নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিরব জ্ঞানী

হুমমম......

নিরব জ্ঞানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

এনালগ ফোন

১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৮



509804

দুটো ফোন নাম্বার আমার মুখস্ত। প্রথমটা আমার বর্তমান মোবাইল ফোন নম্বর আর দ্বিতীয়টা আমাদের পরিবারের প্রথম এনালগ ফোন নম্বর-509804। সময়টা নব্বই দশকের প্রথম দিকে-১৯৯২-৩ হবে হয়তো। ঘিয়ে রঙের একটা ফোন সেট ছিল আমাদের। ঠিক উপরের ছবিটার মতোই। গোল চাকতির মতো ডায়ালটা যেন এক যাদুকরী খেলনা ছিল। কি যে ভালো লাগতো ওটা ঘুরাতে! ঘোরালে কিট কিট একটা শব্দ শোনা যেত। যত নম্বর ঘোরাবো, তত বার কিট কিট শব্দটা হত। 0 নম্বরে ঘোরালে দশবার শুনতে পেতাম শব্দটা।
আমরা মোট চার ভাইবোন। বড় আপার চার বছরের ছোট- ছোট আপা। ছোট আপা, আমি আর আমার ছোট ভাই পিঠাপিঠি। ফোনের রিং বাজলে কে দৌঁড়ে ফোন ধরবে তা ছিল আমাদের প্রতিযোগিতামূলক খেলা। যে দৌঁড়ে ফোন ধরত সে যেন বিশাল যুদ্ধ জয়ী- এমন ছিল তখনকার অনুভূতি।

বেশির ভাগ সময় আব্বাই ফোন দিত তখন অফিস থেকে। এছাড়াও প্রায় সব ফোনই ছিল আব্বার পরিচিত বন্ধু অথবা অফিসের কেউ। এক আঙ্কেলের কথা এখনো মনে আছে। উনাকে আমরা হাফিজ আঙ্কেল বলে ডাকতাম। উনি ফোন দিলে সাথে সাথে আব্বাকে চাইতেন না, আগে আমাদের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলতেন। আমরা যেই ফোন ধরিনা কেন উনি আমাদের গলার স্বর শুনে ঠিক ঠিক নাম বলতে পারতেন। এখন বুঝি উনি হয়তো এটা খুব উপভোগও করতেন।

তখন একবার ফোন দিলে যতক্ষণ কথাই বলি না কেন বিল ছিল একই। মানে প্রতি কল ১.৫ টাকার মতো। এক মিনিট কথা বললে যা বিল এক ঘন্টা কথা বললেও একই বিল। তাই একবার ফোন দিলে আমরা অনেক্ষণ ধরেই কথা বলতাম। বিলের কোন টেনশন ছিল না। আরেকটা ব্যাপার ছিল- কোন এক নম্বরে ফোন করলে তখন সময় বলতো। এখন আর নম্বরটা মনে নেই। সেই নম্বরে ফোন দিলে একটা মেয়ে কন্ঠ সেই মুহূর্তে যে সময় থাকতো সেই সময়ই বলতো। যেমন দুপুর বারটা বাজলে বলতো-‘এখন সময় হচ্ছে দুপুর বারটা বেজে শুণ্য মিনিট শুণ্য সেকেন্ড’। এটাও আমাদের একটা খেলা ছিল। আমরা প্রায়ই ফোন করে শুধু শুধু সময় শুনতাম। সার্ভিসটাও মনে হয় তখন ফ্রি ছিল।

ফোনের সিস্টেম যখন এনালগ থেকে ডিজিটাল হল তখন টি এন্ড টি থেকে এক লোক এসে আমাদের বাসার ফোন সেটটি বদলে দিল। নতুন ফোনটা ছিল বর্তমান ফোন গুলোর মত বোতাম সহ। কিন্তু বাড়তি এত বোতাম ছিল না। সেই সেটটিও ছিল খুব সুন্দর। গাঢ় লাল আর চকলেট রঙের মাঝামাঝি এক রঙ। বোতাম গুলো ছিল কালো রঙের আর বোতামে নম্বরগুলো ছাপা ছিল সাদা রঙে। নতুন ফোনের রিংটাও ছিল আগের ফোনটা থেকে ভিন্ন। তখন নতুন ফোন পেয়ে আমরা সবাই খুব খুশি কারণ ডায়াল করতে তখন আর ঘোরানোর ঝামেলা নেই। খালি বোতাম টিপলেই হত। আসলে তখন নতুন কিছু পেলেই খুব খুশি হতাম।

এর পর আরো অনেক ফোন সেট বদল হয়েছে। সেগুলোর কথা আর মনে নেই অথবা স্মৃতিতে হয়তো তেমন দাগ কাটেনি। আসলে মানুষের জীবনে ‘প্রথম’ কোন কিছু যেমন দাগ কাটে ‘পরের’ গুলো তেমন ভাবে আমাদের মনে জায়গা করে নিতে পারে না। সেটা প্রথম ফোন সেটই হোক, প্রথম স্কুলটাই হোক অথবা প্রথম প্রেমিকাই হোক।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:০৬

বেগুনী ক্রেয়ন বলেছেন: "১৪" তে ডায়াল করলে সময় বলত

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:২৫

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ, বেগুনী ক্রেয়ন। :)

২| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৮

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


জীবনে যা কিছু প্রথম সবই সুখময় স্মৃতি।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:২৭

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: ঠিক বলেছেন অথর্ব ভাই। :D

৩| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ২:২২

রুদ্র জাহেদ বলেছেন: অনেক পুরোনো এবং প্রথম দিককার স্মৃতিগুলো খুব আনন্দ দেয়।+

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:২৮

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: + এর জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনার মন্তব্যেও +

৪| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৪

মোহাম্মদ হৃদয় বলেছেন: বাহ্ বেশ তো!!! পুরোনো দিনের কিছু স্মৃতি মনে আবার জাগিয়ে দিলেন ;)

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩২

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: মাঝে মাঝে খুব ছোটবেলার স্মৃতি মনে পড়ে যায়। স্মৃতিগুলোই মানুষের সম্পদ।

৫| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:১৯

মুদ্‌দাকির বলেছেন: ২৮৩৪৬১ নানী বাড়ির নম্বর নিজেরটা মনে নাই। ঐ একটা নম্বরেই ফোন করতাম ছোট বেলায়

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:৩৪

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: :)

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.