নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১
রাতের ঢাকা আর দিনের ঢাকার মধ্যে কোন মিলই নেই। অতি পরিচিত রাস্তাও কেমন যেন অপরিচিত লাগে। আমি রাজা বাজারের একটা রাস্তা ধরে হেঁটে যাচ্ছি। রাত এখন প্রায় ১২টা হবে। পুরো রাস্তাটাতে আমি ছাড়া আর কেউ নেই। অনেক দূর থেকে একটা খালি রিক্সা আসছে। আমার পাশ দিয়ে চলে যাওয়ার সময় রিক্সাওয়ালা আমার দিকে তাকাল। সে ভেবেছে আমি বুঝি তাকে ডাকবো। কিন্তু আমি তার দিকে না তাকিয়েই মাথা নেড়ে তাকে বিদায় করলাম। এই রাস্তাটা আমার খুবই পরিচিত। আগে আমরা রাজা বাজারেই থাকতাম। কিন্তু এখন এই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছি। সেই দূর্ঘটনার পর এখানে থাকতে চায়নি আমার মেয়ে-রুপা। এই একটি দূর্ঘটনা আমার আর আমার মেয়ের জীবনটাই পালটে দিল।
প্রায় তিন বছর আগের কথা। সেদিন সোমা অফিসের পর তার এক বান্ধবীর বাড়িতে যায় কোন এক কাজে। ফিরতে ফিরতে প্রায় রাত এগারোটা বেজেছিল। রাজা বাজারের এই রাস্তাগুলো খুবই অন্ধকার, ছিনতাই করার জন্য কুখ্যাত। আমি আর রুপা বাসায় তার জন্য চিন্তা করছিলাম। রুপা মাকে ফোন দিয়ে আমাকে আস্বস্ত করেছিল যে সোমা আর বেশি দূরে নেই। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই বাসায় চলে আসবে। কিন্তু রিক্সাটা টি এন্ড টি মাঠের পাশ দিয়ে একটা গলিতে ঢুকতেই কিছু ছিনতাইকারী তার রিক্সাটা থামিয়েছিল। সোমা অবশ্য কোন বাঁধাই দেয়নি। কিন্তু ছিনতাই শেষে এক ছিনতাইকারী তার চাকুটা সোমার পেট বরাবর ঢুকিয়ে দেয়। এটা ছিনতাই-এর একটা ডিফেন্সিভ কৌশল। যাতে পালানোর সময় পথচারীরা কোন বাঁধা না দেয় এবং আহত মানুষটিকে নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এরপর সোমাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু সোমা আর বাঁচেনি।
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আমি হেঁটে যেতে থাকি। সামনে রাস্তাটা আরও অন্ধকার। হঠ্যাৎ অন্ধকার ফুঁরে তিনটি ছেলে আমাকে ঘীরে ধরে। তিনটি ছেলেকেই আমি খুটিয়ে দেখে নিলাম। দেখে মনে হচ্ছে ছাত্র এবং মধ্যবিত্ত বা ধনী পরিবারের। কিন্তু তাদের চোখ এবং স্বাস্থ্য দেখে বুঝা যায় তারা মাদকে আসক্ত।
“এই বুড়া, যা আছে সব বের কর, তাড়াতাড়ি!”
তাদের জন্য আমার মায়া হল। বেচারা!
আমি আমার হাততাকে ধীরে ধীরে পেছনের পকেটে নিয়ে যাই।
২
“আব্বা তুমি এখনো ঘুমাচ্ছ! দেখ, আজকের পেপারের একটা খবর। আর কাল এত দেরি করে ফিরেছিলে কেন? আমার কত দুশ্চিন্তা হয় তুমি জান?”
আমি ঘুম জড়ানো গলায় বলি-
“হাঁটতে গিয়ে দেরি করে ফেলেছি। তুই জানিস না, আমার ডায়াবেটিকস! প্রতিদিন হাঁটা লাগে। কেন, কি এমন খবর যে আমাকে ডেকে তুললি!”
“খবরটা হল -ছিনতাই করতে গিয়ে তিন ছিনতাইকারী নিহত। খুব ভাল হয়েছে। এমনই হওয়া উচিত। খবরটা পড়ে, ফ্রেশ হয়ে নাস্তা খেতে আস। তোমার নাস্তা দিচ্ছি”।
রুপা এধরনের খবরে খুবই খুশি হয়। সে একরকম নাচতে নাচতে আমার রুম থেকে বেরিয়ে গেল।
আমি পেপারটা হাতে নিয়ে খবরটাতে চোখ বুলিয়ে নিলাম।
‘কাল রাতে ঢাকার পশ্চিম রাজা বাজারের থার্ড লেনে তিনজন যুবক নিহত হয়েছে। তাদেরকে ব্লাঙ্ক পয়েন্ট রেঞ্জ থেকে গুলি করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে একই পিস্তল থেকে তিনজনকে গুলি করা হয়। তাদের সাথে থাকা চাকু এবং ক্ষুর দেখে সন্দেহ করা হচ্ছে তারা ছিনতাইকারী এবং ছিনতাই করতে গিয়েই তাদের মৃত্যু হয়েছে। অবশ্য এর কোন চাক্ষুষ প্রমাণ মিলেনি……’
রুপার খুশির জন্য আমি সব করতে পারি! সব…
আমি আমার লকারের ড্রয়ারটা খুলে সাইলেন্সার লাগানো পিস্তলটাকে একটু দেখে নিলাম। পিস্তলটা পরিষ্কার করে গুলি ভরে রাখতে হবে।
২৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৬
নিরব জ্ঞানী বলেছেন: আমার হতাশা কিছুটা হলেও আপনি ধরতে পেরেছেন আপু।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
২| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১:০৮
শেরজা তপন বলেছেন: লিখতে থাকেন- পরে সময় করে না হয় শিরোনাম দিবেন। শুধু ক, খ,গ শিরোনাম দিলেই বা কি- লেখার বিষয়বস্তুটাই গুরুত্বপূর্ণ!
২৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৭
নিরব জ্ঞানী বলেছেন: লেখার চেষ্টা করি।
ধন্যবাদ ভাইয়া।
৩| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১:১৯
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ভালো লাগলো ++++++
বুমেরাং , বিপ্রতীপ , কয়েকটি বুলেট এবং একটি রুপোলী ছুরি , গার্বেজ কালেক্টর এখন এই কয়টাই মাথায় আসলো ।
ভালো থাকবেন
২৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:০০
নিরব জ্ঞানী বলেছেন: আপনার দেওয়া নামটাই নিলাম, একটু পরিবর্তন করে!!
শিরনাম দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন ভ্রাতা।
৪| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১:২৮
অপু তানভীর বলেছেন: চমৎকার ছোট গল্প !
২৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:০০
নিরব জ্ঞানী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া।
৫| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১:৩৫
জনৈক রুয়েটিয়ানের ব্লগ বলেছেন: ঘরে ঘরে হুমায়ূন আহমেদ। ফুহ!
২৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:০৬
নিরব জ্ঞানী বলেছেন: আপনি এমন একজন লেখকের সাথে আমার তুলনা করলেন যে আপনার প্রশংসা আমি নিতে পারলাম না। দুঃখিত ভাইয়া।
আপনার ফুঁতে আমি উড়তেও পারলাম না। আপনার ফুঁতে জোড় নেই।
বাসায় বেশি করে দুদু খাবেন। ফুঁতে জোড় বাড়বে।
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৯
ডরোথী সুমী বলেছেন: কাহিনী ভাললাগার মত নয়। কিন্তু এভাবেই প্রকাশিত হয় আমাদের হতাশাগুলো। শুভ কামনা।