নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পাঠক।

জুনায়েদ বি রাহমান

মৌসুমি রোদ্দুর মেঘ হলে, আমি বৃষ্টির জলে খুঁজবো তোমাকে; নীল খামে কাব্য করে বর্ষার ঠিকানায় লিখবো প্রেমপত্র।

জুনায়েদ বি রাহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

২০০০ টাকা মাথাপিছু বাজেটে ঘুরে যেতে পারেন শ্রীমঙ্গল-বড়লেখার অন্তত ১০টি উল্লেখযোগ্য স্থান-

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪৬

রুটঃ
১ম দিন: ঢাকা- শ্রীমঙ্গল- লাউয়াছড়া উদ্যান- ভানুগাছ- মাধবপুর লেক- শ্রীমঙ্গল ট্রি মিউজিয়াম (শ্রীমঙ্গল।)
২য় দিন: শ্রীমঙ্গল- ঘাটের বাজার- হাইল হাওর- বাইক্কা বিল- মিনি চিড়িয়াখানা- শ্রীমঙ্গল রেল স্টেশন- কুলাউড়া।
৩য় দিন: কুলাউড়া- কাঁঠালতলি- মাধবকুণ্ড- পরিকুণ্ড- মাধবকুণ্ড- বড়লেখা- ঢাকা।
আনুমানিক খরচঃ
৪-৫ জনের একটি ট্যুরে খরচ হবে আনুমানিক ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা।

প্রথম দিনঃ
যেভাবে যাবেন- ( ঢাকা-শ্রীমঙ্গল)
সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে রাত ১২ টার শ্যামলী, সিটিলিংক, হানিফ পরিবহনের বাসে অথবা রাত ৯ টা পরের ট্রেনে যাত্রা শুরু করলে ভোরে শ্রীমঙ্গলে পৌছুতে পারবেন। ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গলের ট্রেন বা বাসের সর্বনিম্ন এবং সর্বোচ্চ ভাড়া ১৫০ থেকে ৫০০ টাকা।


শ্রীমঙ্গল-লাউয়াছড়া উদ্যানের গেট, - ভানুগাছ চৌমুনা-মাধবপুর লেক-শ্রীমঙ্গল ট্রি মিউজিয়াম গেট(শ্রীমঙ্গল)
শ্রীমঙ্গল স্টেশন বা বাস টার্মিলানের আশেপাশে সকালের নাস্তা সেরে গল্প করতে করতে পৌছে যান ভানুগাছ টেম্পু স্টেশনে। কাউকে জিজ্ঞেস করলেই দেখিয়ে দেবে ভানুগাছ টেম্পো স্টেশন। তারপর, ভানুগাছের সিএনজিতে করে লাউয়াছড়া রিজার্ভ ফরেস্টের গেটে গিয়ে নেমে পড়ুন। গেট থেকে টিকেট নিয়ে ঢুকে পড়ুন ভিতরে। উদ্যানের ভিতর এক, দেড় ও তিন ঘন্টার মোট তিনটি ট্রেইল আছে, যেখানে পর্যটকরা প্রকৃতিকে খুব কাছ থেকে উপভোগ করতে পারে। ঘণ্টা দুয়েক বনের ভেতরে ঘুরে বেড়াবেন।

চোখে পড়বে হরেক রকম প্রজাতির কীটপতঙ্গ, গাছপালা, পাখি ও অর্কিড। মিলতে পারে হনুমান, বানর এবং উল্লুকের দেখাও।
পাকা রাস্তা, পথ হারানোর ভয় নেই।
অতঃপর,লাউয়াছড়াকে বিদায় জানিয়ে মূল সড়কে এসে দাঁড়াবেন। এবং লোকাল সিএনজি বা টেম্পোতে চড়ে ভানুগাছ চৌমুনাতে পৌছবেন। ওখানে দুপুরের খাবার খেয়ে সিএনজি করে সোজা চলে যাবেন মাধবপুর লেকে।

চা-বগানের আঁকাবাঁকা পথ, সবুজের সমারোহ, লেকের ঝলমল পানি, ছায়া সুনিবিড় পরিবেশ, শাপলা শালুকের আর মৌসুমি পাখির উপস্থিতি আপনাদের মুগ্ধ করবে। মাধবপুর লেক থেকে শ্রীমঙ্গল ফেরার পথে শ্রীমঙ্গল ট্রি রিসোর্ট এণ্ড মিউজিয়ামের গেটে নেমে কিছুক্ষণ সবুজ আঁকাবাঁকা চা-বাগানের পথে হাটবেন। পাখপাখালি আর মুক্ত বাতাস সারা দিনের ক্লান্তি কিছুক্ষণের মধ্যে ভেনিস করে দেবে।

ততক্ষণে সূর্য পশ্চিমে হেলে যাবে। আপনারাও শ্রীমঙ্গল ট্রি রিসোর্ট বা পছন্দমত কোনো হোটেলে বুকিং করে ডিনার সেরে বিশ্রাম নেবেন।

**শ্রীমঙ্গল শহর থেকে কয়েকঘন্টার জন্য একটা সিএনজি বা মাইক্রোবাস রিজার্ভ করে উল্লিখিত স্থানগুলো পরিদর্শন করতে পারবেন। ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গলের ভাড়া এবং ১ম দিনের ঘুরাঘুরি ও হোটেলে থাকা বাবত খরচ হবে প্রায় ৫০০০টাকা


২য় দিনঃ
শ্রীমঙ্গল-ঘাটের বাজার- হাইল হাওর-বাইক্কা বিল- সিতেশ দেবের চিড়িয়াখানা- শ্রীমঙ্গল রেল স্টেশন- কুলাউড়া
পরেরদিন ভোরে নাস্তা করে বেরিয়ে পড়তে পড়েন বাইক্কা বিলের উদ্দেশ্যে। শ্রীমঙ্গল-মৌলভীবাজার সড়ক ধরে কালাপুর বাজার থেকে একটু সামনে এগোলেই বরুনা-হাজীপুর পাকা রাস্তা। শহর থেকে অটোরিকশা চড়ে বরুণা বাজার যেতে পারবেন। সেখান থেকে লোকাল সিএনজি বা অটোরিকশা চেপে বসে যেতে পারেন হাজীপুর বাজারে। বাজারটি ‘ঘাটের বাজার’ নামে বেশ পরিচিত। সেখান থেকে অটোরিকশা বা পায়ে হেঁটে প্রায় ৩-৪ কিলোমিটার দূরে গেলেই দেখতে পাবেন বাইক্কা বিল। বাইক্কা বিলের মূল আকর্ষণ পরিযায়ী আর স্থানীয় পাখি। এই মৌসুমে অর্থাৎ শীতে দুপুর গড়ানোর সাথে সাথে বিলে উপস্থিত হতে পারলে দেখতে পারবেন দলে দলে পার্পল সোয়াম্প হেন, ছোট বড় পানকৌড়ি আর হরেকপ্রজাতির দেশি বিদেশী পাখির বিচরণ।

এছাড়া পদ্মপাতার জল আর পাখির কলরোল আপনাদের মুগ্ধ করবে খুব গোপনে। বিলের আশেপাশে খাওয়ার ব্যবস্থা নেই,ক্যাম্প না করলে সাথে হালকা খাবার এবং পানি রাখতে ভুলবেন না।

বিল দেখে ফেরার পথে ঘুরে আসুন সিতেশ দেবের মিনি চিড়িয়াখানা। শ্রীমঙ্গল পৌর শহর থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে মিশন রোডের একটি বাড়িতে সিতেশ বাবুব ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে উঠেছে এই মিনি চিড়িয়াখানাটি । চিড়িয়াখানায় প্রবেশমাত্রই চোখে পড়বে গুঁইসাপ ! মেছো বাঘ । এক সময় প্রচুর পরিমাণে শ্রীমঙ্গলে দেখা যেতো এই বাঘ । এছাড়াও চিড়িয়াখানাটিতে রয়েছে জংলী রাজহাঁস, চখা , সরলী , রাজ সরলী , চা পাখি , ধনেশ , হরিয়াল , সবুজ ঘুঘু , বনমোরগ , ডাহুক , জল কবুতর , নীল গলা বসন্ত বৌরি , তিলা ঘুঘু ও তিতির , ময়না , টিয়া , তোতা , পাহাড়ি বকসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি । সোনালি কচ্ছপ । যারা আগে কখনো সোনালি কচ্ছপ দেখেননি , নিঃসন্দেহে তাদের কাছে এই কচ্ছপটি বিস্ময়কর মনে হবে । এই প্রানিটি ফল খায়, গাছে চড়ে । ছোট্ট এই চিড়িয়াখানার আরেক আকর্ষণ উড়ান্ত কাঠবিড়ালী, বিলুপ্তপ্রায় সাদা বাঘ, মায়া হরিণের দল, ভালুক, অজগর, সজারু, সাদা ডুরাকাঁটা সোনালী বাঘ, পায়রা ও লম্বা লেজওয়ালা হনুমান । তবে যাওয়ার সময় যদি হাতে সময় থাকে তাহলে কথা বলে যেতে পারেন চিড়িয়াখানার পরিচালক সিতেশ বাবুর সাথে। ভালো লাগবে।


সন্ধ্যার পুর্বে শহরে ফিরতে পারলে দু'টো রিকশা চড়ে গোধূলির চা নগরী(শ্রীমঙ্গল) দেখতে দেখতে চলে যেতে পারেন রমেশ বাবুর নীলকণ্ঠ চা কেবিনে।

শুনেছি সাতরঙা চা এখন অষ্ট রঙে উন্নীত হয়েছে। অপরূপ এই সাতরঙা চা দেখে মুগ্ধ হওয়া ছাড়া উপায় নেই। চা খেয়ে সন্ধ্যা ৬ টার পরের জয়ন্তিকা (ট্রেন) চলে যান কুলাউড়ায়। এবং স্টেশনের পাশের পছন্দমত কোন হোটেলে রাত্রি যাপন করুন।

** শ্রীমঙ্গল শহর থেকে কয়েকঘন্টার জন্য একটা সিএনজি বা মাইক্রোবাস রিজার্ভ করে উল্লিখিত স্থানগুলো পরিদর্শন করতে পারবেন। খরচ পড়বে ১২০০ থেকে ১৫০০টাকা। এবং কুলাউড়া ৪ জনের থাকা ১৫০০ টাকা।


৩য় দিন/শেষ দিনঃ
কুলাউড়া-কাঠালতলি- মাধবকুণ্ড-পরীকুণ্ড- বড়লেখা-ঢাকা
কুলাউড়া থেকে বড়লেখার সিএনজি বা বাসে করে জুড়ির চা বাগান, মৎস কামার আর ছায়াতরুর পথ দেখতে দেখতে ৪০-৪৫ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যাবেন কাঠালতলি বাজারে। সিএনজি বা বাসের চালক'কে বললে কাঠালতলিতে নামিয়ে দেবে। বাজারে দুপুরের খাবার খেয়ে ১০০-১৫০ টাকার মধ্যে একটা সিএনজি ভাড়া করে চলে যাবেন মাধবকুণ্ডে

অতঃপর,সারাদিন মাধকুণ্ডে জলপ্রপাত, জলপ্রপাতের চুড়া, চা বাগান, কমলা বাগান, খাসিয়া পুঞ্জি দেখে এবং

নতুন ঝর্ণাধারা পরীকুণ্ড জলপ্রপাতে ইচ্ছে মতো ঘুরে বিকেলে সিএনজিতে চড়ে চলে যাবেন বড়লেখা উত্তর বাজার শ্যামলী পরিবহণের কাউন্টারে। অথবা কাঠালতলি থেকে কুলাউড়া রেল স্টেশনে। এবং বিকেল ৪ টা বা সন্ধ্যা পরের বাসে/ট্রেনে ব্যাক করতে পারবেন ঢাকায়।

**শেষদিনে ঘুরাঘুরি এবং ঢাকার ভাড়াসহ খরচ পড়বে ২৫০০ টাকা মতো।


পরামর্শঃ
* সাথে শীতের কাপড়, হাটার জন্য স্নিকারস অথবা আরামদায়ক স্যন্ডেল এবং কিছু প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র রাখবেন।
* বনে হাটাহাটি করতে চাইলে অতিরিক্ত বোঝা বহন না করাই ভাল।



[বি.দ্রঃ মৌলভীবাজারে বড়লেখার মাধবকুণ্ড, হাকালুকি হাওর শ্রীমঙ্গলের চা বাগানগুলো, হাইল হাওর- বাইক্কা বিল, লাউয়াছড়া উদ্যান, মাধবপুর লেক, হামহাম জলপ্রপাত এবং সিতেশ দেবের মিনি চিড়িয়াখানা ছাড়া আরো বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান আছে। চাইলে বাজেট বাড়িয়ে ঘুরে যেতে পারেন। ধন্যবাদ। ]

ছবি- সংগ্রহীত।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১২

সুমন কর বলেছেন: ধন্যবাদ সংগ্রহে রাখলাম। +।

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৩৩

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:১১

শামচুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ পোষ্টটির জন্য।

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ২:১১

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.