নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিরব জ্ঞানী

হুমমম......

নিরব জ্ঞানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সময়

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৫



ইদানিং সময় ব্যাপারটা মাথার মধ্যে খুব ঘুরপাক খাচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের গড় বয়সের অর্ধেক সময় পার করেছি বলেই হয়তো কেবল সময়ের কথা মনে হচ্ছে। কেবলই মনে হয় সময়তো ফুরিয়ে যাচ্ছে! খুব ছোটবেলায় আমার অলস দূপুর কেটেছে বিছানায় শুয়ে শুয়ে খোলা জানালা দিয়ে আকাশের চিল দেখে। খুব উচুঁতে উড়ন্ত চিল দেখে দেখে কখন যে বিকেল হয়ে যেত টেরই পেতাম না। সময়টাকে তখন মনে হতো স্থির। এক একটা দিনকে মনে হত বিশাল বড়। সেই সকালে ঘুম থেকে উঠে স্কুলে যাওয়া, তারপর বাসায় এসে গোসল করে ভাত খাওয়া, দূপুরে ঘুমানোর চেষ্টা করা, বিকেলে খেলাধুলা করেও দিন ফুরোতে চাইতো না।

স্কুলের এক বিজ্ঞ বন্ধুর কাছেই শুনেছিলাম আমরা আসলে চতুর্মাত্রিক জগতের প্রাণী। ত্রিমাত্রিক জগৎ সম্পর্কে আমার তখন একটা আবছা ধারণা ছিল, কিন্তু চতুর্মাত্রিক জগৎ কি তা আমার জানা ছিল না। তাই জিজ্ঞেস করাতে সে বলেছিল ত্রিমাত্রিক জগতে যেমন দৈর্ঘ্য, প্রস্থ আর উচ্চতা থাকে, চতুর্মাত্রিক জগতে আরও একটা মাত্রা থাকে, চতুর্থ মাত্রাটি হল সময়। শুনে আমি খুব বুঝেছি (কিছুই না বুঝে) এমনভাবে মাথা নেড়ে ফুটবল খেলতে ছুটে গিয়েছিলাম। এখন কিছুটা অনুমান করতে পারি। পরম স্থির স্থান বলে নাকি কিছুই নেই। যেহেতু মহাবিশ্ব সম্প্রসারণশীল, সেহেতু স্থানও আপেক্ষিক। কোন বস্তুর স্থান অন্য একটি বস্তুর সাপেক্ষে নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু আসলে দুটি বস্তুই চলমান। সময়ও নাকি আপেক্ষিক। বস্তুর গতির সাথে সাথে সময়ও পরিবর্তীত হয়। মানে আমার যদি একটি যমজ ভাই থাকতো আর সে যদি আমার মত অলস না হয়ে একজন মহাকাশচারী হত তাহলে নাকি সে আমার থেকে ধীরে ধীরে বুড়ো হত। এটা আসলে অনেকটা সময় পরিভ্রমণের মতো। তার সময়, আমার সময় থেকে ধীরে চলতো।

ধরুন আজকের আকাশটা মেঘমুক্ত এবং আমাবস্যা। রাতের আকাশে তাকিয়ে আপনি কি দেখতে পাবেন? অবশ্যই এক আকাশ তারা। পৃথিবীর সবচেয়ে নিকটবর্তী তারাটি হল সূর্য। তার চেয়ে একটু দূরে আছে আরো তিনটি তারকার একটি সমষ্টি যার নাম আলফা সেন্টরাই। সেখান থেকে আলো আসতে সময় লাগে ৪.৩ বছর। মানে এখন আপনি যদি আলফা সেন্টরাই এর দিকে তাকান তাহলে ৪.৩ বছর আগে যেই আলো সেখান থেকে রওনা দিয়েছিল, এই মুহুর্তে আপনি তা দেখতে পাবেন। মানে কি দাঁড়ালো? আপনি আসলে আলফা সেণ্টরাই-এর ৪.৩ বছর অতীতকে দেখছেন। সূর্য থেকে আলো আসতে সময় লাগে ৮ মিনিট। তারমানে আপনি সূর্যের দিকে তাকালে (যদিও সরাসরি সূর্যের দিকে তাকানো ঠিক না) আপনি আসলে সূর্যের অতীতকে দেখছেন। এই মুহূর্তে সূর্য ধ্বংস হয়ে গেলেও আরো ৮ মিনিট আমরা বেঁচে থাকব।

আপনি যদি আপনার হাতের দিকে তাকান আর তা যদি আপনার চোখ থেকে ৫০ সেমি দূরে থাকে তাহলে আপনার হাতে আলো প্রতিফলিত হয়ে আপনার চোখে আসতে সময় লাগবে ০.০০০০০০০০১৬৬৮ সেকেন্ড। তারপর তা আপনার মাথায় প্রসেস হতে আরো ০.০০১৩ সেকেন্ড সময় লাগে। তারমানে আপনি কখনোই আপনার বর্তমানকে দেখতে পাবেন না। আপনি অনবরত যা দেখছেন তা হল আপনার অতীত। আগে শুনেছিলাম মানুষ মৃত্যুর আগে নাকি চোখের সামনে তার অতীত দেখতে পায়। এখন তো দেখছি মানুষ সারা জীবনই তার অতীত রূপটি দেখে।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:১২

চাঁদগাজী বলেছেন:

টের পেয়েছেন, সময় বহমান! ভালো

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:২০

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: হা হা হা। জ্বী ভাইয়া, এতো দিনে টের পেলাম।

২| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৫২

দীপংকর চন্দ বলেছেন: অসম্ভব ভালো লাগলো ভাই!

প্রিয়তে রাখলাম।

শুভকামনা অনিঃশেষ জানবেন।

ভালো থাকবেন। সবসময়।

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:২৩

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: প্রিয়তে নেবার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া। :)

৩| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৩৬

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: চমৎকার কথা বলেছেন তো বিজ্ঞানের এই ক্ষুদ্র কনসেপ্টটি নিয়ে। ভাল লাগলো বেশ।

তবে চতুর্থ মাত্রাটা আসলে সময়ই কিনা - তাতে আমার কিছুটা সন্দেহ আছে।
প্রতিটি মাত্রার সাথেই সময়ের সম্পর্ক আছে।

শূন্য মাত্রা থেকে সময়ের সাথে অগ্রসর রেখাটাই প্রথম মাত্রা। প্রথম মাত্রা থেকে সময়ের সাথে আড়াআড়ি ভাবে আরেকটি প্রথম মাত্রায় দ্বিতীয় মাত্রা মানে তল পাওয়া যায়। তৃতীয় মাত্রাটাও পাওয়া যায় সময়ের সাথে উলম্বভাবে আরেকটি প্রথম মাত্রার যোগ হলে - মানে শূণ্যস্থানটা।
তাহলে চতুর্থ মাত্রা তো হিসেবে সময়ের সাথে তৃতীয় মাত্রার এগিয়ে চলাটাকেই বুঝায়।

সেইক্ষেত্রে চতুর্থ মাত্রাটা কিন্তু কাল বা ডিউরেশন।

:)

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:৩১

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: "প্রতিটি মাত্রার সাথেই সময়ের সম্পর্ক আছে।"

আপনি ঠিকই বলেছেন। এখন স্থান আর কাল-কে আলাদা করে ভাবার অবকাশ নেই। বরং স্থান-কাল (Time-Space) বলেই ভাবা হয়।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

৪| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:২৯

সায়েদা সোহেলী বলেছেন: আপনি কখনোই আপনার বর্তমানকে দেখতে পাবেন না। আপনি অনবরত যা দেখছেন তা হল আপনার অতীত। আগে শুনেছিলাম মানুষ মৃত্যুর আগে নাকি চোখের সামনে তার অতীত দেখতে পায়। এখন তো দেখছি মানুষ সারা জীবনই তার অতীত রূপটি দেখে।


এই কমেন্ট ও আপনি দেখতে দেখতে অতীতের , যা আর ফিরিয়ে নেয়া যাবেনা., জীবনের যে অর্ধেকের বেশী সময় চলে গেছে সেটাও ফিরে পাবো না । এটাই জগতের সত্য :(



১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৯

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: ধন্যবাদ আপু আপনার মন্তব্যের জন্য। আসলেও সময় খুব দ্রুত চলে যায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.