নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিরব জ্ঞানী

হুমমম......

নিরব জ্ঞানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

শখের ফটোগ্রাফী (৫)

৩০ শে মে, ২০১৬ সকাল ১১:২১

ডিএসএলআর ক্যামেরার সবচেয়ে মজার ব্যাপারটি হল আপনি লেন্স ইচ্ছে মত ব্যবহার করতে পারবেন। মানে আপনি একটি লেন্স খুলে আরেকটি লেন্স লাগিয়ে ছবি তুলতে পারবেন। কিন্তু তারও আগে আপনার DSLR-এর লেন্স সম্পর্কে একটা ধারণা থাকতে হবে।



প্রতিটি লেন্সের গায়ে ওই লেন্স সম্পর্কে কিছু specification লেখা থাকে। সুতরাং প্রথমেই আমরা দেখে নেই যে এই লিখাগুলোর মানে কি? আমি যখন আমার Nikon D3300 ক্যামেরাটি কিনি তখন এর সাথে একটি লেন্স দিয়েছিল। এর গায়ে লেখা আছে Nikon DX VR AF-S NIKKOR 18-55mm 1:3.5-5.6GII । Nikon লিখার মানে হল যে এটা ক্যানন ক্যামেরার লেন্স। জ্বি, ঠিক ধরেছেন, আসলে এটা ক্যানন না নাইকন ক্যামেরার লেন্স (একটু মজা নিলাম)।



DX - এই লেন্সটি DX format sensor যুক্ত Nikon ক্যামেরায় (যেমন Nikon D3300) ব্যবহার করা যাবে।
VR - ভিব্রেসন রিডাকসন। অর্থাৎ VR mode এ থাকলে আপনার হাত সামান্য কাঁপলেও ছবি ঝাপসা হবে না। তবে মনে রাখতে হবে এই কাঁপার পরিমান খুবই সামান্য। বেশি কাঁপলে ছবি ঝাপসাই হবে।
AF-S - লেন্সটি Auto Focus করতে পারবে এবং S এর মানে হল আটোফোকাস করার জন্য একটি Silent Wave Motor ব্যবহার করা হয়েছে।
Nikkor - Nikon।
18-55mm - এই লেন্সটি 18 mm থেকে 55 mm পর্যন্ত ফোকাল লেন্থ দিবে।
1:3.5-5.6 - হল 18 mm এ লেন্সের সর্বনিম্ন Aperture হবে f/3.5 এবং 55mm এ লেন্সের সর্বনিম্ন Aperture হবে f/5.6।
GII - এই লেন্সটিতে Aperture ring নেই (আধুনিক লেন্স গুলোতে এখন আর Aperture ring থাকে না)। II এর মানে হল এটি এই লেন্সের সেকেন্ড ভারসান।

লেন্স বললেই আমরা সবচেয়ে প্রথম খেয়াল করি যে এর মাপ কত? যেমন আমার লেন্সটি 18-55mm। কিন্তু এর মানে কি? ফোকাল লেন্থ বলতেই বা কি বোঝায়? খুব সহজ করে বললে ফোকাল লেন্থ Xmm এর মানে হল লেন্সটি ক্যামেরা সেন্সর থেকে Xmm দূরে আছে। সেন্সর হতে লেন্সের এই দূরত্বের উপর নির্ভর করেই ছবির ধরণ সম্পূর্ণ বদলে যায়। নীচের ছবিগুলো আমি একই জায়গায় দাঁড়িয়ে বিভিন্ন ফোকাল লেন্থে তুলেছি। খেয়াল করলে দেখতে পাবেন কম ফোকাল লেন্থের ছবিগুলোতে পুরো পরিবেশের দৃশ্যই ছবিতে দেখা যাচ্ছে। যতই ফোকাল লেন্থ বাড়ছে ধীরে ধীরে ছবির বিষয়বস্তু একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর কেন্দ্রীভুত হচ্ছে।


১। ২৭ মিমি


২। ৩৬ মিমি


৩। ৫২.৫ মিমি


৪। ৭৫ মিমি


৫। ১১২.৫ মিমি


৬। ২০০ মিমি


৭। ৩৭৫ মিমি

ফোকাল লেন্থের সাথে ছবির এই পরিবর্তন আমি খুব সাধারণ একটি ছবির সাহায্যে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছি।



আবার আপনি যদি কোন বস্তুকে নির্দিষ্ট ফ্রেমে রেখে বিভিন্ন ফোকাল লেন্থে ছবি তুলেন, তবে বস্তুটির পারিপার্শ্বিক পরিবেশটাও সেভাবে পরিবর্তন হয়। যতো কম ফোকাল লেন্থে ছবি তুলবেন, পারিপার্শ্বিক পরিবেশ তত বেশি দেখা যাবে। যতই ফোকাল লেন্থ বাড়াবেন, পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ততই ছোট হয়ে যাবে। নীচের ছবিগুলোকে আমি গম্বুজটার আকৃতি ঠিক রেখে বিভিন্ন ফোকাল লেন্থে ছবি তুলেছি। এই ছবি গুলো তোলার সময় ফোকাল লেন্থ পরিবর্তনের সাথে সাথে গম্বুজটির আকৃতি ঠিক রাখার জন্য আমাকে পিছনের দিকে সরে যেতে হয়েছে।


১। ২৭ মিমি


২। ৫২.৫ মিমি


৩। ৭৫ মিমি


৪। ১১২.৫ মিমি


৫। ২০০ মিমি


৬। ৩৭৫ মিমি

ফোকাল লেন্থের সাথে ছবির এই সম্পর্কে উপর নির্ভর করে লেন্সগুলোকে তিনটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়।
১। ওয়াইড এঙ্গেল লেন্স (Wide angle lens): এ ধরণের লেন্সগুলোর ফোকাল লেন্থ ৩৫মিমি বা এর নীচে হয়ে থাকে। এই ধরণের লেন্স দিয়ে ছবি তুললে ছবিতে Wide angle view পাওয়া যায়। এধরণের লেন্স দিয়ে সাধারণত ল্যান্ডস্কেপের ছবি তোলা হয়।

২। নরমাল লেন্স (Normal lens): এ ধরণের লেন্সের ফোকাল লেন্থ ৩৫ মিমি থেকে ৭০মিমি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে তোলা ছবিগুলো দেখতে আমাদের মানুষের চোখে দেখা দৃশ্যের সাথে স্বাভাবিক লাগে বলে এদের নরমাল লেন্স বলা হয়।

৩। টেলিফোটো লেন্স (Telephoto lens): ৭০মিমি বা তার অধিক ফোকাল লেন্থের লেন্সগুলোকে টেলিফোটো লেন্স বলা হয়। সাধারণ ক্যাটাগরির লেন্সগুলো ২০০-৩০০মিমি পর্যন্ত হয়ে থাকে। সুপার জুম টেলিফোটো লেন্সগুলো ৬০০,১২০০,১৭০০ মিমি পর্যন্ত হয়ে থাকে।

লেন্সের ফোকাল লেন্থ পরিবর্তন করা যায় কি যায় না এর উপর নির্ভর করে আবার লেন্সগুলোকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়।
১। জুম লেন্স (Zoom lens): এ ধরণের লেন্সগুলোতে আপনি জুম করতে পারবেন। অর্থাৎ এই লেন্সগুলোতে mm এর একটি range দেওয়া থাকে। যেমন উপরের লেন্সটিতে 18-55mm range দেওয়া ছিল। এই লেন্সটি ব্যবহারের সময় আপনি লেন্সটি ১৮ থেকে ৫৫ মিমি. এর মধ্যে যেকোন মিমি. ব্যবহার করতে পারবেন। একটি লেন্স আপনাকে কত জুম দেবে তা আপনি খুব সহজেই হিসাব করতে পারবেন। ৫৫ কে ১৮ দিয়ে ভাগ করলে পাওয়া যায় ৩.০৫৫৫৫৫৫। অর্থাৎ এই লেন্সটি আপনাকে 3X জুম দিবে। ৫৫-২০০মিমি লেন্স আপনাকে 3.6X জুম দিবে। আবার ১৮-২০০মিমি. লেন্স আপনাকে 11X জুম দিবে।

তবে এক্ষেত্রে আপনাকে মনে রাখতে হবে একটি ৭০-৩০০মিমি লেন্স আপনাকে 4X জুম দিলেও এই লেন্সের সাহায্যে কোন স্থানে দাঁড়িয়ে আপনি দূরের ছবি যত কাছে এনে তুলতে পারবেন ১৮-২০০ মিমি লেন্সে 11X জুম পেলেও একই জায়গায় দাঁড়িয়ে ছবিকে সেই পরিমান কাছে আনতে পারবেন না। অর্থাৎ সাধারণ সেন্সে আমরা 11X জুমকে বেশি মনে করলেও এটা আসলে ১৮ মিমি এ ছবি তুললে যা পাবেন ২০০মিমি তে তা থেকে 11X বেশি জুম পাবেন- তা বোঝাচ্ছে। কিন্তু আপনি ৩০০ মিমি এ বস্তুকে যত কাছে আনতে পারবেন, ২০০ মিমি এ ততটা কাছে আনতে পারবেন না। সুতরাং কেউ যদি দূরের বস্তুর ছবি (যেমন Wild life) তুলতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে বেশি mm এর লেন্স কিনতে হবে।

২। প্রাইম লেন্স (Prime lens): এ ধরণের লেন্সগুলোতে ফিক্সড ফোকাল লেন্থ থাকে। যেমন 35mm, 50mm অথবা 85mm। অর্থাৎ এক্ষেত্রে আপনি জুম করতে পারবেন না। এধরণের লেন্সগুলোর সাহায্যে ছবি তোলার সময় আপনাকে কাছে এসে বা দূরে সরে গিয়ে জুম করতে হবে।
কিন্তু মানুষ এই ধরণের লেন্স কিনে কেন? কারণ এধরণের লেন্সগুলোতে আপনি খুব Wide Aperture পাবেন। যেমন f/1.8 বা f/1.4। সুবিধা হল এর ফলে খুব বেশি আলো আপনার ক্যামেরা সেন্সর-এ পড়বে। সুতরাং এই লেন্সে তোলা ছবিগুলো খুব সার্প দেখাবে এবং ছবির Details খুব বেশি হবে। এই ধরণের লেন্সের দামও খুব একটা বেশি না, জুম লেন্সের তুলনায়।

(রঙ্গিন স্বপ্ন (স্বপ্নীল) আপনি ক্যানন লেন্সের STM, USM সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন।

STM-Step motor ক্যানন লেন্সে ব্যবহৃত মটর যা লেন্সকে অটোফোকাস করে। এই মটর শব্দহীন ভাবে আটোফোকাস করতে পারে। সুতরাং STM লেন্সগুলো ভিডিও করার সময় কোনরূপ শব্দ ছাড়াই অটোফোকাস করে থাকে।

USM-UltraSonic Motor ক্যানন লেন্সে ব্যবহৃত মটর যা অটোফোকাস করে। USM আবার দুই ধরণের হয়ে থাকে। micro motor USM এবং Ring type USM। Ring type USM মটর গুলো STM মটরগুলোর মতই শব্দহীন এবং মসৃন হয়ে থাকে। micro motor USM গুলো Ring type USM-এর মত এতটা শব্দহীন না হলেও এই ধরণের মটর যে লেন্সগুলোতে ব্যবহার করা হয় সেই লেন্সগুলোর দাম তুলনামূলক কম হয়।)

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মে, ২০১৬ সকাল ১১:৩০

অবনি মণি বলেছেন: ওয়াও!!

৩১ শে মে, ২০১৬ ভোর ৬:৫০

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: :) ধন্যবাদ আপু।

২| ৩০ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১২:০৬

সুমন কর বলেছেন: চমৎকার পোস্ট !

৩১ শে মে, ২০১৬ ভোর ৬:৫১

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: ভাল থাকবেন সুমন ভাই।

৩| ৩০ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২১

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: চমৎকার। অনেক কিছু জানা গেল। এই পর্বে মন ভরেছে। গত পর্বগুলোতে কম কম লিখেছেন।

৩১ শে মে, ২০১৬ ভোর ৬:৫২

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: হা হা। ঠিক আছে ভাইয়া, পরের গুলোতে আরো বেশি লিখা দিব। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এখন আর কেউ বড় লিখা পড়তে চায়না। মানুষের এত সময় কোথায়?

৪| ৩১ শে মে, ২০১৬ ভোর ৪:২০

মামুন রেজওয়ান বলেছেন: অনেক কিছু জানা গেল DSLR সম্পর্কে।

৩১ শে মে, ২০১৬ ভোর ৬:৫২

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

৫| ৩১ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৪:৪২

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: প্রিয়তে নিলাম। এত্ত সুন্দর পোস্ট ধন্যবাদ

০১ লা জুন, ২০১৬ ভোর ৬:৫৬

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: ধন্যবাদ ফাতেমা আপু। ভাল থাকবেন। :)

৬| ৩১ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩২

নটরাজ বলেছেন: অনেক সুন্দর পোস্ট। সহজবোধ্য এবং সংক্ষিপ্ত। প্রিয়তে নিলাম। আরও লিখবেন আশা করি। :)

০১ লা জুন, ২০১৬ ভোর ৬:৫৮

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া। আরো লিখার ইচ্ছে আছে। :)

৭| ০৮ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:৩২

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: মাথায় সবগুলো এটে উঠে না.......শুভেচ্ছা জানবেন ভাই

০৯ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:০৯

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া। ভাল থাকবেন সব সময়।

৮| ৩০ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১০:২৭

জনি চৌধুরী বলেছেন: ভাইয়া, এখনো DSLR কিণতে পারিনাই Digital নিয়ে আছি। Sony Cyber short

০১ লা জুলাই, ২০১৬ সকাল ৯:০৪

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: Sony Cyber short ডিজিটাল ক্যামেরাগুলোর মধ্যে ভাল। আশা করি ছবি তুলে পোস্ট করবেন। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.