নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সামহয়্যারইনব্লগ এর আর তেমন কোন জনপ্রিয়তা নেই..আর তেমন কেউ পড়েও না... তাই এই ব্লগেই আমার লেখাগুলো প্রকাশ করা সবচেয়ে বেশী নিরাপদ মনে করছি...

মোঃ কামরুজ্জামান কনক

জ্ঞান অর্জন করতে হলে লেখার কোন বিকল্প নেই। একটি লেখা পড়ে যতোটা না জ্ঞান অর্জন হয়, একটি লেখা লিখতে তার থেকেও হাজারগুন বেশী জ্ঞানের দরকার হয়।

মোঃ কামরুজ্জামান কনক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের ইকমার্স ও আমাদের সফিক সাহেব!

২৯ শে আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৪:৩০


কোন এক ইকমার্স সাইটে ধামাকা সাইক্লোন অফার !! এক হাজার টাকার আন্ডা মাত্র ১০০ টাকা !! দেখা মাত্র চোখ দুটোতে মোটা মোটা আন্ডার ছবি ভেসে উঠলো সফিক সাহেবের। তড়িঘড়ি করে একাউন্ট তৈরী করে সেই ওয়েবসাইটে লগিন করলেন তিনি। হ্যা, কথা তো সত্যি ! অনেকেই দেখছি পেয়েছে, মোটা সাইজের আন্ডা। এত কম দামে এতগুলো আন্ডা পাবার লোভ সামলাতে পারলেন না তিনি, ভাবলেন আমি তো কিছু আন্ডা ভাজী করে খাবোই, সাথে কিছু আন্ডা বাজারে বিক্রিও তো করতে পারবো। সব মিলিয়ে লাভ হবে চরম। যেই ভাবা সেই কাজ, সাথে সাথেই কয়েক হাজার টাকার আন্ডা দিলেন অর্ডার করে, এবং সেই সাথে এডভান্সড পেমেন্ট। ব্যস, এবার পায়ের ওপর ঠ্যাং তুলে আরামে বসে বসে ভাবতে লাগলেন, যেদিন আন্ডা ডেলিভারি পাবেন সেদিন তিনি কি করবেন। কিছু আন্ডা তিনি বাসায় রাখবেন, কিছু আন্ডা পাঠাবেন শশুরবাড়ি আর বাকী আন্ডা গুলো কম দামে বাসার পাশের দোকানে বিক্রি করে দেবেন। এত কমে আন্ডা পেয়ে দোকানদার নিশ্চয় দুই বার ভাববে না। সাথে সাথেই সব আন্ডা কিনে নেবে। সব মিলিয়ে হিসেব কষে সফিক সাহেব বের করলেন, তার দিগুনেরও বেশী লাভ। ব্যাস এই খুশীতেই তিনি শান্তিতে দিন পার করছেন

দেখতে দেখতে প্রায় ২ মাস হতে চললো কিন্তু তার আন্ডা তো আর এলো না। ডেলিভারি হওয়ার কথা ছিল আরো ২ সপ্তাহ আগে। কিন্তু কোথায় সে আন্ডা, কোথায় কি? ওদিকে যে ওয়েবসাইট থেকে আন্ডা গুলো কেনার অর্ডার করা হয়েছিল তাদেরও তো কোন খবর নেই। অফিসে ফোন দিলেও কেউ কথা বলে না। সফিক সাহেব তো পড়লেন মহা মুসকিলে। এবার তিনি কি করবেন?
বিষন্ন চেহারা নিয়ে রাস্তায় বের হয়ে পড়লেন তিনি, বের হয়ে দেখেন একি !! তার মতো অনেকেই আন্ডা অর্ডার করেছিল, তারা কেউই আন্ডা পায়নি। সবাই এখন যাচ্ছে সেই অফিসের সামনে যাদের ওয়েবসাইট থেকে তারা অনলাইনে আন্ডা অর্ডার করেছিল। অগ্যতা দেরী না করে সফিক সাহেবও তাদের পিছু নিলেন। হাতে নাতে ধরবেন তিনি, কেন তার আন্ডা এখনো ডেলিভারি দেওয়া হয়নি? কেন তাকে এত হয়রানি করানো হলো? এসব ভাবতে ভাবতে অফিসে পৌছে দেখেন বড় সাইজের একটা তালা ঝুলে আছে অফিসের গেটে। এখানে যে আগে ঐ কম্পানির অফিস ছিল সেটাই আর বোঝার জো নেই। পাশ থেকে এক লোক বললো, এক মাস আগেই তো এই অফিসের লোকজন অফিস ছেড়ে দিয়ে চলে গেছে, অফিসের মালিক এখনও ৬ মাসের অফিস ভাড়া পায় তাদের কাছে। এ কথা শুনে সবাই মিলে হইচই আর হট্টোগোল শুরু করে দিলো। কেউ কেউ তো আবার অনশনে বসার পরিকল্পনা করতেই ব্যস্ত। কষ্টের টাকা হারিয়ে অনেকেই আবার হাউমাউ করে কেদে উঠলো।

সফিক সাহেবের বুঝে উঠতে দেরী হলো না, যে ওয়েবসাইট থেকে তিনি অধিক লাভের আশায় কম মূল্যে আন্ডা অর্ডার করেছিলেন, তারা তাকেই আন্ডা দেখিয়ে পালিয়েছে। তার এত দিনের আশা, এত দিনের আকাংখা সবই বৃথা গেল। দুঃখ ভরাক্রান্ত মন নিয়ে রাস্তার এক পাশে ফুটপাতে বসে রইলেন তিনি। এক সাংবাদিক তার দিকে ক্যামেরা তাক করে ছুটে এসে মাইক্রোফোন মুখের কাছে ধরলেন আর জিজ্ঞাসা করলেন, আপনিও কি এই কম্পানির কাছে থেকে কিছু অর্ডার করে প্রতারিত হয়েছেন? অবেগ ধরে রাখতে পারলেন না তিনি, ফুঁপিয়ে কেদে উঠলেন। সফিক সাহেবের কান্না এখন দেখছে সারা দেশের মানুষ আর গালি দিচ্ছে ই-কমার্স নামের এই সিস্টেমকে।
সফিব সাহেবের গল্প এখানেই শেষ ! এখন আসি আসল কথায়, ইকমার্স সাইট গুলোর অনেক দোষ আছে এবং থাকতে পারে, অনেক ইকমার্স কম্পানি যাত্রা শুরু করে এই লক্ষ রেখেই যে তারা তাদের ক্রেতার সাথে প্রতারণা করবে। তবে সফিক সাহেবের মত এরকম বেশীর ভাগ গল্পে ইকমার্স কম্পানিগুলোর দোষের চেয়েও ক্রেতাদের বোকামীটাই কিন্তু বেশী চোখে পড়ে। ধামাকা বা সাইক্লোন অফারের কথা শুনে হুস-জ্ঞান হারিয়ে অতি লোভে তাতি নষ্ট করে ফেলে সব শেষে ইকমার্স সিস্টেমের দোষ দিয়ে বসে আর সরকারের সাহায্য চায় এই জ্ঞানবুদ্ধিহীন প্রাণিগুলো। কিন্তু সামান্য বুদ্ধি খাটিয়ে অনলাইনে কেনা কাটা করলেই কিন্তু কাউকেই আর কোন ক্ষতির মুখে পড়তে হয়না। অনলাইনে কেনাকাটা অবশ্যই খারাপ কিছু নয়। বরং বাইরের দেশ গুলোতে অনলাইনে কেনাকাটা করা সরাসরি কোন দোকান বা শপিংমল থেকে কেনার চেয়েও অনেক বেশী ট্রাস্টেড বা গ্রহণযোগ্য। কিন্তু বাংলাদেশে ক্রেতাদের বোকামী ও কিছু অসাধু ইকমার্স কম্পানির জন্য ইকমার্স সেক্টরটিই আজ চরম হুমকির মুখে।

লেখাঃ মোঃ কামরুজ্জামান কনক

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৪:৪৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



বাংলাদেশে ইকমার্স এই রকমই হওয়ার কথা।

২| ২৯ শে আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:০৬

শেরজা তপন বলেছেন: অতিরিক্ত লোভ আমাদের শেষ করে দিল! শেয়ার ,ইকমার্স, এম এল এম সবখানেই এক কাহিনী
প্রথমে শুধু লোভ আর লাভের গল্প আর শেষে সর্বশান্ত হবার দৃশ্য। প্রতারিত যারা হয়েছে তাদের ও শাস্তির আওতায় আনা উচিত

৩| ৩০ শে আগস্ট, ২০২১ সকাল ৮:২৮

বিটপি বলেছেন: ই কমার্স ওয়ালা নেতা হিসেব পেয়েছে জীবনের সর্ব ক্ষেত্রে ব্যর্থ হওয়া এক অপদার্থ অভিনেত্রীকে। এদের কাছ থেকে এর চেয়ে ভালো কি আশা করতে পারেন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.