নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নীলা কফির কাপটা হাতে নিয়ে রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এল। মৃদুপায়ে হেঁটে বেডরুমের জানালার ধারে এসে বাইরে তাঁকিয়ে দেখল- এখনো বৃষ্টি পড়ছে। সেই সকাল থেকেই ঝুম বৃষ্টি! সামনের আম গাছটা বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার ঝকঝক করছে। এপ্রিলের এই গরমেও নীলার একটু শীত শীত করল। কে জানে সারাদিনের বৃষ্টির কারনে কিনা! রুমটাও অন্ধকার হয়ে আছে। দুই রুমের এই ভাড়া বাসাটা দু বছরেও তার ছাড়া হলনা। নীলা মগটা হাত বদল করল। কফিটা এত বেশি গরম যে হাতে মগ ধরে রাখা কষ্টকর। নীলা আনমনে মগের ধোঁয়ার দিকে তাকিয়ে অতীতে হারিয়ে গেল।
আরিফের সাথে নীলার বিয়েটা পারিবারিক ভাবেই সম্পন্ন হয়েছিল। আজ থেকে প্রায় চার বছর আগের কথা। নীলাকে যখন বরপক্ষ দেখতে আসে সেদিনই আরিফকে নীলা প্রথম সামনা সামনি দেখেছিল। দেখতে সুন্দর না হলেও সুপুরুষ বলা যায় তাকে। লম্বা একহাড়া দেহের আরিফের কথাবার্তায় একটা ব্যক্তিত্ব ফুটে থাকে। গলার আওয়াজের আত্মবিশ্বাস তার ব্যক্তিত্বের সাথে পুরোপুরি মানিয়ে যায়। কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই তাদের বিয়ে হয়েছিল। তারপর এই ভাড়া বাসায় তাদের টোনাটুনির সংসার।
প্রথমদিকে নীলার বেশ কষ্ট হয়েছিল সংসার গোছাতে। যত দিন যেতে থাকে নীলার সংসারও পরিপূর্ণ হতে থাকে। এটা সেটা কিনে ঘর গোছানো থেকে শুরু করে মাঝে মাঝে ঢাকার বাইরে ঘুরতে যাওয়া- বেশ চলছিল তাদের সংসার। আরিফের সাথে তার সম্পর্কও মজবুদ হতে থাকে। আরিফও কখনও এটা সেটা কিনে কখনও ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে ওকে চমকে দিত। কিন্তু তাই বলে তাদের মাঝে যে কথা কাটাকাটি বা ঝগড়া হয়নি এমন নয়। সংসারে টুকটাক তো লেগেই থাকে।
নীলার সেদিনের ঘটনাটা মনে পড়ল। পুরো দিনটির কথা এখনও সে ভুলতে পারেনা। সামান্য একটা কথা নিয়ে সকালে নাস্তার টেবিলে তাদের মাঝে হালকা ঝগড়ার সুত্রপাত হয়। এরপর নীলা রাগ করে বেডরুমে চলে আসে। আরিফ অবশ্য কিছু সময় পরই তার রাগ ভাঙ্গাতে আসে। কিন্তু সেদিন কেন জানি তার জেদ চেপে যায়। সে কিছুতেই আরিফের সাথে কথা বলেনা। আরিফের অনেক মিষ্টি কথাতেও তার মান ভাঙ্গেনা। কিন্তু অফিসে যাবে বলে আরিফ আর দেড়ি করেনি। মন খারাপ ভাবটা নিয়েই আরিফ অফিসে চলে যায়। কিন্তু এরপর থেকে নীলার খারাপ লাগা শুরু হয়। মাঝে আরিফের সাথে ফোনে একবার কথাও হয়, কিন্তু কথায় কি আর মন ভরে? বার বার ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে কখন ছটা বাজবে। কখন আরিফ বাসায় আসবে। সেদিনের অপেক্ষার সময় যেন আর নড়েনা!
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে নীলা দেখে মাত্র পাঁচটা বিশ বাজে। মানে আরিফ অফিস থেকে রওনা হয়েছে। আর একটু পরে ও চলে আসবে। নীলা একটা নীল রঙের শাড়ি পড়ে সুন্দর করে সেজেছে। আজকে ঘরে ঢুকলেই আরিফকে সে চমকে দিবে। ঠিক পৌঁনে ছটায় তার মোবাইলে আরিফ ফোন দেয়। কিন্তু আরিফের বদলে একজন অপরিচিত কন্ঠ শুনতে পায়।
“হ্যালো, আপনি কি নীলা বলছেন?”
“হ্যাঁ, আপনি কে বলছেন? আরিফ কোথায়?”
“আপা, এই মোবাইলের যে মালিক সে তো এ্যাক্সিডেন্ট করেছে। এনারে হাসপাতালে নেয়া হইতেছে। ওনার হোন্ডাটা পুলিশে আটকাইসে। আপনে তাড়াতাড়ি আসেন”।
নীলা সেদিন পাগলের মত ছুটে গিয়েছিল। কিন্তু হাসপাতালে গিয়ে সে আরিফকে আর জীবিত পায়নি।
নীলা হঠ্যাৎ বাস্তবে ফিরে আসে। হাতের কফিটা পুরো ঠান্ডা হয়ে আছে। সে একচুমুকে পুরো কফিটা খেয়ে নিল। ঠান্ডা কফি খেয়ে নীলার যেন শীত লাগাটা আরো একটু বেড়ে গেল।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:১৯
নিরব জ্ঞানী বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আমার বাকি গল্পগুলো পড়ার আমন্ত্রণ রইল। প্রতিটি গল্পের শেষে চমক রাখার চেষ্টা করেছি।
২| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৬
কলমের কালি শেষ বলেছেন:
২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:২০
নিরব জ্ঞানী বলেছেন:
৩| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:০৩
খেলাঘর বলেছেন:
কফির যায়গায় 'চা' দিয়ে দেন, তা'হলে কেমন হবে?
২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:২৩
নিরব জ্ঞানী বলেছেন: আসলে অনেক আগে (২০০৩-৪ এর দিকে) ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের একটা ম্যাগাজিনে এই গল্পটা লিখেছিলাম। আজকে স্মৃতি থেকে গল্পটা নতুন করে লিখলাম। মনে পড়ে গেল ওখানে কিন্তু ‘চা’ই লিখেছিলাম।
৪| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:২৬
আমিনুর রহমান বলেছেন:
গল্পে +
২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:২৪
নিরব জ্ঞানী বলেছেন: + এর জন্য ধন্যবাদ।
৫| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:২৮
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ভালো লাগলো ।
শুভেচ্ছা নিবেন
২২ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৭:৫৪
নিরব জ্ঞানী বলেছেন: ধন্যবাদ।
আছেন কেমন?
৬| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:৫১
তুষার কাব্য বলেছেন: ভালো লাগেনা হারিয়ে যাওয়ার গল্প...
২২ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৭:৫৫
নিরব জ্ঞানী বলেছেন: গল্প তো গল্পই!
পড়ে ভুলে যান।
৭| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৮:৪৯
দীপংকর চন্দ বলেছেন: সুন্দর উপস্থাপন!
শুভকামনা রইলো। অনিঃশেষ।
২৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:২৩
নিরব জ্ঞানী বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন ভাইয়া।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১২:১৭
বাড্ডা ঢাকা বলেছেন: বেশ চমক আছে গল্পতে