নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভালবাসি লিখতে। ছোট ছোট অনুভূতিগুলোকে শব্দে প্রকাশ করতে। ভালবাসি দেশ, মাটি ও মানুষকে।
(১
প্যান-প্যাসিফিক হসপিটাল।
তিনতলা থেকে শূন্যদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মেয়েটি। কতই বা বয়স হবে! বার কি তের বছর। ক্লাস সিক্সে পড়া শাফা নামের মেয়েটি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আসেনি। এসেছে তার মায়ের জন্য। তার মা শাহানা বেগম গত তিন মাস আগে এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অথচ পুরোপুরিভাবে সুস্থ হচ্ছেন না। শাফা ঠিক জানে না, কেন তার মায়ের এ অবস্থা! তার বাবা মোনায়েত চৌধুরীও তাকে এ ব্যাপারে খোলাখুলিভাবে কিছু বলেননি। কিছু না বলা হলেও শাফার ধারনা, তার মায়ের খুব বড় ধরনের কোন অসুখ হয়েছে। এই কারনেই তার বাবা তাকে কিছু বলছেন না।
(২)
সকাল ১০ টা।
শাফা সকালবেলা ঘুম ভাঙতেই দেখে তার বাবা গোমড়ামুখে বসে আছে। কি হয়েছে জিজ্ঞেস করতেই হড়হড় করে কথা বলা শুরু করলেন। সবই তার মাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ। সারারাত বাবা মেয়ে দুজনে মিলে শাহানা বেগমের বিছানার কাছে জেগে ছিলেন। কথা বলতেই বলতেই ভোর হয়ে গেছে। শাফা কখন ঘুমিয়ে পড়েছিল তা মনে করতে পারল না। তার মা অবশ্য এসব কিছুই টের পেলেন না। গত টানা পাঁচদিন থেকে তিনি অজ্ঞান হয়ে হাসপাতালের বিছানায় আছেন। তার হালকা ঘোলাটে হলুদ রঙা চোখ শাফার মনে কাঁপন লাগিয়ে দিচ্ছে। প্রচণ্ড ভয় শাফাকে কাবু করে ফেলছে। এ ভয় মাকে হারাবার, একা হয়ে যাবার ভয়!
(৩)
দুপুরবেলা।
শাফা এখন তার বড় খালামনির বাসায় মনের সুখে ছবি আঁকছে। এই মুহূর্তে ছবি আঁকার চেয়ে বড় কোন কাজ যেন এই পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই। তার বাবা হাসপাতালে আছেন তার মায়ের সাথে। তার মা আগের চেয়ে সুস্থ আছেন শুনেছে সে। এমন সময় খালামনির ডাক এলো। আঁকাআঁকি বন্ধ করে ডাইনিং রুমের দিকের পা বাড়াল শাফা। বড় খালামনি, বড় খালু সবাই গম্ভীর মুখে বসে আছেন। বড় ভাইয়া শাফাকে কাছে ডেকে বললেন, "কারও বাবা-মা সারাজীবন বেঁচে থাকে না রে। চল, হাসপাতালে যাব সবাই।"
ধ্বক করে উঠল শাফার বুকের ভেতর। 'এখন এসব কথা কেন? হাসপাতালেই বা এখন সবাই কেন যাবে? কি হয়েছে? আম্মুর কিছু হয়নি তো? আচ্ছা, আম্মু কি মারা গেছে? আমি কি সত্যি সত্যি একা হয়ে গেছি?'
(৪)
হাসপাতালের বারান্দায় মোনায়েত সাহেব বসে আছেন। কিছুক্ষণ আগে তার স্ত্রী গত হয়েছেন। প্রায় পাঁচ মাসের মত অসুস্থতার পর আজ তার স্ত্রী শান্তি পেল। তার স্ত্রীর সকল কষ্টের অবসান হয়েছে। এমন হবার কথা ডাক্তারই তাকে বলেছিলেন। এইতো সেদিনও তার স্ত্রীর কাছে আর তিনমাস সময় আছে জেনেও তিনি ভেঙে পড়েছিলেন। আর আজ তিনি শান্ত হয়ে বসে আছেন। তিনি জানেন তার মেয়ে হাসপাতালের দিকে রওনা হয়েছে। আজ তিনি ভেঙে পড়লে মেয়েকে সামলানো যাবে না। মনে মনে স্ত্রীর কাছে করা প্রতিজ্ঞা স্মরণ করছেন তিনি। মারা যাবার আগ মুহূর্তেও শাহানা বলছিল তার মেয়েকে পড়াশোনা করানোর কথা। সবসময় আদরে মানুষ করার কথা। কত স্বপ্ন ছিল শাহানার মেয়েকে নিয়ে। আজ সব শেষ হলো। মৃত্যুর কাছে স্বপ্নের সমার্পণ!
ওইতো লিফটের দরজা খুলে যাচ্ছে। মেয়েটার মুখ দেখা যাচ্ছে। ওই মুখে ভয় আর অবাক দৃষ্টিও বোঝা যাচ্ছে। শাফাকে খবরটা দিতে হবে। তার মায়ের আর পৃথিবীতে না থাকার খবর। তাকে এখনই বলতে হবে, 'মা নামক অধ্যায় তার জীবন থেকে মুছে গেছে।"
১২ তম দিন
মে- ২০১৮
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
১২ ই মে, ২০১৮ সকাল ১০:৫৩
খালেদা শাম্মী বলেছেন: শাফা এগিয়ে যাবে হয়তো। অসংখ্য ধন্যবাদ পড়ার জন্য। শুভকামনা রইল।
২| ১২ ই মে, ২০১৮ সকাল ১০:৪৬
মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: আমি আসতে না আসতেই লেখককে লেখাটা চোখের সামনে পড়িল। কেন???
এমনিতেই ব্লগের একজন আমাকে বলিতেছে, পাঠক নাকি বিশেষ এক প্রজাতিকে বেশী মন্তব্য করে।
পাঠক পোস্ট পড়া কমাইয়া দিবে!
১২ ই মে, ২০১৮ সকাল ১০:৫৬
খালেদা শাম্মী বলেছেন: সেই একজনকে সন্দেহ করিতে মানা করিবেন। নিজাম সাহেব কাহারো সাথে ভেদাভেদ করিতে পারেন না, ইহা আমি জানি। ধন্যবাদ পড়িবার জন্য। শুভেচ্ছা জানিবেন নিজাম সাহেব।
৩| ১২ ই মে, ২০১৮ সকাল ১০:৫৬
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: আমি আসতে না আসতেই লেখককে লেখাটা চোখের সামনে পড়িল। কেন???
এমনিতেই ব্লগের একজন আমাকে বলিতেছে, পাঠক নাকি বিশেষ এক প্রজাতিকে বেশী মন্তব্য করে।
নিজাম ভাই, অভিযোগটা গুরুতর!!!
শাম্মি আপা, শুভ সকাল। লেখাটি চমৎকার হয়েছে।
১২ ই মে, ২০১৮ সকাল ১০:৫৯
খালেদা শাম্মী বলেছেন: শুভ সকাল কাওসার ভাই। অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য। নিজাম সাহেবকে তাই বলছিলাম, এই অভিযোগ এর ভিত্তি নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। ভাল কাটুক আপনার দিন, এই শুভকামনা।
৪| ১২ ই মে, ২০১৮ সকাল ১১:১১
রাজীব নুর বলেছেন: প্যান প্যাসিফিক হাসপাতাল তো আমার বাসার কাছে।
শাফার জন্য অনেক শুভ কামনা।
১২ ই মে, ২০১৮ সকাল ১১:২৬
খালেদা শাম্মী বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ নুর ভাই। ভাল থাকবেন।
৫| ১২ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১:০৩
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: শুভ দুপুর শাম্মী আপু
মৃত্যু এমনি এক সত্য যাকে অস্বীকার করার কোন উপায় নেই,তবে প্রিয়জনের মৃত্যু মেনে নেওয়া খুবই কঠিন ।ভাল লেগেছে পোষ্ট।
১২ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১:১৩
খালেদা শাম্মী বলেছেন: শুভ দুপুর তারেক ভাইয়া। অস্বীকার করা যায়না তবে মেনে নেয়া কঠিন, দারুণ কথা বলেছেন। আপনার ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগলো। অনেক ধন্যবাদ এবং শুভকামনা।
৬| ১২ ই মে, ২০১৮ দুপুর ২:৪৭
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: বেশ ভাল লিখেছেন আপু। শাফা আজ বড় একা হয়ে গেল। ওদিকে মন্ডল ভাই আর কাওসার ভাইকে সামলান গিয়ে। দুজনেই খুব দুশ্চিন্তায় আছেন। কী সব অভিযোগ শুনছি। প্যান হসপিটল থেকে বার হয়ে রাজীব ভায়ের বাসায় দুমুঠো খেয়ে নিই। সবাইমিলে চলুন।
অনেক ভাল লাগা আপনাকে।
১২ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৩:১৪
খালেদা শাম্মী বলেছেন: দারুণ বলেছেন পদাতিক ভাইয়া। চলুন সবাই মিলে তাহলে।
অনেক ধন্যবাদ এবং শুভকামনা আপনার জন্য।
৭| ১২ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৪:৪১
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ নুর ভাই। ভাল থাকবেন।
আপনিও ভালো থাকবেন।
৮| ১২ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৭
শামচুল হক বলেছেন: ভালো লাগল লেখা। ধন্যবাদ
১৩ ই মে, ২০১৮ সকাল ১০:২০
খালেদা শাম্মী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ এবং শুভকামনা।
৯| ১৩ ই মে, ২০১৮ সকাল ৯:৫৫
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ভাল লিখেছেন।
১৩ ই মে, ২০১৮ সকাল ১০:২১
খালেদা শাম্মী বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ এবং শুভকামনা।
১০| ১৩ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১২:২১
প্রামানিক বলেছেন: অনেক ভালো লাগল। ধন্যবাদ
১৩ ই মে, ২০১৮ দুপুর ২:৩৩
খালেদা শাম্মী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই। শুভকামনা রইল।
১১| ১৪ ই মে, ২০১৮ সকাল ১১:৫২
আহমেদ জী এস বলেছেন: খালেদা শাম্মী ,
মৃত্যু থামিয়ে দেয় অনেক কিছুই। আবার কিছুই থেমে থাকেনা কেউ হারিয়ে গেলে চিরতরে ।
খারাপ হয়নি লেখা । সাবলীলতা ছিলো লেখায় । লিখতে থাকুন ।
১৪ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১২:২৪
খালেদা শাম্মী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মূল্যবান মন্তব্যের জন্য। ভাল থাকবেন, এই শুভকামনা।
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই মে, ২০১৮ সকাল ১০:৪৪
তারেক ফাহিম বলেছেন: মৃত্যুর কাছে স্বপ্নের সমার্পন ঘটে।
শাফার জন্য শুভকামনা।