নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলা অামার তৃষ্ণার জল

কয়েস সামী

i m nothing in this huge world...

কয়েস সামী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সময়ের গল্প-১: যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৫২

সে অনেক অনেক আগের কথা। আমাদের রাজ্য শাসন করতো চার-চারটা রাক্ষস। তাদের কথাতে আমরা মানুষেরা উঠতাম, বসতাম। সত্যি কথা বলতে কী, শক্তিহীন, বলহীন আমাদের এছাড়া আর করার কিছুই ছিল না। তারা আমাদের খাবার দিত, পোশাক দিত, ঘর বানিয়ে থাকতে দিত, আমাদের আনন্দ- বিনোদনের জন্য যা যা দরকার, সব দিত। তারপর একসময় কারো বয়স পঞ্চাশ হলেই তাকে ধরে গিলে খেতো।

চার রাক্ষসের মধ্যে আবার প্রতিনয়ত দ্বন্দ্ব-সংঘাত লেগেই থাকতো। এই সংঘাতের কারণে প্রায়ই পঞ্চাশে উপনীত হবার আগেই আমাদের অকাল মৃত্যু হত। পঞ্চাশ হলে খেয়ে ফেলুক- এটা আমরা আমাদের ভবিতব্য হিসেবেই মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু যখন তখন যুদ্ধের কারণে তাদের পায়ের নিচে পিষ্ট হয়ে মৃত্যুটা কেউই মানতে পারতাম না। এই চরম দুঃখজনক ঘটনা নিয়ে সবাই খুব চিন্তার মধ্যে ছিলাম। কিছু একটা করা উচিত সবাই বুঝতে পারছিলাম। কিন্তু মনোবলহীন, আত্মবিশ্বাসহীন, ভীতুর ডিমেরা সব করার কিছুই খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তাই এভাবেই আমাদের চরম নিষ্পেষিত পরাধীন জীবন কাটাতে হচ্ছিল।

একসময় রাক্ষসেরা আমাদের জন্য পড়াশুনার আবিষ্কার করল। বাধ্যতামূলক করে দিল পড়াশুনা। কোন বিষয়ই চারটি রাক্ষসের ঐকমত্য না হলেও এই ব্যাপারটাতে তারা চারজনই একমত হয়েছিল যে একজন অশিক্ষিতের চাইতে শিক্ষত কাউকে গিলে খাওয়া নাকি অধিকতর আনন্দদায়ক। এই উদ্ভট মতামতের কারণটা আমাদের অজানা ছিল। তাছাড়া মানুষ হয়ে রাক্ষসের মানসিক অবস্থা বুঝার উপায়ও ছিল না আমাদের।

তো রাক্ষসদের প্রণয়ন করা সেই শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রথম পাবলিক পরীক্ষা ছিল রা.পূ.শি পরীক্ষা। মানে রাক্ষস পূজা শিক্ষা পরীক্ষা। একবার এমনই এক পরীক্ষার প্রথম দিন চারটা রাক্ষস তাদের নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ ঘোষণা করে বসল। আবার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল পুরো রাজ্য জুড়ে। আবার তবে অকালে প্রাণ হারাবে নির্দোষ কিছু মানুষ। আবার কতো মায়ের বুক খালি হবে। হাহাকার ছড়িয়ে পড়বে রাজ্য জুড়ে। কী করা যায়? কী করা যায়? কিছুই করার নেই। সবাই যে তখন খামখেয়ালী রাক্ষস দেবতার হাতের পুতুল। একটা কাজই করার ছিল কেবল। সেটা হল পরীক্ষার তারিখ পিছিয়ে দেয়া। পরীক্ষা পরিচালনাকারীরা তাই তড়িঘড়ি পরীক্ষার তারিখ পেছানোর মিটিঙে বসলেন। আর যাই হোক পরীক্ষা দিতে গিয়ে কোমলমতি শিশুরা সব মারা যাক- এটা কেউ ভাবতেও পারছিল না। আর তখনই বেঁকে বসল পরীক্ষার্থী শিশুরা। তারা ঘোষণা করল, পরীক্ষা পেছালেও কোন লাভ হবে না। তারা ঠিক করেছে এহেন হানাহানি, সংঘর্ষ বাতিল ঘোষণা না করা হলে তারা কখনই পরীক্ষায় বসবে না। রাজ্যের শাসকদের মধ্যে এহেন ঘনঘন ক্ষমতার দ্বন্দ্ব চলতে থাকলে, এভাবে প্রতিনিয়ত গ্রাম জনপদ ধ্বংস হতে থাকলে পরীক্ষা দিয়ে পড়াশুনা করেই বা কি লাভ? তাই তারা সবাই ঠিক করল আগে হোক চার রাক্ষসের মধ্যে শান্তি চুক্তি। তারপর তাদের পরীক্ষা।

১০ বছরের ছোট মনুষ্য বাচ্চাদের কাছ থেকে এমন প্রতিবাদ মানুষ বড়রা তো বটেই রাক্ষসরাও আশা করেনি। ছোটদের মুখে শান্তি প্রতিষ্ঠার এমন বক্তব্য শুনে, শান্তিময় রাজ্যের আকাঙ্খার কথা শুনে রাক্ষস চতুষ্টয় বেশ লজ্জা পেল। তারা যুদ্ধের দিন শান্তির জন্য আলোচনায় বসতে বাধ্য হল।

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:০৬

খেলাঘর বলেছেন:


নাই মামার চেয়ে কানা মামার রূপক।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:১৮

কয়েস সামী বলেছেন: বুঝলাম না !

২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:৫৪

জাফরুল মবীন বলেছেন: রাক্ষসদের লজ্জা পাওয়া এখন বেশ জরুরী হয়ে পড়েছে।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:১৯

কয়েস সামী বলেছেন: এদের লজ্জা আছে বলে মনে হয় না!

৩| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৫১

দ্য নিশাচর বলেছেন: এখন রাক্ষসদেরই শিক্ষার বড় প্রয়োজন।জ.সে.শি.প-জনগনের সেবা শিক্ষা পরীক্ষা!

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:১৯

কয়েস সামী বলেছেন: চমৎকার মন্তব্য। ধন্যবাদ।

৪| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:০৪

অন্ধবিন্দু বলেছেন:
সামী,
কবে জানি কোমলমতি হতে কোমলের বিলুপ্তি ঘটে। কারণ রাক্ষসের গল্পগুলো কিন্তু আকর্ষণীয়ও বটে !

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:২০

কয়েস সামী বলেছেন: একমত।

৫| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:২০

আমি তুমি আমরা বলেছেন: রাক্ষসদের লজ্জা দিয়ে কি লাভ? বরং মানুষের উচিত এই রাক্ষসদের গিলে খাওয়া।

৬| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:৪৭

ডি মুন বলেছেন: সুন্দর গল্প +++

শুরুটা খুব চমৎকার।
মাঝে আরো বিস্তৃত করা যেত বলে মনে হয়েছে আমার কাছে।

একবার এমনই এক পরীক্ষার প্রথম দিন চারটা রাক্ষস তাদের নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ ঘোষণা করে বসল। আবার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল পুরো রাজ্য জুড়ে। আবার তবে অকালে প্রাণ হারাবে নির্দোষ কিছু মানুষ। আবার কতো মায়ের বুক খালি হবে।

এখান থেকে গল্পের আকস্মিক পট পরিবর্তন হয়েছে বলে হল।

তবে গল্পটা ভালো লেগেছে
+++

রাক্ষসেরা লজ্জা পাক।
রাজ্যে শান্তি আসুক।

শুভেচ্ছা

৭| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৪২

মোঃ ইসহাক খান বলেছেন: পুরনো আবহে নতুন ধারার প্রয়াস।

শুভেচ্ছা।

৮| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:২১

মহান অতন্দ্র বলেছেন: চমৎকার রুপক শিক্ষণীয় গল্প।

৯| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৫২

শায়মা বলেছেন: রাক্ষস খোক্ষসের গল্পে কোথাও রাজারাণী পেলাম না ভাইয়া।:(

১০| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৬:৫০

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: গল্পের রাক্ষসেরও শুভবু্দ্ধির উদয় হয়। বাস্তবের রাক্ষস তারও অধম।

১১| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২২

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: রূপকথাই বটে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.