নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কোলাহল ত্যাগী

মুহাম্মাদ খাইরুল ইসলাম

মুহাম্মাদ খাইরুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভয়াবহ পর্ণোগ্রাফী

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:২৫

কিশোর যুবক নির্বিশেষে আজ পর্ণোগ্রাফি নামক এক ভয়াবহ ভাইরাসে আক্রান্ত ।
সর্বত্র এই ভাইরাস মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে । প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় আজ
সবখানে পৌঁছে গেছে ইন্টারনেট , শুধু একটা ইন্টার্নেট কানেকশান সুবিধা সম্বলিত
মোবাইল সেট থাকলেই পৃথিবী হাতের মুঠোয় । আর আমাদের বাবা-মায়েরা কিছু
না বুঝেই আদরের সন্তানের আবদার রাখতে গিয়ে তার হাতে তুলে দেন দামী
হ্যান্ডসেট । বলা বাহুল্য যে এখন বেশিরভাগ কিশোর যুবকরাই ভালোর চেয়ে মন্দটাই
গ্রহণ করছে ।

তারা ইন্টারনেট থেকে অশ্লীল ভিডিও ডাউনলোড করে দেখছে । নষ্ট হচ্ছে তাদের
মানবিক পবিত্রতা । ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক মানষিক বিকাশ । আচার-আচরণ ও
চরিত্রে আসছে নেতিবাচক পরিবর্তন । আমাদের অদূরদর্শী মন শুধু বাহ্যিক
পরিবর্তনটাই দেখতে পায়, বাহ্যিক পরিবর্তনের জন্যে যে আত্নার কলুষতাই দায়ী
তা আমরা বুঝতে অক্ষম । শুধু ব্যাক্তি পর্য্যায়ে নয় এই ব্যাধি পরিবার, সমাজ
ছাপিয়ে এখন জাতীয় সমস্যায় পরিনত হয়েছে । প্রচলিত অর্থে যাকে পর্ণো বলে
তা ছাড়াও আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সিনেমা/সিরিয়ালগুলোও কম কিসে ?
এসবও একেকটা উন্নতমানের পর্ণো ছাড়া কিছুই নয় ।
আমাদের কালচার সোসাইটিগুলোও তাদের অনুকরণ করছে ।

যা হোক আমি আমার সংক্ষিপ্ত প্রবন্ধে পর্ণোগ্রাফির শারীরিক ও মানষিক ক্ষতির
পাশাপাশি ব্যাক্তি পরিবার ও সামাজিক জীবনে এর মারাত্নক প্রভাব নিয়ে
সংক্ষিপ্ত আলোচনা করবো । আলোচনায় আমার নিজের বক্তব্যের চেয়ে বিভিন্ন
গ্রহণযোগ্য গবেষণা প্রতিবেদনেরই প্রাধান্য থাকবে ।
এখানে আমি নিন্মোক্ত পয়েন্টে আলোচনার প্রয়াস পাবো

১ পর্ণোগ্রাফির শারীরিক বা সাস্থ্যগত প্রভাব
২ মানবিক সত্বার উপর এর প্রভাব
৩ পরিবার ও সমাজের উপর এর প্রভাব
৪ ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে পর্ণোগ্রাফী

পর্ণোগ্রাফির শারীরিক বা সাস্থ্যগত প্রভাব :-

পর্ণোতে আসক্তিদের মস্তিষ্কে এটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে । দৈনিক নয়াদিগন্ত
ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বরাত দিয়ে বলে যে সম্প্রতি ক্যামব্রিজ বিশ্ব
বিদ্যালয়ের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, যারা পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত
তাদের মস্তিষ্কে মাদকাসক্তদের মতোই নেশা কাজ করে । মাদক গ্রহণের ফলে
আসক্ত ব্যক্তিদের মস্তিষ্কের যে অংশে অনুভূতি কাজ করে ঠিক সেই অংশই
উদ্দীপিত হয়ে ওঠে । দীর্ঘদিন যাবৎ পর্ণোতে আসক্ত থাকার ফলে মস্তিষ্কের
এক বিরাট অংশ বিকল হয়ে পড়ে ।

মানবিক সত্বার উপর এর প্রভাব :-

আসক্তরা যখন পর্নো দেখে । মাদকাসক্তদের যেমন স্বাভাবিক জীবনে ছন্দপতন ঘটে,
বিপর্যয় বিশৃঙ্খলা নেমে আসে তেমনি পর্নো আসক্তরাও ধীরে ধীরে অনেক ক্ষেত্রে
স্বাভাবিকতা হারিয়ে ফেলে এবং মানষিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয় । গবেষণায় আরও
বলা হয় যে সাধারণত ১৩ বছরের কিশোররা ইন্টারেনেট পর্নোতে বেশি আগ্রহী এবং
তারা মেয়েদেরকে যৌনতার একটি বিষয় হিসেবে চিন্তা করতে শুরু করে । এবার ভাবুন
এ ধরনের মানষিকতা মানবিক দিক হতে কতটা ভয়ংকর ।
প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয় , নিষ্পাপতার দিন শেষ হয়ে গেছে ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোবিজ্ঞানী জেফরি সেটিনোভার বলেন, আধুনিক বিজ্ঞান
আমাদের বুঝতে সাহায্য করেছে পর্নোগ্রাফির কেমিক্যাল আসক্তি হেরোইনের মতোই ।
শুধু প্রয়োগটা ভিন্ন ।

পরিবার ও সমাজের উপর এর প্রভাব :-

মাদকাসক্ত থেকে যেমন অনেকে বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ে তেমনি
পর্নোগ্রাফি আসক্তি থেকেও নানা ধরনের অপরাধের জন্ম নিচ্ছে । আসক্তদের
মধ্যে দেখা দেয় নানা ধরনের বিকৃতি । এর প্রভাবে ব্যক্তি, পরিবার এবং সামাজিক
জীবনে দেখা দেয় নানা বিপর্যয় । বিভিন্ন সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে পর্ণো
আসক্তরা একধরনের ফ্যান্টাসিতে ভোগে এবং বাস্তব জীবনেও তারা পর্ণো
নায়িকার মতো সঙ্গিনী চায় । আর তা না পাওয়ায় তাদের অনেকেই বাস্তব জীবনে
সুখী হতে পারে না ।

কোনো কোনো সমীক্ষায় বলা হয়েছে অধিক পর্ণো আসক্তদের অনেকেরই অনুভূতি
ধীরে ধীরে ভোঁতা হয়ে যায় এবং বাস্তব জীবনে সঙ্গিনীর প্রতি আগ্রহ হারাতে থাকে ।
কারণ তাদের মন-মগজে স্থান করে নেয় পর্ণো চরিত্রগুলো । শুধু সেগুলোতেই
তারা উদ্দীপিত হয় বলে মন্তব্য করা হয়েছে এসব সমীক্ষায় । এর ফলে তাদের মধ্যে
নেমে আসে হতাশা । এভাবেই পর্নো আসক্তি থেকে ধীরে ধীরে জন্ম নেয় পারিবারিক
অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা ।
যেহেতু পর্ণোভ্যস্তরা বিপরীত লিঙ্গকে শুধু যৌনতার একটি বিষয় হিসেবে মনে করে
সেহেতু তাদের মধ্যে মৌলিক মানবীয় গুনাবলির দৃষ্টিকোন থেকে পারষ্পরিক মূল্যমান
কমে যায় । এর ফলাফল কি হতে পারে দূরদর্শী মাত্রই তা উপলদ্ধি করতে পারেন ।

ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে পর্ণোগ্রাফি :-
পৃথিবীর সব প্রধান ধর্মগুলোই অশ্লীলতাকে বর্জ্যনের আদেশ দেয় ।
বিশেষত ইসলাম এ ব্যাপারে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে । কোরআনের সূরা নূরে আল্লাহ
তায়ালা বলেন "হে নবী আপনি মুমিন পুরুষদের বলুন , তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত
রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের সংরক্ষণ করে" পরের আয়াতে মুমিন নারীদের
ব্যাপারেও আল্লাহ তায়ালা একই নির্দেশ দিয়েছেন । ইসলামের মূলনীতি হলো কোন
জিনিস নিষিদ্ধ করার সাথে সাথে তার মধ্যে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাব্য চোরাগলিগুলোও
সে বন্ধ করে দেয় ।
সেই মূলনীতির ভিত্তিতেই কোরআন বলছে " তোমরা ব্যাভিচারের নিকটবর্তিও হয়ো না
" আল্লাহর এই বানীর অর্থ নিশ্চয়ই কারো বোঝার বাকী থাকার কথা নয় ।
আল্লাহ তায়ালার নিষিদ্ধ ঘোষিত স্থানগুলোর আশেপাশে হাটতেও নিষেধ করা হয়েছে ।
এটাকে কোরআনে চিত্রিত করা হয়েছে "খুতুওয়াতিশ শাইতন" অর্থাৎ শয়তানের
পদাঙ্ক হিসেবে । শয়তানের পদাঙ্ক হলো মানুষকে চুড়ান্ত বিভ্রান্ত করার জন্য
পর্য্যায়ক্রমিক পন্থা । পর্নো হচ্ছে ব্যাভিচার নামক হারামের গন্তব্যের একেবারে দোরগোড়ায়
প্রবেশের মতোই ।

শেষকথা :-

সবদিক বিবেচনার পর এর যে ভয়াবহ চিত্র ফুটে ওঠে এরপরও এসব চলতে পারে না ।
যেহেতু তরুণ সমাজ এই ভাইরাসে বেশী আক্রান্ত তাই তরুণসমাজকে রক্ষায় ক্ষতিকর
ওয়েবসাইট বন্ধের জন্য এখনি পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী । মুক্ত যৌনতার দেশ খোদ যুক্তরাজ্য
সরকারকে পর্ণো সাইটগুলো বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের
গবেষণা প্রতিবেদনে ।

পর্নোগ্রাফি এবং পর্নো আসক্তি নিয়ে বিশ্ব ব্যাপী নানা ধরনের গবেষণা এবং সমীক্ষা চলছে ।
সেই সাথে এর ক্ষতিকর দিকও তুলে ধরা হচ্ছে । এর বিরুদ্ধে মানুষের মধ্যে সচেতনতা
সৃষ্টির জন্য কাজ করে যাচ্ছে কেউ কেউ । নৈতিকতার দিক ছাড়াও শরীর এবং মনোবৃত্তি
কোনো দিক দিয়েই যে এটা কল্যাণকর নয় সেসব বিষয়ও তুলে ধরার চেষ্টা করছেন
অনেকে । এখনো সময় আছে জাতির রক্তপ্রবাহ তারুণ্যের ভেতরকার এই ক্যান্সারের
ভাইরাস প্রতিহত করার । সময়োচিত সিদ্ধান্ত গ্রহনই বাঁচাতে পারে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৫১

কাউয়ার জাত বলেছেন: সরকার চাইলে সব পর্ণ সাইট বন্ধ করে দিতে পারে কিন্তু দেয় না। আসলে এভাবেই একদিন পৃথিবী ধ্বংস হবে।

২| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:১৯

মুহাম্মাদ খাইরুল ইসলাম বলেছেন: হতাশ হবেন না । পৃথিবীতে সত্য ও সুন্দর প্রতিষ্ঠিত হবেই নয়তো ইমাম মাহদী নেতৃত্ব দিবেন কিসের ়়

৩| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৪০

আজিব দুনিয়ার মানুষ। বলেছেন: পর্ণোগ্রাফি বলতে সাধারণত পর্ণ সাইটে যেসব পাওয়া যায় সেগুলোকে বুঝান হয়। কিন্তু ইউটিউব খুললে দেশিয় তরুন-তরুণীদের বানান যেই ১৮+ ভিডিওগুলো পাওয়া যায় এগুলো কিন্ত সফটকোর পর্ণ। নায়লা নাঈমের মত মডেলরাই এর নায়িকা। এগুলোও সমান ক্ষতিকর।

৪| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৫

মুহাম্মাদ খাইরুল ইসলাম বলেছেন: মদ কারখানায় তৈরী করুক আর বাড়ীতে , কার্যকারীতা একই । আল্লাহ হেফাজাত করুক ।

৫| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:১৫

আ উন্মাদ বলেছেন: যুব সমাজের পর্নো আসক্তি কেবল ইসলামিক চেতনাই দূর করতে পারবে,,,,

৬| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৩৭

মুহাম্মাদ খাইরুল ইসলাম বলেছেন: চমৎকার সমাধান

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.