নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুন্দর পৃথিবীর প্রত্যাশায়

মোঃ আরিফিন ইসলাম।

আরিফিন ইসলাম

মোঃ আরিফিন ইসলাম একটি সুন্দর পৃথিবীর প্রত্যাশা করি। কর্মস্থলঃ thereport24.com (IT support)

আরিফিন ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিএনপির ভাবনায় আগাম নির্বাচন, আ’লীগের না !!

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৩

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তাদের নিজস্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সুবিধাজনক সময়ে দেশে একটি আগাম নির্বাচন করতে পারে বলে মনে করছে বিএনপি। সেই লক্ষ্যে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের নামে দায়ের করা মামলাগুলো বিচারের মাধ্যমে দ্রুত পরিণতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ক্ষমতাসীনরা। যাতে বিচারে দোষী সাব্যস্ত করে দলের সিনিয়র নেতাদের সেই নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখা যায়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ মঙ্গলবার বলেছেন, সরকারের মধ্যে অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। তাদের অস্বস্তি দেখে দেখে বিএনপি মনে করে খুব শিগগির দেশে একটি নির্বাচন হবে।

শেরেবাংলা নগরে বিএনপির ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

তুমুল বৃষ্টিতে ভিজে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, বাংলাদেশে একদলীয় বাকশালী শাসন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। সেই গণতন্ত্র আজ হারিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, বিএনপির আজ সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। গণতন্ত্র ফিরে আসবে।

মওদুদ বলেন, দেশে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ যে রায় দেবে, সেই রায়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসবেন এবং দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে।

বিএনপি ক্ষমতায় আসলে পুলিশ ও প্রশাসনকে স্বাধীনভাবে তাদের কাজ করার ক্ষমতা দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেন মওদুদ আহমদ।

ক্ষমতাসীনরা তাদের সুবিধাজনক সময়ে দেশে আগাম নির্বাচনে যেতে পারে—বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাম্প্রতিক এক বক্তব্যেও এমন ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

নোয়াখালী জেলার নবনির্বাচিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতাদের সঙ্গে গত ১৬ জুন মতবিনিময় শেষে খালেদা জিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতেই হবে। দেশে সেই নির্বাচনই হবে ইনশাল্লাহ। ধৈর্য ধরুন। সময় আর বেশী নেই।’

খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্যের পর সম্প্রতি বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলার চার্জশিট দেওয়া হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপি নেতারা মনে করছেন, এটা সরকারের কূটকৌশল। তাদের দাবি, নির্বাচনে যাতে বিএনপির শীর্ষ নেতা অংশ নিতে না পারেন সে জন্য ‘মিথ্যা’ মামলা দিয়ে চার্জশিট দেওয়া হচ্ছে। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হচ্ছে। তবে এ সব করে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা যাবে না।

এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘মিথ্যা মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন অন্যায়। আজকে নির্বাচনের দাবি শুধু বিএনপির নয়, জনগণের দাবি। গণতন্ত্র রক্ষার জন্য নির্বাচন দিতে হবে।’

কবে নাগাদ নির্বাচন আসা করছেন এমনটা জানতে চাইলে জেনারেল মাহবুব বলেন, ‘কত কথাই তো শুনি, নতুন নির্বাচন নিয়ে। যখন নির্বাচন দৃশ্যমান হবে তখন খুশী হব। তবে নীতিগতভাবে সরকারের উচিৎ সকল দলের অংশগ্রহণের নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। কারণ ৫ জানুয়ারি একটি বিতর্কিত নির্বাচন হয়েছে। আরেকটি নতুন নির্বাচন হলে সরকারের জন্যও মঙ্গল হবে।’

আগাম নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘শেখ হাসিনা যতক্ষণ না বুঝবেন যে তিনি জিতবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো ইলেকশন দেবেন না।’

আগাম নির্বাচন আদায়ের ব্যাপারে বিএনপি কী পদক্ষেপ নিচ্ছে— এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই স্পিকার বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি আছে। আমরা ডায়ালগ, ডিসকাশন, পাবলিক ওপিনিয়ন ও বিভিন্নভাবে প্রেসার দিয়ে যাব। কনস্টিটিউশনাল পলিটিক্সে স্টেপ বাই স্টেপ আগাতে হয়। আমরা তো আর আওয়ামী লীগের মতো মারামারি করতে পারব না। কাজেই চেষ্টা করব, যদি ইলেকশন দেয় ভাল।’

সেটা কবে নাগাদ আশা করছেন— এমন প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, ‘এটা বলা মুশকিল, বলা ডিফিকাল্ট। হাসিনার পার্টির লোকেরাও প্রেসার দিচ্ছে এই বলে যে ইলেকশনে যেহেতু আমরা (আওয়ামী লীগ) জিতে যাব, তাহলে নির্বাচন দিলে ক্ষতি কী?’

‘যতক্ষণ ইলেক্টেড পোস্ট আছে, আমার মনে হয় না তিনি ছেড়ে দিবেন। এভাবেই চলবে ২০১৯ সাল পর্যন্ত। হাসিনা কিছুদিন এভাবে টিকে আশ্বস্ত হয়ে গেছেন,’ যোগ করেন ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার।

এ প্রসঙ্গে দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আসলে কী বলব, সব কিছু নির্ভর করেছ কী ফরমেটে নির্বাচন হবে, কী ধরনের নির্বাচন হবে তার ওপর। এই মুহূর্তে কিছু বলা যাচ্ছে না।’

নির্দলীয় সরকারের অধীনে একটি নতুন নির্বাচনের দাবিতে চলতি বছরে জানুয়ারি থেকে মার্চ টানা তিন মাসের দীর্ঘ আন্দোলনে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে ‘ব্যর্থ’ হয়ে কিছুটা ব্যাকফুটে বিএনপি। এরপর আরও প্রায় তিন মাস পার হলেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি দলটি।

এদিকে সম্প্রতি নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘সকল দলের অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি না মানায় ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বয়কট করেছিল আমাদের দল। এ দাবিতে দেশের অধিকাংশ দলও ওই নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় এবং সরকার প্রতিশ্রুত আরেকটি নির্বাচন দ্রুত দেওয়ার অঙ্গীকার থেকে দূরে চলে যায়। এ অবস্থায় বিএনপি এ বছরের শুরুতেই অবরুদ্ধ গণতন্ত্রকে মুক্ত করা লক্ষ্যে শান্তিপূর্ণ পথে গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছিল।’

‘কিন্তু আন্দোলন চলাকালে সরকারের এজেন্টরা, শাসকদলীয় লোকেরা বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে তার দায় বিরোধী দলের কাঁধে চাপানোর অপপ্রয়াস নিয়েছে, যা কারুরই অজানা নেই। পত্র-পত্রিকায়ও শাসক দলের সংশ্লিষ্টতায় সন্ত্রাসী নাশকতার বিবরণ প্রকাশিত হয়েছে’ বলেন তিনি।

রিপন আরও বলেন, ‘নিজেদের সৃষ্ট এ সব সন্ত্রাসী ঘটনাগুলোকে পুঁজি করে সরকার বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে পর্যন্ত ন্যক্কারজনকভাবে হুকুমের আসামি করে মামলা করেছে। মিথ্যা মামলায় বিএনপি নেতৃবৃন্দ কারাগারে, অনেক নেতাদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হয়েছে, চার্জশিট প্রদান করে আমাদের নেতৃত্বকে ভীষণ চাপে রাখার কৌশল নিয়েছে— যাতে করে পার্টি চেয়ারপারসন ঘোষিত দলের পুনর্গঠন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়।’

এদিকে ক্ষমতাসীরা বলছেন, ২০১৯ সালের আগে কোনো নির্বাচন নয়। একই সঙ্গে ওই নির্বাচনে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ থাকবে না এমন কথাও উঠেছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য পরিষ্কার। সংবিধান অনুযায়ী শেখ হাসিনার অধীনে ২০১৯ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা চাই সেই নির্বাচনে বিএনপিসহ সকল দল আসুক, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক। আমরা শেখ হাসিনার অর্জন নিয়ে জনগণের কাছে যাব। আমি বিশ্বাস করি বেগম জিয়ার দল আগামী নির্বাচনে আসবে। কারণ তার কাছে কোনো বিকল্প নেই— দল যদি টিকিয়ে রাখতে হয়। রাজনীতি করতে হয়, তাহলে নির্বাচনে আসা ছাড়া তার (খালেদা) কোনো বিকল্প নেই।’

দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘বিএনপি পতনের মধ্যবর্তী জায়গায় আছে। বাংলাদেশে মধ্যবর্তী নির্বাচন দেওয়ার মতো পরিবেশ তৈরি হয়নি। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা সংসদ চলমান আছে। সরকার চলমান আছে। বিএনপির এই অযাচিত দাবির জন্য জাতিকে অনিশ্চয়তায় ফেলা যাবে না। বিএনপি তাদের পতন ঠেকাতে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি তুলছে।’
তথ্য সূত্র - দ্য রিপোর্ট২৪

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.