নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলা অামার তৃষ্ণার জল

কয়েস সামী

i m nothing in this huge world...

কয়েস সামী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভাষার গল্প: তারপরও তুমি সুন্দর

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:৪১

রবিন পার্কের বেঞ্চিতে বসে আছে। বাসার সামনের এই পার্কটাতে সে রোজ বিকেলে বেড়াতে আসে। কিছুক্ষণ হাটাহাটি করে এই নির্দিষ্ট বেঞ্চে বসে গল্পের বই পড়ে। আজ পড়ায় বিঘ্ন হচ্ছে। কারণ কোথেকে জানি এক রূপবতী মেয়ে তার পাশে এসে বসেছে। রবিন কিছুক্ষণ পর পর মেয়েটির দিকে তাকাতে বাধ্য হচ্ছে। মেয়েটির কানে হ্যাডফোন লাগানো। বোধ হয় কোন গান শোনা হচ্ছে। হাতে একটি ডায়েরী। একটা কিছু লেখা হচ্ছে তাতে। কথা বলবে কি বলবে না ভাবতে ভাবতে রবিন মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করল, কী গান শুনছো?
মেয়েটি শুনতে পেল না। কানে তো হ্যাডফোন লাগানো।
কিছুক্ষণ পর আবার জিজ্ঞেস করল, কার গান শুনছো।
মেয়েটি এবারও খেয়াল করল না।
এবার রবিন বুদ্ধি করে তার বইয়ের শেষের খালি পৃষ্ঠাটায় লিখল, কি গান শোনছো। বইটি মেয়েটির চোখের সামনে নিতেই সে রবিনের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হাসল। তারপর সেও তার ডায়েরীতে লিখে দেখালো, খুব সুন্দর একটা গান।
উত্তরে রবিন লিখল, আমি শোনতে পারি?
না।
রবিন এবার লিখল- তুমাকে খুব সুন্দর লাগছে।
মেয়েটি লিখল- ধন্যবাদ।
কিছুক্ষণ পর মেয়েটি লিখল, এখন যাই। সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে।
মেয়েটি চলে গেল।

দ্বিতীয় দিন:
রবিন গতকালের মতো পার্কে বসে আছে। পড়ায় আজ তার কোন মন নেই। সে অপেক্ষা করছে মেয়েটির। একসময় মেয়েটিও আসল। এসে গতকালের মতো করেই ডায়েরীতে লেখা শুরু করল। কানেও গতকালের মতোই হ্যাডফোন লাগানো। রবিনের দিকে কোন মনোযোগ নেই তার।
রবিন বুঝতে পারল আজো চিরকুট লিখে মেয়েটির দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে।
- আজ এথো দেরী?
- তুমি কি আমার জন্য অপেক্ষা করছিলে?
- হে।
- বাসায় মেহেমান ছিল।
- ও। তোমাকে আজ আরো বেসি সুন্দর লাগছে।
- ধন্যবাদ।
- তুমি কোন গানটা শোনছো এখন।
- বিশেষ একটা গান।
- কালকের ষেই একই গান?
- হ্যা।
- আমাকে শোনানো যাবে?
- না। শুনানো যাবে না।
- আচ্ছা ঠিক আচে। তুমার নামটা তো জানা হল না।
- আমার নাম পল্লবী।
- আমার নাম রবিন।
- আচ্ছা রবিন, তুমি এতো বানান ভুল কর কেন?
- আসলে বাংলাটা ওবাবে পারি না। ইংরেজীতেই কমফোর্ট পিল করি।
- এটা ঠিক না। আগে বাংলা শেখো।
- আচ্ছা শিকে নেব।
- আমি যাই।
- ঠিক আচে। কাল এসো।

তৃতীয় দিন:
পল্লবী বসে আছে। রবিন আসে নি। অনেক দেরি হয়ে গেছে। আজ বোধ হয় রবিন আসবে না। ঠিক তখনই রবিনের আবির্ভাব। রবিন বসতেই পল্লবী কাগজ এগিয়ে দিল।
-আজ এতো দেরী করলে যে!
-শিখছিলাম।
-কী শিখছিলে?
-বাংলা বানান।
পল্লবী হাসল। কাগজে লিখল- তোমাকে ধন্যবাদ। জানো আমার একটা কষ্ট আছে।
-কী কষ্ট?
-গান শুনবে?
-শুনাও।

পল্লবী তার হ্যাডফোনটি খুলে দিল। রবিন সেটি কানে লাগিয়ে অবাক হয়ে বলে উঠল, কিছুই তো শুনতে পাচ্ছি না। পল্লবী রবিনের অবাক হওয়া খেয়াল করে হাতে নাড়ল। তার হাতের ইশারা রবিনের বুঝতে কষ্ট হল না। পল্লবী কথা বলতে পারে না।
রবিন কোন কথা বলল না। সে আসলে কি বলবে তা বুঝতে পারছিল না।

পল্লবী তার ডায়েরীতে লিখলো, আমার কষ্টটা জানো? এতো সুন্দর একটা ভাষা আমাদের। অথচ এই ভাষায় আমি কথা বলতে পারি না।

রবিন বলল, তুমি তারপরও অনেক সুন্দর।

(বি. দ্র: ইউ টিউবে লাভ ল্যাংগুয়েজ নামক শর্ট ফিল্মটি দেখার পর)

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:১৯

আব্দুল্লাহ তুহিন বলেছেন: চমৎকার ফুটিয়ে তুলেছেন,,

একুশ নিয়ে আমার এ পোস্টটা পড়ার জন্য অনুরোধ রইল,
পোস্ট লিংক

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:০৯

কয়েস সামী বলেছেন: আপনার লেখাটি পড়েছি। ভাল হয়েছে।

২| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৫২

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


ভাল লাগা রইলো।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৭:৪২

কয়েস সামী বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:২৫

বিজন রয় বলেছেন: ভাল লাগল গল্পটি।
++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.