নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুন্দর পৃথিবীর প্রত্যাশায়

মোঃ আরিফিন ইসলাম।

আরিফিন ইসলাম

মোঃ আরিফিন ইসলাম একটি সুন্দর পৃথিবীর প্রত্যাশা করি। কর্মস্থলঃ thereport24.com (IT support)

আরিফিন ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই জেএমবি থেকে আনসারুল্লাহ !

১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১০:২৩

শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি কার্যকর ও অধিকাংশ নেতা কারাগারে থাকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। সংগঠনের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে জেএমবির অনেক সদস্যই এখন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমে যোগ দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। একই সঙ্গে কারাগারে থাকা শীর্ষ নেতাদের মুক্তি করারও পরিকল্পনা করছে নিষিদ্ধ সংগঠন দুটি।

পুলিশ জানিয়েছে, জেএমবি বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ও বিভিন্ন সংগঠনে যোগ দিয়ে তাদের সাংগঠনিক শক্তি বাড়াচ্ছে। দুটি সংগঠনের লক্ষ্যই ‘খিলাফত’ প্রতিষ্ঠা করা। এ কারণেই জেএমবি থেকে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমে যোগ দিয়ে খিলাফাত প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে তারা।
২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৬৩ জেলায় সিরিজ বোমা হামলার মধ্য দিয়ে আলোচনায় আসে জেএমবি। ওই ঘটনার পর থেকেই জেএমবির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে সক্রিয় হয়ে ওঠে তারা।

সূত্র জানায়, জেএমবি সাংগঠনিক ও কাঠামোগতভাবে দুর্বল হয়ে পড়ায় সংগঠনটির অধিকাংশ নেতা বর্তমানে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। জেএমবির সহায়তায় বাইরে থাকা সংগঠনটির নেতাকর্মীরা আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের শীর্ষ নেতাদের পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ারও পরিকল্পনা করেছে।

গত ২৭ জুলাই মধ্যরাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে জেএমবির ভারপ্রাপ্ত আমির আবু তালহা মোহাম্মদ ফাহিম ওরফে পাখিসহ ৮ জেএমবি সদস্যকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।ওই দিন তারা আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দুই সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল।

এর আগেও আটক হওয়া জেএমবি নেতারা আনসারুল্লাহর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে।
এ বিষয়ে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম অনলাইন নিউজ সাইট দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আটকরা জেএমবির বর্তমান আমির মাওলানা সাইদুর রহমান ও আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসীমউদ্দিনকে ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছিল।এ সময় তাদের আটক করা হয়।’

জেএমবি ও আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের দুই শীর্ষ নেতা কাশিমপুরের হাইসিকিউরিটি কারাগারে রয়েছেন।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘জেএমবি এবং আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের লক্ষ্য খিলাফত প্রতিষ্ঠা করা। খিলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নামে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। তবে অনেক সময় তাদের মধ্যে মতবিরোধের কারণেও এক সংগঠন থেকে অন্য সংগঠনে অন্তর্ভুক্ত হয়। তবে তারা অবস্থান পরিবর্তন করেও সফল হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে জেএমবির কার্যক্রম তিনটি গ্রুপে সংঘটিত হচ্ছে। তারা বিভিন্ন দল-উপদলে ভাগ হয়ে অবস্থান শক্ত করার চেষ্টা করছে। একই সঙ্গে সংগঠনের কার্যক্রম বাড়ানোর চেষ্টা করছে তারা।’

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজান অনলাইন নিউজ সাইট দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘জেএমবি সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানোর জন্য যে কোনো সংগঠনে যেতে পারে। তবে এটি সম্ভব হচ্ছে উভয় দলের আদর্শগত মিল। জেএমবির উদ্দেশ্য ছিল ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা আর আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের আদর্শ ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠা করা। এই আদর্শগত মিলের কারণেই জেএমবির সদস্যরা আনসারুল্লাহ বাংলা টিমে যুক্ত হয়ে সাংগঠনিক ক্ষমতা বাড়াচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘দেশে উগ্রপন্থী সংগঠনের যে বিস্তার সেটি কিন্তু জেএমবির মাধ্যমে হয়েছিল। এর পর সরকারের কঠোর অবস্থান, শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি এবং কারাগারে থাকায় তারা সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে।এতে তাদের সদস্য সংখ্যাও কমে যায়। যেহেতু এই মুহূর্তে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম সবচেয়ে সক্রিয়, তাই আনসারুল্লাহর সঙ্গে যুক্ত জেএমবি তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে।’
পুলিশ জানিয়েছে, ‘জেএমবির সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। সংগঠনের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও সরকারের চাপের কারণে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতে পারছে না।এখন তাদের সংগঠনকে বাঁচিয়ে রাখতে তারা বিভিন্ন নামে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। তবে সুযোগ বুঝে তারা আবারও তাদের আগের সংগঠনে ফিরে আসতে পারে অথবা আনসারুল্লাহর একটি শাখা হিসেবে থাকতে পারে।’

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি-দক্ষিণ) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ সানোয়ার হোসেন অনলাইন নিউজ সাইট দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম এখন সক্রিয় জঙ্গি সংগঠন। তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তাদের সঙ্গে জেএমবি যুক্ত হলে ক্ষমতা দ্বিগুণ হবে।আবার আনসারুল্লাহ বাংলা টিমও দেখছে, জেএমবির একটি গ্রুপ আছে যারা সহিংসতায় বিশ্বাসী। জেএমবির ওই সব সদস্যকে সহিংসতায় ব্যবহার করা যাবে।’

তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া কারাগারের একই সেলে জেএমবি ও আনসারুল্লাহর সদস্য থাকার কারণে তাদের মধ্যে সখ্য গড়ে উঠছে। পরে তারা এক হয়ে তাদের বিভিন্ন নাশকতার পরিকল্পনা করে।উত্তরায় আটক জঙ্গিরাও এভাবে সংগঠিত হয়। তারা জেএমবির আমির মাওলানা সাইদুর রহমান ও আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসীমউদ্দিনকে ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছিল।’

১৯৮৮ সালে শায়খ আবদুর রহমান জেএমবি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার ১০ বছর পর ১৯৯৮ সালে জেএমবি দেশব্যাপী তাদের কার্যক্রম শুরু করে। তবে দলটির প্রকাশ্য তৎপরতা শুরু হয় ২০০৩ সালের প্রথমদিকে। পরে ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৬৩ জেলায় সিরিজ বোমা হামলা ও ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠিতে বিচারককে হত্যার মধ্য দিয়ে সংগঠনটি আলোচনায় আসে। ২০০৭ সালের ৩০ মার্চ জেএমবির প্রতিষ্ঠাতা শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলাভাইসহ ছয় শীর্ষ নেতার ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

এদিকে, ২০০৮ সালে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম যাত্রা শুরু করে। তবে সংগঠনটি ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দারকে হত্যার মধ্য দিয়ে আলোচনায় আসে। ২০১৩ সালের ১২ আগস্ট বরগুনা জেলার একটি মসজিদে জঙ্গি হামলা ও নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে সংগঠনটির প্রধান মুফতি জসীমউদ্দিন রাহমানীসহ ৩০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ছাড়া চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায় এবং ৩০ মার্চ ব্লগার ওয়াসিকুর রহমানকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় সংগঠনটির জড়িত থাকার সন্দেহ করছে পুলিশ।

পুলিশ সদর দফতর থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, ২০০৪ সাল থেকে ১১ বছরে নিষিদ্ধ এই দুটি দলের ২ হাজার ৫৪৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সব ঘটনায় ৬৩২টি মামলা হয়েছে। চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে ৫১৬টি। বাকিগুলোর তদন্ত চলছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের তথ্য থেকে জানা যায়, ঢাকা মহানগরী এলাকায় ২০১৪ সালে জেএমবি ও আনসারুল্লাহ বাংল টিমের ১০৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়া চলতি বছর ৫৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সব ঘটনায় ৭২টি মামলা হয়েছে। সূত্র-অনলাইন নিউজ সাইট দ্য রিপোর্ট২৪

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.