নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলা অামার তৃষ্ণার জল

কয়েস সামী

i m nothing in this huge world...

কয়েস সামী › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পে গল্পে আল্ আহযাব- ৬

০৯ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:৪৫

মুক্তি প্রাপ্ত কৃতদাস যায়েদ তখন মুহম্মদ (সাঃ) এর দত্তক পুত্র। পুত্রের বিয়ে দিতে হবে। মুহম্মদ (সাঃ) চাইলেন যায়েদের বিয়ে হোক তারই ফুফুতো বোন যয়নব (রাঃ) এর সাথে। তাই বিয়ের পয়গাম নিয়ে যখন তিনি হাজির হলেন যয়নব (রাঃ) এর পরিবারে তখন যয়নব (রাঃ) বললেন, “আমি অভিজাত কুরাইশ পরিবারের মেয়ে, তাই আমি তাকে নিজের জন্য পছন্দ করি না।” একজন কৃতদাসের সাথে কিভাবে তাদের মেয়েকে বিয়ে দেবেন এটা ভেবে যয়নব (রাঃ) এর অভিভাবকরাও এ বিয়েতে মতামত দিলেন না। কিন্তু হযরত মুহম্মদ (সাঃ) তো যায়েদকে নিজ ছেলের চোখে দেখেন। তিনি চান বিয়েটা হোক। এমন অবস্থায় আয়াত নাযিল হল-

৩৬. আল্লাহ ও তার রাসূল কোন বিষয়ে নির্দেশ দিলে কোন মুমিন পুরুষ কিংবা মুমিন নারীর সে বিষয়ে বিষয়ে কোন সিদ্ধান্তের অধিকার থাকবে না। কেউ আল্লাহ ও তার রাসূল (সাঃ) কে অমান্য করলে সে তো স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে।

এ আয়াত স্পষ্টভাবে বলে দিল আল্লাহ ও মুহম্মদ (সাঃ) কোন বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলে সেই সিদ্ধান্তের বাইরে যাবার অধিকার কোন মুমিন মুসলমানের নেই। অগত্যা বিয়ে হয়ে গেল মুক্তিপ্রাপ্ত কৃতদাস, রাসূল (সাঃ) এর পালিত পুত্র হযরত যায়েদ (রাঃ) এর সাথে হযরত মুহম্মদ (সাঃ) এরই ফুফুতো বোন বিবি যয়নব (রাঃ) এর। বিবি যয়নব (রাঃ) যায়েদ বিন মুহম্মদকে বিয়ে করলেন ঠিকই কিন্তু মন থেকে তাকে কখনোই মেনে নিতে পারলেন না। তিনি হলেন অভিজাত কুরাইশ বংশের কন্যা আর তাকে বিয়ে করতে হল কি না তাদেরই পরিবারের ভরণপোষনকৃত এক দাসকে। তাই বিয়ের এক বছর যেতে না যেতেই তাদের মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়ে গেল। যায়েদ (রাঃ) বেশ কয়েকবার নবী (সাঃ) এর সাথে ব্যাপারটা শেয়ার করলেন। কিন্তু নবী করিম (সাঃ) প্রতিবারই তাকে তার স্ত্রীর সাথে মানিয়ে চলার পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এক সময় যায়েদ(রাঃ) এর কাছে বিবি জয়নবের সাথে ঘর করা রীতিমতো অসম্ভব মনে হলে তাকে তিনি তালাক দিয়ে দিলেন। তালাকের পর নির্দিষ্ট ইদ্দত কালীন সময়ের পর হযরত মুহম্মদ (সাঃ) বিয়ে করলেন বিবি যয়নব (রাঃ) কে। তখনই মুনাফিকরা ব্যাপারটাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা শুরু করল। তারা বলতে থাকল যে, যে মানুষটা নিজ থেকে যায়েদকে তার পুত্র হিসেবে প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েছিলেন, তাকে তার উত্তরাধিকার করেছিলেন সেই পালিত পুত্রের স্ত্রীকে তিনি নিজে বিয়ে করে ফেললেন! আরবদের কাছে তো এ ঘোর অন্যায়! এভাবে তারা কুৎসা রটাতে থাকল। তখনই বিবি যয়নব (রাঃ) এর সাথে হযরত মুহম্মদ (সাঃ) এর বিয়ের যথার্থতা বুঝিয়ে দিতে এ আয়াত নাযিল হল-

৩৭. স্মরণ কর, আল্লাহ যাকে অনুগ্রহ করেছেন এবং তুমিও যার প্রতি অনুগ্রহ করেছো। তুমি তাকে বলেছিলে, তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক বজায় রাখো এবং আল্লাহকে ভয় কর। তুমি তোমার অন্তরে যা গোপন করছিলে আল্লাহ তা প্রকাশ করে দিচ্ছেন। তুমি লোকদেরকে ভয় করছিলে অথচ আল্লাহকে ভয় করাটাই তোমার পক্ষে অধিকতর সঙ্গত। অতঃপর যায়েদ যখন তার সাথে বিবাহ সম্পর্ক ছিন্ন করল তখন আমি তাকে তোমার সাথে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ করলাম যাতে মুমিনদের পোষ্যপুত্ররা নিজ স্ত্রীর সাথে বিবাহ সম্পর্ক ছিন্ন করলে সেইসব রমণীকে বিয়ে করায় মুুমনদের কোন বিঘ্ন না হয়। আর আল্লাহর আদেশ কার্যকর হয়েই থাকে।
৩৮. আল্লাহ নবী (সাঃ) এর জন্য যা বিধি সম্মত করেছেন তা করতে তার জন্য কোন বাঁধা নেই। পূর্বে যেসব নবী অতীত হয়ে গেছেন তাদের ক্ষেত্রেও এটাই ছিল আল্লাহর বিধান। আল্লাহর বিধান সুনির্ধারিত।
৩৯. তারা (পূর্বের নবীরা) আল্লাহর বাণী প্রচার করতো এবং তাকে ভয় করতো। আর আল্লাহকে ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করতো না। হিসাব গ্রহণে আল্লাহই যথেষ্ট।
৪০. মুহম্মদ (সাঃ) তোমাদের মধ্যে কোন পুরুষের পিতা নয়। বরং সে আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞ।
৪১) হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে বেশী করে স্মরণ করো।
৪২) এবং সকাল সন্ধ্যায় তার মহিমা ঘোষণা করতে থাকো।
৪৩) তিনিই তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেন এবং তার ফেরেশতারা তোমাদের জন্য দোয়া করে, যাতে তিনি তোমাদেরকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোর মধ্যে নিয়ে আসেন, তিনি মুমিনদের প্রতি বড়ই মেহেরবান।
৪৪) যেদিন তারা তার সাথে সাক্ষাত করবে, তাদের অভ্যর্থনা হবে সালামের মাধ্যমে।
৪৫) এবং তাদের জন্য আল্লাহ বড়ই সম্মানজনক প্রতিদানের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। হে নবী! আমি তোমাকে পাঠিয়েছি সাক্ষী বানিয়ে,
৪৬) সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারী করে। আল্লাহর অনুমতিক্রমে তার দিকে আহ্বানকারীরূপে এবং উজ্জ্বল প্রদীপ হিসেবে।
৪৭) সুসংবাদ দাও তাদেরকে, যারা ঈমান এনেছে তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে রয়েছে বিরাট অনুগ্রহ।
৪৮) আর কখনো দমিত হয়ো না কাফের ও মুনাফিকদের কাছে, পরোয়া করো না তাদের পীড়নের এবং ভরসা করো আল্লাহর প্রতি। কর্মবিধায়ক রূপে আল্লাহই যথেষ্ট।
৪৯) হে ঈমানদারগণ! তোমরা মুমিন নারীদের বিয়ে করার পর তাদেরকে স্পর্শ করার পূর্বে তালাক দিলে তোমাদের জন্য তাদের পালনের কোন ইদ্দত নেই যা তোমরা গণনা করবে। তোমরা তাদেরকে কিছু সামগ্রী দেবে এবং সৌজন্যের সাথে তাদেরকে বিদায় করবে। (চলবে...)
বি.দ্র: ছোটবেলা থেকেই কোরান পড়া শুরু করেছি। পবিত্র রমযান মাস এলে অন্যদের সাথে রীতিমতো প্রতিযোগিতা করে কোরান শেষ করার চেষ্টা করেছি। কে কতবার কোরান শেষ করতে পারল এ নিয়ে আমাদের মধ্যে ছিল তুমুল প্রতিযোগিতা। কিন্তু আমাদের এই পাঠ ছিল আরবী ভাষায়। কখনো এর অর্থ জানার চেষ্টা করিনি। আমি যে কোরান শরীফটি পড়তাম তার নিচে বাংলা ভাষায় এর অনুবাদ থাকা সত্ত্বেও কখনো ইচ্ছে হয়নি তাতে কি লেখা আছে তা পড়ে দেখার। কিছু কিছু আয়াতের দিকে হয়তোবা কখনো চোখ পড়েছে। কিন্তু না বুঝার কারনে কখনো বেশি দূর এগোইনি। কী দরকার! আরবী পড়লেই তো সওয়াব হয়। বাংলা পড়ার প্রয়োজনীয়তা বা ইচ্ছা কোনটাই কখনো উপলদ্ধি করিনি। কেন পড়লাম না, কেন আগ্রহ হল না- এ নিয়ে ভাবকে ভাবতে মনে হল, সহজ ভাষায় আগ্রহ সৃষ্টিকারী কোরানের উপর এমন কোন বাংলা বই হাতের কাছে পাইনি বলেই কখনো কোরান বুঝার ইচ্ছে হয়নি আমার। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, যে পবিত্র গ্রন্থটি আমাদের প্রত্যেক ঘরে ঘরে অন্তত একটি করে আছে সেই গ্রন্থে আসলে কী লেখা আছে তা জানার একটুখানি চেষ্টা করি। এ সিদ্ধান্ত থেকেই সুরা আল আহযাব পড়া শুরু করলাম। আর ভাবলাম, এ সুরাটি পড়ে আমি যা জানছি তা আপনাদের সাথে শেয়ার করি। আমার এ লেখায় তাফসীর ইবনে কাসীর, তফসীরে মা‘আরেফুল কোরআন, তফসীরে জিবরীল, তাহফীমুল কোরআন, বুখারী শরীফ, সহীহ মুসলিম, কোরান শরীফ-সরল বঙ্গানুবাদ থেকে প্রাপ্ত তথ্যগুলো সন্নিবেষ্টিত হবে। লেখায় কোন ভুল ধরা পড়লে জানাবেন।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:৫৮

কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: প্রিয়তে

০৯ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:০৫

কয়েস সামী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

২| ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:১১

ধমনী বলেছেন: আপনার প্রচেষ্টা অব্যহত থাকুক।

০৯ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:০৫

কয়েস সামী বলেছেন: থাকবে ইনশাআল্লাহ!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.