নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জন্মসূত্রে মানব গোত্রভূক্ত; এজন্য প্রতিনিয়ত \'মানুষ\' হওয়ার প্রচেষ্টা। \'কাকতাড়ুয়ার ভাস্কর্য\', \'বায়স্কোপ\', \'পুতুলনাচ\' এবং অনুবাদ গল্পের \'নেকলেস\' বইয়ের কারিগর।

কাওসার চৌধুরী

প্রবন্ধ ও ফিচার লেখতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। পাশাপাশি গল্প, অনুবাদ, কবিতা ও রম্য লেখি। আমি আশাবাদী মানুষ।

কাওসার চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ওয়াজ/তাফসির মাহফিল - একটি পর্যালোচনা (ফিচার)

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৪৯


যখন খুব ছোট ছিলাম বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হলে অপেক্ষা করতাম কখন আমাদের মাদ্রাসায় ওয়াজ মাহফিল হবে। সারা বছর এক-দুই টাকা করে মাটির ব্যাংকে জমিয়ে রাখতাম ওয়াজের বাজারে কেনাকাটা করার জন্য। মনে আছে সকালের দিকে একবার ওয়াজের বাজারে যেতাম, বিকাল হলে সারা রাত সেখানে কাঁটানোর জন্য চুপি চুপি প্রস্তুতি নিতাম। যদিও ঠাণ্ডার মধ্যে সারা রাত না থাকার জন্য বাবা-মায়ের বারণ ছিল। কিন্তু কে শুনে এসব বারণ? রাতে বাড়িতে চলে আসব মাকে এই নিশ্চয়তা দিয়ে বাড়ি থেকে বের হতাম, কিন্তু ঘরে ফিরতাম ঠিকই পরদিন ভোরবেলা! সারা রাত বন্ধুদের নিয়ে শুধু ঘোরাঘোরি আর খাওয়া-দাওয়া। পাশে নানা বাড়ি হওয়ায় সেখানেও যেতাম। তখন ওয়াজ মানেই বুঝতাম ওয়াজের বাজার ও কেনাকাটা করা, মাহফিল নয়। তবে মাঝে মাঝে মাহফিলে বিভিন্ন বক্তার ওয়াজও শুনতাম। বাড়ির কাছাকাছি হওয়ায় ফুলতলি, হাড়িকান্দি ও লামারগ্রামের মাহফিল গুলোতে বেশি যাওয়া হত।

আমার বাবা ছিলেন স্বল্পশিক্ষিত ধর্মপ্রাণ মানুষ। একাডেমিক শিক্ষা কম থাকায় নিজে থেকে তাঁর কোরআন ও হাদিসের চর্চার তেমন সুযোগ ছিল না। এলাকার বেশিরভাগ মাহফিলে বাবা শত ব্যস্থতার মাঝেও আগ্রহ নিয়ে শরিক হতেন ইসলামি রীতি-নীতি ও কোরআন-হাদিসের নিরিখে জীবন-যাপনের বিধান জানতে ও এর উপর আমল করতে। এসব মাহফিলের বক্তব্যগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনতেন এবং খুব বিশ্বাস করতেন। বাড়িতে এসে নিজে আমল করার চেষ্টা করতেন এবং আমাদেরকেও আমল করতে তাগিদ দিতেন। এসব ইসলামী জলসা ছিল বাবার ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করা এবং তার উপর আমল করার অন্যতম প্রধান মাধ্যম। কোন বক্তব্য শুদ্ধ, ভূল না ত্রুটিপূর্ণ তা যাচাই করা তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিল না।

বয়স বাড়ার সাথে সাথে ওয়াজ মাহফিলের গুরুত্ব বুঝতে পারি। এজন্য মাঝে মাঝে বিভিন্ন নামকরা ব্যক্তিবর্গের বক্তব্য শুনতে আগ্রহ নিয়ে মাহফিলে যেতাম। তবে এখন আর তেমন যাওয়া হয় না, বলতে পারেন যাই না বা যেতে ইচ্ছা করে না। আগে বড় বড় মাদ্রাসা ও মসজিদে ওয়াজ বা তাফসির মাহফিল হত, কিন্তু এখন তো পাড়ায় পাড়ায় শুধু মাহফিল আর মাহফিল। ফলে মানুষের কাছে ইসলামী মাহফিলগুলোর গুরুত্ব কমে গেছে। এসব মাহফিলের নামেও এসেছে অনেক পরিবর্তন। অনেকেই এখন এসব মাহফিলকে ইসালে সওয়াব মাহফিল, তাফসিরুল কোরআন মাহফিল, সুন্নি সম্মেলন ইত্যাদি বলতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এছাড়া আছে বিশ্ব ইজতেমা। আগে শুধু টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে ইজতেমার আয়োজন হলেও, ইদানিং তা জেলায় জেলায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইসলামের কতটুকু উপকার হয়, কতটুকু ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করা যায় তা ইস্তেমায় অংশগ্রহণ করা মুসল্লিরা ভাল বলতে পারবেন।

এবার আসি মূল প্রসঙ্গে। আমি গত কয়েক বছর থেকে গভীর মনযোগে এসব মাহফিল পর্যবেক্ষণ করে অনেক হতাশ হয়েছি। এখন আর কোরআন ও হাদিসের আলোকে জীবন যাপনের তাগিদ দেওয়া বক্তাদের প্রধান আলোচ্য বিষয় নয়। আলোচ্য বিষয় হল অন্য আলীমদের গীবত করা, যাদের সাথে বক্তার আক্বীদার মিল নেই তাদের তীব্র ভাষায় আক্রমন করা। যিনি পীর বিশ্বাস করেন তার পীর সাহেবের গুণ কীর্তন করা। কে ওহাবী, কে সুন্নি এসব বিষয় নিয়ে বিতর্ক করা। মীলাদুন্নবী ও সীরাতুন্নবী নিয়ে ডিবেট করা। নবীজী মৃত না জীবীত তা নিয়ে ঝগড়া করা। মাযহাবী ও লা'মাযহাবী নিয়ে একে অন্যকে তিরষ্কার করা। আহলে হাদিসদের গালিগালাজ করা। জাকির নায়েক কোন মাদ্রাসায় না পড়ে এবং টাই পরে কেন ইসলাম নিয়ে বক্তব্য দেন এবং বিভিন্ন ইসলামী সেমিনার করেন এজন্য তাকে ওহাবী বলা, তিরস্কার করা। অন্য ধর্মের মানুষকে গালি দেওয়া, ছোট করা। সবচেয়ে বেশি বক্তার বাজার দর বাড়াতে নিজের ঢোল নিজে পেটানো ইত্যাদি।


এখন অনেক হুজুর ঘন্টায় পঞ্চাশ-ষাট হাজার টাকা কন্টাক্ট করে মাহফিলে যান। এদের টাকার রিসিটও আছে। কেউ কেউ আবার হেলিকপ্টার হুজুর! উনারা এত ব্যস্ত যে, হেলিকপ্টার/বিমানে মাহফিলে গিয়েও কুলাতে পারেন না। মাহফিলে পশ্চিমাদের ইহুদি, নাসারা বলে গালি দিলেও এদের অনেকের বাড়িতে ইউরোপ-আমেরিকান এনজিও আছে। এদের বেশিরভাগের নামের আগে/পরে এত টাইটেল লাগানো থাকে যে, কোনটা তার নিজের নাম বুঝার উপায় থাকে না। অনেকটা বড় বড় ডাক্তারদের নামের সাথে লাগানো বিভিন্ন ডিগ্রীর মত। যে ডাক্তারের নামের সাথে যত বেশি ডিগ্রী সে ডাক্তারকে আমরা তত অভিজ্ঞ মনে করি। বেশিরভাগ ইসলামী বক্তা নিজেদের বাজার দর বাড়াতে এসব অনর্থক টাইটেল ব্যবহার করেন। পৃথিবীর কোন বিজ্ঞানীর নামের সাথে টাইটেল থাকে না। এমনকি অনেকের নামের সাথে বিজ্ঞানী জুড়ে দিলে তাঁদের অস্বস্তি লাগে। তারা প্রচারে নয়, কাজে বিশ্বাসী। আর উনারা নামের সাথে এতো টাইটেল লাগান তারপরও বিখ্যাত হতে পারেন না, মানব কল্যাণের জন্য কিছু আবিষ্কার করতে পারেন না। খালি কলসি যতক্ষণ বাজাবে ততক্ষণ কলসির আওয়ায়জ পাওয়া যায়, বাজানো বন্ধ হলে কলসি ও তার আওয়াজকারীকে সবাই ভুলে যায়। নাম মানুষকে বড় করে না, মানুষ নামকে বড় করে।

ইউটিউবে দেখলাম একজন মুফতি গানের সুরে জিকির করছেন আর নাচতেছেন, অন্যরাও তার নাচানাচিতে উদ্ভুদ্ধ হয়ে তাল মেলাচ্ছেন। কণ্ঠটা দারুণ সুন্দর, তরুণীদের নয়ণের মণি হওয়ার জন্য যথেষ্ট। এটা নাকি আধুনিক জিকির! আরেক পক্ষ আছেন জিকিরের জোশে ভরা মাহফিলে অনুসারীরা পীরকে জড়িয়ে ধরেন, মাহফিলে ডিগবাজি দেন, খুঁটি বেঁয়ে উপরে উঠে নাচানাচি করেন। এক কথায় সার্কাস পার্টি। এরা নাকি হক্কানী পীর। একটি ভিডিওতে দেখলাম এক পীর বক্ত তার পীর সাহেবকে বড় করে বুঝাতে বলেছেন, পীর সাহেব মারা যাওয়ার পর মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) তার জানাজা পড়তে সুদূর মদীনা থেকে এসেছেন! এগুলো কী সত্যি? ইসলামিক গবেষকরা নিশ্চয় এর উত্তর দিতে পারবেন। এগুলো প্রচারে সমস্যা হলো, যে কেউ দাবি করতে পারেন উনার নিকটাত্মীয় কারো জানাযায় রাসুল (সাঃ) হাজির হয়েছিলেন। তখন পরিস্থিতি কী হতে পারে ভাবেন? এতে হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কে নিয়ে চরম বিতর্ক হবে। নিশ্চয় এমনটা হোক তা আমরা চাই না।

ঠিক তেমনি কোন পীর সাহেব হযরত শাহজালাল (রহঃ) এর সাথে মুসাফা করেছেন বলে প্রচার করাও ঠিক না। কাউকে চাঁদে দেখা গেছে তাও প্রচার করা অন্যায়। এতে মানুষের ধর্ম বিশ্বাসে আঘাত করে। অনেকের মতে, হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কবরেও জীবিত। উম্মতরা মিলাদ পড়লে রাসুল (সাঃ) সামনে এসে দাঁড়ান, সালামের জবাব দেন। উনাদের যুক্তি হল রাসুল (সাঃ) হাজির নাজির। তবে এ মতবাদের বিপক্ষে জোরালো যুক্তি আছে।

প্রশ্ন হল, শাহজালাল (রহঃ) তো নবী বা রাসুল এমন কেউ ছিলেন না; তাহলে মৃত্যুর এত বছর পরও তিনি কিভাবে পীর সাহেবের সাথে মোলাকাত করলেন? তাহলে কি তিনিও কবরে জীবিত? ইচ্ছা করলেই বের হয়ে আসতে পারেন? জিয়ারত করতে গেলে ভক্তদের দেখতে পান!

নাকি পীর সাহেবও কবরে জীবিত আছেন তা পরোক্ষভাবে মানুষকে জানিয়ে দেওয়া? পীর সাহেবের কবরের পাশে গেলে তিনি ভক্তদের দেখতে পান, তাদের কথাগুলো শুনেন এটা প্রচার করা। কারণ হাদিসে স্পষ্ট আছে, মৃত ব্যক্তি কাউকে কোন সহযোগিতা করতে পারে না, তাই কবরের পাশে গিয়ে তাকে উসিলা করে কিছু চাওয়া যাবে না। আর কারো উসিলা করে আল্লার কাছে কিছু চাইলে এই দোয়া আল্লাহর দরবারে কবুল হয়না। তাই সুকৌশলে কী পীর সাহেবকে মৃত্যুর পরও বাঁচিয়ে রাখা হয় কোন বিশেষ উদ্দেশ্যে? এদের অনেকেই এটাও বলেন বড় পীর আব্দুল কাদির জিলানী (রহঃ) মায়ের পেটে থাকা অবস্থায় কোরআন শরীফের আঠারো পারা মুখস্ত করেছিলেন! যদিও হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)কেও মহান আল্লাহ্ তায়ালা এমন ক্ষমতা দেননি। নব্যুয়ত পেতে তাঁকে চল্লিশ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছিল।

এখন আসি তাফসির/ওয়াজ মাহফিল আয়োজন প্রসঙ্গে। অনেক সময় দেখা যায় এলাকায় যারা গান-বাজনা, উরুস ও মেলার আয়োজন করে তারাই আবার মহা ধুমধামে ওয়াজ মাহফিলেরও আয়োজন করে (তবে ব্যতিক্রমও আছে)। এলাকায় চলে বেশী টাকা দিয়ে নামকরা বক্তা হায়ার করার প্রতিযোগিতা। যাদের বিভিন্ন দেশের সাথে কানেকশন আছে তারা ইসালে সওয়াবের নামে দেশ-বিদেশ থেকে প্রচুর টাকা চাঁদা তুলেন, অনেক সময় এসব টাকার একটা অংশ মাহফিলে খরছ করে বাকি টাকা নিজেদের ভোগ বিলাসের জন্য রেখে দেন। আরেক পক্ষ আছেন যারা শীতের মওসুমে ওয়াজের নামে লিফলেটও রশিদ বই তৈরী করে বাসা বাড়ি থেকে চাঁদা কালেকশন করেন, এদের অনেকেই ভূয়া/ধান্দাবাজ বলে অভিযোগ আছে।


এবার আসি মিলাদুন্নবী ও সীরাতুন্নবী প্রসঙ্গে। মিলাদ অর্থ হল জন্মদিন, আর মীলাদুন্নবী হল হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর জন্মদিন। আবার সীরাতুন্নবী অর্থ হল হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর জীবন ব্যবস্থা। এখন প্রশ্ন হলো কোনটি পালন করা যুক্তিযুক্ত? আল্লাহর নবীর জন্মদিন পালন করা না তাঁর জীবনীর উপর আলোচনা করা। একটু গভীর মনযোগে বিষয়টি নিয়ে ভাবলে উত্তর পেয়ে যাবেন। আমি মনে করি হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর জীবনী অর্থাৎ তাঁর হাদিসের উপর আলোকপাত করা অধিক যুক্তিসঙ্গত, জন্মদিন নয়। এছাড়া ইসলামে জন্মদিন পালন করতে বিধি-নিষেধ আছে।

মাযহাব অর্থ মত, পথ বা পাঠশালা। হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর ইন্তেকালের প্রায় ১৫০ বছর পর মাযহাব গঠন করা হয়েছিল। কারণ তখন পর্যন্ত হাদিস সংকলন হয়নি। মূলত ইসলামের অপব্যাখ্যা ও সমাজের বিচ্যুতি ঠেকাতে তখন মাযহাব গঠন করা হয়েছিল। খুলাফায়ে রাশেদীন, সাহাবী, তাবেঈ ও তবে তাবেঈদের আমলে মাযহাব ছিল না। হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) বিদায় হজ্জ্বের ভাষণে বলে গেছেন, "আমি তোমাদের জীবন ধারণের জন্য দু"টি জিনিস রেখে যাচ্ছি, একটি হল পবিত্র কোরআন আর অপরটি হল আমার জীবনী অর্থাৎ হাদীস"। এজন্য হাদিসের সংকলনের পর মাযহাবের কার্যকারিতা মূলত শেষ হয়ে যায়। ফলে মাযহাব মানা, না মানার সাথে কোরআন ও হাদিসের কোন সম্পর্ক নেই। ইসলামের মূল নীতি নির্ভর করে কোরআন ও হাদীসের দিক নির্দেশনার উপর। আর মাযহাব যদি আবশ্যক হয় তাহলে বাংলাদেশী হানাফিদের মধ্যে এত মতবিরোধ কেন? সবার তো একমত হওয়ার কথা, তাই না?

বিদ'আত নিয়েও কম জলগুলা হয় না। সাধারণত সমাজে এমন কিছু প্রথা আছে যা কোরআন ও হাদীসে নেই কিন্ত আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে। যেমন-তাবিজ করা, মিলাদ পড়া, জিকির করা, কুলখানি করা, পীর ধরা, মাজারে টাকা দেওয়া, উরস করা ইত্যাদি। একটি পক্ষের যুক্তি হলো এসব বিধান কোরআন-হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়, তাই এগুলো পালন করা বিদ'আত। অপর পক্ষের বক্তব্য হলো, বর্তমান সময়ে আধুনিক অনেক ব্যবহার্য জিনিস আছে যা কোরআন ও হাদিস কোথাও নেই। যেমন- মসজিদে মাইক ব্যবহার করা, এসি ও ফ্যান লাগানো, গাড়ি ও বিমানে চড়া, কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন ব্যবহার করা ইত্যাদি। তাহলে সবকিছু কোরআন-হাদিসে থাকতে হবে কেন?

আসুন বিষয়টি বুঝতে একটু গভীরে যাই। এসব আধুনিক সুবিধাদি ব্যবহার করলে ইসলামের কি কোন লাভ বা ক্ষতি হয়? উত্তর হলো, না। এগুলো আধুনিক ও আরামদায়ক জীবন যাপনের উপসর্গ মাত্র। যতদিন পৃথিবী টিকে থাকবে ততদিন পর্যন্ত এসব আধুনিক ব্যবহার্য জিনিস আবিষ্কার হতে থাকবে। আর এগুলো ব্যবহার করা, না করায় ইসলামের মূল নীতি বাঁধাগ্রস্থ হয়না। কিন্তু ইসলামের বিধানের বাইরে বাড়তি কোন ইবাদত যোগ করলে ধর্মের মূলনীতি নিয়ে বিতর্ক হয়। একটা সময় ছিল যখন মানুষের ব্যস্ততা তেমন ছিল না, তখন পর্যাপ্ত সময় ছিল। এখন মানুষের ব্যস্ততা এত বেড়ে গেছে যে প্রয়োজনীয় এবাদতগুলো সময়মত সম্পাদন করা মানুষের জন্য অনেক কঠিন হয়ে গেছে। এছাড়া সৎ ভাবে জীবিকা নির্বাহ করা, নিজের কাজ নিজে করাও তো এক প্রকার এবাদত। তাই বাড়তি এবাদত যোগ করার কোন যৌক্তিকতা আছে বলে আমি মনে করি না।

আমরা জানি ইসলাম হচ্ছে পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। ধর্মীয় এসব মাহফিলে বেশিরভাগ সময় দুনিয়ার ইবাদত ও আখেরাতের বিধান নিয়ে আলোচনা করা হয়। কিন্তু মানুষের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোকপাত করা হয় না। একজন মানুষ পরিপূর্ণ ভাবে আল্লাহর ইবাদত করতে হলে প্রয়োজন আর্থিক সচ্চলতা, সুস্থ শরীর ও প্রফুল্ল মন। অপরদিকে পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। তাই এসব জন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মাহফিলগুলোতে আলোচনা করাও প্রয়োজন। এছাড়া জীবন ধারনের জন্য প্রয়োজন টাকা-পয়সা উপার্জন করা; ডাক্তারী, প্রকৌশলী, রাজনীতি, দর্শন ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করা; ছেলে-মেয়েদের উপযুক্ত শিক্ষা দিয়ে সুনাগরিক হিসাবে গড়ে তোলা। কিন্তু এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কখনো আলোচনায় উঠে আসে না। যদিও ধর্মীয় বিষয়ের মত এসব বিষয়ে জানা ও দিক নির্দেশনা পাওয়া কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। যার ফলে এসব মাহফিল ফলপ্রসু হয় না।


ইসলামের বিভিন্ন আলীমদের মধ্যে অনেক মতবাদের ফলে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ইসলাম। শুধু মতভেদ থাকলে এতো আপত্তি ছিল না, রীতিমত চলে অশ্রাব্য ভাষায় গালি-গালাজ আর তিরস্কার! এরা সাধারন মানুষদের মধ্যে ইসলামকে বিতর্কিত করছেন। আপনি কী জানেন? এসব অযথা বিতর্ক মুসলিমদের মধ্যে পারস্পরিক ভ্রতৃত্বের পরিবর্তে ঘৃণা ও অবিশ্বাস ছড়িয়ে দিচ্ছন? পবিত্র হাদিসকে মানুষের মাঝে বিতর্কিত করছেন নিজের অজান্তেই। আর পবিত্র হাদিস নিয়ে বিতর্ক হওয়া মানে হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর জীবনকে নিয়ে বিতর্ক করা। প্লীজ, এসব স্পর্শকাতর বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার আগে অন্তত একবার ভাবুন। ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে যত মতবিরোধ দেখা যায় পৃথিবীর অন্য কোন ধর্মে তা দেখা যায় না। এটা বন্ধ হওয়া উচিৎ।

একটা বিষয় লক্ষ্য করলে দেখবেন, যারা ওয়াজ মাহফিল আয়োজন করেন এদের বেশীরভাগের ইসলামী জ্ঞান নেই বা অতি সীমিত। এজন্য এরা প্রকৃত জ্ঞানী ও ভদ্র আলীমদের পরিবর্তে গলাবাজ, অল্প শিক্ষিত ও সুন্দর বেশভূষ ওয়ালা বক্তাদের দাওয়াত করেন। এতে এলাকায় উনার সুনাম বাড়ে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকলে তা হাসিল হয়। ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ এসব বক্তার ওয়াজ শুনতে আসে। এই সুযোগে তিনিও বানিয়ে বানিয়ে রঙ-চঙা ওয়াজ শুরু করেন মানুষকে মাতিয়ে রাখার জন্য। এসব মাহফিলগুলোতে পবিত্র কোরআন ও হাদীস নিয়ে তেমন আলোচনা হয় না। যারা এসব মাফিলে বাহবা দেয় এরা মেলায় গিয়েও হাততালি দেয়ে, গানের মাহফিলে গিয়েও হাততালি দেয়, নাচানাচি করে। প্রকৃত আলীমরা নয়, এখন ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করছে এসব ইসলামী বক্তা নামধারী ক্যানভেচার।

একজন ক্যানভেচারের ইসলামী বক্তা হওয়া আর ইসলামিক স্কলারের মাহফিলের বক্তা হওয়ার মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। কারণ ক্যানবেচার অতি নিম্নমানের মলমটি রঙিন মোড়কে ফুটপাতে বিক্রি করে চড়া দামে। এজন্য মলমটি ব্যবহার করার পর শরীরের পঁচা-ঘা কমার পরিবর্তে বাড়ে, পাশাপাশি নতুন নতুন রোগ-জীবাণু দেহের মধ্যে সংক্রমিত হয়। এটা অনেকটা ক্যানসার আক্রান্ত রোগীকে বিশেষজ্ঞ সার্জনের পরিবর্তে হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করানোর মতো।

আমাদের মতো ডালাও ভাবে ওয়াজ মাহফিল পৃথিবীর কোথাও হয় না। অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোতে সবচেয়ে জ্ঞানী-গুণী, ভদ্র ও সম্মানিত ইসলামী স্কলাররা ধর্মীয় মাহফিলগুলোতে আমন্ত্রিত হন। উনারা ধীরে সুস্থে, পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করেন। মানুষকে সুন্দর করে বুঝিয়ে বলেন। টাকা-পয়সা, বাড়ি-গাড়ি, প্রভাব-প্রতিপত্তি নিয়ে উনাদের মধ্যে কোন লোভ-লালসা নেই। অতি সাধারন জীবন-যাপন করতে তারা অভ্যস্ত। এরা নিজেরাও বিতর্কিত হতে চান না, আর নিজের আচরণ দিয়ে ইসলামকেও বিতর্কিত করেন না। আর আমাদের দেশে প্রকৃত আলীমদের কেউ ডাকে না, মূল্যায়ন করে না। গলাবাজ নয় বলে মাহফিল গুলোতে তেমন ডাক পড়ে না তাদের। কারণ তারা ধর্মের নামে উগ্রতা প্রচার করেন না, অন্য আলীমদের নিয়ে গীবত করেন না, সমাজে হিংসা-বিদ্বেষ ছড়ান না, সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেন না।


শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জ্ঞান অর্জন করা। তাহলে জ্ঞান অর্জন মানে কী? পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করা! বড় বড় বই না বুঝে মুখস্ত করা!! আসুন বিষয়টি নিয়ে একটু আলোকপাত করি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো জ্ঞান অর্জনের একটা ধাপ অথবা দিকনির্দেশক দরজা। বাকি পথটুকু নিজে নিজে অতিক্রম করতে হয়। পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি বিশ্ব সাহিত্য, দর্শন, সমাজ-সংস্কৃতি, ইতিহাস, বিজ্ঞান, মানব জাতির বিবর্তন, বিশ্বের সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার কৌশল, ভীন্ন মত ও বিশ্বাসের মানুষের সাথে চলন ও শান্তিপূর্ণ সামাজিক সহাবস্তানের গুরুত্ব ইত্যাদি জানতে হয়। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে পৃথিবীর সবচেয়ে জ্ঞানী মানুষদের দর্শন, আবিষ্কার ও সাহিত্য পড়তে হয়, গবেষণা করতে হয়। শুধু একমুখী জ্ঞান অর্জন করলে প্রকৃত জ্ঞানী হওয়া যায় না। আর প্রকৃত জ্ঞানী না হলে ধীরস্থির, সহনশীল, ভদ্র, সুবক্তা আর সু-মানুষ হওয়া সম্ভব নয়। আমাদের দেশের অনেক শিক্ষিত মানুষ আছেন যারা বেশিরভাগ জ্ঞানী মানুষের ভদ্র ও জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য/আলোচনা শুনে না। ভাল মানের সাহিত্যিকদের বই পড়ে না। কারণ তাদের দৃষ্টিতে এদের কেউ নাস্তিক, কেউ মুশরিক, কেউ সুদখোর আর কেউ কমিনিস্ট। ভাল কথা না শুনলে, ভাল লেখা না পড়লে ভাল স্পিকার হওয়া যায় না। প্রকৃত জ্ঞানী না হলে সারা জীবন নীতিকথা মুখস্ত করে কোন কাজে আসবে না। কারণ নীতিগুলো বুঝে নিজেদের মধ্যে ধারণ করতে হয়। আর তা না হলে বিবেক সৃষ্টি হয় না; পরিপক্ব বিবেকের জন্য দরকার প্রকৃত জ্ঞান।

এখন ইসলাম যতটুকু না আদর্শ ধারণ ও প্রচারের বিষয় তার চেয়ে বেশি টাকা-পয়সা ও প্রভাব-প্রতিপত্তি বাড়ানোর জায়গা। কেউ কেউ তা বংশ পরম্পরায় করে আসছেন। ইসলামকে যত দ্রুত সম্ভব এসব লোভী ও ধান্দাবাজদের খপ্পর থেকে বের করে আনতে হবে। আর এখনই এ পদক্ষেপ না নিলে আগামী দিনগুলোতে ইসলাম ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখিন হবে। কারণ, এখন পৃথিবীকে চালাচ্ছে হাজার হাজার ইন্টেলেকচুয়াল মানুষ। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। এসব মেধাবী মানুষজনের কাছে ইসলামের সত্য বাণী পৌছে দেওয়ার জন্য প্রয়োজন শত শত ভদ্র কোরআন ও হাদিস বিশারদ। যারা শান্তিপূর্ণভাবে ইসলামের দাওয়াত প্রচার করবেন। যোগ্য মানুষের হাতে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও বিশ্বের নেতৃত্ব না থাকলে এসব প্রতিষ্ঠান ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়; সমাজ হিংসা-বিদ্বেষ, বিভক্তি ও অন্যায়-অবিচারে ভরে যায়। ঠিক তেমনি কোন ধর্মের নেতৃত্ব মূর্খ, সাম্প্রদায়িক আর অভদ্র মানুষের হাতে থাকলে ধর্মটিও ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সমাজ বিষাক্ত হয়।


হাজার হাজার মাদ্রাসা শিক্ষিত ছাত্র পড়াশুনা শেষ করে যখন কর্মজীবনে প্রবেশ করেন, তখন চাকরির ক্ষেত্রে অনেক বৈষম্যের স্বীকার হয়। অনেক নিয়োগদাতা যোগ্যতা থাকার পরও মাদ্রাসা শিক্ষিতদের চাকরি দেন না। এছাড়া ধর্মীয় কিছু বিধিনিষেধের ফলে এরা সব কাজে যোগদান করতে পারে না। বেশিরভাগের কায়িক পরিশ্রম ও ব্যবসা করতে অনীহা থাকে। ফলে কর্মজীবনে বেশ হিমশিম খেতে হয়। যার ফলশ্রতিতে অনেকে ধর্মকে ভিত্তি করে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করেন। এজন্য সমাজে অনেক কম জানা লোককেও ইসলামী বক্তা হতে দেখা যায়। এসব ওয়াজ মাহফিলের বেশিরভাগই যতটুকু না ধর্ম প্রচার তার চেয়ে বেশী বক্তার রুটিরুজির ফিকির। ধর্মীয় স্পীচগুলো লাভজনক হওয়ায় অনেক অযোগ্য লোকও ইসলামের লেবাসদারী হয়ে এসব মাহফিলে দাপিয়ে বেড়ায়। এজন্য ইসলমাকে ভিত্তি করে কোন পেশাদার শ্রেণী গড়ে উঠলে ধর্মের অনেক ক্ষতি হয়।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে যেমন হাজার হাজার নীতিহীন মুখোশধারী দুর্ণীতিবাজ মানুষ আছে; এরা সুন্দর পোষাক পরে গোছানো বক্তব্য দেয়, সুশীল সাজে, রাষ্ট্রীয় চেতনার কথা বলে, উন্নয়নের কথা বলে মানুষকে ঠকায়। রাষ্ট্রের ক্ষতি করে নিজেদের সম্পদের পাহাড় বানায়, বিদেশে টাকা পাচার করে। ঠিক তেমনি ধর্মীয় লেবাস সর্বস্ব মুখোশধারীরা ধর্মকে বিক্রি করে, মানুষকে বিভ্রান্ত করে, পারষ্পরিক দ্বন্দ্ব সংঘাত লাগিয়ে রাখে। নিজের বাজার দর বাড়াতে অন্যকে অপমান-অপদস্ত করে আখের গোছায়। বাংলাদেশে রাজনীতির মতো ধর্ম ব্যবসাটা বেশ লাভ জনক। এখানে কোন পুঁজি খাটাতে হয় না। শুধু লাগে কুট কৌশল, গলার জোর আর মুখোশের আড়ালে মানুষকে আকৃষ্ট করার ক্ষমতা। এখানে ধর্মের বড় ক্ষতি হলেও বক্তার তাতে কিছু যায় আসে না। টাকা কামানোই আসল।

ইউটিউবে একজন তরুণ ইমামকে বলতে শুনলাম, একজন মুশরিককে মুশরিক বলতে হবে; একজন কাফেরকে অবশ্যই কাফের বলতে হবে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একজন কাফের; তাকেও কাফের বলতে হবে। বক্তব্যটি শুনে নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। একজন ইমাম মসজিদে বসে এমন ওয়াজ করতে পারেন! অযথা কেন এ প্রসঙ্গ টেনে আনলেন আমার বোধগম্য হলো না। বলার সময় উনার চোখে মুখে প্রচন্ড ঘৃণা ছিল। এভাবেই আমরা প্রয়োজনে অপ্রয়জনে সাম্প্রদায়িক বিষ সমাজে ঢেলে দিচ্ছি। একজন জ্ঞানী মানুষের একমাত্র পরিচয় তার জ্ঞানে, ধর্মে নয়। একজন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে মূল্যায়ন করতে যে যোগ্যতা লাগে তা উনার আগে অর্জন করা উচিৎ ছিল। এই ইমামকে শুধু শুধু দোষ দিয়ে কী লাভ? যুগের পর যুগ থেকে আমরা বঙ্গবাসীরা জ্ঞানী-গুণীদের তিরস্কার করি, অমর্যাদা করি। আর মূর্খদের কথায় বাহবা দেই, মূল্যায়ন করি।

আবার আসি আমার বাবার প্রসঙ্গে। শহরের শিক্ষিত মানুষের মধ্যে বেশিরভাগ মুসলিম ধর্মীয় বিষয়ে পড়াশুণা করলেও গ্রামে এখনো অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলমান আছেন যারা শুনে শুনে ধর্মের উপর আমল করেন। এসব মানুষ যখন বিভিন্ন মাহফিলে একই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য শুনেন, তখন তারা বিভ্রান্ত হন। কোনটি সঠিক বুঝতে পারেন না। এছাড়া বেশিরভাগ মাহফিলে একে অন্যের প্রতি ঘৃণা ছড়ানো হয়, অন্য মতের আলীমদের গালিগালাজ করা হয়। এতে হিতে বিপরীত হয়। এদের একটা পক্ষ নিজেদের প্রভাব-প্রতিপত্তি ঠিক রাখতে, তাদের মতাদর্শের মানুষজন বাড়াতে কৌশলে অন্য পক্ষের সাথে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। কঠিন গালি দেন আর ধর্মের নামে গীবত করেন, সমাজকে বিভক্ত করে রাখেন। উদ্দেশ্য প্রণোধিত হয়ে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঘৃণা আর অবিশ্বাসের বীজ বপন করেন। সাধারন ধর্মপ্রাণ মানুষ এদের চতুরতা বুঝতে পারে না।

সত্যি বলতে কি বেশিরভাগ মাহফিলে গীবত গাওয়া, অন্য মুসলিমদের গালি দেওয়া, উগ্রতার প্রদর্শনী, লাফালাফি, চিৎকার-চেঁচামেচি, সাম্প্রদায়িক উস্কানি, পীর সাহেবের মিথ্যা কেরামতির প্রচার, বক্তা ও আয়োজকদের টাকার খেলা আর কোরআন হাদিস বাদ দিয়ে বানিয়ে বানিয়ে ওয়াজ করা দেখে কষ্টে বুকটা ভেঙ্গে যায়। এসব ওয়াজ শুনে কেউ হেদায়েত হয় না। বরং পারস্পরিক সম্পর্ক নষ্ট হয়, সমাজে চরম ঘৃণা ছড়ায় আর সাধারন ধর্ম প্রাণ মানুষ বিভ্রান্ত হয়। এতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নতুন প্রজন্ম। একুশ শতকে এসে বেশিরভাগ বক্তা ইসলামকে একটা উগ্র, হিংসুক, সাম্প্রদায়িক ও লোভী ধর্ম হিসাবে বিশ্ববাসীর কাছে উপস্থাপন করছেন। এতে আমাদের মহানবী হযরত মোহাম্মাদ (সঃ) এর জীবন ও আদর্শ পৃথিবীর কাছে অত্যন্ত খারাপ ভাবে উপস্থাপিত হচ্ছে। এটা চরম দুর্ভাগ্যজনক।

ইদানিং তো দেখি অনেক বক্তা মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদিকে হুবহু নকল করছেন। কেউবা উকিলদের মত বড় বড় ইউনিফর্ম পরেন, লম্বা টুপি ও মাথায় আরবদের মত রুমাল ব্যবহার করেন। আরবীর পাশাপাশি বাংলা শব্দকেও রাবারের মত টেনে টেনে বিকৃতভাবে উচ্চারণ করেন। বেশিরভাগ বক্তা শুদ্ধ বাংলা পর্যন্ত বলতে পারেন না। এছাড়া মানুষকে তুই তুকারী করা, তুচ্ছ তাচ্ছিল্ল করা, বেয়াদবের মত কথা বলা তো আছেই। বক্তব্যের সময় এমন উগ্র ও আক্রমনাত্মক ভাষা ব্যবহার করেন শুনলে মনে হবে দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল ঝগড়া শুরু হয়েছে। যদিও ইসলাম শান্তির ধর্ম, কিন্তু বেশিরভাগ বক্তাদের কথা শুনলে মনে হবে তাদের অন্তরে শুধু ঘৃণা ও অশান্তির আগুণ জ্বলছে। মনে রাখবেন ইসলামের সবচেয়ে বড় ক্ষতি করছে এসব আদর্শহীন মূর্খ, গলাবাজ, অসহনশীল, উস্কানিদাতা, সাম্প্রদায়িক আর প্রচন্ড বদমেজাজি ক্যানভেসার। হ্যা, ইসলামের নৌকা এরাই ডুবাবে আর কাউকে লাগবে না।।



ফটো ক্রেডিট,
গুগল।

চাইলে পড়তে পারেন-
আমার সবচেয়ে পঠিত পোস্ট।
অনুবাদ গল্প-(দি নেকলেস)
দি গিফট অফ দ্যা ম্যাজাই
গল্প লেখার সহজ পাঠ
সবচেয়ে পঠিত প্রবন্ধ।
আধুনিক কবিতার পাঠ (সমালোচনা)
আলোচিত ফিচার 'দি লাঞ্চিয়ন'।
ব্রিটেনের প্রবাস জীবন- স্মৃতিকথা।
সবচেয়ে পঠিত গল্প।
সবচেয়ে লাইকপ্রাপ্ত গল্প।
ছবি ব্লগ (লন্ডনের ডায়েরি-১)।



মন্তব্য ৮০ টি রেটিং +১৯/-০

মন্তব্য (৮০) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১:৩৫

রাকু হাসান বলেছেন: ভাল একটি টপিক ভাইয়া । একটু নতুন করে জানালেন নিজেকে । আপনার লেখা পগে কিছু টা শৈশবের পালে দোল খেলাম । গ্রাম্য ওয়াজ মাহফিলগুলো কে ছোট ভ্যারাইটি জিনিস পত্রের মেলা বলা যেতে পারে প্রশ্ন গুলো তুলেছেন ,সেগুলো যৌক্তিক কিন্তু ভয় হয়,বেশি বুঝনেওয়ালা কিভাবে নেয় । মাহফিলে এসব খুব হচ্ছে। আগে এসব হত না ,হলেও খুব কম । বছরে মাহফিল টা কে আয়ের প্রধান উৎস্য ধরা হয় । আামার পরিচিত কিছু মাদ্রাসায় সেখানে ওয়াজের থেকে দান করার ব্যাপারে কথাই হয়। অবশ্যই দান করতে হবে ,সে বিষয়ে কথাও বলতে হবে কিন্তু কথা বলার লিমিট রাখা উচিত । মূল উদ্দেশ্য তো কিছু শুনতে আসা । এমন হয় দেখে .মানে আপনার পোস্টের বিষয়বস্তুর মত তাই ব্যক্তিগতভাবে যাওয়া অনেক কমিয়ে দিলাম । যা দরকার জানার সে সব জানতে আমাদের মত মানুষদের কোন সমস্যা হবে না ,প্রযুক্তির যোগে । সে ভাবেই চেষ্টা করি কিন্তু সেই যে মজা টা মাহফিলের সেটা কে মিস করি । সত্যিই ,একদম বাস্তব কথা বলেছেন েএই সব মাহফিলের জনপ্রিয়তা কমছে অনেক ,এভাবে চলতে থাকলে আরও কমবে ,বিষয়টা নিয়ে আমা দের দেশের আলেমদের ভাবা উচিত এখনই । আপনার লেখার অপেক্ষায় সব সময় ই থাকি । এভাবেই পথ চলা দীর্ঘ হোক আপনার । শুভকামনা ।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৩৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
প্রথম কমেন্টে প্রিয় @ রাকু হাসান ভাইকে পাওয়ায় খুব খুশি হলাম৷আসলে ওয়াজ/তাফসির মাহফিলের নামে যা হচ্ছে তা দেখে মনে বড়ই আঘাত পাই৷যত দিন যাচ্ছে ইসলামের নামে এসব মাহফিল লাগামহীন ভাবে চলছে৷এতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ইসলাম৷এখন তথ্য প্রযুক্তির যুগ, নতুন প্রজন্মকে নতুন ধ্যান ধারণায় সুন্দর ভাবে ইসলামের বাণী উপস্থাপন করার কোন বিকল্প নেই৷না হলে এরা বিভ্রান্তিতে পড়বে, তাদের মধ্যে ইসলাম সম্বন্ধে নেতিবাচক ধারণা জন্ম নেবে৷আর এজন্য প্রয়োজন ইসলামী জ্ঞান সমৃদ্ধ, সুশিক্ষিত, সৎ চরিত্রবান একাধিক ইসলামী স্কলার৷যারা সুন্দর করে গুছিয়ে ইসলামের বাণী মানুষের কাছে প্রচার করবে ৷

২| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:৪৭

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ ও সমসাময়িক পোস্ট। আমাদের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কম জানার কারণে এ ধরনের মাহফিল গুলো প্রসার পাচ্ছে। তবে এই হুজুরদের মতের মিল না থাকার কারণেই আজকে বাংলাদেশে ইসলামিক দলগুলোর দৃঢ় ঐক্য গড়ে উঠছে না। আশার কথা, শিক্ষিত প্রজন্ম যারা ধর্ম চর্চা চালু রাখতে চা্ইছে তারা ইন্টারনেট ব্যবহার করে সত্য মিথ্যা যাচাই করতে পারছে। ইনশাআল্লাহ অচিরেই এসব গালাগালি সর্বস্ব, গীবত সর্বস্ব, মিথ্যা গল্প বর্ণনাকারীদের দৌরাত্ম কমে আসবে। তার অনেক প্রভাব সমাজে দেখা যাচ্ছে (যেমন - আপনিই বলেছেন এখন মাহফিলে বেশী ভীড় হয় না)। মিলাদও অনেক কমে এসেছে। তাবলীগ জামাতের ইজতেমা নিয়েও আবেদন কমে আসছে...

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২০

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
ভাইজান শুভেচ্ছা রইলো; সময় নিয়ে লেখাটি পড়েছেন এজন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো৷আপনি খুব সুন্দর করে বলেছেন, "আমাদের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কম জানার কারণে এ ধরনের মাহফিল গুলো প্রসার পাচ্ছে। তবে এই হুজুরদের মতের মিল না থাকার কারণেই আজকে বাংলাদেশে ইসলামিক দলগুলোর দৃঢ় ঐক্য গড়ে উঠছে না।"... তবে আশার কথা, আমাদের নতুন প্রজন্ম এখন ইন্টারনেট থেকে ইসলাম সম্বন্ধে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তত্ব পাচ্ছে৷যা কয়েক বছর আগেও ছিল না৷এতে ধর্ম নিয়ে বিভ্রান্তি কমবে৷

শুভ রাত্রি ৷

৩| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:৪৭

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: সুন্দর আলোচনা পর্যালোচনা, অনেক বড় পোস্ট, পড়তে সময় গেলেও পড়ে ভালো লাগলো, অনেকগুলো সত্য বলে গেছেন, ভয় পাচ্ছি কেউ আবার নাস্তিক না বলে বসে, কারণ হুজুরদের ঘুমর ফাঁস করে দিয়েছেন। ভালো লাগলো আমার।

ওয়াজ মাহফিল শুনা এখন স্ট্যাটাস রক্ষা করা হয়ে দাঁড়িয়েছে, কার ওয়াজ শুনবে মানুষ, তবে ভালো হুজুরও আছেন তাদের তেমন মার্কেট নাই।

নিজে যা করতে পালন করতে পারেনা তা অন্যকে উপদেশ দিতে যে মানা সেটাও জানেনা ওরা।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
ধন্যবাদ @ নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন ভাই৷লেখাটি একটু বড় হয়েছে এজন্য দুঃখিত৷আসলে আমি চেয়েছি বিষয়টির গভীরে গিয়ে সত্যটুকু খুব সতর্কতার সাথে তুলে আনতে৷যাতে পাঠকরা সময় ব্যয় করে পড়ে প্রকৃত সত্যটুকু জানতে ও বুঝতে পারেন৷নিজে থেকে উপলব্ধি করতে পারেন৷সত্য মিথ্যা যাচাই বাচাই করতে পারেন৷ইসলামী লেবাসধারী টকবাজদের সম্বন্ধে জানেন ও সচেতন হন৷ইসলামকে নিজে থেকে জানার চেষ্টা করেন৷

আপনি ঠিকই বলেছেন, "ওয়াজ মাহফিল শুনা এখন স্ট্যাটাস রক্ষা করা হয়ে দাঁড়িয়েছে, কার ওয়াজ শুনবে মানুষ, তবে ভালো হুজুরও আছেন তাদের তেমন মার্কেট নাই। নিজে যা করতে পালন করতে পারেনা তা অন্যকে উপদেশ দিতে যে মানা সেটাও জানেনা ওরা।"... এটি এখন অনেকের আখের গোছানোর হাতিয়ার৷কোটিপতি হওয়ার সহজপাঠ৷

শুভ রাত্রি, নয়ন ভাই৷

৪| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:৫০

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: বিকাল হলে সারা রাত সেখানে কাঁটানোর জন্য চুপি চুপি প্রস্তুতি নিতাম। যদিও ঠাণ্ডার মধ্যে সারা রাত না থাকার জন্য বাবা-মায়ের বারণ ছিল। কিন্তু কে শুনে এসব বারণ? রাতে বাড়িতে চলে আসব মাকে এই নিশ্চয়তা দিয়ে বাড়ি থেকে বের হতাম, কিন্তু ঘরে ফিরতাম ঠিকই পরদিন ভোরবেলা!
এমন ঘটনা আমার জীবনে ও ঘটেছে, তবে এখন আর যাই না,
কারন যারা বয়ান করে তারা ইসলামের লেবাসদারী ব্যবসায়ী
তবে সময় পেলে বুঝতে চেষ্টা জাকির নায়েক কি বলতে চান।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
লেখা ভালো হয়েছে সেজন্য অভিনন্দন

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩১

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
প্রিয় @ স্বপ্নের শঙ্খচিল ভাই৷চমৎকার একটি কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে৷আপনি তো দেখি আমার মতো!!! ছোটবেলা ওয়াজ মাহফিলে সারারাত কাটাতেন? সেসব স্মৃতি এখন বড় পোড়ায়, মন চায় সেসব দিনগুলোতে ফিরে যাই৷৷কিন্তু তা তো সম্ভব নয়৷এখন আর সেই আকর্ষণ নেই, তাছাড়া এসব ইসলামী মাহফিলগুলো কমার্শিয়াল হয়ে গেছে৷বক্তাদের এখন আর তাফসির করতে হয় না, গালি গালাজ আর গলাবাজি করলেই চলে৷

৫| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ভোর ৫:৫৭

আশাবাদী অধম বলেছেন: আপনি ভালো একটি বিষয়ে পোস্ট দিয়েছেন।
বর্তমান সমাজে ইসলামের সঠিক নমুনা পাওয়া যায়না।
আর আমাদের দেশের বর্তমান ওয়াজ মাহফিলগুলো বাঙালী জাতির অকর্মণ্যতা ও পরচর্চাপ্রিয়তারই নিদর্শন।

১। ইসলামের বিধান অনুযায়ী মানুষকে কষ্ট দেয়া হারাম। ওয়াজ মাহফিলগুলোতে অনেক দূর পর্যন্ত মাইকের আওয়াজ ছড়িয়ে মানুষকে কষ্ট দেয়া হয়। উপস্থিত মানুষেরা শুনতে পারে শুধু এতটুকু আওয়াজই ইসলাম অনুমোদন করে।

২। অনেক মাহফিলের আয়োজক থাকে স্থানীয় হোমড়া-চোমড়ারা। তারা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাঁদা তোলে। অনেক মানুষ ইচ্ছার বিরুদ্ধে চাঁদা দিতে বাধ্য হয়। এটাও ইসলামে হারাম। কোন মানুষের জন্য অন্য মানুষের সম্পদ তার সন্তুষ্টি ব্যতীত নেয়া বৈধ নয়।

৩। রাতে আগে আগে ঘুমানো ইসলামের নির্দেশ যাতে ফজরে উঠে নামাজ পড়া যায়। এসব মাহফিলগুলো গভীর রাত এমনকি সারা রাত ব্যাপীও চলে।

৪।এখনকার মানুষইতো ওয়াজ শুনতে যায়না। বিনোদন নিতে যায়।

আল্লাহ মাফ করুন।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৫৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
ধন্যবাদ ভাই চমৎকার একটি মন্তব্য করার জন্য; ইসলাম এখন কিছু মানুষের নিজেদের ধন ধৈলত কামানোর হাতিয়ার হয়ে গেছে৷এজন্য অনেকের ইসলামী পরিপূর্ণ জ্ঞান না থাকার পরও ইসলামী মাহফিল গুলো দাবড়িয়ে বেড়ায়; বানিয়ে বানিয়ে কেচ্ছা কাহিনী বলে, গীবত ও গালিগালাজ করে; ধর্মের নামে বিভ্রান্তি ছড়ায়৷এতে মানুষে মানুষে হানাহানি ও অবিশ্বাস দেখা দেয়৷অনেক সময় খুন খারাপিও হয়৷ আপনার আলোচ্য চারটি পয়েন্টই আলোচনার দাবী রাখে ৷

৬| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৭:০১

ঢাবিয়ান বলেছেন: ''লাল সালুর ''কথা মনে পড়ে গেল।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:০৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
@ ঢাবিয়ান ভাই, আপনি তো মোক্ষম একটি উদাহরণ দিলেন; বিষয়টি এখন অনেকটা তাই হচ্ছে৷‘লালসালু’র প্রধান উপাদান সমাজ-বাস্তবতা। গ্রামীণ সমাজ এখানে অন্ধকারাচ্ছন্ন স্থবির, যুগযুগ ধরে এখানে সক্রিয় এই অদৃশ্য শৃঙ্খল। এখানকার মানুষ ভাগ্য ও অলৌকিকত্ব গভীরভাবে বিশ্বাস করে। দৈবশক্তির লীলা দেখে নিদারুণ ভয় পেয়ে নিজেকে লুকিয়ে রাখে নয়তো ভক্তিতে আপ্লুত হয়। কাহিনির উন্মোচন-মুহূর্তেই দেখা যায়, শস্যের চেয়ে টুপি বেশি। যেখানে ন্যাংটো থাকতেই বাচ্চাদের আমসিপারা শেখানো হয়। শস্য যা হয়, তা প্রয়োজনের তুলনায় সামান্য। সুতরাং ওই গ্রাম থেকে ভাগ্যের সন্ধানে উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র মজিদ মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে যে-গ্রামে গিয়ে বসতি নির্মাণ করতে চায় সেই গ্রামেও একইভাবে কুসংস্কার আর অন্ধবিশ্বাসের জয়-জয়কার। এ এমনই এক সমাজ যার রন্ধ্রে রন্ধ্রে কেবলই শোষণ আর শোষণ-কখনো ধর্মীয়, কখনো অর্থনৈতিক। প্রতারণা, শঠতা আর শাসনের জটিল এবং সংখ্যাবিহীন শেকড় জীবনের শেষপ্রান্ত পর্যন্ত পরতে পরতে ছড়ানো। আর ওই সব শেকড় দিয়ে প্রতিনিয়ত শোষণ করা হয় জীবনের প্রাণরস। আনন্দ, প্রেম, প্রতিবাদ, সততা- এই সব বোধ এবং বুদ্ধি ওই অদৃশ্য দেয়ালে ঘেরা সমাজের ভেতরে প্রায়শ ঢাকা পড়ে থাকে। এই কাজে ভূস্বামী, জোতদার এবং ধর্মব্যবসায়ী একজন আর একজনের সহযোগী। কারণ স্বার্থের ব্যাপারে তারা একাট্টা-পথ তাদের এক।

এদের একজনের আছে মাজার, অন্যজনের আছে জমিজোত প্রভাব প্রতিপত্তি। দেখা যায়, অন্য কোথাও নয় আমাদের চারপাশেই রয়েছে এরূপ সমাজের অবস্থান। বাংলাদেশের যে-কোনো প্রান্তের গ্রামাঞ্চলে সমাজের ভেতর ও বাইরের চেহারা যেন এরূপ একই রকম।

৭| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৭:০৬

ইমরান আশফাক বলেছেন: বুঝা যাচ্ছে যে আপনি এই পোষ্ট টা অনেক সময় নিয়ে পরিশ্রম করে তৈরী করেছেন। অনেক খুটিনাটি বিষয় ও আলোকপাত করেছেন অত্যান্ত জোরালোভাবে। অনেক ভুল ধারনার বশবর্তী হয়ে অন্ধভাবে এমন অনেককিছুই আমি খেয়াল খুশীমত মেনে চলতাম যেগুলো এখন যাচাই-বাছাই করার প্রয়োজন (যেগুলি আগে মনে উদিত হয়নি)।

সত্যি এমন একটা পোষ্টের জন্যেই আমি হন্য হয়ে অপেক্ষায় ছিলাম। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই, এমন একটা পোষ্ট আমাদের উপহার দেয়ার জন্য। আল্লাহ আপনাকে দিয়েই আমাদের অনেকের জ্ঞানচক্ষু খুলে দিচ্ছেন। আল্লাহর রহমত আপনার উপর বৃষ্টির ধারার মত পরতে থাকুক, আমিন।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:১৮

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
ধন্যবাদ প্রিয় ইমরান আশরাফ ভাই৷আপনি খুব মনোযোগ দিয়ে লেখাটি পড়েছেন এজন্য ধন্যবাদ৷এই পোস্টটি আসলে অনেক সময় নিয়ে খুব যত্ন করে লেখা৷মূলত বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে বিবেকের তাড়ানায় বিষয়টি নিয়ে লেখতে উদ্যোগী হয়েছি৷এদেশে ধর্ম হয়ে উঠেছে এক শ্রেণীর মানুষের ব্যবসার হাতিয়ার৷এতে মানুষ প্রকৃত ইসলামের বাণী জানা ও অনুশীলন থেকে বেরিয়ে এসে অনেক ভূল ইবাদতে মশগুল হয়ে গেছে৷আমার কষ্টসাধ্য এ লেখনি থেকে আপনি সামান্যতম উপকার পেলেও নিজেকে ধন্য মনে করবো৷

৮| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:০২

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: শুভসকাল প্রিয় গুরুদেব ,

কোথা,থেকে শুরু করবো ঠিক বুঝতে পারছিনা । গ্রাম্য সরল সাদাসিধে মানুষদের কাছে মিলাদ মেহফিল হল জানা বা আমল করার মাধ্যম। কিন্তু বর্তমানে ইসলামি বক্তাদের নিম্ন গামিতা, অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ের আলোচনা , অন্যের গিবত প্রভৃতি ইসলামি জলসার আসল উদ্দেশ্য নষ্ট করছে সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।

আপনি মিলাদুন্নবী ও সিরাতুন্নবী , মাযহাব, বে - দাত প্রভৃতি বিষয়গুলি দারুণ ভাবে তুলে ধরেছেন। ক্যানভেচার ও ইসলামিক স্কলারের মাহফিল বক্তার তুলনাটা অতুলনীয় লাগলো।
ইসলামের আসল উদ্দেশ্যটি সুন্দর করে তুলে ধরার জন্য অনুভবে মুগ্ধতা রইল। পাশাপাশি ইউটিউবে একজন ইমামের কাফের চিহ্নিত করনটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। অথচ এমন ভুল ইসলামকে আমাদের প্রতিদিন অনুসরণ করতে হচ্ছে যা অত্যন্ত উদ্বেগের।

বিমুগ্ধ ভালোবাসা সহ অন্তরের শুভেচ্ছা গুরুদেবকে।



০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৩০

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
আমার প্রিয় গুরু, প্রিয় ভাইয়ের প্রেরণা সব সময় আমাকে অনুপ্রাণিত করে৷আপনি খুব চমৎকার একটি কথা বলেছেন, "গ্রাম্য সরল সাদাসিধে মানুষদের কাছে মিলাদ মেহফিল হল জানা বা আমল করার মাধ্যম। কিন্তু বর্তমানে ইসলামি বক্তাদের নিম্ন গামিতা, অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ের আলোচনা , অন্যের গিবত প্রভৃতি ইসলামি জলসার আসল উদ্দেশ্য নষ্ট করছে সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।" পুরোপুরি সহমত গুরু ৷

"ক্যানভেচার ও ইসলামিক স্কলারের মাহফিল বক্তার তুলনাটা অতুলনীয় লাগলো"... খুব সুন্দর একটি বিষয় পয়েন্ট আউট করেছেন৷এখন ইসলামীক স্কলার নয়, কেনবেচাররা হলো ইসলামী বক্তা৷এটা খুব দুঃখজনক৷অনেক শুভ কামনা প্রিয় ভাইয়ের জন্য ৷

৯| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:০৯

স্রাঞ্জি সে বলেছেন:
একটু খানি হালকা ধাক্কা খেলাম যে
ছবিগুলোর উপর রঙিন কারুকার্য নাই হে।

লেখা টা বড় তাই বুকমার্ক করে রাখছি।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:২৮

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
হুম; আসলেই ছবিগুলোতে কারুকাজ কম হয়ে গেছে!! এজন্য চমৎকার কারুকাজ সমৃদ্ধ একটি ছবি কমেন্টের প্রতি উত্তরে দিলাম৷আপনার নামটি যেমন রহস্যম!! কমেন্টও করেন খুব মজা করে৷ভাল থাকবেন, শুভ কামনা সব সময় ৷

১০| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:২৭

আহলান বলেছেন: অনেক কিছুই বলেছেন। ভালো পোষ্ট তবে পীর , মিলাদ ক্বিয়াম, মাজহাব, বেদাত এসব নিয়ে কিছু বলেছেন যা বিতর্কের অবকাশ রাখে ... সর্বপরী ভালো পোষ্ট!

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৪০

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
@ প্রিয় আহলান ভাই, আমার ব্লগে স্বাগতম৷আপনি চমৎকার একটি কথা বলেছেন, "পীর , মিলাদ ক্বিয়াম, মাজহাব, বেদাত এসব নিয়ে কিছু বলেছেন যা বিতর্কের অবকাশ রাখে৷" আসলে এই ধান্দাবাজির সাথে যারা জড়িত তাদের স্বার্থে আঘাত আসলে সত্যবাণী; কোরআন হাদিসের কথাগুলোও তিতা লাগে৷এজন্য এরা নিজের ব্যবসা ঠিক রাখতে প্রতিবাদ করতে ঝাঁপিয়ে পড়ে৷এজন্য সত্য বলতে গেলে কে কি ভাবলো তা নিয়ে টেনশন করার কোন প্রয়োজন নেই৷ইসলাম কারো মনগড়া তরিকায় চলে না ৷

১১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৩৩

সনেট কবি বলেছেন: আপনার কিছু কথায় একমত না হলেও উপস্থাপন সুন্দর হয়েছে।
আল-বাসীর

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৫১

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
কমেন্টে প্রিয় সনেট কবিকে পেয়ে খুব ভাল লাগলো৷আসলে ইসলামের ফরজ ও ওয়াজিব নিয়ে তেমন বিতর্ক নেই; সব বিতর্ক সুন্নাত, ইজমা ও কিয়াস নিয়ে৷আর এই বিতর্ক আমাদের উপমহাদেশে সবচেয়ে প্রকট৷সবাই যার যার বিশ্বাসের উপর অনড়, এতে তা শরীয়তের পরিপন্থী হলেও!! এজন্য সমাজে ধর্মের নামে এত হানাহানি, বিতর্ক, ঘৃণা, কুসংস্কার আর বিরোধিতা৷এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ইসমাম; নতুন প্রজন্ম ধর্মের ব্যাপারে সন্দেহবাদী হয়ে উঠছে৷ধর্ম নিয়ে যত বাড়াবাড়ি হবে, ধর্মের ক্ষতি ততো বেশি হবে ৷

১২| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৩৪

রাজীব নুর বলেছেন: ওয়াজ মাহফিল নিয়ে খুব সুন্দর লিখেছেন। আপনি আপনার ছোটবেলার ওয়াজ মাহফিলের কথা বলেছেন। এযুগের ওয়াজ মাহফিল নিয়েও লিখেছেন।
ওয়াজ মাহফিল এখন ব্যবসা। ওয়াজে যৌন সুড়সুড়ি টাইপ কথা বলা হয়। আমি মনে করি ওয়াজ মাহফিল আইন করে বন্ধ করে দেওয়া উচিত। শীতের সময় - ওয়াজ মাহফিল বেশি হয়।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৯

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
রাজীব ভাই, ঈদের ছুটিতে তো দারুণ এনজয় করেছেন; আপনার ঘোরাঘুরির এই অভ্যাসটা আমার দারুণ লাগে৷ভাবীকে ঈদের শুভেচ্ছা দিবেন৷আপনি খুব সুন্দর একটি কথা বলেছেন, "ওয়াজ মাহফিল এখন ব্যবসা। ওয়াজে যৌন সুড়সুড়ি টাইপ কথা বলা হয়। আমি মনে করি ওয়াজ মাহফিল আইন করে বন্ধ করে দেওয়া উচিত। শীতের সময় - ওয়াজ মাহফিল বেশি হয়।"...... ওয়াজ মাহফিল এখন কেনবেচারদের দখলে ৷

১৩| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৪৬

এটম২০০০ বলেছেন: OPEN STATEMENT OF A GIRL BORN AND BROUGHT UP IN THE MOHAMEDIAN WAY. যে মেয়েটি ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করলো, শুনুন তার কথা: মাতুব্বর আজাদ অভিজিৎ. https://www.youtube.com/watch?v=dVio1NTUKqE

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
ধন্যবাদ, @ এটম ২০০০ ভাইকে৷আপনাদের দেওয়া লিঙ্কটি সময় করে দেখবো৷কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো৷শুভ কামনা আপনার জন্য ৷

১৪| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:০০

ভুয়া মফিজ বলেছেন: সুদীর্ঘ পর্যালোচনা করেছেন। আপনার কথাগুলো আরও আলোচনা-পর্যালোচনার দাবী রাখে।
ইসলামের ক্ষতি অন্য ধর্মাবলম্বীদের চেয়ে মূলতঃ মুসলমানরাই করছে বেশী। ইসলামের মূল যে শিক্ষা এবং চেতনা, সেটাই আজ হারাতে বসেছে। আর আল্লাহ সেজন্যেই মুসলমানদেরকে দৌড়ের উপর রেখেছেন! এখনও ঠিক না হলে ভবিষ্যতে আরও খারাবী আছে! সামনে মুসলমানদের জন্য আরো বড় বিপদ অপেক্ষা করছে।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৩

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
@ মফিজ ভাই, গুরুত্বপূর্ণ একটি মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে৷আপনি ঠিকই বলেছেন, "ইসলামের ক্ষতি অন্য ধর্মাবলম্বীদের চেয়ে মূলতঃ মুসলমানরাই করছে বেশী। ইসলামের মূল যে শিক্ষা এবং চেতনা, সেটাই আজ হারাতে বসেছে। আর আল্লাহ সেজন্যেই মুসলমানদেরকে দৌড়ের উপর রেখেছেন! এখনও ঠিক না হলে ভবিষ্যতে আরও খারাবী আছে! সামনে মুসলমানদের জন্য আরো বড় বিপদ অপেক্ষা করছে।".... শতভাগ সহমত ৷

১৫| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:২২

সাাজ্জাাদ বলেছেন: ওয়াজের উৎস কোথায়? কে বা কারা এর উদ্ভাবক এই উৎস গুলো আপনার ফিচারে থাকলে ভালো হত।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ @ সাজ্জাদ ভই৷আসলে ওয়াজ মাহফিলের ব্যাপারে আমাদের ভারত উপমহাদেশে কবে, কখন শুরু হয়েছে তার সঠিক হিসাব কারো কাছে নেই৷তবে, ধারনা করা হয় তেরশো শতাব্দীতে সুলতানী আমলে উপমহাদেশে ব্যাপক ইসলামের প্রচার ও প্রসার লাভ করে, তখন আরব থেকে অসংখ্য সুফি আসেন; মূলত তাদেরকে ভিত্তি করেই ইসলামের বিষয়ে জানাশুনার পরিধি বাড়ে৷তখন ওয়াজ মাহফিল ছিল না, সেসময় 'সহবত' হত৷তারপর আটারো শতাব্দীতে ভারতের উত্তর প্রদেশের দেওবন্দ থেকে ওয়াজ মাহফিলের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়৷তবে বিংশ শতাব্দীতে তা ব্যাপক আকার ধারণ করে৷এখন তো ওয়াজ মাহফিল হলো একটি বিরাট অংশের রুটি রুজির উৎস ৷

১৬| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৩৫

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: বাংলাদেশে রাজনীতির মতো ধর্ম ব্যবসাটা বেশ লাভ জনক। সুন্দর বলেছেন।
এখন আরেকটা কালচার চালু হয়েছে। ওয়াজের প্রধান অতিথি করা হয় রাজনৈতিক টাউটদের। কোথাও কোথাও ওয়াজের পরে গানও হয়। এরকম এক ওয়াজের পোস্টারে দেখলাম,'ওয়াজের পরে মনোজ্ঞ সঙ্গীত পরিবেশন করবেন শিল্পি মমতাজ।' পোস্টারে মমতাজের ছবিও আছে।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৯

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রিয় লিটন ভাইকে গুরুত্বপূর্ণ একটি কমেন্ট করার জন্য৷আপনি ঠিকই বলেছেন, "এখন আরেকটা কালচার চালু হয়েছে। ওয়াজের প্রধান অতিথি করা হয় রাজনৈতিক টাউটদের। কোথাও কোথাও ওয়াজের পরে গানও হয়। এরকম এক ওয়াজের পোস্টারে দেখলাম,'ওয়াজের পরে মনোজ্ঞ সঙ্গীত পরিবেশন করবেন শিল্পি মমতাজ।' পোস্টারে মমতাজের ছবিও আছে।".... অনেকের কাজে ওয়াজ মাহফিল হলো টাকা কামানোর হাতিয়ার; এজন্য মমতাজের গানেরও ব্যবস্তা থাকে পাবলিক আকৃষ্ট করার ধান্দায়৷

এখন ইসলাম যতটুকু না আদর্শ ধারণ ও প্রচারের বিষয় তার চেয়ে বেশি টাকা-পয়সা ও প্রভাব-প্রতিপত্তি বাড়ানোর জায়গা। কেউ কেউ তা বংশ পরম্পরায় করে আসছেন। ইসলামকে যত দ্রুত সম্ভব এসব লোভী ও ধান্দাবাজদের খপ্পর থেকে বের করে আনতে হবে। আর এখনই এ পদক্ষেপ না নিলে আগামী দিনগুলোতে ইসলাম ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখিন হবে। কারণ, এখন পৃথিবীকে চালাচ্ছে হাজার হাজার ইন্টেলেকচুয়াল মানুষ।

বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। এসব মেধাবী মানুষজনের কাছে ইসলামের সত্য বাণী পৌছে দেওয়ার জন্য প্রয়োজন শত শত ভদ্র কোরআন ও হাদিস বিশারদ। যারা শান্তিপূর্ণভাবে ইসলামের দাওয়াত প্রচার করবেন। যোগ্য মানুষের হাতে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও বিশ্বের নেতৃত্ব না থাকলে এসব প্রতিষ্ঠান ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়; সমাজ হিংসা-বিদ্বেষ, বিভক্তি ও অন্যায়-অবিচারে ভরে যায়। ঠিক তেমনি কোন ধর্মের নেতৃত্ব মূর্খ, সাম্প্রদায়িক আর অভদ্র মানুষের হাতে থাকলে ধর্মটিও ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সমাজ বিষাক্ত হয়।

১৭| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:২৩

নতুন নকিব বলেছেন:



দীর্ঘ পরিশ্রমী পোস্টে ধন্যবাদ। মাযহাব নিয়ে আপনার মূল্যায়নে একমত হতে না পারায় দু:খিত! হাদিস সংকলনের কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পরপরই মাযহাবের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে, -দয়া করে এই বিষয়ে যদি আপনি আরও গভীরে গিয়ে, আরও একটু যাচাই বাছাই করে মতামত দেন, বিশেষ কৃতজ্ঞ থাকবো!

'মাযহাবের আলেমগন আহলে হাদিসের লোকদের গালিগালাজ করেন' -বলে তো একতরফা এক পক্ষের দোষগুলোকে তুলে ধরলেন! আহলে হাদিসের কিছু লোক যে একই কাজ মাইকে, টিভিতে হরহামেশা করে যাচ্ছেন তাও যদি বলতেন! -আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বলছি।

যাই হোক, আপনার প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। পুরো পোস্ট যেহেতু এখনও পড়া হয়নি। তাই সবটুকু না দেখে সামগ্রিক পোস্টের উপর মন্তব্য দিতে পারছি না। সময় সুযোগ হলে আবার আসার ইচ্ছে থাকলো।

ভাল থাকবেন।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
দীর্ঘ ও খুব সুন্দর একটি কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ @ নকিব ভাই৷আপনি বলেছেন, "মাযহাব নিয়ে আপনার মূল্যায়নে একমত হতে না পারায় দু:খিত! হাদিস সংকলনের কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পরপরই মাযহাবের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে, -দয়া করে এই বিষয়ে যদি আপনি আরও গভীরে গিয়ে, আরও একটু যাচাই বাছাই করে মতামত দেন, বিশেষ কৃতজ্ঞ থাকবো!"

আসলে মাযহাব নিয়ে দীর্ঘ আরেকটি পোস্ট দিলে আরো ডিটেলে আলোচনা করা যেত৷মাযহাব নিয়ে যেহেতু কোরআন ও হাদিসের কোন রেফারেন্স নেই যেহেতু এটির পক্ষে বিপক্ষে অনেক যুক্তি ও আলোচনা আছে৷আসলে হাদীস সংকলনের আগে আরব ও পারস্যে নবীজীর জীবন ও দিকনির্দেশনা নিয়ে শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যে ব্যাপক মতবিরোধ দেখা দেয়; ফলশ্রুতিতে সংঘর্ষে অসংখ্য মানুষ মারা যায়৷তখন এই সমস্যা থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য মূলত মাযহাব গঠন করা হয়৷তবে হাদিস সংকলনের পর মাযহাবের প্রয়োজনীয়তা কমে যায়৷কারণ, রাসুল (সা) বিদায় হজ্জের ভাষণে শুধুমাত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে জীবন যাপনের কথা বলেছেন৷এখন মাযহাব না মেনেও যদি কেউ কোরআন ও হাদিস মোতাবেক চলে তাহলে সমস্যা নেই৷আর যারা মাযহাব মানে তাদেরও বিরোধিতা করার দরকার নেই৷

আপনি আরেকটি বিষয় এখানে তুলে ধরেছেন, ''মাযহাবের আলেমগন আহলে হাদিসের লোকদের গালিগালাজ করেন' -বলে তো একতরফা এক পক্ষের দোষগুলোকে তুলে ধরলেন! আহলে হাদিসের কিছু লোক যে একই কাজ মাইকে, টিভিতে হরহামেশা করে যাচ্ছেন তাও যদি বলতেন! -আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বলছি।"

আসলে এতে আহলে হাদিসরা সমান দোষী; উনারাও কম বাড়াবাড়ি করছেন না৷লেখার সময় ভূলে এ কথাটি বাদ পড়ে গেছে৷মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে ৷

১৮| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:২৭

অচেনা হৃদি বলেছেন: :)

ইউটিউবে একটা জিকিরের ভিডিও দেখেছিলাম। সেখানে দেখলাম জিকির করতে করতে কিছু মানুষ বেশি আবেগে উঠে নাচানাচি স্টার্ট করে দিল। তখন হুজুর গান ধরলেন... বসেন বসেন, বইসা যান... =p~ ভিডিওটা দেখে খুব হাসি এলো। মিস্টার বিনের মুভি দেখেও মনে হয় এতো হাসিনি।

একটা প্রশ্ন ছিল। আপনি ছবিগুলো এতো বড় করে দেন কিভাবে? আমি যত বড় ছবি আপলোড করি না কেন? ব্লগে পোস্ট হবার পর দেখি ছোট হয়ে যায়। আপনার ছবিগুলো তো ছোট হয় না।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
হৃদি আপু.........
কেমন আছ? ব্লগে তো তেমন একটা দেখি না!! সময় সুযোগে ব্লগে আসতে হবে; মন খারাপ করলে চলবে না৷মন খুলে লিখুন যা মনে চায়; সমালোচনা হলেও এগুলো নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই৷আমি তো আমার আপুনির লেখার বড় ফ্যান৷

"ইউটিউবে একটা জিকিরের ভিডিও দেখেছিলাম। সেখানে দেখলাম জিকির করতে করতে কিছু মানুষ বেশি আবেগে উঠে নাচানাচি স্টার্ট করে দিল। তখন হুজুর গান ধরলেন... বসেন বসেন, বইসা যান... =p~ ভিডিওটা দেখে খুব হাসি এলো। মিস্টার বিনের মুভি দেখেও মনে হয় এতো হাসিনি।"

হুম, ইউটিউব তো এখন ওয়াজি নামধারী মলম বিক্রেতা কেনাবেচারদের দখলে, এদের ওয়াজ শুনলে মরা গরুও লাফ দিয়ে উঠবে৷এরা ইসলাম ধর্মকে বিশ্ববাসীর কাছে একটি হাস্যকর ধর্ম হিসেবে উপস্থাপন করছে৷এটা খুব দুঃখজনক ৷

আর আমার ছবিগুলোর সাইজ হলো (২০০০×২০০০); শুভ কামনা রইলো আপুনি ৷

১৯| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৫৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: কাওসার চৌধুরী ,



এ জাতীয় কার্যক্রম ভন্ডামী ছাড়া আর কিছু নয় । বর্তমানের এসব ওয়াজ - মাহফিলের যে ছবি এঁকেছেন তা একবারেই বাস্তব । এগুলো ধর্মপ্রান মানুষের অজ্ঞানতাকে পুঁজি করে এক ধরনের শঠতামির ব্যবসা ।
নতুন নকিব এর মন্তব্যেই বোঝা যায় এসব ওয়াজকারী লোকেরা ফ্যাসাদ বাজানো ছাড়া "শান্তি"র বানী ছড়াতে জানেই না ।
আপনার মূল বক্তব্য পরিষ্কার ।
ভুয়া মফিজ তাই ঠিকই বলেছেন ------ " ইসলামের মূল যে শিক্ষা এবং চেতনা, সেটাই আজ হারাতে বসেছে। আর আল্লাহ সেজন্যেই মুসলমানদেরকে দৌড়ের উপর রেখেছেন! "

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:০৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
শ্রদ্ধেয় @ আহমেদ জী এস সাহেবকে কমেন্টে পেয়ে খুব খুশি হলাম৷এজন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো৷ইসলামের বিভিন্ন আলীমদের মধ্যে অনেক মতবাদের ফলে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ইসলাম। শুধু মতভেদ থাকলে এতো আপত্তি ছিল না, রীতিমত চলে অশ্রাব্য ভাষায় গালি-গালাজ আর তিরস্কার! এরা সাধারন মানুষদের মধ্যে ইসলামকে বিতর্কিত করছেন। আপনি কী জানেন? এসব অযথা বিতর্ক মুসলিমদের মধ্যে পারস্পরিক ভ্রতৃত্বের পরিবর্তে ঘৃণা ও অবিশ্বাস ছড়িয়ে দিচ্ছন? পবিত্র হাদিসকে মানুষের মাঝে বিতর্কিত করছেন নিজের অজান্তেই।

আর পবিত্র হাদিস নিয়ে বিতর্ক হওয়া মানে হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর জীবনকে নিয়ে বিতর্ক করা। প্লীজ, এসব স্পর্শকাতর বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার আগে অন্তত একবার ভাবুন। ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে যত মতবিরোধ দেখা যায় পৃথিবীর অন্য কোন ধর্মে তা দেখা যায় না। এটা বন্ধ হওয়া উচিৎ।

একটা বিষয় লক্ষ্য করলে দেখবেন, যারা ওয়াজ মাহফিল আয়োজন করেন এদের বেশীরভাগের ইসলামী জ্ঞান নেই বা অতি সীমিত। এজন্য এরা প্রকৃত জ্ঞানী ও ভদ্র আলীমদের পরিবর্তে গলাবাজ, অল্প শিক্ষিত ও সুন্দর বেশভূষ ওয়ালা বক্তাদের দাওয়াত করেন। এতে এলাকায় উনার সুনাম বাড়ে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকলে তা হাসিল হয়। ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ এসব বক্তার ওয়াজ শুনতে আসে। এই সুযোগে তিনিও বানিয়ে বানিয়ে রঙ-চঙা ওয়াজ শুরু করেন মানুষকে মাতিয়ে রাখার জন্য। এসব মাহফিলগুলোতে পবিত্র কোরআন ও হাদীস নিয়ে তেমন আলোচনা হয় না। যারা এসব মাফিলে বাহবা দেয় এরা মেলায় গিয়েও হাততালি দেয়ে, গানের মাহফিলে গিয়েও হাততালি দেয়, নাচানাচি করে। প্রকৃত আলীমরা নয়, এখন ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করছে এসব ইসলামী বক্তা নামধারী ক্যানভেচার।

একজন ক্যানভেচারের ইসলামী বক্তা হওয়া আর ইসলামিক স্কলারের মাহফিলের বক্তা হওয়ার মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। কারণ ক্যানবেচার অতি নিম্নমানের মলমটি রঙিন মোড়কে ফুটপাতে বিক্রি করে চড়া দামে। এজন্য মলমটি ব্যবহার করার পর শরীরের পঁচা-ঘা কমার পরিবর্তে বাড়ে, পাশাপাশি নতুন নতুন রোগ-জীবাণু দেহের মধ্যে সংক্রমিত হয়। এটা অনেকটা ক্যানসার আক্রান্ত রোগীকে বিশেষজ্ঞ সার্জনের পরিবর্তে হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করানোর মতো।



২০| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:১৭

বলেছেন: খুটিনাটি বিষয় ও আলোকপাত করেছেন অত্যান্ত জোরালোভাবে.Chowdhury bhi,You are always best and blog favourite writter.You worked hard and passionately to make the topic useful.
hats off

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১:০২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রিয় @ রহমান লতিফ ভাই৷আশা করি খুব ভাল আছেন৷এই পোস্ট লেখতে অনেক সময় লেগেছে, অনেক ভাবতে হয়েছে, ইসলামের মূলনীতি এবং কোরআন, হাদীস ও তাফসির পড়তে হয়েছে৷আমি চেষ্টা করেছি বিষয়গুলো নিয়ে নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে লিখতে৷কিছু কঠিন বাস্তব কথা অকপটে বলেছি এই পোস্টে; যাতে ধর্ম নিয়ে কেউ ধান্দাবাজি করতে না পারে, মুসলমানদের ধোঁকা দিতে না পারে৷সাধারণ মানুষ যাতে কোরআন হাদিস ভিত্তিক প্রকৃত ইসলামী শরীয়ত শিখতে পারে, জানতে পারে তাই লেখাটিতে তুলে ধরেছি৷আমার ক্ষুদ্র এ লেখাটি পড়ে কেউ যদি সামান্যতম উপকার পায় তাতেই আমার স্বার্থকতা ৷

শুভ রাত্রি, ভাই ৷

২১| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১:৫৩

কানিজ রিনা বলেছেন: মুসলমান আজ দলে বিভক্ত হওয়ার কারনে
একদল আর এক দলের গীবদ করে মজা
পায়। আলেম উলামারা একজায়গায় তর্ক
করতে দিলে যুদ্ধ হওয়ার সম্ভবনা দেখা
দেয়। এই কারনে ইসলাম বিদ্বেশীরা যা ইচ্ছা
বলার সাহস পায়।

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ২:১৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
লেখাটি পড়ে কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো আপু। এখন ইসলাম যতটুকু না আদর্শ ধারণ ও প্রচারের বিষয় তার চেয়ে বেশি টাকা-পয়সা ও প্রভাব-প্রতিপত্তি বাড়ানোর জায়গা। কেউ কেউ তা বংশ পরম্পরায় করে আসছেন। ইসলামকে যত দ্রুত সম্ভব এসব লোভী ও ধান্দাবাজদের খপ্পর থেকে বের করে আনতে হবে। আর এখনই এ পদক্ষেপ না নিলে আগামী দিনগুলোতে ইসলাম ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখিন হবে। কারণ, এখন পৃথিবীকে চালাচ্ছে হাজার হাজার ইন্টেলেকচুয়াল মানুষ।

আপনি ঠিকই বলেছেন, "মুসলমান আজ দলে বিভক্ত হওয়ার কারনে একদল আর এক দলের গীবদ করে মজা পায়। আলেম উলামারা একজায়গায় তর্ক করতে দিলে যুদ্ধ হওয়ার সম্ভবনা দেখা দেয়। এই কারনে ইসলাম বিদ্বেশীরা যা ইচ্ছা বলার সাহস পায়।"

২২| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:০৭

কথার ফুলঝুরি! বলেছেন: ভাইয়া, আপনি একেকবার এক একটি চমক নিয়ে আসছেন । প্রত্যেকটি লেখার বিষয়বস্তু একদম আলাদা সবার থেকে । যাক, আমি কখনো ধর্মীয় কোন আলোচনায় যাইনা। তবে, সবকিছুতেইতো এখন বিজনেস ভাইয়া, ওয়াজ মাহফিল ও বাদ নেই । আর এ কথা ঠিক, যারা মাদ্রাসাতে পড়াশোনা করে তারা আসলেই বৈষম্য এর স্বীকার হয় ।

আমার কখনো ওয়াজ মাহফিল যাওয়া হয়নি, তবে সত্যিকার ও সঠিক ও সুন্দর কোন একটি মাহফিলে যেতে পারলে ভালো লাগতো ।

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:১৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
কথা আপু,......
শুভেচ্ছা রইলো ৷কমেন্ট করে অনুপ্রাণিত করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে ৷আপনি ঠিকই বলেছেন আমি একেক সময় একেক বিষয় নিয়ে লিখি ৷আমি ধর্ম নিয়ে যতটুকু পড়াশুনা করেছি, অন্য কোন বিষয় নিয়ে তার সিকিভাগও করিনি ৷মূলত জানার তাগিদ থেকেই তা করেছি; কিন্তু ধর্মীয় কোন বিষয় নিয়ে লিখি না, এমনকি ধর্মের পক্ষে বিপক্ষে কোন লেখা ব্লগে আসলে সেগুলোতে কমেন্ট করা থেকে বিরত থাকি ৷চাইলে এ বিষয়গুলো নিয়ে নিজের অভিমত দিতে পারতাম ৷আমার মূল ফোকাস সাহিত্য নিয়ে লেখায় এবং ভাবনায়, এজন্য সব ভাবনা এ বিষয়কে ভিত্তি করে ৷

আপনার তো দেখি ওয়াজ মাহফিলে যাওয়ার খুব সখ!! আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো এমন মহিলাদের জন্য আলাদা কোন মাহফিল বাংলাদেশের কোথাও আছে কিনা; থাকলে আপুকে নিয়ে যাব ৷

২৩| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:০৮

হয়ত তোমারই জন্য বলেছেন: ওয়াজ মাহফিলে এখন টাকার খেলা ,৪৴৫ দিন ব্যাপি যে মাহফিল হয় তাতে শেষের দিন ১০,০০০ টাকা দান করলেই বেহেস্তের খুটি নিশ্চিত ৷একজন পীড় আরেক জন পীড়ের সমালোচনায় ব্যাস্ত গিবত করা মহাপাপ সেটা তো তারা সবসময়েই করছেন ৷প্রতিটি জেলায় একজন পীড় হলে কেমন হয়?অবাক হওয়ার কিছুনেই কারন পীড়সিপ এখন দান করা হচ্ছে ৷পীড়ের ছেলেই পীড় তিনি তার মনোনিত কোন ব্যাক্তিকে পীড় বানাতে পারেন এতে করে প্রতিটি জেলা,থানায় একজন পীড় থাকলে স্থায়ি ইনকাম নিশ্চিত ৷ :)

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:২৮

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
লেখাটি পড়ে কমেন্ট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ৷আসলে এখনকার ওয়াজ মাহফিলগুলোর মূল উদ্দেশ্য হলো সলে, বলে কৌশলে আগত পাবলিকের পকেট কাটা ৷এজন্য আয়োজকরা বিভিন্ন কুটকৌশলের আশ্রয় নেয় ৷আর বাংলাদেশের চিপায় চাপায়, অলি গলি কোথায় পীর নেই? প্রতি জেলায় কয়েক শো পীর নামধারী ভন্ড আছে ৷এরা সাধারন পাবলিকের সরল বিশ্বাসকে পূঁজি করে নিজেদের আখের গোছায় ৷

২৪| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৫

নতুন নকিব বলেছেন:



কাওসার ভাই, মাযহাব বিষয়ে আজকের ছোট একটি লেখা ছিল আমার। লেখাটি লিখতে আপনার প্রসঙ্গও কোনো একভাবে এসে গেছে। মূলত: আপনার এই পোস্টটিই ছিল প্রেরনা। সেজন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা। সময় হলে দেখে আসার অনুরোধ থাকলো। লিঙ্কটি রেখে যাচ্ছি-

মাযহাব কি? মাযহাব কেন মানবো এবং কোনটি মানবো? -পর্ব-১

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৩৯

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
নকিক ভাই, শুভেচ্ছা রইলো৷মাযহাব নিয়ে আপনার লেখা পোস্টখানি এক্ষুনি পড়বো; লিঙ্কটি দেওয়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে৷আর আমার পোস্ট পড়ে আপনি বিষয়টি নিয়ে লেখতে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন জেনে অনুপ্রাণিত হলাম ৷

২৫| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৩৪

মনিরা সুলতানা বলেছেন: অনেক পরিশ্রমী লেখা ;
তবে সুলিখিত এবং তথ্য সমৃদ্ধ ।

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৫৩

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো আপা৷আপনার সুন্দর কমেন্ট আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে; শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য৷ভাল থাকুন পরিবারের সবাইকে নিয়ে প্রবাস জীবনে ৷

২৬| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৩৯

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: কমেন্টে ছবি জুড়ে দেয়ার কারনে নেট স্লো হলে পোস্ট ওপেন হয়না, হলেও প্রচুর সময় নেয়। তাছাড়া প্রচুর এমবি খরচতো আছেই।
বিষয়টা ভেবে দেখবেন জনাব।

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৪৭

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: স্যরি, লিটন ভাই৷বিষয়টি আমার জানা ছিল না; তবে এ পোস্টে যেহেতু কমেন্টে ছবি সংযোজন করছি সেজন্য পরের লেখাগুলোর কমেন্টে ছবি কম দেওয়ার চেষ্টা করবো৷আর আপনার প্রতি রেসপেক্ট জানিয়ে এ কমেন্টে কোন ছবি সংযুক্ত করলাম না৷আপনার জন্য অনেক শুভ কামনা রইলো ৷

২৭| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৫৯

স্বপ্নীল ফিরোজ বলেছেন:
সুন্দর পোস্ট। ভালো লাগা জানিয়ে গেলাম।
আমার ব্লগ বাড়িতে আপনাকে আমন্ত্রণ।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১:৪৭

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
@ প্রিয় ফিরোজ ভাই, আমার ব্লগে স্বাগতম৷আমি আপনার ব্লগে অবশ্যই যাব৷আশা করি ভাল ভাল পোস্ট লেখে ব্লগবাড়ি মাতিয়ে রাখবেন৷শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য৷নিয়মিত ব্লগে সময় দিবেন আশা করি ৷

২৮| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:১৪

লায়নহার্ট বলেছেন: {এফ আর খান একজন বাংলাদেশি বংশদ্ভুত প্রকৌশলী। তিনি সর্বপ্রথম দেখান, কিভাবে অনেক উঁচু ইমারত তৈরি করা সম্ভব। বাকিটা ইতিহাস}

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১:৫৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
লায়ন ভাইয়ের যেমন নাম, তেমন মজার কমেন্ট৷চমৎকার এ কমেন্টের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু ১৬৩ তলা বিশিষ্ট Burj Khalifa টাওয়ারটি গিফট করলাম৷হোপ, ইউ লাইক ইট ৷

২৯| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:১১

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: পোস্ট পড়লাম। দ্বিমত হওয়ার মতো কোনোপ্রকার তথ্য নেই। আমাদের আলেম উলামারা ইসলামের মূল বিষয়গুলো ছেড়ে সাইডের ছোটছোট বিষয়গুলো নিয়ে বেশি ব্যস্ত। যেখানে সাধারণ মুসলিমদের অনেকেই নামাজ,রোজার প্রতি উদাসীন। সেখানে উনারা নফল ইবাদত নিয়ে বিতর্ক, ফেসাদে মেতে উঠেন। এইতো কয়েকদিন আগেও সিলেটে হাদিস নিয়ে বিতর্ক এবং দুপক্ষের হামলার ফলে একজন মাদ্রাসা ছাত্র মারা গেলেন। এলাকার অনেক ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হলো।
ফেইসবুকে বিভিন্ন পক্ষের প্রতিক্রিয়া, পালটা প্রতিক্রিয়া দেখলাম। এসব খুব হতাশাজনক ছিলো। কেউ এলাকায় আগুন দেওয়া পক্ষে ছিলেন। তিনাদের মতে বিরোধী পক্ষের পৃথিবীতে বাঁচার অধিকার নেই। অথচ, ইসলামে নিরপরাধ মানুষ হত্যাকে বেশ শক্তভাবে নিষেধ করা হয়েছে। যাইহোক, সুন্দর আলোচনার জন্য ধন্যবাদ। আল্লাহ আমাদের বুঝবার ও সঠিক পথে চলবার তৌফিক দান করুক। (আমিন)

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ২:০৮

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
আপনি চমৎকার একটি মন্তব্য করেছেন৷এজন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো জুনায়েদ ভাই৷আপনি ঠিকই বলেছেন, "আমাদের আলেম উলামারা ইসলামের মূল বিষয়গুলো ছেড়ে সাইডের ছোটছোট বিষয়গুলো নিয়ে বেশি ব্যস্ত। যেখানে সাধারণ মুসলিমদের অনেকেই নামাজ,রোজার প্রতি উদাসীন। সেখানে উনারা নফল ইবাদত নিয়ে বিতর্ক, ফেসাদে মেতে উঠেন।"....

একদম ঠিক কথা৷এজন্যই তো সিলেটে কয়েক মাস আগে একজন মাদ্রাসা ছাত্র খুণ হলো৷অনে বাড়ি ঘর ভাংচুর করা হলো৷এগুলো খুবই দুঃখজনক৷আর ফেইসবুক তো এখন ফেইক বুকে পরিণত হয়েছে৷সারাদিন মিথ্যা সংবাদ আর গুজবের ছড়াছড়ি থাকে ৷

শুভ রাত্রি জুনায়েদ ভাই ৷

৩০| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১:১৩

প্রামানিক বলেছেন: কিছু কিছু মোল্লা আছে যারা ইসলামের মূল বিষয় রেখে নিজের স্বার্থ রক্ষার চেস্টায় ব্যস্ত।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ২:১৯

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রিয় কবিকে কমেন্টে পেয়ে৷মনটি খুব খুশি হয়ে গেল৷এদেশে যারা ওয়াজ মাহফিল আয়োজন করেন এদের বেশীরভাগের ইসলামী জ্ঞান নেই বা অতি সীমিত। এজন্য এরা প্রকৃত জ্ঞানী ও ভদ্র আলীমদের পরিবর্তে গলাবাজ, অল্প শিক্ষিত ও সুন্দর বেশভূষ ওয়ালা বক্তাদের দাওয়াত করেন। এতে এলাকায় উনার সুনাম বাড়ে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকলে তা হাসিল হয়। ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ এসব বক্তার ওয়াজ শুনতে আসে।

এই সুযোগে তিনিও বানিয়ে বানিয়ে রঙ-চঙা ওয়াজ শুরু করেন মানুষকে মাতিয়ে রাখার জন্য। এসব মাহফিলগুলোতে পবিত্র কোরআন ও হাদীস নিয়ে তেমন আলোচনা হয় না। যারা এসব মাফিলে বাহবা দেয় এরা মেলায় গিয়েও হাততালি দেয়ে, গানের মাহফিলে গিয়েও হাততালি দেয়, নাচানাচি করে। প্রকৃত আলীমরা নয়, এখন ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করছে এসব ইসলামী বক্তা নামধারী ক্যানভেচার।

একজন ক্যানভেচারের ইসলামী বক্তা হওয়া আর ইসলামিক স্কলারের মাহফিলের বক্তা হওয়ার মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। কারণ ক্যানবেচার অতি নিম্নমানের মলমটি রঙিন মোড়কে ফুটপাতে বিক্রি করে চড়া দামে। এজন্য মলমটি ব্যবহার করার পর শরীরের পঁচা-ঘা কমার পরিবর্তে বাড়ে, পাশাপাশি নতুন নতুন রোগ-জীবাণু দেহের মধ্যে সংক্রমিত হয়। এটা অনেকটা ক্যানসার আক্রান্ত রোগীকে বিশেষজ্ঞ সার্জনের পরিবর্তে হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করানোর মতো।

৩১| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ২:২০

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ ভাই। শুভ রাত্রি।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ২:২৩

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: আবারো মন্তব্য করার জন্য কৃতজ্ঞতা রইলো ৷

৩২| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ভোর ৬:০৬

সোহানী বলেছেন: কিছুদিন পুরান ঢাকায় থাকতাম। শুক্রবার হলেই বাসার সামনের রাস্তা বন্ধ করে ওয়াজ চলতো সারারাত। অামরা যাতে কিছুই মিস না করি তাই তারা নিজ দায়িত্বে কম করে দশটা মাইক চারপাশে লাগাতো। ঘুমতো দূরে থাক জেগে থাকাও মুসকিল ছিল। এবং ওয়াজের মূল বিষয়ই ছিল নারী পুরুষ সম্পর্ক। বাধ্য হয়ে শোনা সে সব কথা শুনে কান লাল হয়ে যেত। শ্রোতারা আরো উৎসুক হয়ে শুনে আনন্দিত হতো। মেয়েদেরকে যত বেশী নোংরাভাবে উপস্থাপন করতে পারতো শ্রোতারা আরো আনন্দিত হতো।

আমার ইসলামিক জ্ঞান শূন্যের কোঠায়। কিন্তু এতটুকু জানি এ ধর্মের আকর্ষনেই মানুষ ছুটে আসে, জোবরদস্তি করে নয়। যে বিজ্ঞান বা সামাজিক দিক নির্দেশনা অাছে তা যুগের পর যুগ আধুনিকই আছে, এতটুকু মলিন হয়নি। কিন্তু আমাদের ভুল উপস্থাপনার কারনে আজ এ অবস্থা। ভুল ইনফরমেশান ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে।

আমার দেশে বিদেশে ধর্ম নিয়ে অন্য কারো সাথে কথা হলেই চার বিয়ে নিয়ে জানতে চাইতো। আমি যখন বলতাম এটি সত্য নয় তখন খুব আশ্চর্য্য হতো।.........

আসলে দেশে কিছু অশিক্ষিত আধা শিক্ষিত মানুষের হাতে ধর্মের নিয়ন্ত্রন থাকাতে মানুষের অজ্ঞতা বেড়েই চলছে।

অনেক ভালো লাগলো খুব প্রয়োজনীয় একটি বিষয় নিয়ে আলোকপাত করার জন্য। অামি জানি অাপনিই পারবেন অনেক কিছু বলতে।...................... ভালো থাকুন সবসময়ই।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো আপু৷এত ব্যস্থতার পরও সময় নিয়ে লেখাটি পড়েছেন এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি কমেন্ট করেছেন৷আপু, ওয়াজের নামে মাইকের ঝাঁজালো এই শব্দ দূষণ শুধু ঢাকায় হয় তা কিন্তু নয়; সারা দেশের একই হাল৷বিশেষ করে শীতের মৌসুমে এ অত্যাচার মাত্রাতিরিক্ত আকার ধারণ করে৷আগে শুধুমাত্র বড় মাদ্রাসা ও মসজিদে ওয়াজ মাহফিল হলেও এখন চিপা গলিতেও ওয়াজের মাহফিল হয়৷আর অনেক দূর পর্যন্ত মাইকের চোঙা টানিয়ে পাবলিককে এসব গিলতে বাধ্য করা হয়৷এতে ইসলামের কোন উপকার না হলেও আয়োজক ও বক্তার পকেট ভারী হয়৷

আর ওয়াজ মাহফিল হলে অবধারিতভাবে মহিলাদের টোঙানো হয়, ছোট করা হয়, পুরুষের বষ্যতা মেনে চলার জন্য হাজারো নিয়ম বর্ণনা করা হয়৷যতটুকু সম্ভব মহিলাদের ঘরের মধ্যে আটকে রেখে দাসত্বের তালিম দেওয়া হয়৷

ইসলামের ক্ষতি অন্য ধর্মাবলম্বীদের চেয়ে মূলতঃ মুসলমানরাই করছে বেশী। ইসলামের মূল যে শিক্ষা এবং চেতনা, সেটাই আজ হারাতে বসেছে। আর আল্লাহ সেজন্যেই মুসলমানদেরকে দৌড়ের উপর রেখেছেন! এখনও ঠিক না হলে ভবিষ্যতে আরও খারাবী আছে! সামনে মুসলমানদের জন্য আরো বড় বিপদ অপেক্ষা করছে।

আপু, শুভ কামনা সব সময় রইলো৷ভাল থাকুন ৷

৩৩| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৫৩

অভিশপ্ত জাহাজী বলেছেন: সহমত প্রকাশ করছি ভাইজান। তবে এই সমাজে এই সব বলতে গেলে লাঞ্চিত হবেন। তবুও সত্য তো আর ঢেকে রাখা যায়না।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:০১

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো আপনার প্রতি; খোঁজে খোঁজে এ লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে৷ধর্মের নামে ব্যক্তিগত চাওয়া পাওয়া, পারিবারিক ব্যবসা, গলাবাজি, মিথ্যা বুলি ছড়ানো, একে অন্যে গালিগালাজ করা এখন কমন বিষয় এদেশে৷কিছু মানুষ সমাজটাকে বর্বর করে তুলছে; এতে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে৷এজন্য বিবেকের তাড়না থেকেই বিষয়টি নিয়ে লিখেছি ৷

৩৪| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:১৬

অভিশপ্ত জাহাজী বলেছেন: হেলিকপ্টার হুজুরের খানকা এর পাশেই আমার বাড়ি। ছোট বেলা থেকেই মারাত্তক রকমের ভক্ত ছিলাম উনার। তবে বড় হওয়ার পর যখন ধর্ম নিয়ে ঘাটাঘাটি শুরু করলাম ,তখন খুবই বিরক্ত হয় নিজের উপর। কি করে এমন একজন মিথ্যাবাদী মানুষের ভক্ত ছিলাম। উনার মিথ্যা কথার,নোংরা ভাষার অনেক দলিল আর রাজস্বাক্ষীও আমি। কিছু বলার মত সাহস নেই। বাড়ি থেকে উনার লোকজন এসে তুলে নিয়ে যাবে। শুনলে অবাক হবেন কিনা জানিনা , আমাদের জেলার উঁচু শ্রেণীর রাজনীতিবিদ যারা সন্ত্রাস লালন পালন করে তারা থেকে শুরু করে বড় বড় চাঁদাবাজ , সন্ত্রাসীরাও উনার কাছ থেকে দোয়া খায়ের নিয়ে যায়।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



আপনার কথা প্রসঙ্গে বলি; আমার বাড়িও দেশের নামকরা এক পীরের বাড়ি থেকে পাঁচ মিনিট হাঁটা দূরত্বে (সিলেটের ফুলতলী পীর); এক দশক আগে পীর সাহেব মারা গেলেও দিনকে দিন উনার আশেকান বাড়ছে!! উনার ৭ ছেলের সবাই এখন পীরে কামেল!! ওয়াজের সিজন আসলে নাতিপুতিরা পর্যন্ত শিডিউল মেলাতে পারে না৷এখন অসংখ্য এনজিও তাদের বাড়িতে৷উনার প্রতিটা ছেলে কোটিপতি৷কেউ কেউ হাজার কোটির মালিক৷সবই ধর্ম ব্যবসার বদৌলতে৷এ ব্যবসায় টেক্স দিতে হয় না, পুঁজি খাটাতে হয় না৷শুধু লাগে ভাল অভিনেতার গুণাবলী৷এরা খুবই প্রভাবশালী হলেও আমাদেরকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সাহস কখনো হবে না ৷

৩৫| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:০৭

অভিশপ্ত জাহাজী বলেছেন: এদের ব্যাপারেই হয়ত হযরত মোহাম্মদ সঃ সতর্ক করে গেছেন।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:১৮

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



টিকই বলেছেন আপনি; এখন এদের বিরুদ্ধে কিছু বললে এরা আপনাকে ওহাবী, লামাযহাবী আর জাকিরনায়ক পন্থী ফিতনাবাজ বলবে!! এদের বিরাট সিন্ডিকেট আছে৷এরা দেশের অল্পশিক্ষিত আর ধর্মভীরু মুসলিমদের পকেট কাটছে কৌশলে; এরা ইসমামকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আর তাবিজ কবজ ও পানি পড়ার ধর্ম বানিয়ে দিয়েছে ৷

৩৬| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:১৯

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: গুরু, আমাদের সময় অর্থাৎ স্কুল জীবনে মিলাদে হাজিরা দিতাম জিলাপী খাওয়ার জন্য, মাঝে মাঝে মিষ্টি পাওয়া যেতো তবে দুর্লভ ঘটনা, আর রাত জেগে পড়তে হতো তাই মাঝে মাঝে ওয়াজেও যেতাম মাঝ রাতে খিচুড়ী খাওয়ার জন্য । আপনি আমাকে অনেক দিন আগের কথা মনে করে দিলেন - ধন্যবাদ গুরু, ধন্যবাদ ।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:২৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



গুরু,................
আমি তো মিলাদ মানেই সিন্নি খাওয়াকে বুঝতাম; এজন্য কে কি পড়ছে এগুলোর প্রতি আমার কোন আগ্রহ ছিল না, অপেক্ষা করতাম কখন খাওয়ার কাঙ্খিত ক্ষণ আসবে৷আর ওয়াজ মাহফিল মানেই ওয়াজের বাজার; মাহফিলের প্রতি কোন আগ্রহ ছিল না৷গুরু আপনার জন্য অনেক শুভ কামনা রইলো৷সময় সুযোগে লিখুন৷ব্লগে ভাল মানের লেখা কম হয় ৷

৩৭| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৩

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: সিলেটের এতো লোক লন্ডনে আবাসন !!! বাংলাদেশের আর কোনো জেলার লোক পৃথিবীর আর কোনো দেশে এভাবে তাদের রাজত্ব বিস্তার করেতে পারেনি বা নেইও - একটি ফিচার কি লিখা যায় এই বিষয়ে । সিলেটবাসীর যোগ্যতা, তাদের কর্মদক্ষতা ও তাদের বৃটিশ রাজত্ব !!!

***আমার নতুন লেখা আছে ব্লগে, আজই পোষ্ট দিয়েছি পড়তে পারেন।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



এ বিষয়ে লেখলে অনেক রূঢ় সত্য কথা বলতে হবে; তাই ইচ্ছা করেই লিখি না৷এদেশের মানুষ চাটুকারিতা আর প্রশংসা শুনতে চায়৷এজন্য নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখি৷আর আপনার পোস্ট এইমাত্র পড়ে আসলাম B-)

৩৮| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫১

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: বৃটিশরা আমাদের শোষন করেছে- অর্থ সম্পত্তি লুটে নিয়েছে। আমাদের শ্রিহট্টবাসী কিছু হলেও ফেরত আনছেন দেশে - কম কি !!!

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০১

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



গুরু..............
ঠিক বলেছেন; এটাও কিন্তু কম না৷রেমিট্যান্সে তো আসছে নিয়মিত ৷

৩৯| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১:৫৩

আরোগ্য বলেছেন: কাওসার ভাই আপনার বিশ্লেষণ তথ্যবহুল ও যুক্তিসঙ্গত। বর্তমানে মরহুম আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর ও সৌদি বসবাসরত শায়েখ আহমাদুল্লাহ এই দুজনের লেকচার ভালো লাগে। কাওসার ভাই চার্লস ডিকেন্স এর দ্য টেইল অব টু সিটিজ আমার খুব প্রিয় একটি উপন্যাস। আমার বিশ্বাস আপনার ও ভালো লাগে।আমার আন্তরিক ইচ্ছা এই উপন্যাস এর সারসংক্ষেপ আপনার লেখনীতে সবার সামনে ফুটে উঠুক। শুভ কামনা করছি।

০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ ভোর ৪:২৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ ভাই। লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে জেনে খুশি হলাম। আমিও এই দুজনের অনক লেকচার শুনেছি। আর চার্লস ডিকেন্সের এই উপন্যাসটি পড়া হয় নাই। পড়বো এখন। আপনি যেহেতু বলছেন নিশ্চয়ই পড়বো। আর, লেখাটি ভাল লাগলে সার সংক্ষেপ লেখার চেষ্টা করবো।

৪০| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:২০

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:

বাস্তব অভিজ্ঞতার সাথে মিলে জোরালো যুক্তি ও ক্ষুরধার বিশ্লেষণ লেখাটির মাধ্যমে অনেক কিছুই উম্মোচিত হল! ইসলাম শান্তির ধর্ম। এই লেখার মূল উদ্দেশ্য সেকথাই মনে হল! অজ্ঞতা, স্বার্থপরতা, প্রকৃত জ্ঞানের অভাব, অনুভবের অপরিপক্কতাই এমন অবস্থার জন্য দায়ী মনে হল। আশাকরি আমরা সবে সেসব উত্রে যেতে পারব!

২০ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৫৩

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



গুণী মানুষের আশীর্বাদ সব সময় আমাকে প্রেরণা যোগায়, ভাল লেখতে উদ্ভুদ্ধ করে। দেরীতে হলেও প্রিয় কবির চমৎকার মন্তব্য পেয়ে প্রীত হলাম। আসলে আমি গত কয়েক বছর থেকে ইসলামকে গভীর মনযোগে পর্যবেক্ষণ করেছি, ধর্মটাকে জানার চেষ্টা করেছি। পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মগুলোকেও জানতে, বুঝতে চেষ্টা করেছি। এ বিষয়গুলো নিয়ে লেখার আগে অনেক ভেবেছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিবেকের তাড়নায় দায়বদ্ধতা থেকে লিখেছি। মানুষ সচেতন হলে, ধর্ম নিয়ে নিজে থেকে জানার চেষ্টা করলে, ধর্মের নামে যারা ঘৃণা ছড়ায়, টাকা কাময় ও সমাজকে বিভক্ত করে তাদের বিষয়ে মানুষ যাতে সচেতন হয় এটাই আমার একান্ত চাওয়া।

মানুষের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। ধর্মের নামে সাধারন মানুষের পকেট কাটা বন্ধ হোক এই আশাবাদ রইলো। পাশাপাশি, মানুষের প্রকৃত ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করা ও জরুরী।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.