নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুন্দর পৃথিবীর প্রত্যাশায়

মোঃ আরিফিন ইসলাম।

আরিফিন ইসলাম

মোঃ আরিফিন ইসলাম একটি সুন্দর পৃথিবীর প্রত্যাশা করি। কর্মস্থলঃ thereport24.com (IT support)

আরিফিন ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রকাশক হত্যায় স্লিপার সেল, অন্ধকারে পুলিশ !

০২ রা নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৩৯

মো. শামীম রিজভী, প্রশান্ত মিত্র ও সোহেল রানা, দ্য রিপোর্ট২৪ : ফের একই কায়দায় হামলা করেছে দুর্বৃত্তদের স্লিপার সেল। এর আগে সংঘটিত ব্লগার হত্যায়ও এমন ক্ষুদে স্লিপার কাজ করেছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে মূল অপরাধীরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে যাচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, দুর্বৃত্তরা ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ হয়ে এমন হত্যাকাণ্ড অতীতেও ঘটিয়েছে। এটাকে তারা ‘স্লিপার সেল’ হিসেবেই গণ্য করে থাকেন।

রাজধানীর শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটে শনিবার দুপুরে জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফীন দীপনকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। দীপন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও চিন্তক আবুল কাসেম ফজলুল হকের ছেলে। একই সময় লালমাটিয়া সি-ব্লকের ৮১৩ নম্বর বাসায় শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর কার্যালয়ে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। হামলায় শুদ্ধস্বরের প্রকাশক আহমেদুর রশীদ টুটুল, লেখক ও ব্লগার রণদীপম বসু ও তারেক রহিম গুরুতর আহত হন। বর্তমানে তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ঘটনাগুলোর পর সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছে সরকার ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী (প্রেস) মাহবুবুল আলম শাকিল এ বিষয়ে বলেন, ‘সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য। এর আগেও অনেক ঘটনার অপরাধীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। এ ঘটনাগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত অপরাধীদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।’

অন্যদিকে পুলিশ ছাড়াও র‌্যাব, সিআইডি ও ডিবি এ ঘটনাগুলোর তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম এ্যান্ড অপারেশন) শেখ মারুফ হাসান।

হত্যাকাণ্ডের বেশ কয়েকমাস পার হয়ে গেলেও সুবিচার না পাওয়ায় হতাশ দুর্বৃত্তদের হাতে নিহতদের স্বজনরা। অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট ওয়াশিকুর রহমান বাবুর পিতা টিপু সুলতান দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘আমার ছেলে মতিঝিলের ফারইস্ট এ্যাভিয়েশন নামে একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে ট্রেইনি অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিল। আমি দৈনিক বাংলা মোড়ে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। আমার একমাত্র ছেলে ওয়াশিকুর। এখনো তার হত্যার বিচার পেলাম না। আমি আমার ছেলে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

এ সকল ঘটনায় সরাসরি গোয়েন্দা সংস্থাদের ব্যর্থতার কথা বললেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজান। তিনি দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেক গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করলেও বিগত কয়েক বছর ধরে তারা পুরোপুরি ব্যর্থ। শাহবাগ আন্দোলনের পর থেকে ব্লগারদের হত্যা করা হচ্ছে, কিন্তু এ বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আগে থেকে সতর্ক হতে পারছে না।’

আমাদের দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সাইবার ওয়ার্ল্ডে বিচরণ কম উল্লেখ করে এই অপরাধ বিশ্লেষক বলেন, ‘দিন দিন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে, সে সঙ্গে বাড়ছে অপব্যবহারও। জঙ্গিরাও সাইবার ওয়ার্ল্ডে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। শনিবার দীপন হত্যাকাণ্ডের দায় আনসারুল্লাহ অনলাইনে স্বীকার করেছে। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এখনো ফারাবীর ওয়েবসাইটটি বন্ধ করতে পারেনি। ফলে তার ওয়েবসাইটের জিহাদী লেখাগুলো কিন্তু মানুষ পড়ছে।’

সময়ের সাথে সাথে সাইবার ওয়ার্ল্ডে গোয়েন্দাদের বিচরণ বাড়াতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

‘হত্যার হুমকি ও নিরাপত্তার বিষয়টি জানানো হলেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তেমন না দেখা গেলেও ঘটনার পর তৎপরতা দেখা যায়’— এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পুলিশ বাহিনীর কাছে কোনো বিষয় নিয়ে গেলে প্রথম দিকে অনেক সময় তারা বিষয়টা হালকাভাবে নেয়, এটা একটা সমস্যা।’

আমাদের মধ্যে বিচারের সংস্কৃতি চালু করতে হবে মন্তব্য করে মারজান বলেন, ‘কোনো মামলা যদি ৫ বছর ঝুলে থাকে তাহলে সেই সময়টাতে আরও ২০টা খুন হয়ে যায়।’

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া এ্যান্ড পাবলিক রিলেশন বিভাগের উপ-কমিশনার মুনতাসিরুল ইসলাম দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘পুলিশ তার কর্তব্য দায়িত্বের সঙ্গে পালন করছে। যদি তা না-ই হতো তাহলে লালমাটিয়ায় আহত তিন লেখককে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো সম্ভব হতো না। ব্লগার হত্যার মামলাগুলোতে কোনো অগ্রগতি নেই; যারা এ ধরনের মন্তব্য করছেন তারা না জেনেই কথা বলছেন।’

ঢামেক হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ফয়সল আরেফীন দীপনের ঘাড়ের একটি গভীর ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। এ আঘাতের জন্যই তার মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়াও তার মুখমণ্ডলে নাক বরাবর লম্বা একটি ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। আহমেদুর রশীদ টুটুল, রণদীপম বসু ও তারেক রহিমের মাথায়, হাতে ও ঘাড়ে ধারাল অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। টুটুল ও তারেকের মাথার আঘাত গুরুতর।

চলতি বছরেই এরা ছাড়াও চারজন অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট বা ব্লগারকে একই কায়দায় কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। হত্যাকারীদের কৌশলগুলো হচ্ছে— একাধিক মানুষ কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া, হত্যাকাণ্ডে ধারাল অস্ত্রের ব্যবহার, হত্যার জন্য নির্জন জায়গা বা নিরিবিলি পরিবেশ অথবা কক্ষ বেছে নেওয়া। এ ছাড়া হত্যা মিশনের সময় ঘাড় থেকে মাথা পর্যন্ত কোপের জন্য টার্গেট করা হয়। তবে শনিবারে হামলায় একটি ভিন্ন ব্যাপার হচ্ছে, দুর্বৃত্তরা হামলার সময় বাড়তি সতর্কতার জন্য পিস্তল সঙ্গে রেখেছিল এবং লালমাটিয়ায় শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর কার্যালয়ে হামলার সময় তারা পিস্তলের ব্যবহারও করে। ঘটনাস্থল থেকে একটি খালি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে কার্তুজটি তারেক রহিমের বাম কোমরে লাগা গুলির। গোয়েন্দা, স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী, ভিকটিম ও দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোরের সরেজমিনে এ-সব তথ্য উঠে আসে।

এর আগে, মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা ও লেখক অভিজিৎ রায়, অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট ওয়াশিকুর রহমান বাবু, মুক্তমনা ব্লগের আরেক ব্লগার, লেখক ও ব্যাংক কর্মকর্তা অনন্ত বিজয় দাস, ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় (নিলয় নীল), গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক ও অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট আহমেদ রাজিব হায়দারকে একই কায়দায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

রাজধানীর খিলগাঁওয়ের গোড়ানে চলতি বছরের ৭ আগস্ট খুন হন ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় (নিলয় নীল)। দুপুরে জুমার নামাজের সময় যখন বেশীরভাগ মুসল্লী মসজিদে তখন রাজধানীর খিলগাঁওয়ের বাসায় ভাড়া নেওয়ার কথা বলে ঢুকে পড়েন দুর্বৃত্তরা। নিলয় নীল নামে বিভিন্ন ব্লগ ও ফেসবুকে তিনি লেখালেখি করতেন। তিনি খিলগাঁও গোড়ানের ১৬৭ নম্বর থাকতেন। তিন বছর হয়েছে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন বিভাগে মাস্টার্স করেন।

১২ মে সকাল ৯টায় সিলেট নগরীর সুবিদবাজার এলাকায় অনন্ত বিজয় দাস নামে এক ব্লগারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত এ ব্লগার রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা ছিলেন।

৩০ মার্চ সকালে বাসা থেকে অফিসে যাওয়ার সময় আরেক ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবুকে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার বেগুনবাড়ী এলাকায় কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। অবশ্য এ হত্যায় অংশ নেওয়া দু’জন এবং পরে একজনকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

এর আগে ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে বের হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা ও লেখক অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাসায় ফেরার পথে পল্লবীর কালশীর পলাশনগরে একইভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয় ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দারকে।

এ ছাড়া ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে বের হওয়ার সময় প্রথাবিরোধী লেখক হুমায়ুন আজাদকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে দুর্বৃত্তরা। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জার্মানীতে তার মৃত্যু হয়।

ডিএমপির উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মুনতাসিরুল ইসলাম বলেন, ‘রাজীব হায়দার হত্যাকাণ্ডে ইতোমধ্যেই চার্জশিট তৈরী হয়েছে। অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডে ৮ জন আটক রয়েছে। নীলাদ্রি নীল হত্যায় ৪ জন আটকসহ অন্যান্য সকল মামলার কার্যক্রম নিজ গতিতে এগিয়ে চলছে।’

অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট আহমেদ রাজিব হায়দার হত্যাকাণ্ডে ৭ আসামীকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে এ ঘটনার একজন আসামী এখনো পলাতক রয়েছে। জনসাধারণের সহায়তায় অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট ওয়াশিকুর রহমান বাবু হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া দু’জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মিজানুর রহমান বলেন, আহত ও নিহত চারজনের শরীরে একই ধরনের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তারেক ও টুটুলকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে আরেকটু দেরী হলে তাদের বাঁচানো সম্ভব হতো না। ২৪ ঘণ্টা পার না হলে তারেক শঙ্কামুক্ত কিনা— সেটা বলা যাচ্ছে না। তবে টুটুলের অবস্থা তার থেকে একটু ভাল।
সংগ্রহ- the report24 থেকে ।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৪৪

ঢাকাবাসী বলেছেন: এটা কি সরকারের গুনগান করলেন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.