটা ছোটখাটো যানজট লেগেই থাকে। তা ছাড়া এলোপাথাড়ি ছুটোছুটি করা অনেক নির্বোধ পথচারীর কারণেও আরো সতর্ক হয়ে পথ চলতে হয়।

রাস্তার দু পাশের ব্যবসায়ীরা যদি ফুটপাত দখল করে দোকানের মালামাল না রাখতো, তাহলে লোকজন খুব সহজেই সেখান দিয়ে চলাচল করতে পারতো। পথ চলায় বাধা পেয়ে রাস্তায় নেমে আসতো না। ট্রাফিক জ্যাম লেগে আছে বলে টমটম টেনে আগাতে পারছিল না গরিব। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শ্বাসকষ্টে ভুগছিল আর চরম বিরক্তিতে রাস্তার ওপর খুর আছড়াচ্ছিল। তাকে দিয়ে আয় করতে যতটা তৎপর তার স্বাস্থ্য নিয়ে ততটাই উদাসীন এই বাচ্চু কোচোয়ান। বন্ধুদের সঙ্গে যখন চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে দিতে চা খায় লোকটা, তখন তার বন্ধুদের কেউকেউ তাকে খবিস বলেও গাল দেয়। অবশ্য এসব নিয়ে তার কোনো মাথা ব্যথা আছে বলে মনে হয় না গরিবের। একজন আরেকজনকে মা-বাপ তুলেও গালাগালি করে। কিন্তু তাতে আড্ডার পরিবেশ নষ্ট হয় না। এমন কি ম্লান হয় না তাদের কারো মুখের হাসিও।

পাশের একটি রিকশায় বাচ্চা কোলে একজন মা বসে আছে। মা-টা নাক-মুখ কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখেছে, বাচ্চাটির মুখেও একটি কাপড়ের পট্টি দেখা যাচ্ছে। আজকাল কী এমন হয়েছে যে নারী-পুরুষ সবাই তাদের নাক-মুখ ঢেকে পথ চলে? হাওয়ায় বিষাক্ত কিছু থাকলে কি এক টুকরো কাপড়ে তা বাধা পাবে? মানুষ জাতিটা কত বড় নির্বোধ হলে নিজেদের জীবনটাকে এভাবে বিপন্ন করে তুলছে। প্রকৃতিকে নানাভাবে বিষাক্ত করে তুলছে দিনদিন। আর এভাবে নিজেরাও কষ্ট পাচ্ছে নানা ভাবে। তারপরও হুঁশ নেই। নিত্য নতুন পরিবেশ দূষণের নানা ফন্দি-ফিকির নিয়েই আছে তারা। নিজেরা নিজেরা লড়াই করে মরছে। একজন আরেকজনকে উসকে দিচ্ছে। না পারলে নিজেই শত্রু হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

শ্বাস টানতে গিয়ে গরিবের গলাটা যেন জ্বলে ওঠে হঠাৎ। বার কয়েক কাশি দিলে খানিকটা কমে। আর তখনই সে দেখতে পায় ঠিক সামনেই একটি মটর সাইকেলের সাইলেন্সর থেকে ভকভক করে ধোঁয়া বের হচ্ছে। ধোঁয়া যাতে সরাসরি নাকে এসে লাগতে না পারে সে জন্যে মুখটা আকাশের দিকে তুলে রাখে গরিব।

বাচ্চুর তুলনায় শরিফ মহাজন অনেক গুণে ভালো মানুষ। মাসে দু একবার নাজিরা বাজার হয়ে তাকে নিয়ে যেতো পশু হাসপাতাল। হাসপাতালের বাইরে টমটম দাঁড় করিয়ে গাড়ি থেকে দড়ি-দড়া খুলে নিয়ে লাগাম ধরে হাঁটিয়ে নিয়ে যেতো ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার তাকে পরখ করে মহাজনকে বলে দিতো, সব ঠিকাছে! দানাপানি ঠিক মতো দিও। মাঝে মধ্যে রাতে গরম পানি খেতে দিও।

খবিস বাচ্চুর কাছে কাছে আসবার পর থেকে এ পর্যন্ত একদিনও গরম পানি পায়নি সে। তার ওপর বাচ্চুর বেকুব বউটি তাকে রাতের বেলা ভাতের ফ্যান খেতে দিয়েছিল। রাগে আর অপমানে লাথি দিয়ে ফ্যান সহ বালতি ফেলে দিয়েছিল সে। ফ্যান খায় গরু-ছাগল। সে হচ্ছে জাতি ঘোড়া। গরু-ছাগলের মতো ফ্যান খেলে কি তার মান থাকে? নির্বোধ মানুষেরা এই সামান্য ব্যাপারটা বুঝতে চায় না কিছুতেই।

সামনের মটর সাইকেলটা ডান দিকে হুশ করে বেরিয়ে যেতেই পুরোটা রাস্তাই যেন সচল হয়ে ওঠে। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই পিঠের ওপর রাশের দড়ি নেচে উঠতেই সে ফের ছুটতে আরম্ভ করে। বাচ্চু হঠাৎ খুশি খুশি কণ্ঠে বলে ওঠে, হেঁইয়ো! দৌড়া কাদিরা! সে সঙ্গে গরিবের পিঠের ওপর আরেকবার আছড়ে পড়ে রাশের দড়ি দুটো।

গরিব ছুটে চলে দুলকি চালে। পেছন দিকে কোনো একটি মসজিদ থেকে আযানের শব্দ ভেসে আসে। এ সময়টাতে অনেক মানুষ কাজকর্ম ছেড়ে মসজিদে যায়। কেউ বা খাবারের দোকানে যায়। এ সময়টাতে যেখানেই থাকুক জায়গা মতো যাত্রী নামিয়ে দিয়ে বাড়ি ফিরে যায় বাচ্চু। আস্তাবলে নিয়ে গরিবের দড়ি-দড়া খুলে দেয়। সে সময় গরিব বিশ্রামের সঙ্গে সঙ্গে খানিকটা দানাপানিও পায় নাস্তার মতো। খাওয়ার পর ঘণ্টা খানেক দাঁড়িয়েই ঘুমিয়ে নেয়। রাস্তার বিচিত্র শব্দে প্রথম প্রথম ঘুমাতে পারতো না সে। কিন্তু দিনে দিনে ব্যাপারটা গা সওয়া হয়ে গেছে। এখন ঘুম পেলে চারপাশের শব্দগুলো যেন কোথাও হারিয়ে যায়। দৃশ্যগুলো ঝাপসা হয়ে আসে নিজ থেকেই।



টমটম থেকে দড়িদড়া খুলে দিয়ে একটি খুঁটির সঙ্গে গরিবকে বেঁধে দেয় বাচ্চু। তারপর একটি বালতি করে ভেজানো ছোলা নিয়ে আসে। অন্যান্য দিনের মতো মুখের সামনে রাখা ছোলার বালতিতে মুখ দিয়ে কেমন একটা বাজে গন্ধ পায় সে। হয়তো গতকাল বালতিটা ভালো মতো পরিষ্কার করেনি বাচ্চুর বউ। গত রাতের পচে যাওয়া দানাপানির বেশ কিছুটা বালতিতেই রয়ে গেছে। বউটি বেশ নোংরা ধরনের বলে মনে হয় গরিবের। আস্তাবলটাও ঠিক মতো পরিষ্কার করে না প্রতিদিন। এ নিয়ে বাচ্চুর কথা কম শোনে না বউটি। মাঝে মাঝে চড়-থাপ্পড়ও খায়। কিন্তু স্বভাবে কোনো পরিবর্তন আসে না।

এমনিতেই মেজাজ খারাপ হয়ে আছে। তারপরও খিদের তাড়নায় গরিব পচা ছোলা মিশ্রিত খাবারগুলোই খেতে থাকে। খানিকটা কষ্ট করে হলেও সে খেয়ে নেয়। এ ছাড়া রাতের আগে তো আর কোনো রকম খাবার পাওয়া যাবে না। এখন বাচ্চুকে কাছে পেলে নির্ঘাত একটি চাটি মারতো পেছনের পা দিয়ে। যাকে দিয়ে খেয়ে পরে বেঁচে আছে তার প্রতি কেন অতটা যত্ন নেই?

খাওয়া শেষ হলে বাচ্চু পানি নিয়ে আসে। গরম পানি। চমৎকার! সঙ্গে সঙ্গেই মনটা ভালো হয়ে যায় গরিবের। বাচ্চুকে পেছনের পায়ে চাটি মারার সিদ্ধান্তটা আপাতত মুলতবী রাখে। পানি খাওয়া শেষ হলে বাচ্চু বালতিটা নিয়ে ঘরের দিকে চলে যায়। এখন ঘণ্টা খানেক সে এদিকে আসবে না। নিজের গোসল খাওয়া আর বিশ্রামে পার করে দেবে সময়টা। আর এ সময়টা একান্ত নিজের মতো কাটাতে পারবে গরিব। কিন্তু আজ ঘুমাতে চাইলেও যেন চোখ থেকে উবে গেছে ঘুমের আমেজ। পেছনের পায়ের খুরটা বেশ ব্যথা করছিল বলে চার পায়ে পুরোপুরি ভর করে আরামে দাঁড়াতে পারছিল না। পা’টাকে আলগা ভাবে মাটির ওপর রেখে ঘুমুতে চেষ্টা করেও পারছিল না। বাচ্চুর ওপর রাগটা ক্রমশ বাড়ছিল তার। ঠিক তখনই দুটো বাচ্চা বয়সের ছেলে কোত্থেকে ছুটতে ছুটতে আসে। কিছু একটা বিষয় নিয়ে তারা খুব হাসাহাসি করছিল। এ বয়সের বাচ্চাগুলোকে খুবই অপছন্দ তার। এদের বেশিরভাগই শয়তান প্রকৃতির হয়। অযথা খোঁচাখুঁচি করে বিরক্ত করতে খুবই পটু তারা। তা ছাড়া যত রকমের অদ্ভুত সব দুষ্টুমি আবিষ্কারে তাদের দুর্বুদ্ধির জুড়ি মেলা ভার।

একটি ছেলে আচমকা তার হাতের লাঠিটা দিয়ে গরিবের নাকে খোঁচা দিতেই হঠাৎ ভয় পেয়ে লাফিয়ে ওঠে সে। পেছনের দু পায়ে ভর করে দাঁড়াতেই ডান পাশের খুরের তলাটা চিড়িক করে উঠতেই সামনের পা দুটো নামিয়ে ফেলে। মজা পেয়ে বাচ্চা দুটো হিহি হাসিতে কুটিপাটি হয়। দৃশ্যটা ভালো লাগে না গরিবের। বেশ সতর্ক হয়ে বাচ্চা দুটোর ওপর দৃষ্টি রাখে সে। বলা যায় না, শয়তান দুটো আবার কোন অপকর্মে মেতে উঠবে।

বাচ্চুর ঘর থেকে হঠাৎ মেয়েলী কণ্ঠের চিৎকার চেঁচামেচি শুনে কান খাড়া করে গরিব। শুনতে চেষ্টা করে চিৎকার চেঁচামেচির উৎস। কিন্তু কিছুই বুঝতে পারে না বাচ্চুর বউয়ের নাকি স্বরে কথার জন্যে। গরিব বেশ বুঝতে পারে যে, মানুষগুলো বেজায় খারাপ। একসঙ্গে, এক জায়গায়, এক ঘরে থেকেও তাদের ঝগড়া মেটে না। সব কিছু পেলেও তাদের চাহিদা কমে না। লোভের পরিসীমা দিনদিন বাড়তেই থাকে। এমন তরো ভাবনা জনিত অসতর্কতার সুযোগে একটি ছেলে হাতের লাঠিটা দিয়ে পেছন দিক থেকে অণ্ডকোষে খোঁচা দিতেই পুরোটা শরীর ব্যথায় কেঁপে ওঠে। আর তখনই সব কিছু ভুলে পেছনের পায়ে সজোরে চাটি মারে সে। আর চাটি মারার পর কী যে হয়, বাচ্চাটি মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদছিল। কপালের কাছটা রক্ত লাল হয়ে উঠেছে। আরেকটি ছেলেকে আশপাশে দেখা যাচ্ছিল না।

কিছুক্ষণ পরই বিভিন্ন বয়সের কয়েকজন নারী বিলাপ করতে করতে আসে। সঙ্গে কয়েকজন পুরুষকেও দেখা যায়। দুষ্টু ছেলেটির পালিয়ে যাওয়া সঙ্গীটিকেও দেখা যায় তাদের সঙ্গে। একজন মধ্যবয়সী নারী আহত ছেলেটিকে কোলে তুলে নিয়ে কোথাও ছুটে যায়। বাকি সবাই গরিবের সামনে ভিড় করে দাঁড়িয়ে নানা কথা বলতে আরম্ভ করে। বাচ্চুকে মন্দ বলবার সঙ্গে সঙ্গে গরিবেরও নানা দোষ নিয়ে বলাবলি করতে থাকে। একজন তার মুখের ওপরই বলে ওঠে, বাচ্চু হালায় যেমুন খবিস, তার ঘোড়াটা ভি তেমুন পোংটা।

আরেকজন বলল, বাচ্চু হালার বউটা যেমুন অন্যগো পোলাপান দুই চোক্ষে দেখবার পারে না, ঘোড়াটা ভি পাইছে তেমুন।

একজন বুড়ো মতো লোক বলে উঠলো, ঘোড়াটা তার মালিকের মতনই বদমাইশ। বাইরের কাউরে দেখবার পারে না।

প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আরেকটি চিনচিনে কণ্ঠ বলল, এর লিগাই হালারে আল্লায় পোলাপান দেয়নাইক্যা। আঁটকুড়া বানায় রাকচে।

- কী অইচে? ভিড়-ভাট্টা না কইরা আপনেরা হরেন!

বাচ্চুর উত্তেজিত কথা শুনতে পায় গরিব। তখনই নালিশের ভঙ্গিতে গলা ছেড়ে চি-হি-হি করে ডেকে ওঠে সে।

- কী কইবার চাস খবিস্যা? তর ঘোড়ায় আমাগো পোলাপান মাইরা ফালাইবো আর আমরা চুপচাপ বালের আটি বান্ধুম?

- কার পোলারে কী করচে?

সরোষে জানতে চায় বাচ্চু।

- আওলাদের পোলার কপাল ফাটাইচে! মইরা গেলে পোলা আইনা দিবার পারবি?

- ঘোড়ারে খুচাইলে কি ঘোড়ায় ছাইড়া দিবো? জানোয়ার বইলা কি তার দুখ-যন্ত্রণা নাই?

- তোর ঘোড়াটাই পোংটা। আওলাদের পোলার কিচু হইলে তর ঘর-বাড়ি বেইচা ট্যাকা আদায় করুম কইয়া দিতাচি!

- কইলেই হইলো! ট্যাকা কি বলদের গোয়া দা বাইরায়?

- এত কথা হুনবার আহি নাইক্যা। পোলার চিকিচ্ছার খরচ সব তুই দিবি। নাইলে বহুত খরাব অইব কইয়া দিলাম!

লোকটি কটু মাতবর। এতক্ষণ কোনো কথা বলেনি। এলাকার নানা ধরনের সমস্যা আর ঝগড়া-বিবাদ মেটায়। কটু মাতবরের কথা শুনে বাচ্চু বলে ওঠে, আইচ্ছা যান, লিয়েন চিকিচ্ছার ট্যাকা! পোংটা পোলাপান সামলাইবার পারেন না আবার চিকিচ্ছার ট্যাকা চাইবার আইচেন!

- আমরা পোলাপান সামলাইতে পারমু না। তর পোংটা ঘোড়া বেইচা দিবি এইটাই আমার শেষ কথা!

কটু মাতবর বাচ্চুকে শাসিয়ে লোকজন নিয়ে ফিরে যেতেই বাচ্চু যেন পুরোপুরি পাগল হয়ে যায়। কোত্থেকে একটি লাঠি এনে এলোপাথাড়ি মারতে থাকে গরিবকে। হঠাৎ কিছু বুঝে উঠতে না পেরে নির্বোধের মতো মার খায় সে। পাঁজরের কাছে একটি হাড় বোধ হয় ভেঙেই গেল। প্রবল যন্ত্রণায় দু পায়ে লাফিয়ে উঠে সামনের পা দুটো বাচ্চুর মুখের কাছে নিয়ে গেলে ভয় পেয়ে হাতের লাঠি ফেলে সে পেছনের দিকে সরে যায়। তারপর আপন মনে গজরাতে গজরাতে ঘরের দিকে চলে যায়।


ডান পা আর শরীরের ব্যথায় দাঁড়িয়ে থাকতে বেশ কষ্ট হচ্ছিল গরিবের। ইচ্ছে হচ্ছিল মাটির ওপর শুয়ে পড়ে। কিন্তু এখানকার জায়গায় জায়গায় ইটের কণা আর পাথরের কণা। দুষ্টু ছেলে-মেয়েরা দূর থেকে তাকে লক্ষ্য করে এসব ছুঁড়ে মারে বলে ইচ্ছে হলেও মাটিতে শুয়ে পড়া যায় না।

বাচ্চুকে আসতে দেখে সতর্ক হয়ে ওঠে গরিব। বুঝতে চেষ্টা করে লোকটা এখনো ক্ষেপে আছে কিনা। মুখটা কেমন পাংশুটে হয়ে আছে। হতে পারে আহত ছেলেটির চিকিৎসার খরচ অথবা কটু মাতবরের হুমকিই তার দুর্ভাবনার মূল কারণ। অবশ্য এসব নিয়ে গরিব আর ভাবছে না। তার ভালোমন্দ নিয়ে যেমন বাচ্চুর কোনো ভাবনা নেই, বাচ্চুর সুবিধা অসুবিধা নিয়েও সে ভাববে না আর।

সামনে এসে হঠাৎ হাতের গামছাটা দিয়ে গরিবের নাকে মুখে একটি আঘাত করে বাচ্চু। ব্যাটা এখনো রেগে আছে তাহলে। আর তখনই বাচ্চু নিজে নিজেই বলতে থাকে, হারামজাদা আমার ট্যাকা খর্চার ধান্দায় থাকচ? তরে আর রাখুম না আমি! বলতে বলতে খুঁটি থেকে দড়ির বাঁধন খুলে গরিবকে টানে সে। টমটমের সঙ্গে জুড়ে দিতে গায়ের জোর দিয়ে টানতে থাকে। কিন্তু গরিব এক পাও নড়ে না। মনেমনে ভাবে, তরে বুঝামু মানুষের বাচ্চা। হুনচিলাম তুই ভালা মানুষের পোলা। কিন্তু এত খরাব অইলি ক্যামতে? আমি দিন-রাইত তর লিগা কাম করমু, আমার গাও-গতর ভালা থাকন লাগবো না? আমারে দিয়া কামাই করবি আর আমার লিগা দুইটা ট্যাকা খর্চা করবি না?

বাচ্চু আরো জোরে টানে। কিন্তু গরিব নড়ে না। পুরোটা শরীর পেছনের দিকে হেলিয়ে রাখে। আজ মোটেও হাঁটতে ইচ্ছে করছে না। বাচ্চু আবার হ্যাঁচকা টান দিয়ে গরিবকে এগিয়ে আনতে চেষ্টা করে। ঘাড়ে আর গলায় ব্যথা পেলেও জায়গা ছেড়ে নড়ে না গরিব। মনেমনে পণ করে ফেলেছে, যে মানুষ তার মর্ম বোঝে না তেমন বেকুবের জন্য আর কোনো সহযোগিতা নয়, নয় কোনো সহানুভূতি। কপালে যা আছে তাই হবে। কিন্তু এই খবিসের অধীনে আর কোনো দাসত্ব নয়।

দড়ি ছেড়ে দিয়ে মাটিতে পড়ে থাকা লাঠিটা হঠাৎ হাতে তুলে নিয়ে বাচ্চু আবার পিটাতে আরম্ভ করে গরিবকে। গরিবের ইচ্ছে হচ্ছিল বাচ্চুর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিন্তু তা না করে হঠাৎ সে লাফিয়ে উঠে ছুট লাগায়। বাচ্চুর নাগালের বাইরে রাস্তায় চলে যায়। পেছন পেছন হায় হায় করতে করতে ছুটতে থাকে বাচ্চু। দু হাত তুলে আশপাশের লোকজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে থাকে, ভাই আমার ঘোড়াটারে কেউ ধরেন!

কিন্তু কেউ সাহস করে এগিয়ে আসে না। বরং নিরাপদ দূরত্বে সরে গিয়ে গরিবের জন্যে পথ করে দেয়। পায়ের ব্যথায় তেমন জোরে ছুটতে না পারলেও খোঁড়াতে খোঁড়াতে ফাঁকা পথে গরিব ছুটতে থাকে দুলকি চালে। পেছন পেছন ভেসে আসে বাচ্চুর আহাজারিও।

কিন্তু আর ছুটতে পারে না গরিব। পেছনের পায়ের ব্যথার সঙ্গে যোগ হয়েছে পুরো শরীরের ব্যথা। মনে হচ্ছিল এখনই পুরোটা শরীর ভেঙে পড়বে ঝুরঝুর করে। হঠাৎ সামনের পথটা কেমন চেনাচেনা মনে হতেই থেমে পড়ে সে। এ পথেই তো শরিফ মহাজন তাকে নিয়ে যেতো পশু হাসপাতালে। হ্যাঁ, এ রাস্তা দিয়েই। চিনতে পেরেছে সে। কিন্তু তার হয়ে কে কথা বলবে ডাক্তারের সঙ্গে? নিজে গিয়ে তো ডাক্তারকে বোঝাতে পারবে না। উলটো ডাক্তার ভয় পেয়ে হয়তো তার কোনো চিকিৎসাই করবে না। ভাবতে ভাবতে কালো পিচ ঢালা পথের মাঝখানেই পা ভাঁজ করে বসে পড়ে গরিব। আশপাশে লোকজন ভিড় করে দাঁড়ায়। যানজট লেগে যায় বড় রাস্তায়। দু পাশ থেকেই বিভিন্ন যানবাহনের নানা রকম হর্ন বাজতে থাকে ঘন ঘন।

পাশ থেকে কেউ একজন বলে ওঠে, কার ঘোড়া? পাগলা অইয়া গেচে নিকি?

অন্য কেউ একজন বলে, আবে না, মনে লয় বিমার। দেখচ না পিছের ডাইন পায়ের খুরা থেইকা লউ বারাইতাচে!

মানুষগুলো তার সমস্যাটা বুঝতে পেরেছে বলে মনটা প্রশান্তিতে ছেয়ে যায় গরিবের। তখনই মোটর সাইকেলে ভটভট শব্দ তুলে একজন পুলিসকে আসতে দেখা যায়। গরিবের পাশে মটর সাইকেল থামিয়ে বলে, আপনারা সরে দাঁড়ান। ভিড় করবেন না। আগে দেখি সমস্যা কি। ঘোড়াটাকে হাসপাতালে নিতে হতে পারে। এটার মালিক কোথায়?

গরিব একটি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে চারটি পা ছড়িয়ে দিয়ে রাস্তার ওপর শুয়ে পড়ে কাত হয়ে। তারপর আরো শিথিল করে দেয় পুরোটা দেহ।

(সমাপ্ত)

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই মে, ২০১৮ রাত ১০:৪৭

ফরহাদ রহমান বলেছেন: ভাল লেগেছে। অসাধারণ ভাব তুলে ধরেছেন।

১২ ই মে, ২০১৮ দুপুর ২:১৬

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ ফরহাদ রহমান।

ভাল থাকুন সব সময়।

২| ০৯ ই মে, ২০১৮ রাত ১০:৪৮

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: ভাল লাগল ।শুভেচ্ছা রইল

১২ ই মে, ২০১৮ দুপুর ২:১৮

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধব্যবাদ শাহরিয়ার ইমন।

ভাল থাকুন সব সময়।

৩| ০৯ ই মে, ২০১৮ রাত ১১:০৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


গরীবের জীবন, তার মালিকদের জীবন, মালিকদের সমাজ, অনেক কিছুই উঠে এসেছে; ভালো

১২ ই মে, ২০১৮ দুপুর ২:৩১

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ চাঁদগাজী।

আপনার মনোযোগ যে কোনো ব্লগারের জন্য প্রেরণাদায়ক।

ভালো থাকুন সব সময়।

৪| ০৯ ই মে, ২০১৮ রাত ১১:৩১

অর্ধ চন্দ্র বলেছেন: বেশ ফুটিত, সেই সে দিনগুলি, ধন্যবাদ,

১২ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৪:১০

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ অর্ধ চন্দ্র।

পুরানা ঢাকার পুরানা চেহারা। :D

ভাল থাকুন সব সময়।

৫| ১০ ই মে, ২০১৮ রাত ১২:২৮

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: চমৎকার লিখণী ভাল লাগল।

১২ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৪:১২

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ মাহমুদুর রহমান সুজন।

ভাল থাকুন সব সময়।

৬| ১০ ই মে, ২০১৮ রাত ১২:৩৭

শামচুল হক বলেছেন: পুরোটাই পড়লাম। খুব ভালো লাগল। ধন্যবাদ জুলিয়ান ভাই।

১২ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৪:১৪

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ শামচুল হক।

ভাল থাকুন সব সময়।

৭| ১০ ই মে, ২০১৮ সকাল ১০:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল সুন্দর।

১২ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৪:১৫

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর।

ভাল থাকুন সব সময়।

৮| ১২ ই মে, ২০১৮ দুপুর ২:৩৫

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর।+

১২ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৪:১৭

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ সেলিম আনোয়ার।

ভাল থাকুন সব সময়।

৯| ১৪ ই জুন, ২০১৮ রাত ৮:৫৭

কথাকথিকেথিকথন বলেছেন:


ঘোড়ার চোখে মানুষ । দারুণভাবে সাজিয়েছেন । বেশ ভাল লাগলো পড়ে।

২২ শে জুন, ২০১৮ দুপুর ২:২৪

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: কথাকথিকেথিকথন ধন্যবাদ আপনাকে।

অনেক আগে এমন একটা গল্প প্রাণীর চোখে পড়েছিলাম। ইচ্ছে ছিল এমন একটা গল্প লেখার।

ভালো থাকুন সব সময়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.