নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঐতিহাসিক বা নাগরিক চেতনা ধারন করতে পারিনি ,অনেকটা আদিম ,বর্বরই রয়ে গেছি ।আমার লেখা আমার এই আদিম ,বর্বর জীবনের প্রতি বাঁকেরই প্রতিফলন

কাল্পনিক সত্ত্বা

মনোপ্রকাশ

কাল্পনিক সত্ত্বা › বিস্তারিত পোস্টঃ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি, ধর্মের কুসংস্কার, যুদ্ধ ইত্যাদি নিয়ে কথা বলে। ব্রুটাল মেটালের সাউন্ডে এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন বিষয়গুলা সঠিক আবহ দেয়। আরেক ধরনের গান আমাকে সরল হতে শিখায়। লালন সাঁইজির গান। এমন অনেক হয়েছে, লালনের গান শুনতে শুনতে চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় পানি পড়ছে। লালনের গানে যে সারল্য, যে অহিংসা, যে পান্ডিত্য তা আপনাকে আমাকে শিশু বানিয়ে দেয়, মনে এনে দেয় প্রশান্তি, চোখে পানি।

শত বছর ধরে বাংলার গ্রামে প্রান্তরে লালনের গান ঘুরে বেড়িয়েছে, ইভলভ হয়েছে মিউজিক্যালি। গ্রীষ্মের দুপুরে গ্রামের কোন এক গাছতলায় জটা চুলের বাউল আপন মনে লালনের গান করত। সে সময় কেউই হয়ত নাই সেখনে, কিন্তু বাউল গান করত নিজের আত্মার শান্তির জন্য। একতারার টুনটুন আওয়াজে জড়ো হতো গ্রামের ছেলে পুলে, মুরুব্বিরা। লম্বা দাঁড়িওয়ালা পাঁচ ওক্ত নামাজ পড়া মুসলমান মুরুব্বিরাও লালনের জ্ঞান শুনতে আসতেন। সেখানে কোন অনুভূতির চাষাবাদ হতো না। ব্যাপারটা আধুনিক যুগে কোন দার্শনিকের সেমিনার সিম্পজিয়ামে যাওয়ার মত। আপনি অনেক কিছুই জানবেন, শুনবেন যা হয়ত আগে জানতেন না। কথাগুলা এমন ভারী যে আপনি তা নিয়েই ভাবতে থাকবেন। চাপাতি নিয়ে দৌঁড়াবেন না।

এইত সেদিন একজনের নামে মুমিনরা মামলা করল ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দেয়ার জন্য। বেচারা লালনের দুই লাইন শেয়ার করেছিল তার ফেইসবুকে। আমাদের এত অধপতনের কারন কি? সম্মিলিত চাটুকারিতা, ব্যর্থতা আর কপটতা। ধর্ম যদি ব্যক্তিগত বিষয় হয়ে থাকত, কে আল্লাকে সিজদা দিবে, কে মাথা ঠুকাবে তার ঠাকুরের কাছে সেটা যদি তার ঘর আর উপাসনালয়ে সীমাবদ্ধ থাকত, তাহলে কোন কথা ছিল না। কিন্তু যখন আপনি ব্যক্তিগত স্পেস থেকে ধর্মকে সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রোমোট করবেন তখন আপনার দেশে কয়েক দিন পরপরই উপাসনালয়ে হামলা হবে, আপনার দেশে সংখ্যালঘু আরো লঘুতর হবে। একসময় হয়ে যাবে বিলুপ্ত। আপনার গান বাজনা, সিনেমা, নাটক, কনসার্ট এমন কি খবরও হয়ে যাবে ধর্মীয় জোশে টইটুম্বর। সেদিন টিভিতে দেখলাম, আরবে বৃষ্টি হচ্ছে এটা নিয়ে নিউজ- " ..... এটা কি কিয়ামতের আলামত?" খবর পাঠিকা রীতিমত কুরান হাদিস আওরানো শুরু করলেন এটা যে কিয়ামতের আলামত সেটা বুঝানোর জন্য।

মুক্তিযুদ্ধের কপিরাইট অনেক দিন থেকেই আওয়ামী লীগের কাছে। নিজেদের সেক্যুলার দাবি করা আওয়ামী লীগ যে হারে দেশে মৌলবাদের চাষাবাদ করছে তাতে খালি বিএনপিকে দোষ দেয়ার আর সুযোগ দেখছি না। আওয়ামী লীগের এই শাসন আমলে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টানদের উপর অসংখ্য হামলা হয়েছে। ২০২১ সালে খোদ দূর্গাপুজাই ভেস্তে গিয়াছিল। সপ্তমী, অষ্টমীতে প্রতীমা বিসর্জন করতে হয়েছে হিন্দুদের, রামুতে বৌদ্ধ মন্দির গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। অসংখ্য ঘটনার উদাহরন দেয়া যাবে। সেক্যুলার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার কি বিচার করেছে তার একটা ঘটনারও? হ্যা বিচার হয়েছে, ইকবালের। সমস্ত বাংলাদেশের পূজা পন্ড করে, শত শত হিন্দু বাড়িতে আক্রমনের, খুনের জন্য দায়ী ইকবালের বিচার হয়েছে। দেড় কি দুই বছর জেলে থাকবে ইকবাল!

আওয়ামী লীগ ঠিক জানে তারা কতটা অজনপ্রিয় জনগনের মধ্যে। এখন যদি নিউট্রাল ইলেকশন হয় আওয়ামী লীগ যে ৮/১০% ও ভোট পাবে না তা তারা খুব ভালো মতন জানে। এমনকি নিউট্রাল ইলেকশন হলে শেখ হাসিনাও তার সিটে হেরে যেতে পারেন। তাই আওয়ামী লীগ বাংলার মুমিন মুসলমানকে ক্ষ্যাপাতে চাননা। যে দাবিই তার করুক মাথা নিচু করে মেনে নেন। সেটা হোক শিক্ষানীতি পরিবর্তন বা অন্য কিছু।

আর যেসব বুদ্ধিজীবী দেশের এই অবস্থায়ও চেতনার চাষাবাদে ব্যস্ত, সরকার কি কি ভালো কাজ করল, শেখ হাসিনা কত মহান এটা প্রমানে ব্যস্ত, আপনারা ইতিহাসে নর্দমার কিটের স্থান পাবেন। আপনারা হওয়ার কথা ছিল সরকারের থিংক ট্যাংক, কিন্তু আপনারা হয়ে গেছেন পা চাটা। ধিক্কার।

এই মাটি জন্ম দিয়েছিল লালন সাঁইজির। সাঁইজি, এই দেশ আপনাকে ডিজার্ব করে না!

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩০

মায়াস্পর্শ বলেছেন: লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?
আস্তাকুড়ে ।

২| ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৫৪

এম ডি মুসা বলেছেন: এই দেশটা সকলের, যে অপরাধ করছে সে অপরাধী ছাড়া। কোন ধর্ম জাতি বর্ণ উল্লেখ করে নিরপরাধকে , এই দেশকে তাড়িয়ে দেওয়া বা এই দেশকে সরিয়ে নেওয়া। মন্তব্য করার অধিকার নেই এ দেশটা সকলের। হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিস্টান।

৩| ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

কাঁউটাল বলেছেন:

০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:২২

কাল্পনিক সত্ত্বা বলেছেন: I smell pork!

৪| ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৮

আরেফিন৩৩৬ বলেছেন: আপনি ভেতরে লিখছেন অনেক সুন্দর করে। শিরোনামে সূফী হুজুরের চেয়ে রাজনৈতিক সুবিধাবাদদের তুললে ভালো হতো। মূলত ঐ তরুণটিকে কোন রাজনৈতিক ফাঁদে শিক্ষা দেয়া যায় তার রাজনৈতিক পথ হলো ধর্ম।

৫| ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:১৯

নতুন বলেছেন: এইত সেদিন একজনের নামে মুমিনরা মামলা করল ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দেয়ার জন্য। বেচারা লালনের দুই লাইন শেয়ার করেছিল তার ফেইসবুকে। আমাদের এত অধপতনের কারন কি?

অজ্ঞতা এর মুল কারন। যারা অভিযোগ করেছিলো এবং তারা একসন নিয়েছিলে তাদের অনেকেই হয়তো লালনের এই লাইন সমপ্র্কে জানেনা।

বর্তমানে মানুষ নিজে ধর্ম শেখে না। তারা ওয়াজ শুনে, বয়ান শুনে ধার্মিক। ব্যক্তিজীবনে নানান দূনিতি করে ধর্মের ঘ্রান মেখে সমাজে ভালো ইমেজ রাখতে চায়।
অনেক ওয়াজেই মানুষকে বিভক্ত করতে সেখায়। বির্ধমীদের থেকে দুরে থাকতে উদ্ভুদ্ব করে।

দেশের মানুষের বিরাট অংশ বিশ্বসাহিত্য পড়েনা, ফেসবুক, টিকটকে জ্ঞান অর্জন করে। এই প্রযন্ম থেকে ভালো কি আশা করবেন?

৬| ০৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২০

কামাল১৮ বলেছেন: লালন ব্চে থাকলে ধর্ম অবমাননার দায়ে তাকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতো।মরে বেঁচে গেছে।

০৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫

কাল্পনিক সত্ত্বা বলেছেন: ১০০%

৭| ০৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:



লালন শুধু গান গেয়েছে,শফী হুজুর পরকালের দায়িত্ব নিয়েছিলো।

৮| ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩৭

লেখার খাতা বলেছেন: কামাল১৮ বলেছেন: লালন ব্চে থাকলে ধর্ম অবমাননার দায়ে তাকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতো।মরে বেঁচে গেছে।

১০০% সঠিক।

৯| ০৬ ই মে, ২০২৪ রাত ২:০৬

শ্রাবণধারা বলেছেন: আপনি অত্যন্ত ভালো লিখেছেন। আপনার বিশ্লেষণের সাথে দ্বিমত পোষণের অবকাশ নেই।

ধমান্ধতার একটা বড় কারণ আমার কাছে আওয়ামী দুঃশাসন, অপরাজনীতি এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি।

১০| ০৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৫

ধুলো মেঘ বলেছেন: লালনের অনেক গানেই অনেক আপত্তিকর ব্যাপার স্যাপার থাকে। তার অন্যতম হল, "খতনা করলে হয় মুসলমান, নারীর তবে কি হয় বিধান" এই লাইনে অনেকেই মোহিত, বিমোহিত। কিন্তু আমার কাছে এইটা একটা স্টুপিড কনসেপ্ট।

আমাদের দেশে হয়তোবা খতনা দিয়ে মুসলিম - অমুসলিম চেনা যাবে, কিন্তু পূর্ব এশিয়ান, ইউরোপিয়ান, আফ্রিকান বা অ্যামেরিকান দেশগুলোতে কি খতনা দিয়ে মুসলিম চিহ্নিত করা যাবে?

মুসলিমের বিধানের কি অভাব আছে? নামাজ না পড়লে সে তো মুসলিমই না। রোজা রাখা, হজ্ব করা, যাকাত আদায় করা, রেগুলার কুরআন চর্চা করা। পর্দা করা - এই ফরজ বিধান গুলোকে বাদ দিয়ে লালনের কেন মনে হল কেবল খতনার মত একটা নফল আদায় করলেই সে মুসলিম হয়ে গেল?

১১| ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫

অধীতি বলেছেন: রাজনীতির আফিম ফল হচ্ছে ধর্ম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.