নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভালবাসি লিখতে। ছোট ছোট অনুভূতিগুলোকে শব্দে প্রকাশ করতে। ভালবাসি দেশ, মাটি ও মানুষকে।

খালেদা শাম্মী

ভালবাসি লিখতে। ছোট ছোট অনুভূতিগুলোকে শব্দে প্রকাশ করতে। ভালবাসি দেশ, মাটি ও মানুষকে।

খালেদা শাম্মী › বিস্তারিত পোস্টঃ

অন্যায় রুখবে কে?

১৮ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:৪৪

অন্যায়!

তিন অক্ষরের ছোট একটি শব্দ। ছোট শব্দ হলেও এর ব্যাপকতা কিন্তু কম নয়। সমাজের প্রতিটি স্তরে স্তরে লুকিয়ে আছে এই অন্যায় শব্দটি। প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে। ছোট কিংবা বড়, যেই আকারেরই হোক, এই অন্যায় এবং অন্যায়কারীকে চিরতরে রুখে দাঁড়ানো যে সম্ভব নয়, এটা কিন্তু আপনাকে মানতেই হবে।

অন্যায়কারী কারা আসলে? এই আমি, আপনি, আমরাই আসল অন্যায়কারী। জানি, বলবেন, "আমি তো কোন অন্যায় করিনি। কোনভাবেই নাহ।" সত্যি তো! আপনি অন্যায় করেননি কিন্তু কখনো কি কোন অন্যায় দেখে চুপ থাকেননি? কখনো কি খুব সামান্য অন্যায়কে অন্যায়ের কাতার থেকে বের করে দিয়ে পাশ কাটিয়ে যাননি?

যদি এমন করে থাকেন, তাহলে আমি আপনাকে অবশ্য দোষ দিব না। কেন জানেন? কারন আমিও এমন হাজারোবার অন্যায়ের প্রতিবাদ করে হেয় হয়েছি। হেয় হয়ে দিনশেষে চুপ হতে বাধ্য হয়েছি কখনো কখনো।

আচ্ছা, একটা খুবই সামান্য উদাহরণ দেই। আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে আমার সামনে বসা মহান (!) ব্যক্তিটি নকল করে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। নকল বলতে হাতে কলমের কালিতে লেখা বিদ্যে নয়। রীতিমত বই ফটোকপি করে কেটে আনা পৃষ্ঠা তার পশ্চাদভূমির নিচে রেখে বের করে দেখে নকল করে পরীক্ষা দেয়া। ঠিক সেই মুহূর্তেই আমার নৈতিকতা জেগে উঠে। শুধু যে জেগে উঠেছে তা নয়, আমাকে আমার সুশিক্ষাকে কুশিক্ষা বলে ধিক্কার জানানো শুরু করল। আর কোথায় যাই! ম্যাডামকে ডেকে ধরিয়ে দিলাম অনৈতিক কাজে লিপ্ত মহান (!) ব্যক্তিটিকে।

ঘটনা এখানেই শেষ হতে পারতো। তা হলো না। পরীক্ষা শেষে আমি কেন তাকে ধরিয়ে দিলাম, তার জন্য বন্ধুবান্ধব নিয়ে কৈফিয়ত দাবীতে আমার সামনে এসে দাঁড়ালো সেই ব্যক্তি। আমি যতই বলি, আমি আমার শিক্ষা এবং দায়িত্ববোধ থেকে এ কাজ করেছি, তারা মানতে নারাজ। এখানে কৈফিয়ত পর্ব না বাড়াতে দিয়ে শেষ করলাম দৃঢ়রূপে।

কি ভাবছেন, ঘটনা শেষ! না। এর ফলাফল হলো আরো ভয়াবহ। তারা সরাসরি কিছু বলে কথায় আটকাতে না পেরে পেছনে পেছনে মন্তব্য করা শুরু করল। আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের কিছু অংশ হলো বিষাক্ত। আমার অন্যান্য শুভাকাঙ্ক্ষীদের চোখেও আমি হলাম দোষী। কারন, আমি একজন নির্দোষ (!) ব্যক্তি যে কিনা চাকুরী করার কারনে পড়ার সময় পায়না (!) বলেই পরীক্ষায় নকল করে, কেন আমি তা ধরিয়ে দিলাম! কিছু সুসভ্যা নারীদেরও দেখলাম আমার উপর হাসতে কারন আমি তাদের ছেলেবন্ধুর নকল করার পথে বাঁধা দিয়েছি। আহা শিক্ষা!

আমি কিছুই বলিনি। বলিনি, আমিও চাকুরী করেই পরীক্ষা দিয়েছি নকল ছাড়াই। বলিনি, আমার শিক্ষা আমায় অন্যায় কিংবা অনৈতিক কাজ সহ্য না করে তার প্রতিবাদ করা শিখিয়েছে। আমার শিক্ষা আমায় বিবেক দিয়েছে। সেই বিবেককে কিছু বিবেকহীন মানুষের সাথে অযথা তর্কে জড়াতে আমার আপত্তি আছে। কেউ বলেছিলেন, "তুমি নির্বোধদের সাথে তর্ক কোরোনা। তুমি জ্ঞানী হলেও তারা তোমায় তাদের পর্যায়ে নামিয়ে দিবে।" জ্বী, হ্যাঁ, এটা আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি এবং মেনে চলি।

এবার বলুন, এই সামান্য কারনে যদি কারো সাথে এত কিছু হয়, তাহলে সে কেন যাবে বড় বড় অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে! যদি কাউকে ঘুষ দাবী করতে দেখে সে, কেন প্রতিবাদ করবে! কবে নির্ভয়ে মুখ তুলে প্রতিবাদ করতে পারবে সবাই! কিভাবে অন্যায় মুছে যাবে আমাদের এ স্বপ্নের জন্মভূমি থেকে! কিভাবে দূর হবে এ কুশিক্ষা! কিভাবে জাগানো যাবে কিছু ঘুমন্ত বিবেককে, যেসব বিবেকের ঘুম থেকে জেগে ওঠার সময় হয়েছে। সময় হয়েছে পরিবর্তন আনার.....





১৮ তম দিন
মার্চ- ২০১৮


সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।


ছবি - নেট


মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:১৬

ফয়সাল ফাহাদ বলেছেন: অন্যায়কারী সমাজের সব জায়গাতেই পাবেন। তবুও ভয় না পেয়ে সত্যের পথেই আমাদের চলা উচিত ।

১৮ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৭

খালেদা শাম্মী বলেছেন: ধন্যবাদ ফয়সাল সাহেব। এ মানসিকতা গড়ে উঠুক সবার মাঝে।
শুভকামনা রইল।

২| ১৮ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৪

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: সুন্দর লেখা ভালো লাগল।

১৮ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৮

খালেদা শাম্মী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ হাসু সাহেব অনুপ্রাণিত করার জন্য।
ভাল কাটুক আপনার দিন।

৩| ১৮ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:১১

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: শাম্মী! আপনার লেখা পড়লাম। ভাল হয়েছে। আপনার বিবেচনা বোধকে(প্রতিবাদ করা) সাধুবাদ জানাই।


আপনি তো তিন দিনেই বাজিমাত করে দিলেন:P

১৮ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:২৭

খালেদা শাম্মী বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ নিজাম সাহেব। আমার শুধু একটাই ইচ্ছে, এসব ব্যাপার শুধু লেখা কিংবা মুখের কথাতেই আটকে না থাকুক।সমাজের একটা বড় অংশের মানসিকতা এবং চিন্তাভাবনা উন্নত হোক।

বাজিমাত কে করতে চায় নিজাম সাহেব! আমি তো আমার ভাবনা শেয়ার করতে পেরেই খুশি। :)

দিনের বাকিটা সময় ভাল কাটুক, এই শুভকামনা।

৪| ১৮ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৩৬

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: লেখার শুরুর প্রথম থেকেই আপনার শব্দচয়ন, বচনভঙ্গী অসাধারণ। ভবিষ্যতে আপনি ব্লগের উজ্জ্বল নক্ষত্র হবেন।:)

বুড়োদের(পুরাতন ব্লগারদের) জ্বালাতন করা(পোস্টে মন্তব্য) শুরু করেন করেন:)

১৮ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০২

খালেদা শাম্মী বলেছেন: জ্বালাতন শুরু করব বৈকি...

৫| ১৮ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৪৮

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: যাহ্ কি লিখলাম?

৬| ১৮ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৫৫

কালীদাস বলেছেন: যাস্ট আ কিউরিসিটি: পাবলিক অর প্রাইভেট? দুই জায়গাতেই পড়িয়েছি এবং দুই জায়গাতেই নকল ধরেছি পরীক্ষার গার্ড দেয়ার সময়, সেজন্যই জানতে চাওয়া; কেন জানি পাবলিক মনে হচ্ছে।

নৈতিকতা শূণ্যের কোঠায় ঠেকেছে, কাকে বুঝাবেন? :((

১৮ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৯

খালেদা শাম্মী বলেছেন: প্রাইভেট হোক আর পাবলিক, নৈতিকতা হারানো ছাত্র কিংবা ছাত্রী দেখা যাচ্ছেই। এই শিক্ষা তারা পাচ্ছে ছোটবেলা থেকেই। আমার আফসোস হচ্ছে, তারা ম্যাচুরিটি লেভেলে আসার পরও এসব নিয়ে না ভেবে, সামনের পক্ষকে দোষারোপ করে।

আমি প্রাইভেট এর কথা বলেছি। তবে নৈতিকতা শূন্যের কোঠায় এমন ছাত্রছাত্রীদের অবশ্য প্রাইভেট বা পাবলিক বলে কোন কথা নেই।

ধন্যবাদ কালীদাস সাহেব। আপনার গঠনমুলক মন্তব্য প্রেরণা যুগিয়েছে । ভাল কাটুক আপনার দিনগুলো।
নৈতিকতা জেগে উঠুক।

৭| ১৩ ই মে, ২০১৮ রাত ১০:১১

পুলক ঢালী বলেছেন: ভাল লাগলো। আমিও ছাত্রের নকল ধরার কারনে দুর্ভোগে পড়েছিলাম। নীতি নৈতিকতা পাঠ্যে আছে বাস্তবে পাওয়া দুষ্কর।
ভাল থাকুন।

১৪ ই মে, ২০১৮ সকাল ১০:৫০

খালেদা শাম্মী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। সত্যিই তাই। বাস্তবে নীতি মেনে চললে হেয় হওয়াই যেন স্বাভাবিক ব্যাপার সমাজে। ভাল থাকবেন, এই শুভকামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.