নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিরব জ্ঞানী

হুমমম......

নিরব জ্ঞানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোট গল্পঃ আমার অন্ধকার

২৩ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১২:১৩

আমার মাথার ভিতরটা ঝাঁ ঝাঁ করতে লাগলো। ডাক্তারের কথামতো আমি চোখের পাতাদুটো খুব ধীরে ধীরে খুলেছিলাম, কিন্তু গাঢ় অন্ধকার থেকে হঠাৎ আমি অন্য একটি জগতে চলে আসি। একেই কি আলো বলে? এতো তীব্র, এত প্রখর! আলোর তীব্রতা এত বেশি ছিল যে ঝট করে চোখদুটো বন্ধ করে ফেলি। নিজের অন্ধকার জগতে ফিরে আসতে পেরে খুব ছোট করে একটা স্বস্তির প্রশ্বাস ফেললাম। আমার চার পাশে হঠাৎ গুঞ্জন উঠে। ডাক্তারের অতি পরিচিত কন্ঠস্বরটা শুনতে পেলাম। ‘ভয় পাবেন না, আবার ধীরে ধীরে চোখ খুলুন’।
মার কন্ঠস্বরটাও শুনতে পেলাম, ‘বাপরে, চোখ খুল। আমারে দেখ’।

আবার আমি চোখ খোলার চেষ্টা করি। এবার আগের থেকে আরো সতর্কভাবে, আরো ধীরে ধীরে। প্রথমেই লক্ষ্য করলাম আমার সামনে কয়েকটি মানুষের কন্ঠস্বর কথা বলে উঠল। কিন্তু কথাগুলো বিভিন্ন দিক থেকে আসছে এবং খুব ভয়ংকর কুৎসিত কিছু একটা থেকে কন্ঠস্বর গুলো বেরিয়ে আসছে। ভাল করে লক্ষ্য করে বুঝতে পারলাম এরা আসলে মানুষ এবং এরা একটি না বরং একাধিক কুৎসিত চেহারা থেকে বেরিয়ে আসছে। এরই মাঝে একটি কুৎসিত মানুষ আমার দিকে এগিয়ে এসে আমার কাধঁ স্পর্শ করে। তাঁর কণ্ঠস্বরটা শুনেই বুঝতে পারি ইনিই আমার মা। ‘বাবা! বাবারে, তুই কি আমাকে দেখতে পারতেছিস’।

আমার ভিতরটা হঠাৎ গুলিয়ে উঠে। মনে হয় বমি করব। কি বিশ্রী দেখতে আমার মা! কালো কালো দুটো গোলাকৃতির কিছু অনবরত এদিক ওদিক ঘুরছে। কিছু সময় পর পর আবার উপর থেকে কিছু একটা সেগুলোকে ঢেকে দিচ্ছে। কথা বলার সময় বীভৎস ভাবে কিছু একটা ফাঁকা হয়ে এর ভেতর থেকে সরু কিছু একটা নড়ছে।

আমি চোখ বন্ধ করে, আগে যেভাবে দেখতাম, সে ভাবেই মাকে দেখলাম। হাত দিয়ে মার মুখ স্পর্শ করে। হ্যাঁ, এইতো আমার মা। সেই অতি পরিচিত মুখ, সেই চোখ, নাক, ঠোঁট, কান। সেই একই আকৃতি, একই মসৃনতা।

আমি আবারো ধীরে ধীরে চোখ খুললাম। কিন্তু মার মুখ এবার খুব দ্রুত পালটে গেল। কিছু একটা মার মুখের উপর কিলবিল করে হেঁটে বেড়াচ্ছে। কিন্তু সেগুলো হাঁটার ফলেই আমি মাকে দেখতে পারছি। তারমানে এগুলো আমার হাত। আমার এতগুলো হাত? আমার হাত এত বিচ্ছিরি! আবার আমার ভিতরটা গুলিয়ে উঠে। পেটের ভিতরে পাক খেয়ে খেয়ে কিছু একটা আমার মুখ থেকে বেড়িয়ে পড়ে। আমি বমি করে দেই।

ঘটনার আকস্মিকতায় সকলে ঘাবড়ে গেল। আমার সামনে থেকে অনেকে দ্রুত সরে গেল। মনে হয় আমার বমির কারণে। সেই দৃশ্য এতই দ্রুত ঘটল যে আমি সহ্য করতে পারলাম না।

পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে আমার বেশি সময় লাগেনি। আমি আমার আগের অন্ধকার জগতে ফিরে যেতে চাই। আমি ধীরে ধীরে আমার হাতগুলো আমার চোখদুটোর ভিতরে নিয়ে.....................।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১:০৫

সুব্রত দত্ত বলেছেন: ভালো লিখেছেন। কিছু দুঃসাহসিক ভাবনার প্রকাশ আছে। আমরা সাধারণত এভাবে ভাবতে অভ্যস্ত নই অথবা ভাবলেও গোপন করে ফেলি অবচেতন মনের গহীনে। তবে গল্পটা অনুগল্প পর্যায়ের হয়ে গেছে। কিন্তু গল্পের প্রারম্ভ এবং লয়, এটিকে একটি চমৎকার ছোটগল্প করে তুলতে পারত। আরেকটু ভাবতে পারেন চাইলে।

২৪ শে মে, ২০১৬ সকাল ৮:২০

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যের জন্য।

আমার লেখাগুলো সব অনুগল্প হয়ে যায়। :(

আশায় আছি। লিখতে লিখতে একদিন গল্পগুলোকে সাইজে নিয়ে আসব। :)

ভাল থাকবেন।

২| ২৩ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১:৫২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ভিন্ন ভাবনার ভিন্ন রকম প্রকাশ!

আলো অন্ধকারের আড়ালের সত্য অনেক সময়ই বিভৎস হয়! এরচেও সবাইতো অন্ধ হতে পারেনা- বরং সইয়ে নেয় বা নিজেও তেমনি হয়ে যায় ;)

+++++++++++++

২৪ শে মে, ২০১৬ সকাল ৮:২২

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া। + দেখে ভাল লাগলো।

৩| ২৩ শে মে, ২০১৬ দুপুর ২:০৯

সুমন কর বলেছেন: বর্ণনা বেশ হয়েছে। +।

২৪ শে মে, ২০১৬ সকাল ৮:২২

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন ভাই। ভাল থাকবেন। :)

৪| ২৩ শে মে, ২০১৬ দুপুর ২:২৩

হামিদ আহসান বলেছেন: ভাল লেগেছে

২৪ শে মে, ২০১৬ সকাল ৮:২৩

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

৫| ২৩ শে মে, ২০১৬ রাত ১১:৩৫

পুলহ বলেছেন: সুব্রত দত্ত ভাইয়ের মন্তব্যটি খুব বিশ্লেষণমূলক, আমি অনেকাংশেই একমত উনার সাথে।
শুভকামনা রইলো লেখকের জন্য।

২৪ শে মে, ২০১৬ সকাল ৮:২৩

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

ভাল থাকবেন।

৬| ২৫ শে মে, ২০১৬ রাত ৩:০১

কবি হাফেজ আহমেদ বলেছেন: চমৎকার লেখনি।

২৫ শে মে, ২০১৬ ভোর ৬:৩৯

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া। ভাল থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.