নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবীর নৈসর্গিক সৌন্দর্য আমাকে কেবলই পিছুটানে!!

কামরুন নাহার বীথি

আমি কিছুটা ভ্রমণবিলাসী আর ফুলের প্রতি আছে আমার আজন্ম ভালোবাসা

কামরুন নাহার বীথি › বিস্তারিত পোস্টঃ

নেপালী মেয়ে-গীতা

০১ লা জুন, ২০১৫ দুপুর ২:২২



২০১২/ ২০১৩ সাল, আমি তখন নেপালে। ছিলাম বেশ কিছুদিন। নেপালের পূর্বাঞ্চলীয় ছোট্ট পাহাড়ি শহর ধারান-এ। অফিসিয়াল ছোট্ট একটি বাংলোয় অবস্থান আমাদের দু’জনের। বাংলো বাড়ীটার চারপাশে ফুল, ফল, সবজি ও কাঠের গাছে ঘেরা । ঠিক যেন বাগান বাড়ী। ফল আর সবজি বাগান দেখাশোনা করতো একজন পুরুষ মানুষ আর ফুল বাগানের দেখাশোনা করতো একজন মেয়ে। মেয়েটির নাম গীতা। সে সময়ের দু’একটা স্মৃতি মনে পড়ে আজো খুব কষ্টের সাথে। টুকরো কিছু স্মৃতি নিয়ে আজকের এ আয়োজন।

নেপালে প্রায় প্রতিদিনই বিকেলে দু’একটা হলেও ফুলের ছবি তুলি। ফুল আমার যেমন প্রিয়, তেমনি ফুলের ছবি তুলে এলবাম ভরে রাখাটা আমার একটি প্রধান শখ। নেপালের ফুলের কথা বলতে গেলে গীতার কথা বলতেই হয়। ওর বয়স ১৮ থেকে ২০ বছর। খুবই চুপচাপ। আমাকে শুধু,” নমস্তে ম্যাডাম”,- এই কথা ছাড়া আর কোন কথা সে বলে না। ও সারাদিন বাগান পরিস্কার করে, গাছে পানি দেয়, বড় বড় গাছগুলো থেকে যে পাতা পড়ে সেগুলো ঝাড় দেয়। কিচেনের পাশে একটা পলাশ গাছ। ফুল পড়ে আঙিনা ছেয়ে থাকে, সেগুলো ঝাড় দিয়ে ফেলে দেয়। একমনে শুধু কাজ করেই চলে। আমি একদিন ওকে বোঝালাম, পলাশগুলো যেন ঝাড় না দেয়, আমি ছবি তুলবো। ও আমার কথায় শুধু মাথা নেড়ে সায় দিল।

একদিন সকালে সে আমার জন্য কিছু ফুল তুলে এনেছে। বললো,” নমস্তে ম্যাডাম, আপকে লিয়ে ফুল”। মনে করতে চেষ্টা করলাম, ওর কাছে কখোনো ফুল চেয়েছি কী না। মনে করতে পারলাম না। অবাক হয়ে জানতে চাইলাম, কিউ? ” আপকো ফুল বহোত পছন্দ্‌ হ্যায় না, ইছি লিয়ে”। আমি ভাল হিন্দী বলতে পারি না, জগা-খিঁচুড়ি করে ওকে বোঝালাম, আমার জন্য আর ফুল আনবে না। ফুল গাছেই সুন্দর দেখায়। ও মাথা নেড়ে সায় দিল, “ঠিক হ্যায়”।

ওর এই অনুভূতি আমাকে নাড়া দিল। আমি প্রতিদিন ফুলের ছবি তুলি, এতেই ও বুঝে নিল, ফুল আমার খুব পছন্দের। ও নিজের হাতে যা প্রতিদিন যত্ন করে, আমার জন্য সেগুলোকে আজ নিজ হাতেই তুলে এনেছে!!! কতটা ভালবাসা ওর মনে, আমার জন্য!!! সরল মনের একটা মেয়ের, এই ভালবাসার বহিঃপ্রকাশে আমি মুগ্ধ!!!

ফুলগুলোকে ড্রেসিং টেবিলে সাজিয়ে রাখলাম। রাখলাম নিস্পাপ এক ভালবাসার চিহ্ন !!!পানিতে রেখেছি, থাকবে দু’তিন দিন।
আমার নিষেধ সত্বেও “ও” প্রতিদিনই একটা হলেও ফুল তুলে এনে আমাকে দেবেই, সাথে সেই স্নিগ্ধ অনুরোধ, “ম্যাডাম,… ফুল।” কেন যেন আমি ফেরাতে পারি না ওকে!!!


গীতার তুলে আনা ফুলগুলো

নেপালে ভূমিকম্পের পরে খুব বেশী করে মনে পড়ছিল ওর কথা। পরে আমরা ড্রাইভারের কাছে ফোন করে জেনেছি ওরা ভাল আছে।
নেপালে তোলা কিছু ফুলের ছবিঃ- অনেক ফুলেরই নাম জানি না।





পরগাছা অর্কিড






ক্যাকটাস



জারবেরা



গার্ডেনীয়া




জবা


ডায়ান্থাস







বোতল ব্রাশ


*************************************************************

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৬

জানা বলেছেন:

বাহ্‌, সুন্দর ছবি ব্লগ। খুব ভাল লাগলো।

ভাল থাকবেন।

০১ লা জুন, ২০১৫ বিকাল ৪:১৬

কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে! ভাল থাকবেন।

২| ০১ লা জুন, ২০১৫ বিকাল ৪:০১

ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: নষ্টালজিক , তবে গীতার জন্য শুভ কামনা।


ফুলের ছবি গুলো অসাধারণ।

০১ লা জুন, ২০১৫ বিকাল ৪:১৯

কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: শুভকামনা আপনার জন্যও! ভাল থাকবেন।

৩| ০১ লা জুন, ২০১৫ রাত ৮:৫৪

প্রামানিক বলেছেন: এক কথায় দারুণ ছবি। ধন্যবাদ কামরুন্নাহার আপা।

সবে বরাতের রেসিপি চা--------------ই -------------------- :)

০১ লা জুন, ২০১৫ রাত ৯:১৮

কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকেও!! সবে বরাতের রেসিপি দেবার আর সময় কই? কালকেইতো -------------

৪| ০১ লা জুন, ২০১৫ রাত ১০:৩৩

এস কাজী বলেছেন: আহা মন ভরে গেল সুন্দর সুন্দর ফুল দেখে। আপনাকে ধন্যবাদ এই ছবি আপলোডানোর জন্য :)

০১ লা জুন, ২০১৫ রাত ১০:৫৪

কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: কাজী সাহেব, এই ছবি তোলা আর আপলোডানোই আমার প্রধান শখ।:)
আমার ছাদেই আমি প্রায় ৩০০ প্রজাতির গাছ লাগিয়েছি।
সাথে থাকুন, দেখতে পাবেন।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে!

৫| ০১ লা জুন, ২০১৫ রাত ১১:০৫

এস কাজী বলেছেন: ফুল দেখলে আমি স্বর্গীয় সুখ পাই। ৩০০ ফুল গাছের ফুল দেখার আশায় আপনাকে অনুসরণ বাটনা ক্লিক দিলাম :)

০১ লা জুন, ২০১৫ রাত ১১:১২

কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ । অচিরেই পেয়ে যাবেন আমার বাগানের ফুলগুলো। :)

৬| ০১ লা জুন, ২০১৫ রাত ১১:৩৯

সুমন কর বলেছেন: চমৎকার পোস্ট !!

০১ লা জুন, ২০১৫ রাত ১১:৪৪

কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ!!

৭| ০২ রা জুন, ২০১৫ রাত ১২:২৫

মোঃমোজাম হক বলেছেন: এতরকমের ফুল , চমৎকার সংগ্রহ বলতেই হয় :)

০২ রা জুন, ২০১৫ রাত ১২:৩৯

কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: হুম্ম, বিশাল সংগ্রহ। তাইতো শেয়ার করলাম।
অনেক শুভেচ্ছা আপনার জন্য।

৮| ০২ রা জুন, ২০১৫ রাত ১:৩৭

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আপনার স্মৃতিগথা ভাল লাগলো।। আজকের ভাই-বোনের মাঝেই যেখানে স্বার্থের সম্পর্ক,সেখানে অজানা এক নেপালী মেয়ে স্মৃতি ধরে রাখা!! সত্যিই অবাক করলেন।।
বিভিন্ন ফুলের বাহারী রঙের মতই আপনিও ফুটে উঠুন, এই কামনায়।। ভাল থাকুন সততঃ।।

০২ রা জুন, ২০১৫ বিকাল ৪:১২

কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: কিছু কিছু কথা, ঘটনা, কোন কারণ ছাড়াই মনের কোণে একটু জায়গা জুড়ে থাকে!! আপনি ভাবতে থাকুন দেখবেন অনেক ছোট্ট বেলার টুকরো টুকরো অনেক স্মৃতি মনে পড়ে যাবে।
ঠিক তেমনই আমারো।
অনেক শুভেচ্ছা আপনাকে!!

৯| ০২ রা জুন, ২০১৫ রাত ২:২৪

আজাদ মোল্লা বলেছেন: ভালো লাগলো । শুধু ভালো নয় বহুত আচ্ছা আপকা লিখা । শুব কামনা আপকে লিয়ে । আপ আচ্ছা রূকো
দোয়া আপকে লিয়ে

০২ রা জুন, ২০১৫ বিকাল ৪:১৩

কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: অনেক অনেক শুভেচ্ছা আপনাকেও!!!

১০| ০২ রা জুন, ২০১৫ দুপুর ২:১৮

বাসার স্যার বলেছেন: ছবিগুলো দেখে মনের বিষন্নতা কেটে গেল । ধন্যবাদ আপনাকে। ভাল থাকবেন।

০২ রা জুন, ২০১৫ বিকাল ৪:২৩

কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: ঠিক তাই! এই পবিত্র ফুলগুলো মানুষের অনেক কষ্ট দূর করার সহায়ক!!
অনেক শুভেচ্ছা আপনাকে!

১১| ০২ রা জুন, ২০১৫ দুপুর ২:৩৯

একলা ফড়িং বলেছেন: খুবই সুন্দর! মন ভরে গেল দেখে :)


আমার ছাদেই আমি প্রায় ৩০০ প্রজাতির গাছ লাগিয়েছি!! মুগ্ধ হলাম শুনে! আমার ইচ্ছে থাকলেও ধৈর্যের অভাব আর আলসেমির জন্য কখনো ছাদে বাগান করা হয়ে উঠলো নাহ! :| :|

০২ রা জুন, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৬

কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: আলসেমি আমারো আছে! কিন্তু শখের তীব্রতার কাছে হার মেনে যায়!!
মাঝে মধ্যেই ভয় হয় গাছগুলোকে টিকিয়ে রাখতে পারবতো, যত্ন করতে পারবতো!!! আরো কিছুদিন!!
সংসার জীবন নিয়ে বড়বেশী ব্যস্ত হয়ে পড়েছি!!

ভাল থাকবেন আপনি,অনেক ভাল!!! শুভকামনা রইল!

১২| ০২ রা জুন, ২০১৫ রাত ৯:২৬

জুন বলেছেন: অনেক অনেক ভালোলাগলো আপনার ফুল আর ফুল বাগানের মালিনীর কথা । ছবিগুলো দেখে মন ভরে গেল :)
আমি অবশ্য আমার বারান্দায় এলোমেলো কিছু গাছ লাগিয়েছি , লেবু কাচামরিচ, পাতাবাহার থেকে শুরু করে বিদেশী একটাও শোভা বর্ধন করে আছে । ইচ্ছে চোখের সামনে একটু সবুজ থাকা। তাদের গোড়ায় গজিয়েছে জংলী গাছ যাতে ধরেছে মটরশুটির মত এক রকমের ফল । দুপুরের নিরিবিলিতে চড়ুইগুলো এসে খেয়ে যায় সেগুলো । সাথে থাকে আমার দেয়া বাটি ভরা খাবার । খেতে খেতে বার বার তাকিয়ে দেখে কেউ দেখছে কি না ? পর্দার আড়ালে আমাকে ওরা দেখতে পায় না । খেয়ে দেয়ে ঠোট মুছে পালিয়ে যায় দুষ্টগুলো ।
আপনার ছাদ বাগানের কথা শুনে নিজের গাছের কথা বলে খানিকটা বক বক করে গেলাম । আশাকরি কিছু মনে করবেন না কামরুন্নাহার বিথী :)

০৩ রা জুন, ২০১৫ সকাল ১১:৪১

কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: না না আপু বকবক করা নয়, এমন বিষয় পেলে আমারো কিছু বলতে ইচ্ছে হয়।
প্রতি মন্তব্যে ছবি পোষ্ট করা যাচ্ছে না, তাই আমার বারান্দার ছবি আপনাকে দেখাতে পারলাম না।
আপনার মত আমারো চড়ুই পাখি আছে আর আমি তাদের ছবিও তুলি!! :)
কিন্ত চড়ুইপাখি এতই চালাক, ছবি তোলাই যায় না!

অনেক অনেক শুভেচ্ছা আপু আপনাকে!

১৩| ১৭ ই জুন, ২০১৫ রাত ৯:০৭

জামাল হোসেন (সেলিম) বলেছেন: আপনার মহাশ্মশান পড়ে মনটা বড় খারাপ ছিল। এখন ভালো হয়ে গেছে। :)

১৭ ই জুন, ২০১৫ রাত ১০:৫৭

কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ জামাল ভাই, ভাল থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.