নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জন্মসূত্রে মানব গোত্রভূক্ত; এজন্য প্রতিনিয়ত \'মানুষ\' হওয়ার প্রচেষ্টা। \'কাকতাড়ুয়ার ভাস্কর্য\', \'বায়স্কোপ\', \'পুতুলনাচ\' এবং অনুবাদ গল্পের \'নেকলেস\' বইয়ের কারিগর।

কাওসার চৌধুরী

প্রবন্ধ ও ফিচার লেখতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। পাশাপাশি গল্প, অনুবাদ, কবিতা ও রম্য লেখি। আমি আশাবাদী মানুষ।

কাওসার চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

টগরের হোমওয়ার্ক (গল্প)

২২ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৮


লন্ডন ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ছাত্র টগর। এর আগে আরো তিনটা ক্লাস পাশ করে রীতিমতো নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে ক্লাস টুতে প্রমোশন পেয়েছে সে। বয়স ৭ বছর ৪ মাস ২৩ দিন। প্রতিদিনের মতো আজও বাবার সাথে ডাইনিং চেয়ার-টেবিলে বসে স্কুলের পড়া মুখস্ত করছে। সাইজে পিচ্চি হওয়ায় মা টগরের চেয়ারের উপর একটি ছোট টুল যুক্ত করে দিয়েছেন। বাবা মারুফ কামাল পাশের চেয়ারে বসে কঠিন হেডমাস্টারের মেজাজ নিয়ে ছেলের পড়া-লেখার দায়িত্বে নিয়োজিত।
-- কিরে টগর, পড়ায় তো দেখি মোটেও খেয়াল নেই।
-- বাবা, আমার হোমওয়ার্ক শেষ।
-- দেখি....... দেখি............... !!
বাবা মারুফ কামাল স্কুলের ডায়েরিতে লেখে দেওয়া হোমওয়ার্ক দেখে একটা একটা করে পড়া ধরা শুরু করলেন।
-- ম্যাথের হোমওয়ার্কটা দেখাও তো ?
-- বাসায় ফিরে কোন অঙ্ক করি নাই, বাবা।
-- মানে?
-- পারি না, তাই করিনি। তবে স্কুলে করছি। এই দেখো.......
কথাটি বলেই স্কুলে কষা অঙ্কগুলো বাবাকে দেখালো।
-- স্কুলের ক্লাসওয়ার্ক তো দেখতে চাইনি।
-- তাহলে আর নেই, বাবা।
এভাবে বাংলা......, ইংরেজি....., সাইন্স....., হিস্ট্র....., জিওগ্রাফী.....!! না, টগর আজ কোন বিষয়ের হোমওয়ার্ক করে নাই।
-- এত বড় মিথ্যা কথা!! বিকালে পড়তে বসনি কেন?

এখানে একটি কথা বলে রাখা ভাল, টগর প্রতিদিন বিকালে বাবা অফিস থেকে আসার আগে হোমওয়ার্ক করে রেখে দেয়। সন্ধ্যার পর বাবার প্রথম কাজ হলো ছেলের হোমওয়ার্ক টিকমতো হয়েছে কি না যাচাই করা।

-- আমার একা একা পড়তে ভাল লাগে না। মাকে বলেছিলাম আমার কাছে বসতে; টিভি দেখা বাদ দিয়ে মা আমার কাছে আসেনি। আমাকেও কার্টুন দেখতে দেয়নি। বিকালে পড়তে আমার ভাল লাগে না; খেলতে ভাল লাগে।
-- তাহলে হোমওয়ার্ক শেষ বল্লে কেন?
-- হ্যা শেষ তো; সত্যি বলছি বাবা।
-- সত্যটা তাহলে কী?
-- স্কুল থেকে এসে শাওয়ার করেছি; মাম্মির কথামতো ভেজিটেবল দিয়ে ভাত খেয়েছি; আজ এক গ্লাস দুধ খেয়ছি, একদম দুষ্টুমি করিনি। মাম্মী নিষেধ করায় টিভি দেখিনি, চিল্লাচিল্লি করিনি। অপরাহ্ণে ইচ্ছা না থাকলেও ঘুমাইছি; বিকাল তিনটায় ঘুম থেকে উঠে আবার পড়তে বসেছি। সন্ধ্যার পর..............
-- তোকে এতো পাকনামি করতে তো বলি নাই। সোজাসুজি উত্তর দেয়, হোমওয়ার্ক করলি না কেন?
-- বাবা, আমি যা করেছি এগুলো কী হোমওয়ার্ক নয়? হোমওয়ার্ক মানে তো "বাড়ির কাজ"। এখানে বাড়ির পড়া তো বলা হয়নি।
-- এতদিন তো ঠিকই পড়া শিখে রাখতে।
-- আসলে না বুঝে করেছি, বাবা। আজ হোমওয়ার্কের মিনিং বুঝতে গিয়ে ভুলটা ধরা পড়লো।
-- তাহলে হোমওয়ার্ক মানে, বাড়ির কাজ?
-- হ্যা, বাবা।
-- আজ তোর একদিন কি আমার একদিন। হারামজাদা............

একটা প্রমাণ সাইজ থাপ্পড় টগরের গালে দিতে গিয়ে কষ্ট করে রাগ সংবরণ করলেন তিনি। তবে আঙুল নাচিয়ে রাজ্যর সব বড় বড় উপদেশে বিলি করলেন। টগর এসব ভারী কথার থোড়াই কেয়ার করে। বাবার কঠিন কঠিন উপদেশের কিছুই মাথার নেটওয়ার্কে ধরে না তার।

-- আজ রাত দশটা পর্যন্ত একটানা পড়তে হবে। মাঝে কোন বিরতি নেই।

মারুফ সাহেব বাংলা খাতা বের করে বললেন-
-- "লন্ডন ইন্টারন্যাশনাল স্কুল" টানা দশ পৃষ্ঠা লেখতে হবে। শুরু কর জলদি। এটা তোর পাকনামির শাস্তি।
-- স্কুলের নাম তো কোনদিন বাংলায় লেখিনি। স্কুলেও আমাকে শেখায়নি। শুধু শুধু ইংরেজিতে শিখেছি। আমি পারবো না, বাবা।
-- শুধু ইংরেজি বানান শিখলে হবে না, বাংলায়ও শিখতে হবে। শুরু কর জলদি। কোন কথা নেই। একদম চুপ।

অনিচ্ছা সত্বেও টগর বাড়তি কোন প্রতিবাদ না করে ভয়ে ভয়ে লেখতে শুরু করলো। যুক্তবর্ণ লেখতে বেশ কষ্ট হচ্ছে তার। এজন্য রাবার দিয়ে এইচবি পেন্সিলের লেখা বার বার মুছতেছে আবার নতুন করে চেষ্টা করছে। কখনো পেন্সিল ভেঙ্গে গেলে শার্পনার দিয়ে আবার ঠিকটাক করছে। তবে কিছুতেই লেখা সুন্দর করতে পারছে না। বিষয়টি মনযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করছেন মারুফ সাহেব কিন্তু এবার ছেলেকে হুমকি ধমকি কিছুই দিচ্ছেন না।
-- বাবা হচ্ছে না, কঠিন লাগে।
-- চেষ্টা করতে থাকো।
হবে।

একটা জিনিস হঠাৎ খেয়াল হলো মারুফ সাহেবের। টগর যতবার লেখাগুলো মুছে আবার নতুন করে চেষ্টা করছে ততবার লেখা আগের বারের চেয়ে ভাল হচ্ছে। ব্যাপারটি বেশ মনে ধরেছে তার। একটা বাচ্চা একেকটা অক্ষর, একেকটা সংখ্যা অনেক পরিশ্রম করে শত বার চেষ্টায় সুন্দর করে লেখার অভ্যাস করে। এক-দুই বারের চেষ্টায় কোন বাচ্চা কখনো তা পারে না। এজন্য বর্ণমালা শেখার সময়টাতে বাচ্চাদের বেশি করে যত্ন নিতে হয়। আদর করে হাতে কলমে বারবার শেখাতে হয়। দীর্ঘ দিনের চর্চার ফলে অক্ষর ও সংখ্যাগুলো ধীরে ধীরে জীবন্ত হয়ে উঠে।

এভাবে পর্যায়ক্রমে শব্দ.............. বাক্য............... বানান............যুক্তবর্ণ.............সব শিখতে হয়।

মানুষের জীবনও অনেটাই তেমন। শুরুতে ঠিকমতো কেয়ার না পেলে, গাইড লাইন না পেলে, যত্ন না পেলে, ঘষামাজা না করলে ভিত্তিটা নড়বড়ে হয়ে যায়। বড় হওয়ার পর যতই চেষ্টা করা হোক না কেন জীবনের ভিত্তি আর মজবুত হয় না। একটা সময় আসে গাছের গোড়ার চেয়ে মাথার বোঝাটা ভারী হয়ে যায়। সামান্য ঝড় তুফানে জীবন নামক বৃক্ষটি তাল সামলাতে না পেরে মাথা ভেঙে পড়ে যায়।

আরেকটি বিষয়ও মারুফ সাহেবকে ভাবালো। ছোটবেলা যখন শিশুদের অক্ষর/সংখ্যা লেখতে হাতেখড়ি হয় তখন অভিবাবক থেকে শুরু করে স্কুলের শিক্ষক পর্যন্ত সবাই তাদেরকে বকাঝকা দেয়, সুন্দর না হলে তিরস্কার করে। অনেক সময় শাস্তিও দেয়। অথচ কিছুদিন পর এই ছেলেটি যখন সুন্দর করে লেখতে শিখে তখন সবাই খুব প্রশংসা করে। মানুষের জীবনের ভীত্তিটাও ঠিক তেমন। প্রতিষ্ঠা পাওয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে বোশিরভাগ সময় সমাজ থেকে স্বীকৃতি পাওয়া যায় না। অনেক সময় মানুষ হাসাহসি করে। কখনো কখনো বাধা বিপত্তি, এমনকি তিরস্কারও জোটে। অথচ মানুষটি পরিশ্রম করে শেষ পর্যন্ত সফল হলে সবাই বাহবা দেয়।

-- বাবা, একটা প্রশ্ন করবো?
-- করো।
-- লন্ডন মানেটা কী?
-- লন্ডন ইংল্যান্ডের রাজধানী। পৃথিবীর অন্যতম বড়, সুন্দর আর প্রাচীন শহর।
-- এটি তো আমাদের দেশের কোথাও না।
-- না।
-- তাহলে স্কুলের নাম লন্ডন রাখছে কেন?
-- হ্যা, তাইতো। কাজটা করা তাদের একদম ঠিক হয় নাই।
-- আরেকটি প্রশ্ন আছে?
-- কী?
-- ইন্টারন্যাশনাল মানে কী?
-- আন্তর্জাতিক।
-- আন্তর্জাতিক মানে কী?
-- যেখানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রচুর মানুষ বসবাস করে; বিভিন্ন দেশের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য করে; সেখানে বিভিন্ন দেশের বড় বড় কোম্পানীর অফিস আছে; বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতির চর্চা আছে; সবার বাক স্বাধীনতা আছে; নিরাপত্তা ও ভাল যোগাযোগ ব্যবস্থা আছে।
-- আমাদের স্কুলের নামের সাথে আন্তর্জাতিক লাগানো হয়েছে কেন?
-- কোন স্কুলে বিভিন্ন দেশের ছাত্র/ছাত্রী থাকলে আন্তর্জাতিক নাম দিতে পারে।
-- আমাদের ক্লাসে তো বিদেশি কোন ছাত্র নেই; টিচারাও তো সবাই দেশি।
-- ওহ! তাহলে কেন নামটি দিল বুঝতেছি না।
-- বাবা তাহলে তুমি জেনে শুনে একটা ভূয়া, একটা পঁচা স্কুলে আমাকে ভর্তি করলে কেন? এরা মিথ্যা মিথ্যা নাম দিয়েছে।

সাত বছরের ছেলেকে কী উত্তর দেবেন ভেবে পাচ্ছেন না মারুফ সাহেব। ছেলের পাকনামি তো রীতিমতো বাবাকে হারিয়ে দিয়েছে। উত্তরটি ভাবতে লাগলেন। হঠাৎ কলিংবেলের শব্দ শুনতেই তড়িঘড়ি করে এগিয়ে গিয়ে দরজা খুলতেই দেখলেন মতিন সাহেব।


তিন বছর হলো ফুড ইন্সপেক্টরের চাকরী থেকে রিটায়ার্ড করেছেন তিনি; থাকেন পাশের মহল্লায়। মারুফ সাহেবের পাশের ফ্ল্যাটে উনার মেয়ে থাকেন। হাজবেন্ড-ওয়াইফ দুজনই ডাক্তার। দশ বছরের নাতনি রুম্পা আর সাড়ে চার বছরের পাপনকে সকালে স্কুলে নিয়ে যাওয়া, আবার স্কুল থেকে বাসায় নিয়ে আসার দায়িত্ব নানার উপর পড়েছে। সন্ধ্যায় টিচার আসলে চা নাস্তা এগিয়ে দেওয়া, প্রয়োজনে মেয়ের জন্য বাজার সদাইও করেন তিনি।

-- আরে, কেমন আছেন মতিন সাহেব?
-- গুড, বেরি গুড। বিরক্ত করতে আসলাম।
-- বিরক্ত বলছেন কেন?
-- মেয়েটি আজ আর্লি চেম্বার শেষ করে চলে এসেছে সো আমার ছুটি। তবে জামাই এখনো আসে নাই, শুনেছি নাইট ডিউটি আছে তার।
-- বসুন। আপনার সাথে আলাপ করতে ভালই লাগে আমার।
-- বুঝলেন,বাসায় একা একা থাকতে ভাল লাগে না। গত বছর গিন্নি মারা যাওয়ার পর থেকে বাসাটা একদম ফাঁকা, কথা বলার কেউ নেই।
-- যখন ইচ্ছা আসবেন। কথা বলবেন।
-- না না, সব সময় আসবো না। মুখে যতই বলুন আসবেন, ভেতরে ভেতরে ঠিকই খারাপ পাচ্ছেন। রিটায়ার্ড মানুষকে কেউ পছন্দ করে না। তবে অনুমতি দিলে সপ্তাহে মাত্র দুইদিন একটু বিরক্ত করবো।
-- আপনার ছেলে কোন দেশে যেন থাকেন?
-- আগে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ছিল, তবে গত মাস থেকে নিউইয়র্ক আছে। দেশে আসতে বলেছিলাম। বউ বাচ্চারা নাকি দেশে ফিরতে চায় না।
-- মেয়ে তো একজনই?
-- হ্যা। তবে আরেকটা মেয়ে ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় রোড এক্সিডেন্টে মারা যায়। মেয়ের মৃত্যর পর থেকে আমার গিন্নি অসুস্থ হয়ে পড়েন। মাথায় গন্ডগোল দেখা দেয়। অবশেষে গত বছর................।
-- জানি আমি, আরেকদিন বলেছেন। মন খারাপ করবেন না। সব নিয়তি।
-- শি ওয়াজ এ কেয়ারিং লেডি। নাউ আই এ্যাম হাফ ম্যাড; অলসে কেয়ারলেস ওল্ড রটেন হিউম্যান বিঙ।

অন্যদিন মতিন সাহেব আসলে যদিও বেশ হাসি মুখে তাকে ওয়েলকাম করেন তবে ভেতরে ভেতরে বেশ বিরক্ত হন মারুফ সাহেব। লোকটি বিনা ব্রেকে একটানা ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলতে পারে। সারাদিন অফিস করে বাসায় ফিরে একতরফা কারো অপ্রয়োজনীয় কথা শুনার আগ্রহ বা ধৈর্য কোনটিই মারুফ সাহেবের থাকে না। তিনি অনেকটা চুপচাপ স্বভাবের মানুষ, এজন্য সারাক্ষণ বিরতিহীনভাবে হ্যা, না বলে যাওয়াটা ভাল লাগে না তার। এরকম মানুষদের কেউ পছন্দ করে না। তাছাড়া কোন কারণ ছাড়া শতকরা পঞ্চাশ পারসেন্ট কথা ইংরেজিতে বলেন তিনি।

তবে আজকে কেন যেন মনে হচ্ছে একটু সময় নিয়ে আলাপ করবেন উনার সাথে। ভেতরের ঘরে গিয়ে টগরের পড়াশুনার তদারকি করে, স্ত্রীকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে মতিন সাহেবের মুখোমুখি বসলেন তিনি।
-- আপনার নাতি/নাতনি কোন স্কুলে পড়ে?
-- টোকিও-সিডনি ইংলিশ স্কুলে।
-- আর ডাক্তার মেয়ে-জামাই?
-- মেয়ে ব্যাংকক হসপিটেলে জব করে; আর জামাই সিঙ্গাপুর মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হসপিটেলে।
-- একটা বিষয় খেয়াল করেছেন?
-- কী?
-- স্কুলের নামটি টোকিও-সিডনি কেন দিয়েছে উদ্যোক্তারা জানেন?
-- নো, আই নেভার থিংক এবাউট ইট।
-- ব্যবসা, বুঝলেন ব্যবসা। আমরা বিদেশি দামী জিনিসের নাম শুনলেই বেহুশ হয়ে যাই। টোকিও-সিডনি পৃথিবীর উন্নত দু'টি শহর। শিক্ষা-দীক্ষা, ব্যাবসা-বাণিজ্য এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ নগরী। আমাদের দেশের পাবলিক এসব নামগুলো আগ্রহ নিয়ে গিলে এজন্য এমন নামকরণ। নামটা যদি "বরিশাল-রংপুর বাংলা বিদ্যালয়" হতো তাহলে পাবলিক তা পছন্দ করতো না। টাকা ওয়ালারা সস্তা নামের স্কুলে বাচ্চা ভর্তি করতো না; এতে ধনীদের প্রেস্টিজ পাংচার হতো। স্কুলের ব্যবসাও লাটে উঠতো। এমন নাম হলে আপনি কী নাতি-নাতনিকে ভর্তি করতেন?
-- ইন্টারেস্টিং! কোয়াইট ইন্টারেস্টিং!!
-- বিষ্ময় এখানেই শেষ নয় মতিন সাহেব। আছে ক্যামব্রিজ স্কুল, অক্সফোর্ড স্কুল, হার্ভার্ড স্কুল।
আরো আছে.......................।
-- কোথায় ক্যামব্রিজ, অক্সফোর্ড আর হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি আর কোথায় এসব স্কুল?
-- এটা লজ্জা। সত্যি লজ্জার। শিক্ষা নিয়ে নির্লজ্জ ব্যবসা। দেখার যেন কেউ নেই। সবাই চোখ বুজে নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়ে আছেন।
-- ব্যাংকক হসপিটাল, সিঙ্গাপুর মেডিক্যালের নামকরণেও একই উদ্দেশ্য কাজ করেছে। যত রঙ-চঙা নাম, ব্যবসার মুনাফা ততো বেশী। অথচ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য হলো সেবা খাত। সরকারকে এসব খাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বরাদ্দ দিতে হয়, তদারকি রাখতে হয়। কিন্তু আমাদের দেশে এ দু'টি খাতে সবচেয়ে রমরমা ব্যবসা হয়। অল্প পুঁজিতে অধিক মুনাফার সহজ বিনিয়োগ হলো এসব খাত।
-- সেবা খাতগুলো পুরোপুরি সরকারি হওয়া উচিৎ ছিল। সেবা খাতে পাবলিক বিনিয়োগ করলে ব্যবসার ধান্দা তো হবেই।
-- আমরা শিক্ষিতরাও এসব ধোঁকাবাজির শিকার হচ্ছি প্রতিনিয়ত। সাধারণ পাবলিকের তো আরো খারাপ অবস্থা।
-- সেদিন বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ সম্বন্ধে একটি কথা শুনে আমি বিস্মিত হয়েছি।
-- কথাটা কী?
-- তিনি নাকি ক্লাস এইট পর্যন্ত লেখাপড়ায় মোটেও সিরিয়াস ছিলেন না। যদিও ছোটবেলা থেকে খুব মেধাবী ছিলেন তিনি। তবে ক্লাসের পড়া ভাল লাগতো না তাঁর। সারাক্ষণ গল্পের বই পড়তেন। হাতের কাছে যা পেতেন তাই পড়তেন। ক্লাস এইটের বার্ষিক পরীক্ষায় ফেল করার পর তাঁর বাবা প্রমোশনের জন্য স্কুলে রিকোয়েস্ট করতে গেলে স্কুল কর্তৃপক্ষ উনাকে অপমান করে বিদায় করে। বিষয়টি হুমায়ুন আহমদের কানে আসলে তিনি ভীষণ লজ্জা পান। বাবার এ অপমানটা তাঁকে আঘাত করেছিল। আর সেদিন থেকেই পড়ালেখায় সিরিয়াস হন তিনি। তারপরের ইতিহাস তো সবার জানা।
-- বিষয়টি তো জানতাম না। আধুনিক যুগের বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক যদি ক্লাস এইট পর্যন্ত সিরিয়াসলি পড়াশুনা না করেও পৃথিবী বিখ্যাত সাহিত্যিক হতে পারেন, তাহলে অন্য ছেলেমেয়েরা পারবে না কেন?
-- আমরা বাচ্চাদের প্রাইমারি লেভেলে সবচেয়ে প্রেসারে রাখি। অথচ এ সময়টাতে তাদের হেসে খেলে আনন্দের সাথে শিক্ষা অর্জন করার কথা। আমরা চাপিয়ে দিয়ে তাদের আগ্রহটা অঙ্কুরেই বিনাশ করে দেই। প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করতে হয় স্ব স্ব ইচ্ছায়। চাপিয়ে দেওয়া শিক্ষা প্রকৃত শিক্ষা নয়। এসব শিক্ষা মুখস্ত নির্ভর, যা পরবর্তী সময়ে কোন কাজে আসে না।
-- সহমত।।



ফটো ক্রেডিট,
গুগল।

চাইলে পড়তে পারেন-
আমার সবচেয়ে পঠিত, লাইক ও কমেন্ট প্রাপ্ত পোস্ট।
সবচেয়ে পঠিত প্রবন্ধ।
সবচেয়ে পঠিত গল্প।
সবচেয়ে লাইকপ্রাপ্ত গল্প।
ছবি ব্লগ (লন্ডনের ডায়েরি-১)।

মন্তব্য ৪০ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (৪০) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:৪০

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: আনন্দময় শিক্ষা চাই। সব শিশুর শিক্ষা হোক আনন্দময়।

২২ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৯

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ, প্রিয় সাজ্জাদ ভাই। শিশুদের শিক্ষা হবে আনন্দের, চাপিয়ে দিয়ে নয়। আমরা বাচ্চাদের তোতাপাখির মতো মুখস্থ শিক্ষা দেই; এই শিক্ষা ভবিষ্যতে কোন কাজে আসে না। আর লাইক দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা।

২| ২২ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:৫১

অচেনা হৃদি বলেছেন: প্রায়ই অনেক সহপাঠিকে বলতে শুনি, উফফ, আর পারছি না । কে যে পড়ালেখা আবিষ্কার করেছে....
আমি আবার একটু ব্যতিক্রম । আমি সব সময়েই হোমঅয়ার্ক শেষ করে রাখি । বাবা মা আত্মীয় স্বজন সবার কাছে ভালো হয়ে থাকতে চাইলে এবং এই বয়সে স্বাধীনতার স্বাদ উপভোগ করতে চাইলে হোমঅয়ার্ক কমপ্লিট করে রাখার কোন বিকল্প নেই । ঈদের ছুটিতে বেশ আরামে ছিলাম । কাল থেকে আবার শুরু... :(

২২ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: "আমি আবার একটু ব্যতিক্রম । আমি সব সময়েই হোমঅয়ার্ক শেষ করে রাখি । বাবা মা আত্মীয় স্বজন সবার কাছে ভালো হয়ে থাকতে চাইলে এবং এই বয়সে স্বাধীনতার স্বাদ উপভোগ করতে চাইলে হোমঅয়ার্ক কমপ্লিট করে রাখার কোন বিকল্প নেই।"......

বাহ!! এতো লক্ষি একটা মেয়ে। এমন মেয়ে পাওয়া বাবা-মায়ের জন্য আশীর্বাদ। ঈদের পরে আবার ব্যস্ততা শুরু হবে; পড়াশুনাও। শুভ কামনা ও অনেক ভাল লাগা রইলো।

৩| ২২ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৯

তারেক ফাহিম বলেছেন: একটু বড়ই মনে হল।

অাপনার লিখাগুলো বড়ই হয় বুঝি আজ কেন জানি পড়তে ও আচ্ছা আমারিই সময় কম।
লিখা ভালো হয়েছে কাউসার ভাই।

২২ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৮

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: প্রিয় তারেক ভাই। আমার লেখাগুলো আসলেই একটু বড় হয়। কারণ, যখন লেখি তখন চেষ্টা থাকে বিষয়টির গভীরে গিয়ে পুরোপুরি তুলে ধরতে। জানি না কতটুকু পারি। তবে চেষ্টায় কোন ত্রুটি থাকে না।

এজন্য আশা করি, বিষয়টি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। শুভ কামনা আপনার জন্য।

৪| ২২ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনি কিছু বলতে চাচ্ছেন, হয়তো!

২২ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: হ্যা, আমি কিছু একটা গল্পের মাধ্যমে বলতে চেয়েছি এবং তা বলেছি। আসলে গল্পগুলো তো আমাদের ব্যক্তি জীবন, পারিবারিক জীবন এবং সামাজিক বিভন্ন অন্যায়, অবিচার ও ঘটে যাওয়া, চলতে থাকা অনিয়মগুলো তুলে ধরে। আমার এ গল্পটিও তার ব্যতিক্রম নয়।

আমি গল্পটিতে দেশের শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থার অনিয়মের উপর আলোকপাত করার চেষ্টা করেছি। বিশেষ করে শিশু শিক্ষার উপর ফোকাস করেছি। ধন্যবাদ, কমেন্ট করার জন্য।

৫| ২২ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০১

সিগন্যাস বলেছেন: কিছু বলার নাই।আপনার সব পোষ্টের মতো এটাও অসাম।আমার হাতের লেখা বাঁশঝাড়ের মতো আঁকাবাঁকা।কোন পরামর্শ আছে?

২২ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৮

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: আচ্ছা, আপনি লেখেন না কেন? হাতের লেখা খারাপ হতেই পারে, কিন্তু নেটে লেখলে তো সে সম্ভাবনা নেই। প্লীজ, যা পারেন লেখুন। আর হাতের লেখা সবার ভাল হয় না। এজন্য এ বিষয়টি নিয়ে বেশি ভাবনার প্রয়োজন নেই।

আসলে বড় হওয়ার পর লেখা সুন্দর করা খুব কঠিন। প্রাইমারিতে পড়ার সময় অক্ষরগুলো ঠিক করে নিতে হয়। তবুও চেষ্টা করুন; কিছুটা হলেও হবে। অনেক শুভ কামনা প্রিয় ভাইয়ের জন্য।

৬| ২২ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৬

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: কি হে লেখক?
কোন চিপাতে মুখ লুকাইলেন?:P
ঈর্ষা করার মত লেখা! তবে আমি যেহেতু নিজেকে লেখক ভাবি না সেই জন্য লেখা মচৎকার(মচৎকারই পড়ুন;)) হয়েছে!

★ কি সব টগর মগর? মেয়েলি নাম??
★@"-- আজ তোর একদিন কি আমার একদিন।
হারামজাদা............

-- পছন্দের লাইন!
ছয় বছরের ছেলেকে কী উত্তর দেবেন ভেবে পাচ্ছেন না মারুফ সাহেব।
-- প্রথমে না লিখলেন, বয়স ৭বছর চার মাস ২৩দিন....:P


@"চাঁদগাজীবলেছেন:আপনি কিছু বলতে চাচ্ছেন, হয়তো!
-- শহীদ-গাজী ভাইয়ু!
পোস্টটা কি পড়েছেন? নাকি পড়েও বুঝতে পারেন নি...... :P

২২ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৩

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: ★ ছয় বছরের ছেলেকে কী উত্তর দেবেন ভেবে পাচ্ছেন না মারুফ সাহেব।
-- প্রথমে না লিখলেন, বয়স ৭বছর চার মাস ২৩দিন....:P
সরি, জানেমন। এটা প্রিন্টিং মিসটেক ছিল; ঠিক করে নিয়েছি। ভুলটি ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ B-)

@"চাঁদগাজীবলেছেন:আপনি কিছু বলতে চাচ্ছেন, হয়তো!
-- শহীদ-গাজী ভাইয়ু!
পোস্টটা কি পড়েছেন? নাকি পড়েও বুঝতে পারেন নি...... :P

নো কমেন্ট। :( :( :(

কি হে লেখক?
কোন চিপাতে মুখ লুকাইলেন?:P
ঈর্ষা করার মত লেখা! তবে আমি যেহেতু নিজেকে লেখক ভাবি না সেই জন্য লেখা মচৎকার(মচৎকারই পড়ুন;)) হয়েছে!

আপনার প্রতিটি কমেন্ট আমি মনযোগ দিয়ে পড়ি; আর মাঝে মাঝে ভুলগুলো ধরিয়ে দেন বলে সংশোধন করতে পারি। এজন্য ইউ আর মাই স্পেশাল জান্টু দোস্ত। আমি জানি আপনি লম্বা লেখা তেমন একটা পড়েন না; তারপরও আমার গল্পটি মনযোগ দিয়ে পড়েছেন দেখে ভাল লাগলো।

অনেক ভাল লাগা প্রিয় ভাইটার জন্য। আর কে বলে আপনি ভাল লেখক নয়!!! আমি আপনার লেখার এক নম্বর ফ্যান, সিরিয়াসলি বলছি।

৭| ২২ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৫

শামচুল হক বলেছেন: শিক্ষা ব্যবসার উপর চমৎকার লেখা। ধন্যবাদ

২২ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৯

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ, প্রিয় শামচুল ভাই।

৮| ২২ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০১

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনি বলেছেন, "বিশেষ করে শিশু শিক্ষার উপর ফোকাস করেছি। "

-শিশু শিক্ষায় আমাদের প্রশাসন কি কোন ধরণের ভুল করছে?

২২ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৭

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: "শিশু শিক্ষায় আমাদের প্রশাসন কি কোন ধরণের ভুল করছে?".....

আমাদের শিশুদের স্কুলে শিক্ষার পদ্ধতি আর বাসা-বাড়িতে গার্জিয়ানদের অতি বাড়াবাড়ি শিশুদের মেধা বিকাশের অন্তরায়। আমি লন্ডনে পড়ানোর অভিজ্ঞতা থেকে বিষয়টি অনুধাবন করেছি।

লন্ডনে কিছুদিন স্কুলে পড়ানোর সুযোগ হয়েছিল। ওদের শিক্ষা ব্যবস্থা আমাকে অবাক করেছে। ওরা কোন ছাত্রকে জোর করে পড়ায় না। ক্লাসে অন্যদের সাথে পেরে না উঠলে আলাদা করে কেয়ার করে। তারপরও না পারলে রেখে দেয়। শুধুমাত্র প্রকৃত মেধাবীদের এরা পুস করে আর ভাল করার জন্য। এ হার শতকরা ২৫-৩০%। কিন্তু কখনো এদেরে প্রেসার দেয় না। ছাত্ররা যাতে মনের আনন্দে পড়াশুনা করে তার ব্যবস্থা করে দেয়। এদের আলাদা কোচিং লাগে না, টিচারের বাসায় গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় ব্যয় করা লাগে না। এমনকি বাসায় এসে সর্বোচ্চ ২-৩ ঘন্টা পড়াশুনা করে। গার্ডিয়ানদের কোন হেল্প লাগে না।

ওদের সিলেবাসটা আমাদের চেয়ে ছোট, বইয়ের সংখ্যাও অনেক কম। এরা এ+ এর ফ্যান্টাসিতে ভোগে না। স্কুল থেকে ছাত্রদের সহজাত প্রতিভা বিকাশে সহায়তা করে। তাদের ইচ্ছার বিরূদ্ধে যায় না। এজন্য মেধাবীরা স্বাধীনভাবে তাদের প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে পারে। এজন্য আমাদের ছাত্রদের তুলনায় এরা অনেক মেধাবী হয়। একেকটা ছাত্র একজন গবেষক হয়। কারণ ছোটবেলা থেকে বাচ্ছাদের এরা থিংকার বানায়, তোতাপাখি নয়।

আমরা জোর করে মেধাবী বানাতে চাই, আর ওরা মেধাবীদের চেনে গবেষক বানায়। এখানেই আমাদের সাথে তাদের পার্থক্য। তারা জানে মেধা হচ্ছে সহজাত। জোরাজুরিতে হয়ত পরীক্ষায় ফল আসে, কিন্তু দেশ ও জাতির কোন লাভ হয় না। ইউকেতে এখনো GCSE পাশের হার ৬০-৬৭%। গত ৫-৭ বছর আগেও ছিল ৪০-৪৫%।

৯| ২২ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৯

সোহানী বলেছেন: ভাইরে এ তুলনা করতে গেলে মাথার চুলই ছিড়ঁতে হবে এর বেশী কিছু করতে পারবেন না। দেশের মাথা ওয়ালাদের মগজ আগে ধোলাই করতে হবে। তারপর তারা দেশের আমূল পরিবর্তন করবে শিশু শিক্ষা। যাইহোক, এগুলো বলা মানে অপাত্রে পানি ঢালা। তারা কোন কিছুই কানে নিবে না নিজেদের লাভ ছাড়া..... দেশ আবার কি??? আগে নিজে ও তাদের ছেলে পেলে্ বাচঁলেই হলাে. ... এই নিয়ে আমার একটা লিখা আছে..........
একটি বিজ্ঞান বক্স, শিশু শিক্ষার সেতুবন্ধন- স্বদেশ এবং বিদেশ

২২ শে জুন, ২০১৮ রাত ৮:৫৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: "দেশ আবার কি??? আগে নিজে ও তাদের ছেলে পেলে্ বাচঁলেই হলাে।".......

আপু, চমৎকার বলেছেন। এটাই চরম সত্যি কথা। দেশের নীতি নির্ধারকরা এ বিষয়গুলো জানে বলেই তাদের ছেলে মেয়েদের বিদেশে পড়তে পাঠায়। আর এরা দেশে ফিরে বাবার মতো রাজনীতিবিদ হয়। দেশের সাধারন মানুষকে নীতির শিক্ষা দেয়; আর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ডলার পাচার করে বিদেশে সম্পদের পাহাড় বানায়।

জানি, এ থেকে মুক্তির কোন উপায় নেই। তারপরও বিবেক মানে না তাই লেখি।

পৃথিবীতে যেসকল মানুষ কম বুঝে, কম জানে, কম কৌতুহলী হয় সেসব মানুষ বেশি সুখী হয়। এজন্য সুশিক্ষিত, বিবেকবান, সচেতন আর গবেষকরা কখনো সুখী হতে পারে না। ফরমান আলীর মতো মানুষরা অল্পতেই আত্মতৃপ্তিততে ভোগেন। জীবনে কিছুই না পেয়েও সব কিছু পাওয়ার আনন্দ পান। জীবনকে উপভোগ করেন। আমি এদের দলে নই বলে চুপ থাকতে পারি না; দেশের উন্নতির বন্যায় ভেসে যেতে পারি না।

১০| ২২ শে জুন, ২০১৮ রাত ৮:২৯

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: সবাই আছে খেলা নিয়ে আর আপনি আছেন গল্প নিয়ে, গত কয়দিন ধরে মাথা হ্যাং হয়ে আছে খেলা জন্য কিছুই লিখতে পারছি না

২২ শে জুন, ২০১৮ রাত ৮:৪৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: আমিও খেলা দেখি তারেক ভাই। কিন্তু বাংলাদেশ যেহেতু খেলছে না সেহেতু কোন দল হারুক আর জিতুক আমার কিছু যায় আসে না। এটা নিছক একটা বিনোদন। যারা বিশ্বকাপ জিতবে এদের কেউ আমাদের চিনবে না, কাপটাও দেবে না। অতএব, যার খেলা তার তার টেনশন।

এজন্য গল্প লেখতে আমার সমস্যা হয় না। অনেক ধন্যবাদ ও ভাল লাগা তারেক ভাই।

১১| ২২ শে জুন, ২০১৮ রাত ৯:১১

রাজীব নুর বলেছেন: শিশুদের কিভাবে শিক্ষা দিতে হবে রবীন্দ্রনাথ খুব সুন্দর করে বলে গেছেন। আমরা কেন রবীন্দ্রনাথের কথা মানছি না?

২৩ শে জুন, ২০১৮ ভোর ৪:৪৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: ঠিকই বলেছেন, রাজীব ভাই। বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবনা চিন্তা করা উচিৎ।

১২| ২২ শে জুন, ২০১৮ রাত ৯:১১

রাজীব নুর বলেছেন: শিশুদের কিভাবে শিক্ষা দিতে হবে রবীন্দ্রনাথ খুব সুন্দর করে বলে গেছেন। আমরা কেন রবীন্দ্রনাথের কথা মানছি না?

২৩ শে জুন, ২০১৮ ভোর ৪:৪৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: সহমত।

১৩| ২২ শে জুন, ২০১৮ রাত ৯:৪১

আবদুল মমিন বলেছেন: মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন★ ছয় বছরের ছেলেকে কী উত্তর দেবেন ভেবে পাচ্ছেন না মারুফ সাহেব।
-- প্রথমে না লিখলেন, বয়স ৭বছর চার মাস ২৩দিন
:-B

২৩ শে জুন, ২০১৮ ভোর ৪:৪৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: আব্দুল মমিন ভাই, শুভেচ্ছা নেবেন। এটা টাইপিং মিসটেক ছিল ঠিক করেছি।

১৪| ২২ শে জুন, ২০১৮ রাত ১০:১৯

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আশাকরি ভালো আছেন প্রিয় কাওসারভাই। প্রথমে ভেবে ছিলাম, আপনি যে লন্ডন ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের কথা বললেন সেটি লন্ডনে অবস্থিত। পরে গিয়ে বুঝলাম বাংলাদেশেই টোকিও, সিডনি নামেও স্কুল আছে এবং তাদের উদ্ভব রহস্যও। এই জায়গাটায় ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বেশ প্রভেদ আছে। আমাদের এখানে দুন স্কুল, দিল্লি পাবলিক স্কুল, জোকা ইন্টারন্যাশনাল, অ্যাডামাস ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের মত নামি বেসরকারি স্কুলের উচ্চবিত্ত মহলে কদর থাকলেও বিদেশী নামের হসপিটল একটিও শুনিনি। তবে নামের চমক হয়তো নেই, তবে দেখনদারিতে মিল একই। আমার এক কলিগের মেয়ে অড্যামাস ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে পড়ে। একদিন হিসাব করে দেখলাম,ক্লাস ফোর পাশ করতে বাচ্চাটির পিছনে যা খরচ হবে তা আমার মাস্টর ডিগ্রি লাভ করার চেয়ে ছগুন বেশি। অথচ আমরা কতইনা বোকা। যে সমস্ত স্কুলে বাচ্চাকাচ্চা ভর্তি করলে একটু খরচ হলেও রামমোহন, বিদ্যাসাগর হওয়া একপ্রকার নিশ্চিত কিন্তু আমরা শুধু পয়সা খরচের ভয়ে সন্তানদের এহেন সুযোগ থেকে বঞ্চিত রাখছি। তবে যারা এইসব নামি দামী স্কুলে বাচ্চাদের দিচ্ছেন তাদের সন্তানদের প্রতি শুভ কামনা থাকলো।

অত্যান্ত সুন্দর সমাজ চেতনামূলক পোষ্ট। লেখগুনে অসাধারণ লাগলো। আপনি থাকছেন স্যার, আপনি থাকছেন স্যার, আপনি আপনি আপনি থাকছেন স্যার মানে.....

২৩ শে জুন, ২০১৮ রাত ১০:০২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: চমৎকার একটি মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, প্রিয় পদাতিক চোধুরী ভাই।
"প্রথমে ভেবে ছিলাম, আপনি যে লন্ডন ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের কথা বললেন সেটি লন্ডনে অবস্থিত। পরে গিয়ে বুঝলাম বাংলাদেশেই টোকিও, সিডনি নামেও স্কুল আছে এবং তাদের উদ্ভব রহস্যও। এই জায়গাটায় ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বেশ প্রভেদ আছে।"..............

বাংলাদেশের মানুষের শিক্ষা নিয়ে দূরদর্শী চিন্তাভাবনা কম। যাদের আছে তারাও ফ্যান্টাসিতে ভোগেন এজন্য এরকম অদ্ভুত নাম সর্বস্ব স্কুলগুলোর মালিকরা কোটিপতি হচ্ছে। এদেশে নামটিই বড় কাজ নয়। ভারতের মানুষ আমাদের চেয়ে অনেক সচেতন।

"আমার এক কলিগের মেয়ে অড্যামাস ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে পড়ে। একদিন হিসাব করে দেখলাম,ক্লাস ফোর পাশ করতে বাচ্চাটির পিছনে যা খরচ হবে তা আমার মাস্টর ডিগ্রি লাভ করার চেয়ে ছগুন বেশি।"............

তাহলে কলকাতাও আমাদের লেভেলে আছে!!!

অনেক অনেক ভাল লাগা ও শুভ কামনা প্রিয় ভাইয়ের জন্য।

১৫| ২৩ শে জুন, ২০১৮ ভোর ৬:০৪

জাতির বোঝা বলেছেন: টগরের জন্য ভালোবাসা। আমাদের দেশের লক্ষ লক্ষ টগরের জন্যও ভালো বাসা রইল। তারা কি কোন সুযোগ পাচ্ছে?

২৩ শে জুন, ২০১৮ রাত ১০:০৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: "তারা কি কোন সুযোগ পাচ্ছে?"....
না, টগরেরা কোন সুযোগ পাচ্ছে না তাদের অতি উৎসাহী ও ফ্যান্টাসী প্রিয় বাবা-মায়েদের জন্য। সমস্যাটা মানসিক।

১৬| ২৩ শে জুন, ২০১৮ সকাল ১০:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: কাওসার ভাই বাংলাদেশের চিকিৎসার মান নিয়ে কিছু লিখুন।

২৩ শে জুন, ২০১৮ রাত ১০:০৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: রাজীব ভাই, ঠিক আছে সময়-সুযোগে বিষয়টি নিয়ে লেখবো।

১৭| ২৩ শে জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:০৯

সুমন কর বলেছেন: গল্পে একটি মেসেজ আছে। সেটি ভালো লাগল। কিন্তু আজকাল ছেলেমেয়ে'রা পড়তে চায় না !!

২৩ শে জুন, ২০১৮ রাত ১০:০৮

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: দাদা, গল্পটি পড়েছেন জেনে ভাল লাগলো। আর ম্যাসেজটি আপনার পছন্দ হয়েছে জেনে ভাল লাগলো। শুভ কামনা প্রিয় দাদার জন্য।

১৮| ২৩ শে জুন, ২০১৮ দুপুর ২:১৯

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: গল্প পাঠে ভাল লাগল। ম্যাসেজটিও সুন্দর।

২৩ শে জুন, ২০১৮ রাত ১০:০৯

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ, সুজন ভাই। শুভ কামনা আপনার জন্য।

১৯| ২৩ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


১৯৬২ সাল থেকে বাংগালীরা 'শিক্ষা ব্যবস্হা' নিয়ে লিখছেন, শতকরা ৯৯.৯৯ টি লেখা মুল বিষয়গুলো তুলে ধরতে সক্ষম হয়নি ।

২৩ শে জুন, ২০১৮ রাত ১০:১৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: আপনার দৃষ্টিতে যেখানে শতকরা ৯৯.৯৯% লেখা মুল বিষয়গুলো তুলে ধরতে সক্ষম হয়নি সেহেতু কী আর বলবো!! তবে এটা তো প্রবন্ধ নয়, একটি গল্প মাত্র। শিক্ষা নিয়ে লেখা আমার বেশ কয়েকটি প্রবন্ধ আছে, চাইলে পড়তে পারেন।

বাংলাদেশ সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেছে, তা বহু বছর আগে। এজন্য সরকারের তরফ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে কোন ছেলে-মেয়ে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হয়, বিশেষ করে প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে সরকারের উদাসীনতা এবং সরকারি স্কুলগুলোর নিম্নমান ও অপ্রতুল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য কিন্ডার গার্ডেন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসা। কোন কোন স্কুলে তো এসব শিশুদের রীতিমত ভর্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে, লিখিত পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি করা হয়। স্বাধীনতার এত বছর পরও শিশুদের জন্য সমমান ও একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা আজও আমরা চালু করতে পারলাম না।

এজন্য ছোটবেলা থেকে বাচ্চাদের মনে মানুষের শ্রেণী বৈষম্যের বিষ রোপিত হয়। যারা দামী স্কুলে পড়ে তাদের কাছে কমদামী স্কুলের বাচ্চাদের 'ছোটলোক' মনে হয়। যারা দামী গাড়ি নিয়ে স্কুলে যায় তাদের কাছে হেঁটে আসা সহপাঠীকে 'কামলা শ্রেণীর' মনে হয়। তবে এ শ্রেণী বৈষম্যটা শুরু হয় পরিবার থেকে। বাচ্চাটি ঘরের কাজের মেয়েটার সাথে বাবা-মায়ের ইতরামী দেখে এই মেয়েটিকে মানুষ নয় 'ভিন্ন প্রজাতির' ভাবতে শেখে। নিজেও পিচ্চি বয়স থেকে তার চেয়ে বয়সে অনেক বড় মেয়েটিকে গালি দেয়, তুই-তুকারী করে। এখানেই 'অমানুষ' হওয়ার প্রাথমিক শিক্ষাটা হাতে কলমে পায় সে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে এগুলো ডালপালা মেলে বিশাল আকার ধারণ করে।

এখন কিন্ডার গার্ডেন স্কুল বাংলাদেশের অন্যতম সফল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। যেখান থাকার কথা ছিল সরকারের শতভাগ নিয়ন্ত্রণ সেখানে হচ্ছে ব্যবসা। পৃথিবীর কোন সভ্য দেশে শিশুদের শিক্ষার অধিকার নিয়ে এমন নির্লজ্জ ব্যবসা নেই। সেবা খাতগুলো যখন সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তখন তা লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হয়। শিক্ষার পাশাপাশি চিকিৎসা ও গণ পরিবহন তার নিষ্টুর উদাহরণ।

প্রাইমারি লেভেলের একটি বাচ্চাকে চৌদ্দ পনেরটি বই নিয়ে প্রতিদিন স্কুলে যেতে হয়। তার সাথে খাতা-কলমসহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্র তো আছেই। এজন্য অনেক সময় বইয়ের ব্যাগ বহন করার জন্য বাবা-মা অথবা অন্য কেউ বাচ্চাটির সাথে যেতে হয়। অথচ শিশু শিক্ষা হওয়ার কথা ছিল আনন্দের। সে হেসে খেলে পড়াশুনা করবে, যাতে তার মনে শিক্ষাভীতি না আসে। ইউরোপের উন্নত দেশগুলোতে দেখেছি শিশুরা বই খাতা নিয়ে স্কুলে যায় না, তার প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো স্কুলে থাকে। তার পড়াশুনার পাঠ স্কুলেই শুরু, স্কুলেই শেষ। নেই হোমওয়ার্কের বাড়তি ঝামেলা। এজন্য মনের আনন্দে শিশুরা স্কুলে যায়।

আর আমাদের দেশে সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র। যত দামী স্কুল তত বেশী বই-খাতা ও হোমওয়ার্ক। এটা কেমন শিক্ষা ব্যাবস্থা? একটি বাচ্চার ওজনের চেয়ে বইয়ের ব্যাগের ওজন বেশি হবে কেন? তাহলে শিক্ষা কি শিশুদের জন্য বোঝা? যে বয়সে আনন্দের সাথে বাচ্চারা শিক্ষা অর্জন কারার কথা সে বয়সে আমরা শিশুদের মনে শিক্ষা ভীতি তৈরি করছি। শিক্ষা কী? তা বুঝে উঠার আগেই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার পর পরীক্ষা নিচ্ছি, তোতা পাখির মত মুখস্থ করাচ্ছি, ভয় দেখিয়ে দিচ্ছি। আর উপরি উপদ্রব হিসেবে আছে বিভিন্ন সিস্টেমের গৃহশিক্ষকের ব্যাবস্থা।

২০| ২৩ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৫

কথার ফুলঝুরি! বলেছেন: আমাদের পড়াশোনার ধরন টা এমন হওয়া উচিত যেন শিশুরা পড়াশোনা করতে আনন্দ পায়, আগ্রহ পায়। টগরের সম্পর্কে পড়ে মনে হল সে বড় হয়ে বুদ্ধিমান হবে।

২৩ শে জুন, ২০১৮ রাত ১০:১৮

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: "আমাদের পড়াশোনার ধরন টা এমন হওয়া উচিত যেন শিশুরা পড়াশোনা করতে আনন্দ পায়, আগ্রহ পায়। টগরের সম্পর্কে পড়ে মনে হল সে বড় হয়ে বুদ্ধিমান হবে।"....

একদম ঠিক কথা। আশা করি দোলনায় চড়া কবি-রা এমন বুদ্ধিমান বাচ্চাদের বাবা/মা হবেন। B-) B-)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.