নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সামহয়্যারইনব্লগ এর আর তেমন কোন জনপ্রিয়তা নেই..আর তেমন কেউ পড়েও না... তাই এই ব্লগেই আমার লেখাগুলো প্রকাশ করা সবচেয়ে বেশী নিরাপদ মনে করছি...

মোঃ কামরুজ্জামান কনক

জ্ঞান অর্জন করতে হলে লেখার কোন বিকল্প নেই। একটি লেখা পড়ে যতোটা না জ্ঞান অর্জন হয়, একটি লেখা লিখতে তার থেকেও হাজারগুন বেশী জ্ঞানের দরকার হয়।

মোঃ কামরুজ্জামান কনক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা বনাম আমাদের মানুষিকতা

১৩ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:৫০

লেখার জন্য বর্তমানে অনেক জিনিসই ট্রেন্ডিং হচ্ছে, কিন্তু একটা ফালতু বিষয় বেছে নিলাম। যেটা নিয়ে সারাদিন গলাফেড়ে চিৎকার করলেও কোনই লাভ হবেনা । কথা বলবো আমার দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে। লেখাপড়া নিয়ে সবার বর্তমান মানুষিক অবস্থা নিয়ে । যদিও এ নিয়ে ব্লগে সমালোচনা মূলক দু'একটা পোস্ট দেওয়া ছাড়া আমার আর করার কিছুই নেই (করার কোন ইচ্ছাও নেই)। তবুও এই সোনার দেশে বসবাস করে এ নিয়ে নজের অনুভূতিটুকু বন্ধুদের সাথে শেয়ার করাটা আমার কাছে রীতিমতো একটা দায়িত্ব বলে মনে হচ্ছে।



বাংলাদেশে বর্তমানে প্রচুর উচ্চ-শিক্ষিত মানুষ রয়েছে যার সংখ্যা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। মাত্র একযুগ পিছনে ফিরে গেলেই এই সংখ্যাটা অনেকাংশে কমে যাবে, আর দুই যুগ পেছনে ফিরে গেলে তো উচ্চ-শিক্ষিত মানুষের সংখ্যাটা অনেক গুনে কমে যাবে। আর তারপরে আরো এক যুগ পিছনে গেলে উচ্চ-শিক্ষিত মানুষ মানেই ভিন গ্রহের কোন এলিয়েন বোঝাবে। সে সময়কার মানুষ সবই ছিল কৃষি ও বিভিন্ন ব্যবসা নির্ভর। লেখাপড়া বলে যে কোন জিনিস পৃথীবিতে আছে তা তারা জানতো বলে আমার মনে হয়না। আর যারাও কিনা একটু আধটু জানতো, তাদের তো সেই আমলে পাক-হানাদার বাহিনী “বুদ্ধিজীবি” বলে সোজা ওপরে চালান করে দিয়েছিল। তখন বাংলাদেশ ছিল শিক্ষাহীন, শিক্ষা ব্যবস্থাহীন একটা জনপদ মাত্র। তারপরে সেই অবস্থা থেকে বাংলাদেশের মানুষ এই অবস্থায় উঠে এসেছে কয়েকটা যুগ পার করে। তবে শিক্ষা-ব্যবস্থার সবচেয়ে বেশী উন্নতি সাধন হয়েছে গতো এক যুগে। এটাকে উন্নতি না বলে অবনতিও বলা যায়। কারণ বাংলাদেশের সার্বিক উন্নতিতে একমাত্র বাঁধাদান কারী হচ্ছে এই বর্তমান শিক্ষা-ব্যবস্থা। বাংলাদেশের নিজেস্ব শিক্ষা-ব্যবস্থা। আপনি কি জানেন? শুধুমাত্র এই দেশীও শিক্ষা-ব্যবস্থার কারণে বাংলাদেশ উন্নতির রেসে একের পর এক পিছিয়ে পড়ছে। অনেক নিম্ন-আয়ের দেশও বাংলাদেশকে টেক্কা দিয়ে তরতর করে উপরে উঠে যাচ্ছে। কারণ তারা তাদের শিক্ষা-ব্যবস্থাটাকে ঢেলে সাজিয়ে শিক্ষাটাকে প্রকৃতভাবে ব্যবহার করছে। সেসব দেশের মানুষ শুধুমাত্র শিক্ষিত হবার সার্টিফিকেট গলায় ঝুলিয়ে সবাইকে দেখাচ্ছে না যে আমি শিক্ষিত, প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করে সেটাকে যথাযথ কাজেও লাগাচ্ছে। আর সেখানে বাংলাদেশ পড়ে আছে তাদের পাশের হার বাড়ানোতে... কিভাবে ১০০% শিক্ষিত জাতি হিসেবে নিজেদের উপস্থাপন করা যায় সেদিকে। তবে সে আশা কোনদিনও পূরণ হবেনা এটা আমার মতো আরো অনেকেই জানে। শুধু মাঝখান থেকে দেশের শিক্ষা-ব্যবস্থায় আর্সেনিকের মতো বিষ পুশ করে সেটাকে ধীরে ধীরে শেষ করে দেওয়া হচ্ছে। যার ফল হয়তো মানুষ আজ থেকে আরো এক যুগ পরে গিয়ে বুঝতে পারবে।

শিক্ষা-ব্যবস্থা নিয়ে কথাবলাটও এখন শুধুমাত্র সময়ের অপচয় ছাড়া আর কিছুই না। আমি বরং কথা বলি বাংলাদেশের মানুষদের নিয়ে। শিক্ষা নিয়ে তাদের মনোভাব আর মতবাদ কিরকম সেটা নিয়ে। বাংলাদেশ মানেই বাংলাদেশের মানুষ। তাই বাংলাদেশকে নিয়ে টানা-হিচঁড়া না করে এদেশের মানুষদের নিয়ে কিছু বলাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। এটা আমি স্বীকার করি যে, বাংলাদেশের মানুষের মানুষিকতা তুলনামূলক ভাবে অনেক ভালো। সেটা অবশ্য দেশের বাইরে না গেলে বুঝতে পারতাম না। তারপরেও “বাঙালী” বলে অনেক সুনাম আছে আমাদের। আমরা খেঁটে খেতে পছন্দ করি না। খেঁটে খাওয়ার যুগ অনেক আগেই পার করে এসেছি আমরা। আমাদের বাপ-দাদাদের আমলে হয়তো ওসব চলতো। কিন্তু আমরা এখন “লাট-সাহেব” যুগে পদার্পণ করেছি। আমাদের জীবন-যাত্রার মান অনেক উন্নত হয়েছে। এখন আমাদের একমাত্র পেশা “চাকুরী”। আমরা লাঙল নিয়ে জমি চাষ করতে পারবো না, কোন ঝুকি আর কষ্ট আছে এরকম ব্যবসা বানিজ্যও করতে পারবো না। যেটা পারবো, সেটা হলো ... স্যুট-বুট আর টাই পরে অফিস যেতে, ৯টা-৫টা ডিউটি করতে। আর সরকারি চাকুরী হলে তো কোন কথায় নেই... জীবনে আর কিছু নিয়ে ভাবতে হবে না, লাইফ একদম সেট। আর নিজেকে ওই অবস্থানে নিয়ে যেতে হলে কি লাগবে? হ্যা... একটা শিক্ষিত হবার সার্টিফিকেট লাগবে। বাংলাদেশের ফালতু শিক্ষা-ব্যবস্থায় জন্ম দেওয়া শিক্ষিত হওয়ার একটা সার্টিফিকেট। যার পেছনে আজ সবাই দৌড়াচ্ছে।


চাকরি করাটা বর্তমান সমাজে এক কথায় একটা ফ্যাশান হয়ে গেছে। ছেলে কি করে? চাকরি করে। বাহঃ শুনতেই যেন কেমন একটা মনে হচ্ছে, কতো গর্বের একটা বিষয়। কিন্তু এটা না বলে যদি বলতো ছেলে ব্যবসা করে... তবে শুনতেই যেন কেমন ক্ষ্যাত টাইপের মনে হচ্ছে তাই না? নিশ্চয় লেখাপড়া না করে আজ মূর্খ তাই ব্যবসা করে খেতে হচ্ছে। তাহলে শুনুন, আপনাকে একটা মজার গল্প বলি। এরকম মেন্টালিটির মানুষ আমাদের মতলব মিঞা। তার একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার জন্য একটা ভালো ছেলে চাই তাই গেল পাশের গ্রামের রহমত আলীর বাড়িতে। রহমত আলী তার ছেলেবেলার বন্ধু। তার আছে দুই ছেলে। দুইজনেই মাস্টার্স পাস, বড় ছেলে ব্যবসা ও ছোট ছেলে চাকরি করে। তো, মতলব মিঞা রহমত আলীকে তার মনের ইচ্ছাটা জানালো ও জিজ্ঞাসা করলো তার বড়ছেলে কি করে? রহমত আলী বললো, তার বড় ছেলে ব্যবসা করে, মাছের ব্যবসা। শুনেই তো মতলব মিঞা নাক শিটকানো শুরু করলো। বললো, “মাছের ব্যবসা... ছিঃ ছিঃ আমি কি ভাবছিলাম আর কি হইলো... এতো পড়ালেখা করে এখন মাছের ব্যবসা করে? তোর বড় ছেলে তো মান ইজ্জত সব ডুবাইছে। আর ছোট ছেলেটা কি করে?” রহমত আলী বললো “ছোট ছেলেটা একটা বড় কম্পানিতে চাকরি করে”। এটা শোনারই অপেক্ষায় ছিল মতলব মিঞা। খুশীতে গদগদ হয়ে রহমত আলীকে জড়িয়ে ধরলো সে। বললো, এরকম একটা ছেলের হতেই সে তার মেয়েকে তুলে দিতে চায়। তারপরে জিজ্ঞাসা করলো ছোট ছেলের বেতন কতো? “এই তো সব মিলিয়ে প্রায় ২৫ হাজার টাকা মতো পায়” । শুনেই মতলব মিঞা আনন্দে বলে উঠলো “বাহঃ একদম খাপে খাপ। এরকম সোনার টুকরা ছেলে এখন লাখে একটা মেলে। এরকম ছেলেকেই আমি জামাই হিসেবে চাই। তোর যদি কোন আপত্তি না থাকে তবে বিয়ের দিন পাকা করি কি বলিস?” রহমত আলী বললো বড় ছেলের বিয়ে না দিয়ে ছোট ছেলের বিয়ে দেওয়াটা কেমন যেন হয়ে যায়। এই কথার প্রতিবাদ করে মতলব মিঞা বলে উঠলো, “এখনকার যুগে ওসব কেউ মানে নাকি? বিয়ে তো বিয়েই, এটার আবার কিসের আগে পরে?”। কথা শুনে রহমত আলী রাজি হলো, বললো ছোট ছেলের সাথে বিয়ে দিতে কোন আপত্তি নেই তার। কৌতুহল বশে মতলব মিঞা জিজ্ঞাসা করে বসলো “তোর বড় ছেলেটা কতো টাকা রোজকার করে?”। “এই তো, সব খরচ-খরচা বাদ দিয়ে মাসে লাখ দুয়েক টাকা থাকে”। মতলব মিঞার চোখ এবার কপালে উঠলো। ২ লাখ টাকা মাসে ইনকাম! এটা সে বিশ্বাসই করতে পারছে না। এটা কিভাবে সম্ভব? মাছের ব্যবসা করে মাসে ২ লাখ টাকা ইনকাম করে? রহমত আলী তাকে আরো আশ্বস্ত করে বলে উঠলো “কোন কোন মাসে ব্যবসা একটু ভালো হলে তিন সাড়ে তিন লাখ টাকাও ইনকাম হয়”। এবার তো মতলব মিঞার ফিউজ উড়ে গেল আর সে পুরাই কনফিউজড হয়ে গেল। এখন আপনার কাছে আমার একটি প্রশ্ন, সেটা হলোঃ এই আবস্থায় মতলব মিঞা কি করবে? সে কি তার মেয়েকে ছোট ছেলের সাথেই বিয়ে দেবে? নাকি...! আচ্ছা, উত্তরটাও আমিই বলে দিচ্ছি। মতলব মিঞা আমার আপনার মতোই একজন “বাঙালী”। আর বাঙালী জাতে মাতাল হলেও তালে কিন্তু সব সময় ঠিকই থাকে। সে কি বললো জানেন? রহমত আলীকে বললোঃ “ইয়ে মানে ... না ... মানে... দেখ ভাই রহমত, বড় ছেলের বিয়ে না হয়ে ছোট ছেলের বিয়ে হয়ে যাবে, এটা আমার চোখেও কেমন খারাপ লাগছে। তুই বরং আমার মেয়ের বিয়ে তোর বড় ছেলের সাথেই ঠিক কর।” এটাই হলো আমাদের অবস্থা!

আমরা জীবনে সফল হওয়া মানে বুঝি একটা ভালো চাকরি। আর এই চাকরির পেছনে দৌড়াতে দৌড়াতে কখন যে জীবনের অর্ধেকটা শেষ করে ফেলি তা বুঝতেও পারি না। হ্যা, চাকরির পেছনে দৌড়েই জীবনের অর্ধেক শেষ করি। কারণ চাকরি তো আর চেহারা দেখিয়ে পাবো না, পড়াশোনাটাও তো করতে হবে। আর সেটা করতে হলে জীবনের অর্ধেক কেন? পুরো জীবনটাও কারো কারো শেষ হয়ে যায়। এতো পড়ালেখা করেই বা কি লাভ? চাকরি কি আমি পাবো নাকি? একটা সরকারি চাকরি জোটাতে হলে মোটা অংকের যে যৌতুক লাগবে সেটা কে দেবে? আমার শশুর? ঘুষ ছাড়া আজকাল বেসরকারি চাকরিও পাওয়া যায়না, আর সরকারি চাকরির কথা তো মুখেও আনা যাবে না? যতোই পড়াশোনা করে ফাটায় ফেলেন না কেন, টাকা না থাকলে চাকরি নাই। যার টাকা আছে, তার পড়াশোনা না থাকলেও, সে যোগ্য না হলেও আপনার সামনে দিয়ে মেরিটে টিকে যাবে, ভাইবাতে টিকে যাবে... আর আপনি পড়াশোনা করে বসে বসে জাবর কাটবেন। এটাই হলো আমাদের বাংলাদেশ। বাংলাদেশের শিক্ষার মান আর মূল্য এতোটাই বেশী যে... মাঝে মাঝে এটাকে বাংলালিংক দামে বেচে দিতে ইচ্ছা হয়।

আমরা জীবনে এতো কষ্ট করে লেখাপড়া করি কেন বলতে পারবেন? “একটু ভালো থাকার জন্য। একটু সুখে থাকার জন্য।” আর সুখটা আসে কোথায় থেকে এটা বলতে পারবেন? “এই যে, লেখাপড়া করে একটা ভালো চাকরি পাওয়া যাবে। আর চাকরি করে মাসে মাসে অনেক টাকা পয়সা ইনকাম করা যাবে।” হ্যা... ঠিক বলেছেন। সুখে থাকতে গেলে অনেক টাকা পয়সা লাগে। অরো অনেক কিছুই লাগে। তবে টাকা থাকলে সে সবই কিনতে পাওয়া যায়। মূলকথা হলো টাকা থাকলে সুখ কিনতে পাওয়া যায়। টিপিক্যাল অনেকেই হয়তো আমার এই কথার সাথে একমত নাও হতে পারে। সেটা তাদের একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে তারা না বুঝলেও এটাই সত্যি যে, টাকা দিয়ে সব হয় এই পৃথিবীতে, যেটা এর আগে আমার কাছে অনেক বার প্রমাণিত হয়েছে। শুধু এই পৃথিবী বলবো কেন? পৃথিবীর বাইরেও ধীরে ধীরে টাকার প্রসার ঘটছে। এখনই টাকা দিয়ে চাঁদে জমি কিনতে পারবেন আপনি। আর কিছুদিন পরে তো মঙ্গল গ্রহেও জমি বিক্রি শুরু হয়ে যাবে... তখন টাকা দিয়ে সেখানেও রাজত্ব করতে পারবেন আপনি। আর তাই আমরা যে যেই গ্রহেরই বাসিন্দা হইনা কেন, টাকা জিনিসটা সবারই কাজে লাগে। বেঁচে থাকতে হলে বাতাসে অক্সিজেন এর সাথে সাথে পকেটে টাকারও কোন বিকল্প নাই।

যেটা বলছিলাম... শুধু টাকা ইনকামের জন্য যে শিক্ষা আমরা অর্জন করি, প্রকৃতপক্ষে কি শিখবো সেই শিক্ষা থেকে? কি হবে সেই শিক্ষা দিয়ে? কি বা করতে পারবেন সেই শিক্ষাটাকে কাজে লাগিয়ে? আচ্ছা, মেনে নিলাম আপনি শিক্ষিত, আপনি অনেক বড় একজন ডিগ্রিধারী। অনেক ভালো একটা চাকরি করেন আপনি! একটা সত্যি কথা বলুন তো, চাকরি করে যে টাকাটা রোজগার করেন সেটা কি আপনার জন্য যথেষ্ট? আপনার সব চাহিদা আপনি পূরণ করতে পারেন? অর্থনৈতিক ভাবে আপনি অনেক শক্তিশালী? এখানে ৯৯.৯% উত্তর হবে “না”। “না আমি আমার ইচ্ছা মতো চলতে পারি না, আমার ইচ্ছা মতো খরচ করতে পারি না, এই পারিনা সেই পারিনা...” এটাই বাস্তব! এই হলো আপনার “লেখাপড়া”, এই হলো আপনার “চাকুরী” এই হলো আপনার ছোটবেলা থেকে তিলে তিলে গড়া কষ্টের ফল। এখন আপনি দিন মজুর এর মতোই আরেক শ্রেণীর মানুষ যার নাম মাস মজুর। দিন মজুরেরা যেমন দিন আনে দিন খায় ঠিক তেমনই আপনার অবস্থা মাস আনে মাস খায় এর মতো। ভাবতেই অবাক লাগে বর্তমান শিক্ষিত চাকুরীজীবি মানুষের অবস্থাটা এদেশে কোথায় গিয়ে পৌছেছে।


গল্প বলতে আমার খুব ভালো লাগে... তাহলে আর একটা গল্প শুনুন। আমার এই গল্পে অনেক কিছুই শেখার আছে আপনার। দুই বন্ধু সামিউল আর রহিম একই সাথে SSC পাস করেছে অনেক বছর আগে... তারপরে আর তাদের দুজনের দেখা নাই। মাঝখানে কেটে গেছে প্রায় ৬-৭ বছর। দুজনেই গরীব পরিবারের ছেলে। সামিউল ছেলেটা তবুও যেকোন ভাবে নিজের পড়াশোনাটা চালিয়ে রেখে ইন্টারমিডিয়েট পাস করলো... তারপরে অনার্স-এ ভর্তি হয়ে সেটাও শেষ করে ফেললো। কিন্তু রহিম ছেলেটার ভাগ্যে পড়াশোনাটা জুটলো না। পরিবারের বোঝা মাথায় এসে পড়লো তাই পড়াশোনাটার সমাপ্তি টানতে হলো। সে SSC পাস করে কয়েক বছর এদিক ওদিক হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়ালো... দিন মজুরি খাটলো, জমি চাষ করলো আরো কতো কি! এভাবে কিছু টাকা জমিয়ে সে একটা বিদ্যুত চালিত অটোরিক্সা কিনলো... তারপরে সারাদিন সেই অটোরিক্সা চালিয়েই তার পেট চালাতে লাগলো। ওদিকে পড়াশোনাটা কোন রকমে শেষ করে থার্ডক্লাস টাইপের একটা রেজাল্ট নিয়ে সদ্য বের হয়েছে সামিউল। পারিবারিক অবস্থাটাও খুব একটা ভালো না। একটা প্রায়ভেট কম্পানিতে চাকরিও ইতোমধ্যে শুরু করেছে সে। বেতন প্রায় আট হাজার টাকার মতো। ...এটা ছিলো ফ্ল্যাশ-ব্যাক এর কাহিনী... এবার বর্তমান... ছুটির দিনে এলাকার চায়ের দোকানে বন্ধুদের সাথে আড্ডায় ব্যাস্ত সামিউল। হঠাৎ রাস্তাতে দেখা হয়ে গেল রহিমের সাথে। অনেক দিন পরে দেখা হলেও সামিউলকে চিনতে একটুও কষ্ট হয়নি রহিমের। বন্ধুকে দেখে চোখেমুখে একটা আনন্দের ছাপ পড়ে গেল তার। সে তার অটোরিক্সাটি রাস্তার পাশে রেখে দোকানটাতে গিয়ে বসলো। অনেক দিন পরে দেখা... সামিউলতো প্রথমে খেয়াল করেনি, পরে একটু ভালো করে তাকিয়ে বুঝলো এটা তার স্কুলের বন্ধু রহিম। রহিমের চেহারাটা অনেক পাল্টিয়ে গেছে, সারাদিন রোদে রোদে ঘুরে গয়ের রং অনেক কালো হয়ে গেছে। চা, বিস্কুট খেতে খেতে বেশ কিছুক্ষণ কথা বললো দু’জন। কিন্তু আগের মতো অতোটা ক্লোজ হতে পারলো না সামিউল। কারণটা হলো সামিউল একজন শিক্ষিত চাকুরীজীবি অপরদিকে রহিম কি করে? সে একজন সামান্য অটোচালক। সামিউলের ভিতরে এক ধরনের অহংকারবোধ কাজ করতে লাগলো। অন্য বন্ধুদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতেও লজ্জাবোধ হচ্ছিল তার। কি ভাববে অন্য বন্ধুরা... যায় হোক কথা বাড়িয়ে লাভনাই, তাই রহিমকে বিদায় জানাতে সে বলে উঠলো “তোর দেরী হয়ে যাচ্ছে, তুই যা এখন... পরে আবার দেখা হবে” । হাসিমুখে রহিম উঠে দাড়িয়ে বললো “তোর সাথে দেখা হয়ে খুব ভালো লাগলো, ভালো থাকিস।” এই বলে পকেট থেকে একটা একশ টাকার নোট বের করে দোকানে দিতে যাবে, তখনই সামিউল বলে উঠলো “আরে কি করিস? তুই টাকা দিবি কেন? সারাদিন অটো চালিয়ে কয়টাকায় বা ইনকাম হয় তোর যে এতো বড়মানুষি দেখাচ্ছিস? টাকা পকেটে রাখ...” এই বলে একটা পাঁচশ টাকার নোট বের করে দোকানে দিল সে। কথাটাতে সামান্য অপমানিত বোধ হলো রহিমের। অটো চালায় বলে এভাবে আপমান করাটা সামিউলের মোটেও উচিৎ হলো না এটা ভাবতে ভাবতে সে তার অটোটা নিয়ে বের হয়ে গেল।

তার পরে একমাস কেটে গেল। সামিউলের বাড়ির আর্থিক অবস্থাটা একদমই ভালো না। সে যে বেতন পায় তা তার পরিবারের পিছনেই খরচ হয়ে যায়। আলাদাভাবে কোন টাকা সে গুছিয়ে রাখতে পারেনি। এরই মধ্যে হঠাৎ সামিউলের অনেকগুলো টাকার প্রয়োজন পড়ে গেল... কারণ তার মা গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। ডাক্তার বলেছে একটা অপারেশন করতে হবে, প্রায় চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা লাগবে। কি করবে সে বুঝতে পারছে না। এইমুহুর্তে এতোগুলো টাকা সে কোথায় থেকে পাবে? বিষন্ন অবস্থায় সে রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছিল, হঠাৎ তার সাথে রহিমের দেখা। রহিম সামিউলকে দেখেই বুঝতে পারলো যে নিশ্চয় কোন বিপদে আছে সে। কি হয়েছে জিজ্ঞাসা করতেই কেঁদে ফেললো সে। রহিমকে সব ঘটনা খুলে বললো। কিন্তু সব শোনার পরে রহিম যেটা বললো সেটা সামিউল কখনও আশা করতে পারেনি। রহিম খুব সহজ সরলভাবে বললো “আরে বন্ধু তুই চিন্তা করিস না, মাত্র পঞ্চাশ হাজার টাকাই তো? ইসলামি ব্যাংকে আমার একটা একাউন্ট আছে সেখানে প্রায় ১ লাখ টাকার মতো জমা হয়ে আছে, সারা দিন আমার প্রায় হাজার থেকে বারশো টাকা ইনকাম হয় তা থেকে আমার সব খরচ করার পরেও কিছু টাকা বাড়তি থেকে যায়। যেটা মাস শেষে প্রায় আট-দশ হাজার টাকার মতো হয়। প্রতি মাসে সেটা আমি ব্যাংকে রেখে আসি, কোন দিন কি কাজে লাগে সেই জন্য। এই যে দেখ, আজ তোর কাজে লেগে গেল। তুই আমার সাথে চল, আমি এখনই তোকে টাকাটা তুলে দিচ্ছি... যদি আরো টাকা লাগে তাও আমাকে বলিস, আমার ডাচ্-বাংলা ব্যাংকেও আরেকটা একাউন্ট আছে..!” কথাটা শুনে সামিউল হেসে ফেললো ! সে যাত্রায় রহিমের সাহায্যে সামিউল পার পেয়ে গেল। পরে টাকাটা ৭ মাসে তাকে ফিরিয়ে দিয়েছিল।


কি বুঝলেন এই গল্প থেকে? একটু ভেবে দেখুন তো। আসলেই যদি কিছু বুঝে থাকেন তাহলে বুঝবেন, বাংলাদেশে একজন অটো চালকের মাসিক আয় সরকারের একজন মন্ত্রির বেতনের সমান। তবে সেটা শুধুই বেতনের সমান বলেছি অবৈধ আয়ের সমান বলিনি। আমাদের সমস্যা হচ্ছে আমরা টাকা ইনকামের জন্যই জীবনের বেশীরভাগ সময়টা পড়াশোনার পেছনে বরবাদ করে দিচ্ছি কিন্তু সেই কাজটাও ঠিক মতো করতে পারছি না। যেটা একজন অটোচালক আমার চাইতে অনেক ভালোভাবেই করছে। ঢাকার একটা ফোর-স্টার রেস্ট্রুরেন্ট এর ওয়েটার পদে চাকরি করতে হলে আপনাকে মিনিমাম অনার্স বা ডিগ্রী পাশ করতে হবে। ভালো ইংরেজী জানতে হবে। তবেই আপনি মাস গেলে দশ থেকে বারো হাজার টাকা বেতন পাবেন। রাস্তাঘাটে হয়তো দাম দেবেন না, কিন্তু যখন মাসে ত্রিশ-চল্লিশ হাজার টাকা রোজগারকারী সেই অটোরিক্সার ড্রাইভার ঐ রেস্ট্রুরেন্ট এ যাবে... তখন স্যার স্যার করে চেয়ারটা টেনে তাকে বসতে দিতে আপনি বাধ্য থাকবেন। তাহলে আরো একবার বুঝুন আমরা কোন পড়াশোনার পিছনে দৌড়াচ্ছি। কিন্তু মজার কথা হলো ক্ষমতা থাকলেও সেখানে যাওয়ার মতো সাহস একজন অটোচালক দেখাবে না, আর এটাই আপনার জন্য প্লাস পয়েন্ট । এই প্লাস পয়েন্টের জোরেই আপনার মতো শিক্ষিত চাকুরীজীবিরা আজ মাথা তুলে রাস্তাঘাটে চলতে পারছে ।।

“লেখাপড়া করে যে, গাড়ি ঘোড়া চড়ে সে” - কতো সুন্দর একটা ছড়া এটা। দুই লাইনের এই ছড়াটার অন্তর্নিহিত অর্থ বিশাল। এটা সম্ভবত বাংলাদেশে লেখাপড়ার প্রচলন হওয়ার সময়থেকে চলে আসছে। সে সময় গাড়ীতে চড়তে পারাটা অনেক সম্মানের ছিল। যারা সে সময় ঘোড়ার গাড়ী বা বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে চলাচল করতো তাদের এক কথায় সফল বলা হত যে না, তারাই জীবনে কিছু একটা করেছে। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে অনেক কিছুই পাল্টে গেছে... আজ হয়তো বলা হয়, “লেখাপড়া করে যে, চাকরি-বাকরি করে সে, সরকারি চাকরি পায় সে, ঘুষ খেতে পারে সে” । কিন্তু গাড়ি-ঘোড়া আর চড়তে পারে না, যার অর্থ সফল হওয়া। চাকরি পাওয়া আর সফল হওয়া কখনই এক জিনিস নয়।

যায় হোক, একটা কথা আমি সব সময়ই বলি যে লেখাপড়ার বিপক্ষে আমি নই। জীবনে চলতে গেলে শিক্ষার দরকার অবশ্যই আছে, এবং সেটা অর্জন করাটাও জরূরী। তবে যেকোন জিনিসই অতিরিক্ত ভালো না। একটা মানুষ পিএইচডি করে, ডবল পিএইচডি করে... খুব ভালো কথা। কিন্তু রাগ হয় যখন দেখি ডবল পিএইচডি করে এসে একটা কলেজে বা কোন ভার্সিটিতে শিক্ষাকতা শুরু করে। কি করলো সে সারাটি জীবন। জীবনের ষোলআনাই বৃথা গেল তার। কিন্তু সে সেটা বুঝলো না। তাও আবার পিএইচডি করে কোন বিষয়ে জানেন? রসায়ন বিজ্ঞানের কোন শাখাতে বা পদার্থ বিজ্ঞানে... যতো সব অপদার্থের দল।

বাংলাদেশ আজ যে অবস্থানে আছে, তার থেকে দশগুন এগিয়ে থাকতে পারতো। কিন্তু পারেনি শুধু এই শিক্ষা-ব্যবস্থার কারণে আর বাংলাদেশের কতিপয় শিক্ষিত জন-গোষ্টির কারণে। সরকার এসেছে ২১ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে। সরকার তার এই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য খুব ক্রেডিট নেয়। তবে এটা দেখলে আমার একটা কথা মনে হয়, গ্রাম বাংলায় একটা কথা প্রচলিত আছে, “ঝড়ে বক পড়ে, ফকিরের কেরামতি বাড়ে”। এখানেও এই একই অবস্থা! যায় হোক সেটা আমার দেখার বিষয় না। তবে এই ডিজিটালের প্যাচে ফেলে কারিগরি শিক্ষার প্রতি অনেক গুরুত্ব দিচ্ছে তারা। তবে সেটা শুধুই লোক দেখানোই। এর জন্য কোন বাড়তি পদক্ষেপ তারা গ্রহন করেনি। কারিগরি শিক্ষার কথা উঠতেই আবার আমার পেটকামড়ানো শুরু করলো... কিছু কথা না বলে থাকতেই পারছি না। সেটা হলো, দেশের উন্নয়নের জন্য কারিগরি শিক্ষার কোন বিকল্প নাই। এটা সরকার থেকে শুরু করে সবাই জানে এবং মানেও। কিন্তু এর মান উন্নয়নের জন্য কেউ কাজ করেনা। আজ একজন সদ্য পাস করে বের হওয়া ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার আর সদ্য ডিম ফুটে বের হওয়া পাখির ছানা একই জিনিস। কারোরি বাস্তব পৃথিবী সম্পর্কে কোন ধারণা নাই, তাদের নিজ ডিপার্টমেন্ট এর কাজ সম্পর্কে কোন ধারণা নাই। জীবনথেকে চার বছর নষ্ট করে যা শিখেছে তার কোনই দাম নাই। নাহলে কেন আমার চোখের সামনে কম্পিউটারের উপরে ডিপ্লোমা পাশ করে একজন ছাত্র আবার অফিস ওয়ার্ড শেখার জন্য আলাদা করে কোর্স-এ ভর্তি হয়? কেন মেকানিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা পাশ করে আমাকে বলে যে একটা গাড়ির গ্যারেজে চাকরি নেব, ইঞ্জিন সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা লাভ করবো? এই রকম কারিগরি শিক্ষা নিয়ে চাকর খাটার কোন দরকার আছে বলে আমি মনে করি না। বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষাখাতটা একদমই অবহেলিত। এ থেকে খালি প্রতি বছর কিছু ল্যংড়া-খোঁড়া ইঞ্জিনিয়ার বের হচ্ছে। শুধু ডিপ্লোমা না, বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারদেরও একই অবস্থা। বের হওয়ার পরে এই কম্পানির লাথি, ওই কম্পানির লাথি খেয়ে খেয়ে ধীরে ধীরে আবার কাজ শিখছে। এসব দেখলে খুব হাসি পায় আমার... কিছুতো করার নাই। ওদেরও তো আর কোন দোষ নাই। শিক্ষকরা শেখায় না, ওরাও শেখে না। শেখার আগ্রহটাও খুব কম। তবে একটা কথা ভাবুনতো, যদি ইঞ্জিনিয়ারদের অবস্থা হয় এমন তবে জেনারেল থেকে পাশকরা একজন ছাত্রের অবস্থা কেমন হতে পারে? তাদের কথা বলতে হলে তো চোখে পানি চলে আসছে আমার। আসলেই এই লেখাপড়ার কোন মানে হয় না। এর থেকে কামলা-খাটা ভালো। এটা আমার কথা না, মাস্টার্স পাশকরা বাংলাদেশের আম ছাত্রজনতার-একজনের কথা। আমার নিজ কানে শোনা।

সে আমাকে বলেছিল, এদেশের শিক্ষা-ব্যবস্থা নিয়ে তার অভিমতের কথা। তার কষ্টের কথা। বিনিময়ে আমি তাকে কিছুই বলতে পারিনি, কারণ তখন এ নিয়ে আমার জ্ঞান একটু কমই ছিল। তবে এখন আমি আর নির্বোধ নই। অন্তত এতোটুকু বুঝতে শিখেছি যে জীবনে কিছু করতে হলে আর যা-ই করিনা কেন, পড়াশোনাটা করা যাবে না। অন্তত বাংলাদেশের মতো দেশে বসে। না হলে শুধু সময়ই নষ্ট হবে। জীবনের সব সাধ অপূর্ণই থেকে যাবে। কিছুই করতে পারবো না। তবে হ্যা, কোনরকম একটা চাকরি করতে পারবো। তবে সেটা দিয়ে কিছুই হবে না। আর যখন বুঝতে পারবো যে, জীবনটা প্রায় শেষের পথে চলে এসেছে কিন্তু প্রাপ্তির হিসাবটা খুবই সামান্য। তখন আমার চেতনা ফিরবে। কিন্তু আর কিছুই করার থাকবে না।

পড়াশোনাটা করা যাবে না, কি সুন্দর বলে দিলাম তাই না?

হ্যা... ওটা আমার মনের কথা। কিন্তু বাস্তবটা কি জানেন? আমাকেও বাকী সবার মতোই সার্টিফিকেটের পেছনে দৌড়াতে হবে। কোন কিছু শেখার না, মুখস্ত করার রেসে লাগতে হবে, চাকরি পাওয়ার জন্য রেস দিতে হবে। কিন্তু কেন জানেন? ইউরোপে একটি রাষ্ট্র আছে যার নাম অস্ট্রিয়া। এই দেশের একটি প্রদেশের নাম ক্যারেনথিয়া। সেখানে সবাই উলঙ্গ হয়ে বসবাস করে। এখন আমি যদি সেখানে প্যান্ট পরে যায় তবে সবাই আমার দিকে খারাপ দৃষ্টিতে তাকাবে। এটাই স্বাভাবিক। সব নগ্নের মধ্যে নিজের প্যান্ট পরে থাকাটাই লজ্জার বিষয়। তাই আমাকেও পড়াশোনাটা করতে হবে। অন্তত একটা শিক্ষিত হওয়ার সার্টিফিকেট না পাওয়া পর্যন্ত সেটা চালিয়ে যেতে হবে। নাহলে বাংলাদেশের কথিত শিক্ষিত জনসমাজ আমাকে মূর্খের উপাধি দিয়ে আমার প্যান্ট খুলে নিতে পারে। কিন্তু তারা বুঝবে না যে তাদের গায়েও কোন কাপড়চোপড় নাই।

ভাবছি, পড়াশোনা যেটুকু বাকি আছে সেটা আবার শুরু করবো। এই দেশের শিক্ষা-ব্যবস্থার প্রতি দোষারোপ করে কোন লাভ নাই। এদেশে কেউ কোন প্রতিভার মুল্য দিতে জানেনা। তবে আগে যেভাবে চাইতাম, সত্যিকারের শিক্ষিত হতে, প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করে দেশের জন্য কিছু করতে... সেটা আর কখনই চাইবো না। এখন শুধু শিক্ষিত হবার একটা সার্টিফিকেট হলেই হবে। এদেশে আমার আর কিছুই চাওয়ার নাই, আর তার দেওয়ার তো কোন ক্ষমতাও নাই। এখন ভাবছি লেখাপড়ার পাশাপাশি একটা গরুর ফার্ম দেবো। যেগুলোকে ডেইরি ফার্ম বলে আরকি। সামনে কোরবানির ঈদে ভালো দামে বিক্রি করতে পারবো। দুধ বিক্রি করেও অনেক টাকা রোজগার করা যাবে। আর পাশাপাশি একটা মুরগীর খামারও করার ইচ্ছা আছে। ডিমের হালি কতো সেতো জানেনই... এই দেশে লেখাপড়া করে এর থেকে ভালো কিছু আর আশা করা যায় না।।।


ফেসবুকে আমিঃ Káñàk The-Bøss

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.