নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার কি দোষ,আমি তো মানুষ !!

যুলকারনাইন

পাঠ্যবই ভাল লাগেনা,তবে প্রচুর বই পড়ি নিজের পছন্দমত

যুলকারনাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি ট্রেন এবং বাংলাদেশ

১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৪৭

মনে আছে সর্বশেষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা ?? খুব বেশী পুরনো স্মৃতি নয়। বাংলাদেশকে নিয়ে তাদের অনেক

স্বপ্নের কথা ব্যক্ত হতে গিয়ে বারবার “একটি লাইনচ্যুত ট্রেন” এর কথা এসেছিল। কিছুদিন আগে বর্তমান তথ্যমন্ত্রী ও

প্রাক্তন জাসদ গণবাহিনীর প্রধান হাসানুল হক ইনুও বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বলেছিলেন “হরতাল

ও জ্বালাও-পোড়াও এর ট্রেন” ছেড়ে “সংলাপের ট্রেন” ধরতে। তাই প্রবন্ধের শুরু করছি ট্রেন দিয়েই।

আমার আবাসের পাশ দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইন। ট্রেনের ঝিকঝিক শুনে শুনে বিরক্তি মরে গেছে অনেকদিন। কিন্তু

আজো মালবাহী ট্রেন আমার বিরক্তির কারণ। এর কচ্ছপ গতি আর দীর্ঘ সময় ব্যাপী চলার শব্দই মূল কারণ। তাই অন্যান্য

গুলোর ব্যাপারে অমনোযোগী হলেও মালবাহী ট্রেনের ব্যাপারে আমি সর্বদা সজাগ এবং এর যাত্রাকালে আমার

বারান্দার দরজা আটকে দিতে আমি ভুল করি না। অন্যান্য দিনের মত গতকাল(৮নভেম্বর’১৩) সকাল

সাড়ে নয়টা কি পৌনে দশটার দিকে বারান্দার দরজা আটকে দিতে গিয়ে দেখলাম

যে মালবাহী ট্রেনটি যাচ্ছে তা সাধারণ কোন ট্রেন নয়। সেটি ছিল প্রায় শ’খানেক সাঁজোয়া ট্যাংক এর বহর।

জানিনা এইসব ট্যাংকের গন্তব্য রাজধানী নাকি অন্য কোথাও। হয়তো এটা সেনাবাহিনীর রুটিন কর্মকান্ডের অংশ।

যতদূর জানা যায় নিকট ভবিষ্যতে সেনাবাহিনীর কোন কুজকাওয়াজ নেই। তাই সকালের ঘটনা সকালে গুরুত্ব হারালেও

রাতে সেটা ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ইতিমধ্যে সকলেরই জানা হয়ে গেছে বিরোধীদল আবারও ৭২ ঘন্টার হরতাল ডেকেছে সারাদেশে। এই সংক্রান্ত

ঘোষণা আসার পরপরই পুলিশ বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত কারণে ঘেরাও

করে তাঁকে কার্যত গৃহবন্দী করে। অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে দলের তিন জৈষ্ঠ্য নেতা এম

কে আনোয়ার,ব্যারিষ্টার মওদুদ এবং ব্যারিষ্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া কে। আটক করে বেগম জিয়ার উপদেষ্টা এবং বিশেষ

সহকারীকে। রাতের বেলায় এই গ্রেফতার অভিযান দলের অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের বাসায়ও

চালানো হয়েছে বলে দলটি দাবি করেছে। ঘটনার এই হটাৎ পট-পরিবর্তন সাধারণ জনগনকে করে তুলেছে উদ্বিগ্ন

এবং দিশেহারা। বাংলাদেশের পরবর্তী রাজনৈতিক দৃশ্যপট নিয়ে পুরো জাতি শংকিত। কেননা ইতিমধ্যেই সরকারের এই

পদক্ষেপের প্রভাব সারাদেশে পরিলক্ষিত হচ্ছে।

দলীয় নেতাদের গ্রেফতারের ঘটনায় ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা শুক্রবার রাত পৌনে ১১টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দক্ষিণ

বাইপাস,কুমিরা,বাঁশবাড়িয়া,বাড়বকুন্ডসহ বিভিন্ন স্থানে যানবাহন ভাংচুর করেছে। দক্ষিণ বাইপাস এলাকায়

তিনটি যানবাহনে আগুন দেয়া হয়। এ সময় মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তাছাড়া বিভিন্ন স্থানে গাছের

গুঁড়ি ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এতে মহাসড়কে সৃষ্ট তীব্র যানজট শেষ খবর

পাওয়া পর্যন্ত মধ্যরাত অবধি ছিল।

এমন পরিস্থিতিতে এই সরকারকে আগেও পড়তে হয়েছিল। যখন যুদ্ধাপরাধের মামলায় জামায়াতের নায়েবে আমীর

দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় হয়। সেসময় জামায়াতের নেতাকর্মীরা মহাসড়কের গাছ কেটে,রেললাইন

উপড়ে ঢাকা থেকে বিভিন্ন জেলাকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছিল। তখন সেটা ছিল শুধুমাত্র একটি বিশেষ

রাজনৈতিক গোষ্ঠীর,কিন্তু বর্তমানে সরকার পুরো বিরোধী শিবিরকেই এমন পরিস্থিতি তৈরীর সুযোগ করে দিল।

একটি স্বাধীন দেশের সার্বভৌমত্ব আর তার নাগরিকদের স্বাভাবিক জীবন-যাপনের জন্য এহেন

পরিস্থিতি সত্যি মারাত্মক হুমকিস্বরুপ। বিশেষ করে যখন দেশে বিভিন্ন পর্যায়ের পরীক্ষার মৌসুম চলছে,তখন

বিরোধী দলের পাশাপাশি সরকারেরও দায়িত্ব দেশের সার্বিক পরিস্থিতিকে যথাসম্ভব উত্তাপবিহীন রাখা। আর

এক্ষেত্রে বিরোধীদলের পাশাপাশি সরকারেরও যথেষ্ঠ পরিমাণ সহনশীলতার অভাব রয়েছে।

মনে করে দেখুন, কে এম হাসান কে নিয়ে বিএনপি’র অনমনীয় অবস্থান যেমন এক-এগারোর সৃষ্টি করেছিল তেমনি সর্বদলীয়

সরকার ইস্যুতে আওয়ামী লীগের অনমনীয়তা কি দেশকে নতুন করে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছেনা ?? দেশে বর্তমান

স্থবিরতা সৃষ্টিতে বিএনপি যেমন দায়ী তেমনি বিএনপিকে ইন্ধনদাতা হিসেবে আওয়ামী লীগ কি একই কাঠগড়ায় দাঁড়ায়

না?? ইতিহাসের কোন পুণরাবৃত্তি যদি বাংলাদেশে হয় তাহলে সেটা যে আরেকটি নির্মম পরিণতির দিকে আমাদের

নিয়ে যাচ্ছে না সে নিশ্চয়তা কে দিবে?? গতানুগতিক রাজনৈতিক ধারার বাইরে যখনই কেউ রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছে,সেই

তৃতীয় শক্তি ছিল অনির্বাচিত। সে এসেছিল দেশকে সংকটময় মূহুর্ত থেকে উদ্ধারের বীণ বাজিয়ে প্রতিবারই।

কখনো জামিল,কখনো খন্দকার মোশতাক,খালেদ মোশাররফ,জিয়াউর রহমান,এরশাদ অথবা মইন-ফকরুল গং। নামের

ভিন্নতা সত্ত্বেও জাতির সংকটময় মূহুর্তে তাদের আগমন জাতিকে সঠিক দিকনির্দেশনায় উন্নতির শিখরে নিয়ে যেতে।

অন্তত জাতির উদ্দেশ্য প্রথম ভাষণে সকলেই এমনটাই দাবি করেছিলেন। সেই সকল সংকটময় পরিস্থিতি কাদের তৈরী ??

এখনো কি তেমন কিছুর দিকেই আমাদের যাত্রা নয়??

মাননীয় তথ্যমন্ত্রী ক্ষমতার স্বাদ পেয়ে ইতিহাসকে ভুলে গিয়েছেন কিনা কে জানে। বাংলাদেশে গায়ের জোরে কখনই

কিছু হয়নি। হরতালের পিছনে বিরোধীদের যুক্তি যেমন খোঁড়া তেমনি বিরোধী দলীয় জৈষ্ঠ্য নেতাদের গ্রেফতারের

ব্যাপারে ইনু সাহেবের যুক্তিও খোঁড়া। বিএনপি কে কোণঠাসা করে আওয়ামী লীগ যদি নির্বাচন করেও ফেলে জনগণ

যে তাকে ছুঁড়ে ফেলবে তা অতীত ইতিহাসই বলে। গায়ের জোরে কর্ণেল তাহেরকে ফাঁসিতে যারা ঝুলিয়ে ছিল ইতিহাস

তাদের পক্ষে যেমন কথা বলে না তেমনি এই জাসদ নেতার পক্ষেও যে বর্তমান কর্মকান্ডের জন্য

কথা বলবে না তা প্রকাশ্য দিবালোকের মত পষ্ট।

বাংলাদেশের জনগণ কখনোই অনির্বাচিত কাউকে চায়নি যার পুনরায় ক্ষমতা দখলের পথ বন্ধ করতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার

ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছে। সংবিধানের কোন ফাঁক-ফোকর যেমন এদের কোনকালে আনে নি তেমনি সংবিধানের

কয়েক’শ সংশোধনী এদের ক্ষমতা দখলের রাস্তা বন্ধ করতে পারবে না। একমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার

পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ আর সহনশীলতাই রুখে দিতে পারে বংশীবাদকদের আগমন।

তা নাহলে যেভাবে চলছে সেভাবে যদি চলতেই থাকে তাহলে জনগণ ভাবতে শুরু করবে-এ কোন

ট্রেনে বসলো চড়ে বাংলাদেশ। আর সেই পরিস্থিতি কাম্য না হলেও লাইনচ্যুত

ট্রেনকে লাইনে ফেরাতে যারা আসে তাদের জনগণ না চাইলেও মেনে নেবে,নির্মম বাস্তবতায়।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৫৪

তাহমিদুর রহমান বলেছেন: prattohik ভাল

২| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৫৯

যুলকারনাইন বলেছেন: প্রাত্যহিক ভাল??

৩| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ২:২৬

তাহমিদুর রহমান বলেছেন: Lekhata valo hoyece tai boleci

৪| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:১৪

যুলকারনাইন বলেছেন: ধন্যবাদ...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.