নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফেসবুকে আমি- www.facebook.com/jupitermuhaimin

জুপিটার মুহাইমিন

একদিন কথা হবে, মনখুলে..।

জুপিটার মুহাইমিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

রবিপ্রেম ও ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো

২৪ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:২৫



রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 'পূরবী' কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করলেন। বইটা উৎসর্গ করলেন অজানা অচেনা এক নারীকে। উৎসর্গ পত্রে মাত্র দুইটা শব্দ লেখা ছিল, "বিজয়ার করকমলে"।
.
কে এই বিজয়া তা অনেক অনেক দিন ধরে মানুষের অজানা ছিল। তারপর খোলস ছেড়ে আসল খবর বেড়িয়ে আসতে শুরু করে। বিজয়ার আসল নাম ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো। আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনাস আইরেসের সান ইদ্রোসির মেয়ে ওকাম্পো, আর তার থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে এই ভারতবর্ষের কবি রবীন্দ্রনাথের মধ্যে সেই ১৯২৪ সালে যে প্রেম-রসায়নের জন্ম হয়েছিল তার ফসল হিসেবে প্রকাশিত হয় "পূরবী"।
.
এই কাব্যগ্রন্থের অধিকাংশ কবিতাই ছিল বিজয়াকে নিয়ে। মানে ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোকে নিয়ে। দুজনের পরিচয় ১৯২৪ সালে হলেও রবী ঠাকুর ওকাম্পোর হৃদয় জুড়ে ছিল সেই ১৯১৪ সালে, নোবেল জয়ের পরের বছর থেকে। যখন ওকাম্পোর জীবনের সবচেয়ে দুঃসময়ে আলোর মশাল হয়ে হাজির হয় "সং অফারিংস"।
.
ওকাম্পোর কথা জানতাম অনেক আগে থেকেই। কিন্তু বিশদভাবে জানার ইচ্ছা কখনোই পূর্ন হয় নি। অবশেষে হাতে এসে পড়ল অভিজিৎ স্যারের, "ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো- এক রবি-বিদেশিনীর খোঁজে"। পড়ছি আর অবাক হয়ে ভাবছি এই অসম প্রেম উপাখ্যান। যেখানে ওকাম্পোর বয়স মাত্র ৩৪, রবীন্দ্রনাথের ৬৩।
.
বইয়ের শেষে রবি-কাম্পোর আদান প্রদান করা ৫০ টা চিঠি তুলে দেয়া হয়েছে। চিঠিতে কত প্রেম, কত ভালবাসা। এই বৃদ্ধ বয়সে এত প্রেম কোথা থেকে পাইল সে এক বিস্ময়।
.
এই বিষয়টা নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করার প্রবল ইচ্ছাকে দমন করে অল্পতেই ইতি টানতে বাধ্য হলাম। শেষ করার আগে কিছু কবিতা তুলে দিলাম। যে কবিতাগুলো এই ঘটনার সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত।



ওকাম্পোর দুঃসময়ে রবীন্দ্রনাথের যে কবিতাটা আলোর দিশা হয়ে এসেছিল-

"আমার ঘরেতে আর নাই সে যে নাই_
যাই আর ফিরে আসি, খুজিয়া না পাই।
আমার ঘরেতে নাথ এইটুকু স্থান_
সেথা হতে যা হারায় মেলে না সন্ধান।
..................
...............
সেথায় এনেছি মোর পিরিত এ হিয়া_
দাও তারে, দাও তারে, দাও ডুবাইয়া।
ঘরে মোর নাহি আর যে অমৃতরস
বিশ্ব- মাঝে পাই সেই হারানো পরশ।"
.
যেদিন রবীন্দ্রনাথের সাথে ওকাম্পোর সাথে সাক্ষাত হয়েছিল সেদিনই রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন "বিদেশী ফুল" কবিতাটি-



"বিদেশী ফুল
হে বিদেশী ফুল, যবে আমি পুছিলাম--
"কী তোমার নাম',
হাসিয়া দুলালে মাথা, বুঝিলাম তরে
নামেতে কী হবে।
আর কিছু নয়,
হাসিতে তোমার পরিচয়।
হে বিদেশী ফুল, যবে তোমারে বুকের কাছে ধরে
শুধালেম "বলো বলো মোরে
কোথা তুমি থাকো',
হাসিয়া দুলালে মাথা, কহিলে "জানি না, জানি নাকো'।
বুঝিলাম তবে
শুনিয়া কী হবে
থাকো কোন্‌ দেশে।
যে তোমারে বোঝে ভালোবেসে
তাহার হৃদয়ে তব ঠাঁই,
আর কোথা নাই।
হে বিদেশী ফুল, আমি কানে কানে শুধানু আবার,
"ভাষা কী তোমার।'
হাসিয়া দুলালে শুধু মাথা,
চারি দিকে মর্মরিল পাতা।
আমি কহিলাম, "জানি, জানি,
সৌরভের বাণী
নীরবে জানায় তব আশা।
নিশ্বাসে ভরেছে মোর সেই তব নিশ্বাসের ভাষা।'
হে বিদেশী ফুল, আমি যেদিন প্রথম এনু ভোরে
শুধালেম, "চেন তুমি মোরে?'
হাসিয়া দুলালে মাথা, ভাবিলাম তাহে একরতি
নাহি কারো ক্ষতি।
কহিলাম, "বোঝ নি কি তোমার পরশে
হৃদয় ভরেছে মোর রসে।
কেউ বা আমারে চেনে এর চেয়ে বেশি,
হে ফুল বিদেশী।'
হে বিদেশী ফুল, যবে তোমারে শুধাই "বলো দেখি
মোরে ভুলিবে কি',
হাসিয়া দুলাও মাথা; জানি জানি মোরে ক্ষণে ক্ষণে
পড়িবে যে মনে।
দুই দিন পরে
চলে যাব দেশান্তরে,
তখন দূরের টানে স্বপ্নে আমি হব তব চেনা--
মোরে ভুলিবে না।"

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:৩৮

প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ পোষ্টের জন্য।

২৪ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:৪০

জুপিটার মুহাইমিন বলেছেন: :) :)..। পড়ার জন্য ধন্যবাদ

২| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:৪৩

মাসূদ রানা বলেছেন: রবি গুরু ঠাকুর কবি রবিন্দ্রনাথকে নিয়ে লেখা ভালো হয়েছে :) পারলে এই লেখাটিও পড়ে দেখবেন, অনেক কিছু জানতে পারবেন :: Click This Link

ধন্যবাদ ।

২৫ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:০১

জুপিটার মুহাইমিন বলেছেন: হুম ........পড়লাম!!
ভালই লাগল! স্কটিশ লোকসংগীতের প্রতি আগ্রহী হয়ে পড়লাম!

৩| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৩৪

মনিরা সুলতানা বলেছেন: ভালোলাগা !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.