নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমাদের কথা।

কাজি রাশেদ

আমি বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর ও যুব মৈত্রীর কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক নেতা। ২০০৭ সাল পর্যন্ত ওয়ার্কার্স পার্টির মহানগর কমিটির সম্পাদক মন্ডলী র সদস্য ছিলাম। বর্তমানে নিষ্ক্রিয় । বিভিন্ন অনলাইনে লেখা লেখি করি। একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত

কাজি রাশেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবিগুরুর মহাপ্রয়াণ দিবসে।

০৫ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:১৪

২২শে শ্রাবন। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মহাপ্রয়ানের দিন। ৮০ বছর তিন মাসের মাথায় ঠিক দুপুর বেলায় সারা ভাররকে কাঁদিয়ে ভাসিয়ে চলে গেলেন বিশ্বকবি না ফেরার লোকে। যিনি বারবার মরনকে মহান বলেছেন, শ্যামসমান বলে আখ্যায়িত করেছেন সেই তিনিই সকল মায়া ত্যাগ করে চলে গিয়েছিলেন পরপারে। আর রেখে গেলেন বাঙ্গালীকে মানুষ হবার মন্ত্র। কবি গেয়েছেন-
মরণ রে, তুঁহু মম শ্যামসমান।
মেঘবরন তুঝ, মেঘজটাজুট,
রক্তকমলকর, রক্ত অধর পুট,
তাপবিমোচন করূণ কোর তব
মৃত্যু অমৃত করে দান।

বরীন্দ্রনাথ শুধুমাত্র নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকার যে সংস্কৃতি বাঙ্গালী ধারন করে ছিলো সেই সংস্কৃতিকে ভেঙ্গে চারিদিকের জানালা খুলে দেবার দীক্ষা দিয়ে বলেছেন পূর্ব পশ্চিম উত্তর দক্ষিন সবদিকের পথ খুলে দিয়ে আমাদের গ্রহন করতে হবে। শুধুমাত্র নিজেদের জ্ঞান অভিজ্ঞান দিয়ে সারা পৃথিবীর সাথে প্রতিযোগিতায় কুলিয়ে উঠতে পারবো না। আজ সময় শধু দেওয়া আর নেওয়ার মধ্য দিয়ে নিজেদের পূর্ণ করা।
বাংলা এবং বাঙ্গালীকে ধারন করে বাঙ্গালীর জীবনের সকল দিক নিয়ে লিখে যাওয়া একমাত্র রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মধ্যেই আমরা পাই। তাঁর গানে কবিতায় উপন্যাস আর ছোট গল্পে বাঙ্গালীর সারা দিনের যে খুটিনাটি পাচালী সব কিছুকে ধারন করে তিনি আমাদের দিয়ে গেছেন। একদিকে যেমন লালনকে আমাদের সবার কাছে নতুন করে তুলে ধরেছিলেন ঠিক তেমনি আসামের মুনিপুরী সমাজের লোকজ সাংস্কৃতিক কেও আমাদের কাছে সমান ভাবে উপস্থাপন করেছেন তার সৃষ্টিতে। নদীর মাঝির গান, ডাক হরকরার আপনমনে গেয়ে উঠা গান, আবার বাংলার বাহিরের যে প্রদেশগুলো ছিলো তাদের গান সাহিত্যকেও তিনি ধারন করে আমাদের জন্যে নতুন করে লিখে গেছেন। তিনি আসলে আমাদের সবাইকে যেমন চারিদিকের সকল কিছু থেকে গ্রহন করতে বলেছিলেন ঠিক তেমনি নিজেও তার কর্মে বিভিন্ন ভাষা, সংস্কৃতি, আচার আচরন, রীতিনীতি সবকিছু থেকে আহরন করে আমাদের জন্যে জ্ঞানের এক বিশাল ভান্ডার তৈরী করে রেখে গেছেন।
একমাত্র বিশ্বকবির সৃষ্টি থেকেই পৃথিবীর তিনটি দেশে জাতীয় সঙ্গীত গ্রহনই প্রমান করে দেয় তিনি আসলে শুধুমাত্র বাঙ্গালীরই নয় সারা বিশ্বের, গোটা মানব জাতির।
মানবতা আর অসাম্প্রদায়িকতা ছিলো তাঁর জীবনের ধ্রুব সত্য। তিনি যেমন ভারতবর্ষের ধর্মগুলো নিয়ে অনেক লিখেছেন তেমনি এর বিভিন্ন আচার অনাচার নিয়ে সমালোচনা করতেও পিছপা হোন নাই। জালিয়ানাবাগ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে তিনি তাঁর নাইট উপাধী প্রত্যাখান করতে এতোটূকু দ্বিধা করেন নাই।
ধর্মের ব্যাপারে তাঁর কোন গোঁড়ামি ছিলো না। হিন্দু ধর্মের ব্যাপারে যেমন তার কোন আকর্ষণ ছিলো না তেমনি আবার হিন্দু ধর্মের প্রশংসাও করেছেন তার বিভিন্ন লেখাতে। অন্যদিকে একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী কবি বলেছেন –
মহাবিশ্বে মহাকাশে মহাকালমাঝে
আমি মানব কী লাগি একাকী ভ্রমি বিস্ময়ে।
তুমি আছ বিশ্বেশ্বর সুরপতি অসীম রহস্যে
নীরবে একাকী তব আলোয়।
আমি চাহি তোমা –পানে
তুমি মোরে নিয়ত হেরিছ, নিমেষবিহীন নত নয়নে।

আজকের এই হানাহানির পৃথিবীতে কবিগুরুর গান কবিতা ছোটগল্প এবং উপন্যাস প্রবন্ধ বড়ো বেশী প্রাসঙ্গিক হয়ে দাড়িয়েছে। তার সৃষ্টি আমাদের সঠিক পথে চলার নির্দেশনা দিবে এবং সকল বাধা বিপত্তিতে আমাদের সাহস যোগাবে। ধর্মের নামে মানুষে মানুষে যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলছে তা থেকে পরিত্রান পেতে তাঁর অনুসারিত পথ আমাদের বেছে নিতে হবে।
কবির ভাষায়-
হে মহাজীবন, হে মহামরন, লইনু শরন, লইনু শরন।
আঁধার প্রদীপে জ্বালাও শিখা,
পরাও পরাও জ্যোতির টিকা – করো হে আমার লজ্জাহরন।
পরশরতন তোমারি চরণ—লইনু শরন, লইনু শরন।
যা- কিছু মলিন, যা- কিছু কালো,
যা- কিছু বিরুপ হোক তা ভালো—ঘুচাও ঘুচাও সব।।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.