নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলা অামার তৃষ্ণার জল

কয়েস সামী

i m nothing in this huge world...

কয়েস সামী › বিস্তারিত পোস্টঃ

দানব

১৮ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৪৯


আমার ভেতর না, একটা দানব আছে। আমি নিজেই জায়গা করে দিয়েছি তাকে। একথা কেউ জানে না। কেবল আমি জানি, আমার ভেতর - একটা দানব বাস করে।

ছেলেবেলা থেকেই বই পড়ার খুব শখ ছিল। সারাক্ষণ বইয়ে বুঁদ হয়ে থাকতাম আর ভাবতাম, এই যে এইসব লেখকেরা- যাদের লেখা পড়ে আমি কোন সুদূরে হারিয়ে যাই, আমার সকল দুঃখ ভুলে গভীর আনন্দে ডুবে যাই, কখনও কি তাদের মতো হতে পারবো? রবি ঠাকুর লিখেছিলেন, আজি হতে শত বর্ষ পরে, কে তুমি পড়িছ বসে মোর কবিতাখানি...। উনি কতোটাই না নিশ্চিত ছিলেন শত বর্ষ পরেও তাকে পড়া হবে! তেমন করে আমার লেখাও কি শত বছর পর কেউ পড়বে?

এই ইচ্ছে নিয়েই লিখতে শুরু করেছিলাম একদিন। লিখতে শুরু করেছিলাম আপন মনেই। লিখতে লিখতে একসময় মনে হল এমন লেখাতো আমি চাই নি। আমি তো এমনটা চাই নি যে, আমি নিজেই কেবল আমার লেখার পাঠক হব। অন্যেরা না পড়লে লেখকের আর মর্যাদা কোথায়?

তাই,

পত্রিকার পাঠক কলামে লেখা শুরু করলাম। পত্রিকাগুলোও কি মনে করে জানি আমার লেখা ছাপানো শুরু করল। আর সেইসব লেখা পড়ে সকল টিন এজ ও নবীন পাঠকেরা মুগ্ধ হয়ে পত্রমিতালী করার অভিপ্রায় নিয়ে আমার কাছে চিঠি লেখা শুরু করল। আমিও বোকার মত নিজেকে লেখক লেখক ভাবা শুরু করলাম। এবং বিপুল উৎসাহ নিয়ে লেখা চালিয়ে যেতে থাকলাম ঠিক তখন পর্যন্ত যখন নীলা আমাকে বলল, পত্রিকার পাঠক পাতায় লেখা মানে কিন্তু সত্যিকারের লেখক হওয়া নয়। তুমি নিজেকে লেখক হিসেবে মনে করতে পার তখনই যখন জাতীয় দৈনিকের সাহিত্য সাময়িকী পাতায় তোমার লেখা ছাপা হবে। কথাটা খুব মনে ধরল। তাই শুরু হল সাময়িকী পাতায় লেখা ছাপানোর অবিরাম ব্যর্থ চেষ্টা। আমার লেখাগুলো হয়তোবা ভীষণ রকমের অপরিপক্ক ছিল। কিছুতেই সেগুলো আলোর মুখ দেখছিল না। দীর্ঘ এক বছর চেষ্টা করার পর মনে হল, নাহ! আর হবে না। বরং একটা কাজ করা যাক। আমি বরং বই ছাপাই। আমার মাথায় আবার, যখন যেটা ঢুকে তাই করি। কয়েকটা প্রকাশনী ঘুরে দেখলাম। সবাই বলল, বই প্রকাশের মূল্য দিতে হবে। পুরোটাই। সারা জীবন শুনে আসলাম, বই ছাপিয়ে টাকা রোজগার করা যায়। আর এখন দেখি নিজের টাকায় বই ছাপাতে হবে। নিজ খরচায় বই ছাপিয়ে কতই বা লাভ করব? কজনই বা আমার কাছ থেকে বই কিনবে? তাই অন্য পথ ধরলাম। বিখ্যাত লেখকদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলাম। শুনলাম, মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যার নাকি মেইল করলে উত্তর দেন। অনেক চেষ্টা করে তার মেইল অ্যাড্রেস যোগাড় করে একটা গল্প পাঠালাম। তিনি গল্পটি পড়লেন এবং বললেন হাতের লেখা মোটামুটি। আরেকটু চর্চা করতে হবে। আরেকটু পড়াশুনা করতে হবে। বিশেষ করে বিদেশী সাহিত্য। আমি তো পড়াশুনার মধ্যেই আছি। আর কতকাল পড়াশুনা করলে লেখা ঠিকঠাক হবে, স্যার? হুমায়ূন আহমেদ তো ভার্সিটি পড়াকালীনই নন্দিত নরকে লিখেছিলেন। আবার মেইল করলাম, একটা বই প্রকাশে আগ্রহী। উনি উত্তর দিলেন এখনই বই ছাপাবার কী দরকার? আগে বিভিন্ন সাময়িকীতে লেখালেখি করে পরিচিত হলে প্রকাশনীগুলো নিজে থেকেই বই প্রকাশ করতে এগিয়ে আসবে। জাফর স্যার, আপনাকে কী করে বলি, সাময়িকীগুলো আপনাদের লেখা নেয়ার জন্য যেমন করে দরজায় দাড়িয়ে থাকে তেমনি করে আমাদেরও পত্রিকা অফিসে যাতায়াত করতে করতে জুতার সোল নষ্ট করতে হয়। পার্থক্য কেবল এই যে, আপনারা পত্রিকাগুলোকে শুধু শুধু ঘুরান না। একটা কিছু লেখা দেয়ার চেষ্টা করেন। আর প্রকাশনীওলারা আমাদের ঘুরিয়ে আনন্দ পায়। কেবলই আনন্দ পায়। যাই হোক, জাফর স্যারকে ছেড়ে দিয়ে পিছু নিলাম মইনুল আহসান সাবেরের। নিজে লেখক হয়েও একটা প্রকাশনীর মালিক হওয়ায় মনে হল তিনি লেখকদের মর্মবেদনা বুঝবেন। তিনি বুঝতে পারলেন এবং খুব সুন্দর করে বুঝিয়ে বললেন, একজন অপরিচিত লেখকের বই প্রকাশ করে কোন লাভ নাই তার। কয়জন পাঠক এই বই কিনবে? তার খরচ উঠে আসবে কিভাবে? তারা তো ব্যবসা করতে নেমেছেন। সমাজসেবা করতে নয়। কথাগুলো কঠিন হলেও খুব যুক্তিযুক্ত বলে মনে হল। অগত্যা আমি নিজের খরচেই একটা বই বের করে ফেললাম। কিন্তু যা হবার তাই হল। রকমারী.কমে বইটি রাখলেও কেউ আমার বই কিনতে আসল না। আমি নিজই পরে অর্ডার দিয়ে কয়েকটি বই কিনেছিলাম। পাড়ার একটা ছেলে অবশ্য দুদিন পরপর আমার বইয়ের প্রশংসা করে করে বেশ কটি বই নিয়ে গেল। পরে জানতে পারলাম, সে আসলে আমার থেকে বিনামূল্যে বই নিয়ে নিয়ে বিভিন্ন বিয়ের দাওয়াত খেতে যায়। এর থেকে লজ্জা আর কিসে হবে? ব্যাপারটি জানার পর মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে হচ্ছিল। কি লজ্জা! কি লজ্জা! লেখক হবার আজন্ম সাধ আর আমার পূরণ হল না। ঠিক তখনি আমি ফিসফিস করে কিছু কথা শুনলাম,

-লেখক হইতে চাইলে আমার কথা শুনতে হবে।

সারাদিনের সূর্যের আলোয় লুকিয়ে থেকে তখন আকাশে কেবল চাঁদটা উঁকি দিচ্ছে। আমি তখন অফিস থেকে বের হয়ে বাসায় না গিয়ে মনু নদীর তীর ধরে হাটছিলাম। ফিসফিস শব্দ শুনে চারদিকে তাকালাম। নাহ! কাউকে দেখা যাচ্ছে না। তবে কি শব্দ শোনাটা আমার মনের ভুল?

-না! এটা তোমার মনের ভুল না। আমি, এই তো তোমার মুখের সামনে।

ঠিক সামনে থেকে এ কথা শুনে শিরদাঁড়া বেয়ে ঘাম ঝরে পড়ল আমার।
-ভয় পাবার কোন দরকার নেই। তুমি জনপ্রিয় লেখক হতে চাও কি না বল।
কোন রকমে জবাব দিলাম, হ্যা।
-তবে কি পারবে নিজের সবচাইতে প্রিয় কিছু ত্যাগ করতে?
ভয় লাগলেও প্রশ্নটা আমাকে ভাবাল। লেখক হবার স্বপ্নকে বুকে লালন করে বড় হয়েছি। এর পেছনে অনেক অনেক সময় নষ্ট করেছি। কেন আমি অন্য সব প্রিয় কাজকে ত্যাগ করতে পারব না? প্রিয় কাজ বলতে গান শুনা, বই পড়া আর মুভি দেখা। লেখক হবার স্বপ্নের কাছে তো এগুলো কিছুই না। মুখ দিয়ে বের হয়ে গেল, পারব।
-তাহলে তোমার মুখ হা কর। আমাকে তোমার ভেতর নাও।
আমি হা করলাম।
কিছু একটা যেন আমার গলা দিয়ে ভেতরে ঢুকে গেল। তীব্র তেঁতো একটা স্বাদ আমার স্বাদ- ইন্দ্রিয়কে গ্রাস করে ফেলল। ওয়াক! গলা বেয়ে বমি চলে আসল। বমি করার জন্য বসে পড়লাম। বমি শেষে দাড়াতে গিয়ে মাথা ঘুরতে লাগল। আমি মাটিতে পড়ে গেলাম। তারপর আর কিছুই বুঝতে পারলাম না। একসময় চোখ খুলে দেখি আমি একটা হাসপাতালে শুয়ে আছি। আমার মুখের সামনে আমার মার সুন্দর মুখটা ভেসে উঠল।
-কেমন লাগছে এখন?
-ভাল।
একদিন রেস্ট নিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে আসলাম।
এসেই আমার লেখার টেবিলে বসে লিখা শুরু করলাম। আশ্চর্য! আমার বিন্দু মাত্র কষ্ট করতে হচ্ছিল না। কী এক অদ্ভুত একটা থিম মাথায় চলে এল! এটা এমন একটা থিম যা এখন পর্যন্ত কেউ লিখে নি। এমন করে যে ভাবা যায় তা কেউ কল্পনাও করতে পারে নি। তরতর করে লিখতে থাকলাম আমার নতুন সেই লেখাটা। সেদিন ছিল বুধবার। শুক্রবার প্রথম আলোর সাহিত্য সাময়িকী। এ সপ্তাহের গল্প নিশ্চয়ই বাছাই হয়ে গেছে। তবু সাহস করে ইমেল করে দিলাম গল্পটা। পুরোটা সময় কেমন যেন একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম। লেখা পাঠানোর পর ঘোরমুক্ত হলাম। এমন তো কত গল্পই না পাঠিয়েছি প্রথম আলোয়। তারা তো কখনই আমার গল্পকে পাত্তা দেয় নি। আমি জানি, চ্যানেল ছাড়া কোন পত্রিকায় গল্প ছাপানো যায় না।

শুক্রবার সকালে শিবলীর কলে ঘুম ভাঙলো। কয়েস ভাই, আপনি তো ফাটিয়ে দিয়েছেন। আপনার লেখা প্রথম আলোর সাহিত্য সাময়িকীতে। লাফ দিয়ে উঠলাম। যদিও কথাটা মোটেও বিশ্বাস হচ্ছিল না। আমাকে নিয়ে আমার পরিচিত জনরা এমন মজা অনেক দিনই করেছে। তবু দুরু দুরু হাতে প্রথম আলোটা হাতে নিলাম। শিল্প সাহিত্য পাতার দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় গিয়ে আমার তো হতভম্ব অবস্থা! এ যে আমার গল্প! অবশেষে! অবশেষে আমার স্বপ্ন স্বার্থক! সাহিত্যের কুলিন সমাজে বুঝি এবার আমি জায়গা করে নিব। আহ! কি যে এক শান্তি!
-দেখেছো, আমি বলেছিলাম না?
কে জানি ফিসফিস করে কথা বলে উঠল।
চারদিকে তাকালাম।
নাহ! কেউ নাই!
-বাহ! ভুলে গেলে? এই যে আমি তোমার ভেতর থেকেই কথা বলছি।
ফিসফিস সেই শব্দ শুনে আমার অন্তরাত্মা কেঁপে উঠল। সে-ই, সেই দানবটা কথা বলছে। সে এখনও আছে!
-হ্যা আছি। থাকব। তোমার ভেতরে। আর তোমাকে জনপ্রিয় লেখক করে দেব।
-তুমি কিভাবে করবে? হু? তুমি কে?
-আমি তোমার ভেতরের একজন, যাকে তুমি দানব নাম দিয়েছ। হু। আমি দানবই বটে। তোমার নামকরণ যথার্থ।
-কিন্তু লেখা লিখলাম আমি, ইমেল করলাম আমি। আর তুমি সকল ক্রেডিট নিতে চাইছ? এটা অন্যায়।
-বা রে! তুমি এ লেখা নিজে থেকে কিভাবে লিখবে? এমন থিম বের করার ক্ষমতা কি তোমার ছিল কোন কালে? নাকি কোন মানুষ এমন কোন থিম মাথায় আনতে পারবে?
বিষয়টা আমিও খেয়াল করেছি বলেই তার কথা মেনে নিতে বাধ্য হলাম।
-কী হল? ধন্যবাদ দেবে না?
মনটাই খারাপ হয়ে গেল। যে গল্পটা লেখা হল সেটা কিনা আমার না? আমি তো এমন করে লেখক হতে চাই নি! ফেইক লেখক! মিথ্যা লেখক!
-মিথ্যা বল আর যাই বল, তুমি এখন একজন লেখক। তাছাড়া আমার ব্যাপারটা তো আর কেউ জানছে না, তাই না?
-হু। তাই।
-তাহলে আমাকে ধন্যবাদ দিবে না?
-ধন্যবাদ।
সারাদিন প্রচুর কল আসল। সবচে বেশি অবাক হলাম রাফি ভাইয়ের কল পেয়ে। খুব পড়ুয়া এই বড় ভাইটি কখনই আমার লেখার কোন প্রশংসা করেন নি। লেখা পড়তে দিলেই প্রথম প্যারা পড়ে বলে উঠেন, কি সব হাবিজাবি লিখিস তুই। লেখালেখি ছেড়ে অন্য কোন লাইনে ট্রাই কর। সেই রাফি ভাই কল দিয়ে বললেন, এটা তুই ক্যামনে লিখলি? এই থিমটা কোথায় পাইলি? আর লেখার ধরণটাও ফাটাফাটি। কিভাবে লিখলি তুই?
রাফি ভাইয়ের কন্ঠে এমন কথা শুনে আমার হাত থেকে মোবাইল পড়ে গেল। তবে কি আমি সত্যি সত্যি ভাল কিছু লিখছি?
বাপ্পি স্যার কল দিয়ে বললেন, তোমাকে আমি শামসুল হককে ফলো করতে বলেছিলাম। কিন্তু এটা কার স্টাইল ফলো করলে? আমি তো মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে পড়ে ফেললাম। নাইস! ভেরি নাইস জব!
আমি তো আর আমিতে থাকলাম না। বাপ্পি স্যারের মতো সাহিত্যের পোকা এ কথা বললেন! ইয়াহু!!
রাতে বিছানায় যাবার পর দানবটা আবার কথা বলে উঠল।
-বিনিময় দিবে না?
-কিসের বিনিময়?
-এই যে তোমাকে হিট বানিয়ে দিলাম।
মনে পড়ল, দানবটার চাওয়াটার কথা। আমার প্রিয় কিছুর বিনিময়ে সে আমাকে লেখক করতে রাজী হয়েছিল।
বললাম, হু। দাবা খেলা আমার খুব প্রিয়। আমি ওটা ছেড়ে দিলাম।
-না, আমি দাবা খেলার কথা বলছি না।
-তাহলে আমি গান শুনা বা বই পড়া ছেড়ে দিলাম।
-নাহ! ওগুলোতেও আমার কোন আগ্রহ নাই।
-তাহলে তুমি কী চাও?
-আমি তোমার সবচে প্রিয় মানুষটাকে চাই।
-মানুষ! প্রিয় মানুষ! এটা তো আগে বল নি।
-আমি যা বুঝাতে চেয়েছিলাম সেটা তুমি বুঝ নাই। সেটা কি আমার দোষ?
-তবে তুমি কাকে চাও?
-তুমি ভেবে বের কর, কে তোমার প্রিয়। গুডবাই।
২.
নীলার সাথে পরিচয় হয়েছিল আমারই একটা লেখার মাধ্যমে। আমার সেই পাঠকের পাতায় লেখার সময় কাঁচা হাতের লেখা পড়েই সে আমাকে একটি চিঠি দিয়েছিল। চিঠিটা আমার লেখক হবার ইচ্ছেটার ব্যঙ্গ করেই সে লিখেছিল। সে আমাকে কয়েকটি কবিতা লিখে পাঠাতে বলেছিল এবং প্রমিজ করেছিল সেগুলো খুব যত্ন করে বাঁধিয়ে রাখবে এবং মারা যাবার সময় তার নাতিপুতিদের বলে যাবে তারা যেন তাদের নাতিপুতিদের লেখাগুলো পড়তে দেয়। এভাবেই সে নাকি আমার শতবর্ষ পরে লেখা পঠিত হবার ইচ্ছেটা পূরণ করে দিবে! প্রচুর চিঠি পেতাম তখন। বন্ধুত্বের আহবান নিয়ে অনেকেই লিখত। কিন্তু তখন তো নিজেকে খুব বড় মাপের লেখক মনে করতাম এবং মনে করতাম বড় লেখকদের এরকম প্রচুর ফ্যান থাকবেই, এটাই স্বাভাবিক। তাই আমি কারো কোনো চিঠির উত্তর দিতাম না। কিন্তু নীলার চিঠি পেয়ে তার উত্তর না দিয়ে পারলাম না। না, কোন কবিতা লিখে পাঠালাম না। তার বন্ধুত্ব প্রার্থণা করলাম। প্রার্থণা মঞ্জুর হল। শুরু হল দুজনের পত্র মিতালী। কি যে সব চিঠি লিখত সে! মন উচাটন করে দিত আমার। এমন একটি ট্যালেন্টেড মেয়ের বন্ধুত্ব পেয়ে নিজেকে খুব গর্বিত মনে করতে থাকলাম। পত্র থেকে মোবাইল আলাপ শুরু হল একসময়। তারপর একদিন চিঠি চালাচালির চির সমাপ্তি ঘটিয়ে ফেইসবুকে ফ্র্যান্ডশিপ পাতালাম। একদিন সে আমাকে দেখতে চাইল। ফেইসবুকে ভিডিও চ্যাট সবে শুরু হয়েছে তখন। আমি ভিডিও কল দিলাম। দুজনে দুজনকে দেখলাম। সে বলল, খুব মানাবে। বললাম, কী মানাবে? দুজনে খুব মানাবে। আমি বললাম, কিসে মানাবে? হাসব্যান্ড ওয়াইফ হিসেবে খুব মানাবে। আমি বললাম, আর ইউ সিরিয়াস? সে বলল, হোয়াই নট?

তখনও হাসব্যান্ড ওয়াইফ হবার সময় হয় নি। তাই বন্ধু থেকে হয়ে গেলাম আমরা প্রেমিক- প্রেমিকা। হাসব্যান্ড ওয়াইফ হবার পূর্বের ধাপটা আমরা বেশ কাটাচ্ছি তখন। দুজন মিলে পিৎজা হাটে গিয়ে পিৎজা খাওয়া, তুমুল বৃষ্টিতে ফ্লাই ওভারে হাত ধরাধরি করে হাটা, বিকেলে পার্কে বসে বাদাম খেতে খেতে জমিয়ে আড্ডা দেয়া- খুব রোমান্টিক সময় তখন। এই সময়ে যদি আমাকে জিজ্ঞেস করা হত, আমার সবচে প্রিয় মানুষটি কে, তাহলে তো নীলাই হবে সেটা, তাই না? নাকি আমার মা আমার সবচে প্রিয়? নাকি আমার বাবা? আচ্ছা, প্রিয় তো সে-ই হয় যাকে ছাড়া এক মুহুর্তও কল্পনা করা যায় না, তাই না? সেক্ষেত্রে তো নীলাই এগিয়ে থাকবে। আমার প্রতিটা মুহুর্তেই তো নীলা আমার সাথে থাকে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই নীলার সাথে কথা বলি। রাতে বিছানায় গিয়েও তার সাথে কথা বলি। কোন ইন্টারেস্টিং ঘটনা ঘটলে সাথে সাথে নীলাকে জানানো হয়। অথচ মা কিংবা বাবার সাথে তো সেই সকালে ঘুম থেকে উঠে কথা হয় আর রাতে ঘুমুতে যাবার আগে কিছুক্ষণ কথা হয়। সারাটা দিনের কোথাও তো আর তাদের কোন অস্তিত্বই থাকে না। অথচ আগে, মানে আমার ছেলেবেলায় কিছু ঘটলে মা কে না জানানো পর্যন্ত শান্তি পেতাম না। একবার মা তার বোনের বাসায় এক রাতের জন্য বেড়াতে গিয়েছিলেন। রাতে তো আমার ঘুমই আসে না। মাকে ছাড়া বুঝি থাকা যায়? অথচ কিছুদিন আগে মা আর বাবা দুজনই অস্ট্রেলিয়া গিয়ে থেকে এসেছেন তিন মাস। কিন্তু আমার তো খুব একটা খারাপ লাগে নি। দিব্যি হেসে খেলে কাটিয়ে দিয়েছি তাদের ছাড়াই। তবে কি বয়সের সাথে সাথে মানুষের প্রয়োজনীয়তার ধরণ পাল্টে যায়? আর প্রয়োজন থেকেই প্রিয় মানুষটির সৃষ্টি হয়? মানুষ তো ভীষণ স্বার্থপর দেখছি। তাহলে এ মুহুর্তে আমার কাছে সবচে প্রিয় হচ্ছে নীলা। এ সিদ্ধান্ত নিতে পারার সাথে সাথেই ঘুম চলে এল।
ভোরে নীলাকে কল দিতে গিয়ে মোবাইল হাতে নিয়েই থ হয়ে গেলাম। নীলার মেসেজ! গতকাল তোমাকে বলা হয়নি। আমার মনে হয় বলে ফেলা উচিত। আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে। ছেলে ডাক্তার। তুমি আমাকে আর কল দিও না।
কল দিতে নিষেধ করল নীলা! তাকে মেসেজ দিলাম, কিভাবে? এটা কিভাবে সম্ভব?
সে ফিরতি মেসেজ দিল, আমার আর কোন উপায় ছিল না। আমি পারি নি। তুমি আমায় ক্ষমা কর।
কী করব কিছুই বুঝতে পারলাম না। চোখের কোণায় জল জমতে থাকল। বুকের ভেতর তীব্র অভিমান দানা বাঁধতে ধাকল।
৩.
প্রথম আলো থেকে কল দিল আজ। লেখা চাইল নিয়মিত। যদিও তখন চরম বিরহ কাল, লেখালেখি চালিয়ে যাচ্ছিলাম নিয়মিত। স্থানীয় পত্রিকাগুলো থেকে সম্পাদক এসে বসে থাকতে লাগল লেখার জন্য। অথচ, কী আশ্চর্য জানেন, সাহিত্য পাতায় প্রথম গল্প ছাপানোর আগ পর্যন্ত এ এলাকার কেউ জানতই না আমি লেখালেখি করি। আমার কত কত লেখা পড়ে আছে তাদের রিজেক্ট লেখার বাক্সে, তারা বোধ হয় জানেই না।
ওদিকে নীলার এনগেজমেন্টের খবর ফেসবুকে প্রকাশ পেয়েছে। ফেসবুক ইদানিং ব্যক্তিগত খবর প্রকাশের উৎকৃষ্ট মাধ্যম। ছোট ছোট বিষয়গুলোকেও খুব বড় করে ফলাও করে এখানে প্রচারিত হয়। যাই হোক, ডাক্তার ছেলের আইডিতে ক্লিক করে তার দেয়ালে গেলাম। অ্যাহ! এই ছেলেকে বিয়ে করল নীলা? দেখতে বদখত চেহারার একটা ছেলে। ছোটখাট ভারী শরীর। যেটুকু গোঁফ আছে তাতে হিটলারের কথা মনে পড়ে স্পষ্ট। চোখে কেমন জানি শয়তানি একটা চিহ্ন। আমি কি হিংসাপরায়ণ হয়ে ছেলেটির দিকে তাকাচ্ছি? তাই হয়তো আমার ভাল লাগছে না তাকে। ইচ্ছে হল ছেলেটার মেসেজ বক্সে গিয়ে একটা মেসেজ দেই। শোন ব্যাটা, তুই যাকে বিয়ে করছিস তার সাথে আমার দীর্ঘ আট বছরের প্রেম ছিল। নাহ! তাহলে... তাহলে নীলা খুব কষ্ট পাবে। আমি নীলাকে কষ্ট দিতে পারি না। সম্ভব না। আমি বরং নীলাকে কনগ্রেচুলেশন লিখে একটা মেসেজ দিই। দিলাম। নীলা ফিরতি মেসেজ দিল, আমি তোমাকে ফেসবুক থেকে ব্লক করে দিচ্ছি। তুমি যদি সত্যি আমাকে ভালবাস, তবে আমার সাথে আর যোগাযোগ করার চেষ্টা কর না। আমার ক্ষতি হতে পারে।
ভালবাসলে যোগাযোগ করা যাবে না। এটা আবার কেমন কথা? ভালবাসা থেকেই তো যোগাযোগের আগ্রহ তৈরী হয়। যাই হোক, তথাস্তু। নীলাকে নিজের ভালবাসা প্রমাণের চেষ্টা করা শুরু করলাম।
৪.
নীলার বিয়ে হয়ে গেছে চার মাস হতে চলল। আমিও এদিকে একটা বইয়ের কাজ শুরু করেছি। অন্যপ্রকাশের রফিক সাহেব পান্ডুলিপি চেয়েছেন। এই বই মেলায় নাকি আমার থেকে দুটি উপন্যাস বের করতে চায় তারা। প্রায় প্রত্যকটা পত্রিকাতেই আমার গল্প ছাপানো হয়েছে। কিছুদিন আগে চ্যানেল আই থেকেও সাক্ষাৎকার নিয়েছে। আমার ভেতরের দানবটা মাঝে মাঝে তার উপস্থিতি জানান দিয়ে যায়। তখন আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। মাথা ঘুরিয়ে পড়ে যাই। অজ্ঞান হয়ে যাই। আমাকে তখন ডাক্তার দেখাতে হয়। ডাক্তাররা কিছু বুঝতে পারে না। অনুমানভিত্তিক ওষুধ দেয়। আমি খাই না সেগুলো। মায়ের চোখ এড়িয়ে ফেলে দেই। এক-দুই দিন গেলে এমনিতেই সুস্থ হয়ে যাই। ওদিকে একদিন হঠাৎ অবাক করা একটা ঘটনা ঘটে। নীলা ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়। নীলা ওয়ান্টস টু বি ই্ওর ফ্র্যান্ড। নীলার নামটা দেখে বুকের ভেতরটা হাহাকার করে উঠে। তুব রিকোয়্যাস্ট অ্যাক্সেপ্ট না করে মেসেজ পাঠাই। কী ব্যাপার? রিকোয়্যাস্ট কেন?
-আমি ভাল নেই, কয়েস। সে শুধু আমাকে সন্দেহ করে।
আমি উত্তর দেই না। কেন নীলা? তোমার তো ভাল থাকার কথা। ডাক্তার স্বামী পেয়েছ। তুমি তো ভেবেছিলে আমি তোমাকে ভাল রাখতে পারব না। মনের ভেতর পাথর চাপা দিয়ে রাখা এতোদিনকার ক্ষোভ বের হয়ে আসতে চায়। অনেক কষ্টে আটকে রাখি। লেখালেখিতে ব্যস্ত হয়ে যাই। তরতর করে লেখা এগুতে থাকে। আমার ভেতর এতো এতো কাহিনী যে জমা ছিল, আমার কল্পনা শক্তি যে এতো প্রখর তা মোটেও জানা ছিল না আমার। হঠাৎ পেটের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠে কিছু একটা ভেতরে ঘুর্ণিঝড়ের সৃষ্টি করে গলা দিয়ে বের হতে চায়। অনেক কষ্টে ঢোঁক গিলে ওটাকে আটকে রাখি। মনে মনে বলি। স্যরি। আমি দুঃখিত। তোমার কথা ভুলে গিয়েছিলাম বলে দুঃখিত। এখন তুমি চলে যেও না। তুমি চলে গেলে যে আমি আর বিখ্যাত হতে পারব না। সবাই আমাকে ভুলে যাবে। এ বইমেলার যে দুটি বইয়ের জন্য লেখা শুরু করেছি, সেগুলো লেখা হবে না। আমি তোমার অস্তিত্ব ভুলে গিয়েছিলাম বলে আমি দুঃখিত, হে দানব। তুমি চলে যেও না। তুমি থাক। সারা জীবন থাক।
৫.
বইমেলায় দুটো বই বেরিয়েছে। একেবারে হট কেক। পত্র-পত্রিকায় আমার বই দুটো নিয়ে নানা আলোচনা হচ্ছে। স্বয়ং শামসুল হক সাহেব লিখেছেন, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে আমার এ বই দুটি নাকি স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। রাফি ভাই কল দিয়েছেন। উনার নাকি আমার অটোগ্রাফ সহ একটা বই দরকার। উনার মেয়ে আবদার করেছে। ওদিকে নীলার কোন খবর নাই। ওর ফেসবুকের রিকোয়্যাস্টটা এখনো ফ্র্যান্ড রিকোয়েস্ট এর পাতায় ঝুলে আছে। ফেসবুকে নিজের দেয়ালে ঘুরতে থাকলাম। বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে ফেসবুকের পাতা উপরের দিকে তুলতে থাকলাম। হঠাৎ একটা খবরে চোখ পড়ল।

নাহিদার সুষ্ঠু ময়না তদন্তের দাবী।

আমি এমন কোন খবর কখনো পত্রিকায় পড়ি না। দেখলেও এড়িয়ে যাই। খুনখারাবীর কাহিনী আমার মোটেও ভাল্লাগে না। কিন্তু নাহিদা নামটার কারণেই খবরটার লিংকে ক্লিক করলাম। পুরো খবরটাতে দ্রুত চোখ বুলালাম। নাহিদা মারা গেছে। নাহিদার বাবার ধারণা নাহিদা আত্মহত্যা করেনি। নাহিদাকে তার স্বামী খুন করেছে। এ সন্দেহে তিনি আবার ময়নাতদন্তের দাবী করছেন। এ ছাড়া আর বিস্তারিত কিছুই খবরটাতে নেই। এরপর গুগল করলাম পুরো খবরটার জন্য। এতো এতো খবরের কাগজে খবরটা এসেছে যে আমি অবাক হয়ে গেলাম। বুঝতে পারলাম গেল সপ্তাহের পুরোটাই নাহিদার মৃত্যু ছিল টক অব দি কান্ট্রি। আমি নিজের লেখালেখিতে এতোটাই মশগুল ছিলাম যে বাইরের জগতের কোন খবরই রাখিনি। ব্যাপারটা একজন লেখকের সাথে ঠিক যায় না। তিনি সবসময় সবকিছু অবর্জাভ করবেন। সব খবর রাখবেন। খবর দিয়ে গল্প বানাবেন। ভাল লেখকের তো এসব গুণ থাকতেই হয়। যাই হোক আমি ডিটেল খবর আছে এমন একটা লিংকে ক্লিক করলাম। নাহ! নাহিদার পুরো নামটা সেখানেও নাই। তবে একটা নতুন তথ্য পেলাম, নাহিদার হাসব্যান্ড একজন সনামধন্য ডাক্তার। হার্ট বিট বাড়ছে আমার। দ্রুত মূল পেজে গিয়ে অন্য একটা লিংকে ক্লিক করেই নামটা পেলাম। নাহিদা নীলা। আমার পুরো শরীর শীতল হয়ে গেল। বুকের ভেতরটা শূণ্য হয়ে গেল মুহূর্তে। চোখের কোণায় জল জমে উঠল। নীলা! নীলা তুমি একেবারেই চলে গেলে? প্রথমে আমাকে ছাড়লে। তারপর পৃথিবীটাই ছেড়ে গেলে। তুমি যে এই পৃথিবীর বুকে ছিলে, এ দেশেরই কোথাও না কোথাও ছিলে, এটাই তো আমার জন্য অনেক বড় সান্ত্বনা ছিল। এখন আমি কী করব? কাকে নিয়ে ভাববো? কার আশায় বসে থাকব? এটা কেন করলে তুমি? তোমার স্বামীটা যে এমন, এটা তুমি আগে বুঝতে পারলে না কেন? তুমি কেন বুঝতে পারলে না, কেবল অর্থ আর সম্মান দিয়ে জীবন চলে না? চলতে পারে না। জীবন অনেক বিশাল ব্যাপার। এর উপকরণ অনেক। তুমি কেন এ ভুলটা করলে? হঠাৎ আবার সেই অনুভূতি হল। পেটের ভেতরটা গুলিয়ে উঠল। ভেতরে প্রচন্ড একটা ঘূর্ণিঝড় উঠল। দানবটা তার উপস্থিতি জানান দিল। গলা দিয়ে ফিসফিস করে বের হল,

অবশেষে তোমার প্রতিজ্ঞা পূর্ণ হল, কয়েস। তোমার সবচে প্রিয় যে জন, সে চলে গেল। হাহাহাহা।

আমি বুঝতে পারলাম, আমার কারণেই আজ নীলা মারা গেল। আমি যদি লেখক হতে না চাইতাম তবে নীলা আমার থাকতো। এভাবে তাকে চলে যেতে হত না। নাহ! আমি আর এ লেখক জীবন চাই না। অন্যের জীবনের বিনিময়ে আমি মিথ্যা লেখক হতে চাই না। তুই বের হয়ে যা, দানব। তুই আমার ভেতর থেকে বের হয়ে যা। আমি গলায় হাত ঢুকিয়ে বমি করতে চাইলাম। বমি হল না। বরং ফিসফিস একটা হাসির শব্দ ভেসে আসল।

-না, তোমার ভেতর থেকে আমার আর বের হবার কোন সুযোগ নাই। প্রতিজ্ঞা পূর্ণ হয়েছে। তোমার সবচে প্রিয় মানুষটা মারা গেছে। তুমি আমাকে দেয়া প্রতিজ্ঞা রেখেছো। শেষ সময়ে সে তোমার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল। তুমি পারতে তাকে তার বন্দী জীবন থেকে মুক্ত করে আনতে। তুমি আমার কথা ভেবেই হয়তোবা তোমার প্রিয় মানুষের কাছে ফিরে যাও নি। এখন আমিও আর তোমাকে ছেড়ে যাব না। হা হা হা হা!

বুঝলাম, দানবটা আমাকে ছাড়বে না। সে আমাকে বিখ্যাত লেখক করেই ছাড়বে। কিন্তু আমি আর লেখক হতে চাই না। চাই না কোন পরিচিতি আর জনপ্রিয়তা। আমি দানবটাকে বের করবই করব। যেভাবেই হোক। ভেতর থেকে দানবটা চিৎকার করে হাসছে।
বলছে, তুমি যা চাইছো তা কখনই পারবে না। কখনই না।

কিন্তু পারতে আমাকে হবেই। আমি আমার ড্রয়ারে রাখা ছুরিটা হাতে তুলে নিলাম।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৫৩

বিজন রয় বলেছেন: অনেক বড় শেষ করতো পারলাম না।

১৯ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ৮:০৮

কয়েস সামী বলেছেন: আবার এসে পড়ে যান। মনে হয় না খারাপ লাগবে।

২| ১৯ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:১৪

আরজু পনি বলেছেন:
ভাবলাম ব্লগ আউট হওয়ার আগে পড়ে যাই /:)

এতো বড় লেখা ! :(

আরো আগে কেন পোস্ট করলেন না ?

এখন ঘুমাতে যাবো...শুভ রাত্রি।

শুরু করে গেলাম...

১৯ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ৮:০৯

কয়েস সামী বলেছেন: পড়া শেষ করে জানাবেন কেমন হল। শুভ সকাল।

৩| ২০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১:১২

ইমরান নিলয় বলেছেন: যা হওয়ার তাতো হয়েই গেছে। বাদ্দেন। লিখতে থাকেন। ;)

ভালো ছিল।

২১ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ৭:৪৬

কয়েস সামী বলেছেন: ঠিক বলেছেন! আমি বরং লিখতে থাকি! হা হা হা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.