নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুন্দর পৃথিবীর প্রত্যাশায়

মোঃ আরিফিন ইসলাম।

আরিফিন ইসলাম

মোঃ আরিফিন ইসলাম একটি সুন্দর পৃথিবীর প্রত্যাশা করি। কর্মস্থলঃ thereport24.com (IT support)

আরিফিন ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

দশ লাখ অনিবন্ধিত রিকশা হতে পারে আয়ের বড় উৎস !

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪২

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন সিদ্ধান্তহীনতা ও উদাসীনতায় কয়েক শত কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শুধুমাত্র সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমেই সিটি করপোরেশনের বার্ষিক আয় দুই থেকে তিনগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। ঢাকায় চলাচলকারী ১০ লাখ রিকশা থেকেই এই আয় বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করেন করপোরেশনের কর্মকর্তারা।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের রাজস্ব আদায়ের অন্যতম প্রধান খাতের মধ্যে রয়েছে— হাউজিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স প্রদান ও নবায়ন, হাট-মার্কেট ও পাবলিক টয়লেট ইজারা ও সালামী, বিলবোর্ড ভাড়া এবং আন্তঃজেলা বাস ও ট্রাক টার্মিনাল থেকে আদায় করা রাজস্ব।

বিগত ও চলতি অর্থবছরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাজেট থেকে জানা যায়, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্ধারিত ২৫টি খাত থেকে ৫৯৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকা আয় নির্ধারণ করলেও বছর শেষে সংশোধিত বাজেটে আয় হয় ৩৯৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। আর চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে নিজস্ব খাত থেকে আয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৩২ কোটি ৯ লাখ টাকা। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, হোল্ডিং, পরিচ্ছন্ন ও লাইটিং কর বাবদ আয় ২৭৫ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হলেও বছর শেষে আয় হয় ১৭৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। আর চলতি অর্থবছরে এই তিনটি খাত থেকে আয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮৫ কোটি টাকা। বাজার সালামী ও বাজার ভাড়া থেকে ১২২ কোটি টাকা আয় নির্ধারণ করা হলেও গত অর্থবছরে আয় হয় মাত্র ৭০ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরে নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩০ কোটি টাকা। নতুন রিকশার লাইসেন্স দেওয়া না হলেও শুধুমাত্র নবায়ন বাবদ ৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা নির্ধারণ করে ডিএসসিসি। তাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি আয় হয় এ খাত থেকে, বছর শেষে রিকশার লাইসেন্স নবায়ন বাবদ তাদের আয় হয় ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা। গত অর্থবছরে নির্ধারিত বাজেটের চেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হলেও চলতি অর্থবছরে এই খাতে অস্বাভাবিকভাবে কম আয় ধরা হয়েছে। এই খাত থেকে চলতি অর্থবছরে আয় ধরা হয়েছে মাত্র ১ কোটি ২০ লাখ টাকা।

অস্বাভাবিকভাবে লক্ষ্যমাত্রা কম নির্ধারণের কারণ জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের রাজস্ব বিভাগের প্রধান মো. মোস্তফা কামাল দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘সিটি করপোরেশন ভাগ হওয়ার পর সিটি করপোরেশনের নিবন্ধিত রিকশা দুই সিটি করপোরেশনের মধ্যে ভাগ করা হয়। ঠিকানার ওপর ভিত্তি করে দুই সিটি করপোরেশনের মধ্যে রিকশাগুলো ভাগ হয়। কিন্তু সিটি করপোরেশন ভাগ হওয়ার পর থেকে এখনো পর্যন্ত উত্তর সিটি করপোরেশন রিকশার লাইসেন্স নবায়ন করেনি। উত্তর সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আলোচনা করে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনই রিকশার লাইসেন্স নবায়ন করে। চলতি অর্থবছরে উত্তর সিটি করপোরেশন তাদের অংশের রিকশার লাইসেন্স নবায়ন করবে বলে আমাদের জানিয়েছে। তাই এ বছর আমরা এই খাত থেকে রাজস্ব আদায় কম নির্ধারণ করেছি।’

অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট পর্যালোচনায় দেখা যায়, উত্তর সিটি করপোরেশন নির্ধারিত মোট ২৪টি খাত থেকে ৮১০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা আয় নির্ধারণ করলেও ২০১৪-১৫ অর্থবছর শেষে আয় হয় ৫২১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। আর চলতি অর্থবছরে আয় ধরা হয়েছে ৮৮২ কোটি ১৫ লাখ টাকা।

উত্তর সিটি করপোরেশন গত অর্থবছরে হোল্ডিং, পরিচ্ছন্ন ও লাইটিং কর বাবদ ৩৯০ কোটি টাকা আয় নির্ধারণ করলেও বছর শেষে আয় হয় ২৬০ কোটি টাকা। আর চলতি অর্থবছরে এই তিনটি খাত থেকে আয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪১০ কোটি টাকা। বাজার সালামী ও বাজার ভাড়া থেকে ১৬৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা আয় নির্ধারণ করলেও গত অর্থবছরে আয় হয় মাত্র ১৬ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরে নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭৪ কোটি টাকা। নতুন রিকশার লাইসেন্স দেওয়া না হলেও শুধুমাত্র নবায়ন বাবদ ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হলেও এই খাত থেকে কোনো আয় আসেনি উত্তর সিটি করপোরেশনের। গত অর্থবছরে উত্তর সিটি করপোরেশন তাদের অংশের নিবন্ধিত রিকশার নিবন্ধন নবায়ন করেনি। তবে চলতি অর্থবছরে উত্তর সিটি করপোরেশন ভাগ হওয়া নিবন্ধিত রিকশার লাইসেন্স নবায়ন করবে। তাই চলতি অর্থবছরে রিকশা নবায়ন বাবদ ৫০ লাখ টাকা আয় নির্ধারণ করা হয়েছে।

অবিভক্ত সিটি করপোরেশন সর্বশেষ ১৯৮৭ সালে নতুন রিকশার লাইসেন্স প্রদান করে। ওই সময় রাজধানীতে মোট নিবন্ধিত রিকশার সংখ্যা ছিল প্রায় ৮৮ হাজার। নতুন রিকশার লাইসেন্স প্রদান করা না হলেও রাজধানীতে অবৈধ রিকশার সংখ্যা প্রতি বছরই বাড়তে থাকে। আর নতুন নিবন্ধন দেওয়া বন্ধ থাকায় দুই সিটি করপোরেশনসহ সরকারি কোনো সংস্থার কাছে রাজধানীতে কতগুলো অনিবন্ধিত রিকশা রয়েছে তার পরিসংখ্যান নেই।

বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা (ইউআরপি) বিভাগের ২০১৪ সালের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, রাজধানীতে অনিবন্ধিত রিকশার সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। তবে সিটি করপোরেশনের নিবন্ধন না পাওয়া এ সব রিকশা রাজধানীতে চলাচল করছে প্রায় ২৫টি সংগঠনের ‘অধীনে’। এ সব সংগঠনের সদস্যপদ গ্রহণের মাধ্যমে মালিকদের রাজধানীতে নতুন রিকশা নামাতে হচ্ছে। রাজধানীতে ছোট-বড় ২৫টি সংগঠনের মধ্যে অনিবন্ধিত রিকশার নেতৃত্ব দিচ্ছে প্রধানত ‘বাংলাদেশ রিকশা ও ভ্যান মালিক ফেডারেশন’, ‘জাতীয় রিকশা-ভ্যান শ্রমিক লীগ’ ও ‘বাংলাদেশ রিকশা মালিক লীগ’। তবে বাংলাদেশ রিকশা ও ভ্যান মালিক ফেডারেশনের অধীনে কতগুলো রিকশা আছে তার সঠিক সংখ্যা জানা নেই খোদ সংগঠনের কর্তাব্যক্তিদের। রাজধানীতে মোট অনিবন্ধিত রিকশার সংখ্যা নিয়েও এ সব সংগঠন দিচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য। তাদের মতে রাজধানীতে মোট অবৈধ রিকশার সংখ্যা প্রায় দুই লাখ, যা ২৫টি সংগঠনের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। আর তাদের দাবি, রাজধানীতে মাত্র ৫০ হাজার রিকশা চলছে বাংলাদেশ রিকশা ও ভ্যান মালিক ফেডারেশনের অধীনে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, রাজধানীতে এই সংগঠনের অধীনে রিকশার সংখ্যা দেড় লক্ষাধিক। দ্য রিপোর্টের অনুসন্ধানে রাজধানীতে ১৪৪৬৯০ ক্রমিক নম্বরধারী রিকশারও খোঁজ মেলে।

আর এ জামান বলেন, ‘এর পর আমরা বহুবার সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি কিন্তু তারা রিকশার নিবন্ধনের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। এদিকে পুলিশ প্রশাসনও রাস্তায় রিকশা আটকাতে শুরু করে। পরে আমরা সব মালিক ফেডারেশন এক হয়ে ঢাকার তৃতীয় সহকারী জজ আদালতে একটি দেওয়ানি মামলা করি, মামলা নম্বর ২৪৮/২০১২। মামলাটি এখনো বিচারাধীন। আদালত জানিয়েছেন, মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ৪৩ হাজার রিকশা ও ভ্যান রাজধানীতে চলাচলে কোনো বাধা নেই।’

সিটি করপোরেশনের সঙ্গে ৪৩ হাজার রিকশা-ভ্যানের চুক্তি থাকলেও বর্তমানে তার সংখ্যা কত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে সংখ্যা যে কত তার পরিসংখ্যান আমাদের কাছে নেই। তবে আমাদের সংগঠনের অধীনে ৫০ হাজারের মতো রিকশা আছে। আর ঢাকা শহরে সব মিলিয়ে আছে দুই লাখের মতো রিকশা।’

এর আগে ২০১২ সালে বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফর বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্টের এক গবেষণায় বলা হয়েছিল, রাজধানীতে অনিবন্ধিত রিকশার সংখ্যা ৮ লাখের অধিক। এ সব রিকশা সরকারি কোনো সংস্থা বিশেষ করে সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে নিবন্ধন না পেয়ে বাংলাদেশ রিকশা ও ভ্যান মালিক ফেডারেশনের কাছ থেকে ‘অনুমোদন’ নিয়ে থাকে। নির্ধারিত ফিসে এই সমিতি থেকে বিক্রি করা হয় সিরিয়াল নম্বরসংবলিত নিবন্ধন কার্ড। আর এ সব কার্ড পেছনে লাগিয়েই চলছে অনিবন্ধিত রিকশাগুলো।

ইউআরপি’র গবেষণায় বলা হয়েছে, রাজধানীতে প্রতিদিন প্রায় সোয়া দুই কোটি ট্রিপ (এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পৌঁছানো) তৈরি হয়। আর এর মধ্যে শুধুমাত্র রিকশায় তৈরি হচ্ছে ৭৬ লাখ ট্রিপ। গবেষণা অনুযায়ী রাজধানীর মোট ট্রিপের এক-তৃতীয়াংশ ট্রিপ তৈরি করছে রিকশা।

বুয়েটের ইউআরপি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আমাদের ডিপার্টমেন্টের এক গবেষণা দেখা গেছে, রাজধানীতে প্রায় ১০ লাখ অনিবন্ধিত রিকশা রয়েছে। আমরা রিকশা মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি প্রতিটি নতুন রিকশার জন্য তিন হাজার টাকা ফিস দিয়ে রিকশা ও ভ্যানগাড়ি মালিক সমিতির কাছ থেকে নিবন্ধন নেওয়া হয়। আর বছর শেষে এ সব রিকশাকে নিবন্ধন নবায়নও করতে হয়।’

মোসলেহ উদ্দিন আরও বলেন, ‘ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন হচ্ছে নগরীর দুই অভিভাবক। আইনগতভাবে সিটি করপোরেশনের অনেক ক্ষমতা ও দায়িত্ব খর্ব করা হলেও যেগুলো আছে সেগুলো যথাযথভাবে পালন করতে পারলে সিটি করপোরেশনকে আর পরনির্ভরশীল হতে হয় না। ঢাকাতে যদি ১০ লাখ অনিবন্ধিত রিকশা থাকে আর সিটি করপোরেশন যদি এগুলোকে উচ্ছেদ না করে নতুন করে নিবন্ধন দেয় এবং প্রতি বছর নিবন্ধন নবায়ন করে তাহলে এই খাত থেকে শত কোটি টাকার উপরে রাজস্ব আদায় করতে পারবে। কিন্তু বর্তমানে ১ কোটি টাকাও আয় হচ্ছে না এই খাত থেকে। অথচ রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে গড়ে উঠা কিছু সংগঠন এখন থেকে নিবন্ধন দেওয়ার নাম করে কোটি কোটি টাকা আয় করছে, যেগুলো সিটি করপোরেশনেরই করার কথা ছিল। এখন সিটি করপোরেশনকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অনেক সময় গেছে আর ভাবলে চলবে না। দ্রুতই তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

এ বিষয়ে কথা বলা হলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. গোলাম মোস্তফা দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘১৯৮৭ সালে মোট ৮৮ হাজারের মতো রিকশার নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। এখন ওই সব রিকশারই নিবন্ধন নবায়ন করা হচ্ছে। নতুন করে কোনো রিকশার নিবন্ধন দেওয়া হয় না প্রায় ২৮ বছর। কিন্তু রাজধানীতে রিকশার সংখ্যা কিন্তু দশগুণেরও বেশি বেড়েছে। আসলে রিকশার ব্যাপারে এককভাবে সিটি করপোরেশন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। কারণ বিআরটিএ, ঢাকা রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগও রাজধানীর সড়কের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়। এখন সমন্বিতভাবে আলোচনা করে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এটা আমরাও বুঝি যে, সিদ্ধান্ত না নেওয়ার জন্য আমরা বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।’
সংগ্রহ- দ্য রিপোর্ট২৪ থেকে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৩

সফিক৭১ বলেছেন: অর্থমন্ত্রীকে জানানো দরকার বিষয়টা। টাকার চিন্তায় বেচারার নাওয়া খাওয়া নাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.