নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিরব জ্ঞানী

হুমমম......

নিরব জ্ঞানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিষন্ন বিকেল

০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:১৮



আরো একটি বিষন্ন বিকেল পার করলাম। পুরো বিকেল জুড়েই ছিল ‘কনে দেখা’ রোদ। নামটা আমার কাছে যথার্থ মনে হয়না। বরং বিষন্ন রোদ বলে ডাকলেই মনে হয় মানাতো। সারাদিনের প্রখর রোদ বিলিয়ে দেওয়ার পর সূর্যটাও যেন বিষন্ন মন নিয়ে ডুবে যাচ্ছে। আর যাওয়ার সময় কিছু কিছু মানুষের মনটাকে বিষন্নতায় ডুবিয়ে যাচ্ছে।

মাঝে মাঝে মনে হয় কি দরকার এত কষ্ট করার। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খাটছি শুধুমাত্র একটি ডিগ্রীর জন্য। নিজের দেশ ফেলে সম্পূর্ণ নতুন একটা দেশে পরে আছি। এদেশের মানুষগুলোকে মনে হয় রবোট। কোন প্রাণের উচ্ছ্বাস নেই, মুখে কোন অভিব্যক্তি নেই। কেউ আপনার উপর খুশি নাকি বিরক্ত, রেগে আছে নাকি রেগে নেই কিছুই বোঝা যায়না এদের দেখলে। সারাদিন খালি কাজ আর কাজ। তাও যদি খুব ভাল আউটপুট থাকতো! রাস্তা দিকে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছি। স্কুল ছুটির পর ছেলে মেয়েরা বাড়ি ফিরছে। ৫-৬ বছরের ছেলে মেয়েরা কিছুটা লাফিয়ে কুঁদিয়ে জানান দিচ্ছে নিজেদের মানুষ বলে। কিন্তু এর থেকে বড় ছেলে মেয়েগুলো সব একা একা বাড়ি ফিরছে। কারো সাথে কোন কথা নেই। বুড়ো অথবা বুড়ীরাও একা একা যাচ্ছে। পার্থক্য শুধু কারো কারো সাথে কুকুর আছে। এদেশের কুকুরগুলোও খুব কম ডাকে। রাস্তায় এত এত কুকুর, কিন্তু ডাক শোনা যায় খুব কম।



মাঝে মাঝে জীবনের মানে খুঁজে পাইনা। মনে হয় আমি বড় অভাগা। মনে মনে ভাবি ঠিক এরকম একটি বিকেল যদি আমি পার করতাম কোন গ্রামে, যেখানে জীবন খুব জটিল নয়, জীবনের অংক শুধু দুইয়ে দুইয়ে চার। কি ভাল হত। শীত আসি আসি করছে। সারাদিন ক্ষেতে কাজ করে বা ভ্যান টেনে বিকেলে ভাত খেয়ে কোন খোলা ক্ষেতের পাশে বসে বসে এই রোদ দেখছি। তখনো কি মনটা এত বিষন্ন হত?

অথবা খুব বড়লোকের ছেলে আমি। বাবার টাকা পয়সা শেষ করার আপ্রাণ চেষ্টা করছি। কিন্তু এতটুকুও কমাতে পারছিনা। হয়তো বিকেলের এই রোদ দেখে প্রেয়সীকে নিয়ে গাড়িতে চড়ে বেরিয়ে পড়লাম। কোন ব্রীজের উপর গাড়ি পার্ক করে রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এই রোদ দেখছি। তখন নিশ্চয়ই মনটা এত বিষন্ন হতোনা।



মাথায় নানা রকম চিন্তা ঘোরে, কিন্তু জীবনকে আর কোন দিকে ঘুরিয়ে নেওয়া সম্ভবনা। সিস্টেমের ভিতর আটকে গেছি। পেছানোর উপায় নেই, নতুন করে শুরু করার উপায় নেই। ছেড়ে পালিয়ে বাঁচারও উপায় নেই। বয়ে বেড়াতে হবে আজীবন। মৃত্যুই এখন একমাত্র বাঁচার উপায়। যতদিন না মরি, সিস্টেমের ভিতর দিয়েই যেতে হবে। আবার মাঝে মাঝে চিন্তা করি, যে মানুষটি সিস্টেমের ফাঁদে পা দেয়নি সেও কি সুখে আছে। যে কোন বাঁধনেই জড়ায়নি, যার কোন দৈনন্দিন রুটিন নেই, যার আগামী দিনটি কেমন যাবে ঠিক নেই সেওকি বিষন্ন হয়না! হয়তো আমাদের মতো দশজন মানুষের সিস্টেমে সে নেই, কিন্তু সেও নিশ্চয়ই তার মত করে বানানো কোন সিস্টেমে বন্দী। হয়তো অগোছালো কোন সিস্টেমে।

এরকম সময় অবশ্য বেশিক্ষণ থাকেনা। এই যেমন এখন রোদটাও নেই, আমার মনের বিষন্নতাটাও নেই। কিছুক্ষণ পরই ল্যাবের কাজ শেষ করে বাড়ি যাব। বাড়িতে আমার মেয়ে আর স্ত্রী অপেক্ষায় আছে। কাল একটা সরকারী ছুটি। রাতে বিরানী রান্না হবে। আসার সময় একটা কোক নিয়ে যেতে বলেছে। যদিও আমরা সবাই সিস্টেমের ভিতর। কিন্তু তারপরও জীবনটা আসলে খুব একটা খারাপ না।

মন্তব্য ২১ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২১) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৪

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: মন্তব্যে প্রথম হয়ে নেই হাহাহাহ ...... বিষন্নতায় ধরেছে আজ যেনো

২| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৮

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ জীবন সুন্দর-জীবনকে ভালবাসতে জানতে হয় এবং মুগ্ধতা খুঁজে নিতে হয়। সুন্দর লেখা। বিদেশ বিভুই এ কোলাহল নেই তাই না-অথচ আমাদের এখানে কলরব ই কোলাহলই ভালবাসি।

আমাদের অফিস অনেক ডিপার্টমেন্ট কিউবিক্যাল সিস্টেম করে ফেলেছে। আমার ভাল লাগে না। কেমন জানি একা একা কিন্তু আমাদের এইচআর এখনো করেনি-গামেন্টস এর মতো এতেই যেনো শান্তি একে অপরের মুখ দেখতে পারছি কথা বলতে পারছি।

শুভেচ্ছা রইল ভাইয়া

০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:০১

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: আপনাদের অফিসে কিউবিক্যাল সিস্টেম করেছে। কিন্তু এখানে এই সিস্টেম না করলেও কেউ কারো সাথে কথা বলে না। :P

ভাল থাকবেন আপু।

৩| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৫

সুমন কর বলেছেন: লেখা আর ছবি মিলিয়ে, লেখা ভালো লাগল। বিষন্নতায় ছুঁয়ে গেল.......

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:৩৩

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন ভাই। ভাল থাকবেন।

৪| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪২

মারিয়া ফেরদৌসী বলেছেন: 'মাঝে মাঝে মনে হয় কি দরকার এত কষ্ট করার। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খাটছি শুধুমাত্র একটি ডিগ্রীর জন্য'
আমার ও ঠিক একই অনুভূতি হয় প্রবাসে পিএইচডি করতে এসে। ভালো লাগলো।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:৩৪

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু। আসলে প্রবাসে সবই আছে, আবার মনে হয় কিছুই যেন নেই।

৫| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৪৮

আহমেদ জী এস বলেছেন: নিরব জ্ঞানী ,




বিষন্ন কোন এক কনে দেখা রোদ নয়, জীবনের স্যাতলা পড়া রোদ্দুরের দিনগুলোর কথা বলে গেলেন । আজকাল আর জীবনটা দুইয়ে দুইয়ে চার হয়না । সে কি প্রবাস , কি বা দেশে । ঐ যে বললেন না , সিস্টেম ; ওখানেই যতো গেরো । যারা এই সিস্টেমে নেই , আছে নন-সিস্টেমের ভেতরে তারাও তো একটি সিস্টেমে আছে । হোক না তা অগোছালো কোন সিস্টেম।
এর ফাঁকে ফাঁকেই মানুষের কনে দেখা রোদের সাথে দেখা হয়ে যায় এক বিকেলে । পোস্টের ছবির মতো ব্রোঞ্জ-সোনালী আলোয় এক নতুন ভুবন দেখা । কেউ এর ভেতরে জীবনের মানে খুঁজে পায় , কেউ খুঁজে দেখেনা কিছুই ।
কিছু কিছু মানুষের এই খুঁজে দেখার ভেতর দিয়েই জীবনটাকে সুন্দর থেকে সুন্দরতম মনে হয় ।

আসলেই জীবনটা খুব সুন্দর যদি উপলব্ধির ছোঁয়া থাকে তাতে ।

সুন্দর লেখা ।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:৩৮

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: খুব সুন্দর মন্তব্য করেছেন আপনি ভাইয়া। কিন্তু এমন রোদে কেন জানি মনটা অকারণে খারাপ হয়ে যায়। চারদিকেই মন খারাপের ছবি ফুটে উঠে।
অবশ্য অনুভুতির এই সুখ, দুঃখের লুকোচুরি আছে বলেই আমাদের জীবনটা এত বৈচিত্রময় হয়। বেঁচে থাকার কারণ খুঁজে পাই।

৬| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৪০

মহসিন ৩১ বলেছেন: ' সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খাটছি শুধুমাত্র একটি ডিগ্রীর জন্য।' বেশ বুজতেছি আপনার অবস্থা। ... আপনার মত অনেকেই তো এখন বিদেশে পড়ছে; আমি দেখেছি সেই ২৫ বছর আগে; তখন এত বাঙ্গালি বা ইন্ডিয়ান ছিল না। ...... একদম মাঠে মারা যাবার দশা আরকি। যাই হোক এটা খুব সমীহ জাগান যে আমার চেনা প্রায় সবাই খুব ভাল ফলাফল করেছে। পরীক্ষায়, হ্যাঁ একদম প্রথম সারির। সাদাদের জিন বৈশিষ্ট নীরবতা; এমনটা মনে হতেই পারে।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:৪১

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া। ২৫ বছর আগে অবস্থা আরো ভয়াবহ ছিল এতে কোন দ্বীমত নেই। তখনকার সময় প্রবাস জীবন কেমন ছিল চিন্তা করতেও ভয় পাই। :||

৭| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৪৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: কোথায় থাকেন?

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:৪১

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: নাগোয়া, জাপান।

৮| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০১

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: কত সাধারণ ছবি, অথচ অসাধারণ.........স্যালুট আপনাকে।

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:৫৮

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া। ভাল থাকবেন।

৯| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৩

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: কনে দেখা রোদের দেখা অনেকই পেয়েছি, তবে ক্যামেরার পাওয়ার কম থাকায় কিছুই হয়না :(

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:৫৯

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: আপনি কিন্তু প্রচুর ঘোরাঘুরি করেন। একটা ডিএসএলআর কিনে ফেলেন। ছবি তুলে মজা পাবেন।

১০| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৪

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: ডিএসএলআর চালাইতে হলে আগে ফটোগ্রাফি শিখতে হবে, আমার তো ফটোগ্রাফিতে কোন শিক্ষা নাই

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:২২

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: ভাইয়া, আমিও কিন্তু ভাল করে শিখি নাই। নেট দেখে দেখে শিখেছি। আর আপনি যেহেতু নেটের পোকা, তাই আপনিও নেট থেকে শিখে নিতে পারবেন। :)

ইউটিউবে অসংখ্য ভিডিও আছে ফটোগ্রাফির উপর। এগুলো দেখলে খুব দ্রুত শিখে নিতে পারবেন।

১১| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৩০

মনিরা সুলতানা বলেছেন: বিষন্ন এক হলুদ বিকেলের গল্প !!!

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:২৬

নিরব জ্ঞানী বলেছেন: মাঝে মাঝে মনটা আসলে খুব বিষন্ন হয়ে যায়। :(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.