নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুন্দর পৃথিবীর প্রত্যাশায়

মোঃ আরিফিন ইসলাম।

আরিফিন ইসলাম

মোঃ আরিফিন ইসলাম একটি সুন্দর পৃথিবীর প্রত্যাশা করি। কর্মস্থলঃ thereport24.com (IT support)

আরিফিন ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

সৌর বিদ্যুতের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বড় বাধা ভূমি !

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১২

সৌর শক্তির মাধ্যমে ২০১৬ সালের মধ্যে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের প্রতিশ্রুতি রয়েছে সরকারের। ২০১০ সালের বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবেই ২০১২ সালে এ পরিকল্পনা নেওয়া হয়। কিন্তু সে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি নেই। জাতীয় গ্রিডে ১ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎও যুক্ত হয়নি। এমনকি স্থাপিত হয়নি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রও।

এদিকে সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে বা উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভূমি সঙ্কটই সবচেয়ে বড় বাধা বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম-সচিব (নবায়নযোগ্য জ্বালানী) মোহাম্মদ আলাউদ্দিন।

মোহাম্মদ আলাউদ্দিন দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে আমরা সাধারণত নদীর চর বা ফাঁকা এলাকাকেই বেছে নিয়েছি। কিন্তু এরপরও একসঙ্গে বিপুল পরিমাণ জমি পাওয়া যাচ্ছে না। আবার যেখানে পাওয়া যায় এমন দুর্গম এলাকা যে সেখান থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ করা সম্ভব নয়। এরপরও আমরা নতুন নতুন পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছি।’

সরকারের ২০১২ সালের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৬ সালের মধ্যে মোট ৫০০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়। এর মধ্যে ৩৪০ মেগাওয়াট বাণিজ্যিক আর ১৬০ মেগাওয়াট হোম সিস্টেমের কথাও উল্লেখ রয়েছে সরকারের মহাপরিকল্পনায়।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে সৌর বিদ্যুৎ থেকে শুধুমাত্র সোলার হোম সিস্টেম থেকে ১৫০ মেগাওয়াট (৩৩.৫০ লাখ গ্রাহক) ও সোলার ইরিগ্রেশন থেকে ২ মেগাওয়াট (২১৩টি) বিদ্যুৎ আসছে। বাকী বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র এখন পর্যন্ত স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।

মূলত টেকসই জ্বালানী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই বর্তমান সরকার ২০১৬ সালের মধ্যে শুধুমাত্র সৌর বিদ্যুৎ থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। এ ছাড়া ২০১৫ সালের মধ্যে ৮০০ মেগাওয়াট ও ২০২০ সালের মধ্যে ২০০০ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের টার্গেট রয়েছে। হোম সোলার সিস্টেম তথা ব্যক্তি পর্যায়ে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনে এক ধরনের বিপ্লব ঘটলেও বাণিজ্যিকভাবে সরকার যে ৩৪০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল তাতে কোনো অগ্রগতি নেই। লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে পর্যাপ্ত ভূমির অভাবই মূল প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, ১ মেগাওয়াট সোলার প্যানেল স্থাপনে ৩ বিঘা জমি প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে ১০০ মেগাওয়াটের জন্য প্রয়োজন ৩০০ বিঘা। এ ছাড়া অন্যান্য স্থাপনার জন্য প্রতি ১০০ মেগাওয়াটে আরও অন্তত ২০ একর অর্থাৎ ৬০ বিঘা জমি প্রয়োজন। সব মিলিয়ে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ৩৬০ বিঘা জমির প্রয়োজন। এ জমি একত্র করাই বড় চ্যালেঞ্জ। এ ছাড়া তেল, গ্যাস বা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে পরিমাণ খরচ হয় এর চেয়ে কয়েক গুণ খরচ বেশী লাগে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনে। প্রতি ১ মেগাওয়াট তেল ও গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৭ কোটি ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রয়োজন হয়। আর একই পরিমাণ সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রয়োজন ৪৪ কোটি টাকা।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, দেশের বিনিয়োগকারীদের এ ধরনের বিদ্যুৎ প্রকল্প করার ক্ষেত্রে তেমন কোনো ধারণা নেই। তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রে অনুমাননির্ভর প্রকল্প প্রস্তাব দিয়ে থাকে। কিন্তু যখন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যায় তখন সমস্যায় পড়তে হয়। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় উপমহাদেশের সব থেকে বড় সোলার প্রকল্প হবে বাংলাদেশে।

ময়মনসিংহের ফুলপুরের সৌরশক্তি-চালিত ১৮ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য একটি বেসরকারি কোম্পানির সঙ্গে ২০১১ ডিসেম্বরে চুক্তি করে পিডিবি। পরে ওই প্রকল্পটির আর হদিস পাওয়া যায়নি। জামালপুরের ফুলবাড়ীতে ৩ মেগাওয়াটের একটি সৌর বিদ্যুৎ প্যানেল স্থাপনের জন্য সম্প্রতি চুক্তি হয়েছে জার্মানীর আইএফই (এরিকসেন) এবং বাংলাদেশের কনকর্ড প্রগতি কনসোর্টিয়াম (সিপিসি) ও জুপিটার এনার্জি লিমিটেড (জেইএল)-এর যৌথ কনসোর্টিয়াম।

এদিকে সরকার এখন পর্যন্ত কুড়িগ্রামের ধরলার পাশে সব থেকে বড় সোলার পার্ক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। পার্কটি থেকে ৩০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। প্রকল্পটির ভূমি অধিগ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয় কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসককে। আর সেখানেই জটিলতা শুরু হয়। বাস্তবায়ন করতে যাওয়া সকল প্রকল্পই নানা জটিলতায় আটকে যাচ্ছে। অথচ সোলার হোম সিস্টেমের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে রেকর্ড স্থাপন করেছে। বিদ্যুতের আলো পৌঁছায়নি এমন সব জায়গাতে সাধারণ মানুষ সোলার হোম সিস্টেম স্থাপন করছে। সরকারের পরিকল্পনায় রয়েছে ২০১৭ সালের মধ্যে দেশে ৬০ লাখ সোলার হোম সিস্টেম স্থাপন করা হবে। এখন যা ৩৩ লাখের বেশী রয়েছে। কিন্তু হোম সিস্টেমের এই সাফল্যর কাছে পৌঁছাতে পারছে না বড় নবায়নযোগ্য জ্বালানীর বিদ্যুৎ উন্নয়ন প্রকল্প।

এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব পর্যায়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘নবায়নযোগ্য জ্বালানী থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ কিছুটা বেশী হবে এটাই স্বাভাবিক। তার পরও বিদ্যুতের ভিন্ন সোর্স হিসেবে সোলার থেকে উৎপাদনের চেষ্টা করা হচ্ছে।’

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে সৌর বিদ্যুতের জন্য ভূমির সংস্থান একটি বড় চ্যালেঞ্জ। দেশের অধিকাংশ ভূমিতে চাষাবাদ হয়। এ ছাড়া রয়েছে বসতি ও শিল্প স্থাপনা। তাই চরাঞ্চল ও পার্বত্য অঞ্চলে পরিত্যক্ত সরকারি জমি খোঁজ করা হচ্ছে।’

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শক্তিবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সাইফুল হক বলেন, ‘সরকারের উচিত ছিল আগে ছোট ছোট প্রকল্প বাস্তবায়ন করে পরে বড় প্রকল্প হাতে নেওয়া। তাহলে হয়ত এমন সমস্যায় পড়তে হতো না।’

পাওয়ার সেলের সাবেক ডিজি বিডি রহমত উল্লাহ দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘ভারতে যদি সৌর বিদ্যুৎ দিয়ে বিমানবন্দর চলে আমাদের চলবে না কেন? আমাদের বিমানবন্দর না চলুক, বড় বড় বাণিজ্যিক বা সরকারি ভবন তো চলতে পারে। দেশে পর্যাপ্ত ফাঁকা অনাবাদী জমি আছে। সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনে সংশ্লিষ্টদের ইচ্ছে থাকাটাই জরুরী।’
নিউজ সূত্র- রিপোর্টার কাওসার আজম অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্য রিপোর্ট২৪ থেকে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.