নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলা অামার তৃষ্ণার জল

কয়েস সামী

i m nothing in this huge world...

কয়েস সামী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটদের গল্প: হোমওয়ার্ক

২৬ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ৮:৫৪


সাফওয়ান বুঝে না যখন সে হোমওয়ার্ক করে তখন সময় কেন এতো ধীরে চলে। অনেকক্ষণ চলে গেছে ভেবে সামনে ঝুলানো দেয়াল ঘড়িটার দিকে তাকালে সে বুঝতে পারে বস্তুত মাত্র পাঁচ মিনিট গেছে। কখন যে রাত দশটা বাজবে আর আম্মু ডিনারের জন্য ডাকবেন! আম্মু ডিনারের জন্য না ডাকা পর্যন্ত তাকে হোমওয়ার্কের টেবিলে বসে থাকতে হবে। এর কোন অন্যথা হতে পারবে না। সে তাই হোমওয়ার্ক বাদ দিয়ে বই খাতা ব্যাগবন্দী করে এটা সেটা কতকিছু ভাবতে থাকে । আর ভাবতে ভাবতেই সে সময় কাটাতে চায়। সেই উল্টা-পাল্টা ভাবনাগুলো ভাবার সময় সে হঠাৎ করে দেখতে পায় পরীদের মতো দেখতে ছোট ছোট কিছু প্রাণী তার টেবিলে হাটাচলা শুরু করেছে।

সে অবাক হয়ে তাদের জিজ্ঞেস করে, তোমরা কারা? পরীদল উত্তর দেয়, আমরা পরীর দেশ থেকে এসেছি।
সাফওয়ান জিজ্ঞস করে, কেন এসেছো?
তারা বলে, তোমার হোমওয়ার্ক নিয়ে একটু খেলতে এসেছি।
-হোমওয়ার্ক নিয়ে খেলা! হোমওয়ার্কের মতো পৃথিবীর সবচেয়ে পঁচা একটা ব্যাপারকে তোমরা খেলা বলছো কেন?
-ব্যাগ থেকে বের করে দাও না তোমার হোমওয়ার্ক। আমরা খেলবো, তুমি দেখতে থাকো।
সাফওয়ান তারপর ব্যাগ থেকে আবার বই খাতা বের করে দেয়।

পরীদল দল বেঁধে খেলা শুরু করে।
প্রথমেই তারা অংক করা শুরু করে। একেক জন একেক অংক নিয়ে বসে। কে সবার আগে শেষ করতে পারে সেই প্রতিযোগিতা। তারপর শুরু হয় ইংরেজী মুখস্থ করা। পরীদল সব জনপ্রিয় ইংরেজী গানের সুরে পাঠ্য বিষয়ের শব্দগুলো বসিয়ে সুরে সুরে পড়তে থাকে সেই পড়া। গান শেষে সবার হাসিমাখা করতালি। তারপর বাংলা। বাংলাও তারা পড়তে থাকে গানের সুরে সুরে। সাফওয়ান মুগ্ধ হয়ে পরীদলের হোমওয়ার্ক খেলা দেখতে থাকে। মাঝে মাঝে নিজেও সুর মেলায়। তারপর তারা শুরু করে, চিত্রাংকন। তারা আশেপাশের সকল আসবাবপত্রে ছবি আঁকে খুব মনোযোগ দিয়ে। একজন তো সাফওয়ানের ছবিও এঁকে ফেলল হুবুহু। এরই মধ্যে আম্মু ডাক দিলেন, খেতে এসো! অগত্যা পরীদল চলে যাবার জন্য তৈরী হয়। যাবার সময় বলে যায়, আজ থেকে যদি প্রতিদিন তুমি এমন করে হোমওয়ার্ক নিয়ে নিয়মিত খেলাধূলা কর তাহলে আগামী মাসে আমরা আবার আসবো। সাফওয়ান রাজী হল।

তারপর থেকে সাফওয়ানের শিক্ষকেরা সবাই রীতিমতো অবাক হয়ে গেলেন। যে সাফওয়ানের কাছ থেকে কখনো তারা হোমওয়ার্ক ঠিক মতো বুঝে পেতেন না, সেই সাফওয়ান সবার আগে হোমওয়ার্ক বুঝিয়ে দেয়। যে সাফওয়ানের রেজাল্ট কখনো ভাল হতো না, সেই সাফওয়ান পরীক্ষায় রীতিমতো প্রথম হওয়া শুরু করে।
সাফওয়ানের বাবা-মাও কম অবাক হননি। সাফওয়ান এতো মজা করে হোমওয়ার্ক শেষ করে যে তারা দুজন সাফওয়ানের পাশে বসে তার হোমওয়ার্ক খেলা দেখতে থাকেন। আর সাফওয়ানও খুব মজা করে হোমওয়ার্ক করতে থাকে। মাঝে মাঝে রাতের ডিনারের সময় হয়ে গেলে মা যখন খেতে ডাকেন তখন সাফওয়ান বিরক্ত হয়ে বলে ওঠে, “উফ! সময় কেন যে এতো দ্রুত শেষ হয়ে যায়!”

আর হ্যা, সেই পরীদল কিন্তু তাদের কথা অঅর রাখে নি। তারা আর কখনো সাফওয়ানের সাথে খেলতে আসে নি। মাঝে মাঝে সাফওয়ান ভাবতে থাকে সেদিন কী সত্যি সত্যি পরীরা এসেছিল, নাকি ওটা ছিল তার কল্পনা।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:১১

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ছোটদের নিয়ে এই ব্লগে তেমন খুব একটা লেখা দেখা যায় না। আপনি লিখেছেন তার জন্য ধন্যবাদ।
তবে গল্পের থিম খুব সাধারন হয়ে গেছে।
ছোটদের গল্প লেখা আমার কাছে খুব কঠিন মনে হয়।
আশা করি সামনে আরও ভাল হবে।

২৬ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:১৪

কয়েস সামী বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। অন্যান্য গল্পগুলো পড়ে মন্তব্য করার অনুরোধ থাকল।

২| ২৬ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ১১:৩০

নীল প্রজাপ্রতি বলেছেন: আবার ও নতুন পরীর গল্প পড়ার অপেক্ষায়...

২৬ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:১৪

কয়েস সামী বলেছেন: অবশ্যই। সাথেই থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.