নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন তারাবতীর পৃথিবী

তানিয়া হাসান খান

আমি কোথাও নেই

তানিয়া হাসান খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

নারী! নারী! নারী!

০৮ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:৫৭

নারী! নারী! নারী!
জননী, জায়া, কণ্যা তুমি কিণ্ণরী!
জানো কি হয়েছে? কন্যা শিশু জন্ম নিয়েছে!শুনে সাথে সাথে মুখটা কালো হয়ে যায় এখনও এই পৃথিবীর বুকে কত শত বাবা মায়ের, দাদা-দাদীর। হায় রে মরি মরি! বংশ রক্ষা বুঝি হলোনা। উপরন্তু পণ দিয়ে বিয়ে দেয়ার ঝামেলা এসে পরেছে ঘারে। কি দুঃসংবাদ! আর যদি নিজেদের অলক্ষ্যে কোন যৌন হায়রানি বা পাশবিকতার শিকার হয়, ছি! ছি! মুখ দেখানো যাবে? দেখ কেমন কান্ড হলো ছেলে না হয়ে মেয়ে হলো। আফসোস যদি ভ্রূণ থাকা অবস্থায় জানতাম আর নষ্ট করে ফেলতাম তো ভালো হতো। সদ্য প্রসূত মা ফ্যাল ফ্যাল করে কাঁদে কেন মেয়ে হয়ে জন্ম নিলি হতভাগী। জন্মই যেন আজন্ম পাপ, কেন আসলি এই পৃথিবীতে। ধীরে ধীরে মেয়ে বড় হয় তার পরে জন্ম নেয়া ভাই এবং তার মাঝে একটি স্পষ্ট বৈষম্যতার কষ্ট বুকে চেপে। একই বাবা, একই মা, একই দাদা, একই দাদী দুজনেরই হকের প্রশ্নে দুই রকম আচরণ তার মনকে ক্ষুদ্র করে ফেলে, হিংসা বিচরণ করে মনে, লুকিয়ে কাঁদে কারন কেউ তার কষ্টের তীব্রতা বুঝে ফেলুক সে চায়না। সবাইকে তার বড় বেশি স্বার্থপর ও অপরিচিত মনে হয়। সে ধীরে ধীরে বন্ধু হীন হয়ে পরে। একটা দলবদ্ধ সুন্দর পরিবারের বাইরের সদস্য মনে করে সে নিজেকে। সে যদি খুব কাছের আত্মীয় বা কোন দুষ্টু লোকের দ্বারা পাশবিকতার শিকার হয় তো কাউকে বলতে সাহস পায়না তার পরিবারের সদস্যদের কাছে সে আরও বেশি নিন্দিত হবে সে ভয় পায়। একা একা কষ্ট পায়। কষ্টগুলি তাকে হিংস্র করে তুলে তার ব্যক্তিত্বকে। সে তার নিজেকে শেয়ার করে তার বন্ধু/বান্ধবীর সাথে। যদি কোনও মন্দ বন্ধু/বান্ধবীকে শেয়ার করেই ফেলে তো সেক্ষেত্রে উপকারের থেকে ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি থাকে।যৌবনে পা দিয়ে তার নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। ভুল ভাবে বেড়ে ওঠা মানুষের আত্মবিশ্বাস খুব ভয়ঙ্কর হয়ে। সে আর পরিবারের কাউকে পারোয়া করেনা। তার কষ্টপূর্ণ শৈশব তাকে বিদ্ধংশী করে তোলে। সে ইচ্ছে মতো চলতে চায়, যাকে খুশি বিশ্বাস করে বসে, যেখানে তার যাওয়া উচিৎ না সেখানেই বেশি যেতে চায়। এক সময় কোনও সুন্দর দেখতে নিখুত অভিনয় জানা প্রতারককে সে না ভেবেই ভালোবেসে বিয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি একাই নিয়ে নেয়। লেখাপড়া শেষ হয়নি সে তাই দূর্বল হয়ে থাকে। অপরিনত বয়সেই বাচ্চার মা হয়ে যায়। বাচ্চা লালন পালন তার কাছে বন্দীদশা বৈ কিছু মনে হয়না। প্রতারক স্বামীর এক একটি মুখোশ উন্মোচিত হলে সে বুঝতে পারে সে শুধু জীবনে ভুলই করেছে। স্বামীর ভালোবাসা যখন নিত্য নির্যাতনে রূপান্তরিত হয় তার ভুলে ভরা জীবন সে আর রাখতে চায়না। সুইসাইডাল কেস হয়ে পরের দিনের খবরের কাগজের খবর হয়ে সবার রোজকার পাঠের উপকরণ হয়। সবাই একে অন্যকে জানতে চায়, কি এমন হলো মেয়েটি এই বয়সে সন্তানদের মায়া ছেড়ে আত্মহত্যার মতো মহাপাপ করে বসলো।
হু, মহাপাপ। তোমরা যারা সব কিছুতে মহাপাপের গন্ধ পাও তারা শোন, মহাপাপ সে এই যুবতী জীবনে করেনি। তাকে হত্যা করা হয়েছে তার জন্মের সাথে সাথেই। সেদিন তোমরা যেটা করতে পারো নাই সেটাই সে করে নিয়েছে বড় হয়ে। মহাপাপ বলার আগে তোমরা মেয়েদের খুন করা বন্ধ করো! এক জীবনে এই না্রীরাই লক্ষ বার মরে। শৈশবে মরে, কৈশরে মরে, যৈবনে মরে, তারুণ্যে মরে, বিবাহিত হয়ে স্বামীর কাছে মরে, অমানুষ সন্তানের মা হয়ে বৃদ্ধকালেও মরে। আর কত মৃত্যু উপহার দিবা তার জন্য? দাঁড়াও, থামো এখন! নারী হচ্ছে এই পৃথিবীতে আল্লাহর সব থেকে সেরা দান। নারী গর্ভে ধরেছে পৃথিবীর সকল জ্ঞানী গুণী সেরা সন্তানদেরকে। নারীকে তুমি অপমান কর লজ্জা লাগেনা তোমার! নারীকে পন্য মনে করা বন্ধ করো। তোমাকে যদি পতিতার ছেলে বলে কেউ সম্বোধন করে তুমি মানতে পারোনা, তবে তুমি কেন নারীকে পতিতা রূপে দেখতে চাও?
এই সব মানসিকতার মূলে হচ্ছে মানুষের প্রকৃত জ্ঞানের অভাব। আমার জানা মতে সকল ধর্মেই নারীর সম্মান লক্ষ্যনীয়। সৃষ্টিকর্তা প্রেরিত ধর্ম মানে তো বিধান। তো বিধানে যখন নারীকে সম্মান দিয়েছে তুমি তাকে অসম্মান করার কে? আমি আমার ইসলামিক বিধানেও দেখি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পুরুষের থেকে নারীকে মর্যাদা দান করেছেন বেশি তার পবিত্র কোরআনে যার বাস্তবায়ণ আমরা দেখতে পাই প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ [স:] এর জীবনে। সঠিক বিধান মেনে চলা একটি মুসলিম পরিবারে একজন মা কতটা সম্মাণীয় সেতো তার সন্তানেরাই জানেন। আমাদের নবী ঘরে প্রবেশ করে বাবা-মাকে সর্ব প্রথম মেয়ে সন্তানকে আদার করতে বলেছেন। ধর্মীও জীবন বিধান থেকে শিক্ষা নেয়া থেকে তো আজকাল সব ভুলতে বসেছে। নিজের মতো বিধান বানায় নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে। নাস্তিকেরা বিরাজ করছে মাকরসার জ্বালের মতো জাল বুনছে, লিভ টুগেদার আর পরকিয়া প্রেমকে বৈধতা দানে সরকারকে বাধিত করতে জীবনকে বাজি রাখবে প্রয়োজনে। সমাজে নারী পতিতা পরিচয়ে প্রতিষ্ঠিত হবে, তার পরিবারের প্রয়োজন কি! নিজে তো বেলা শেষ দুঃখে কষ্টে মা-বাবা পরিবারের কাছে ফিরে শান্তি খোঁজ। বাহ তো তোমার শারীরিক চাহিদার বিলাশিতার জন্য তুমি অন্য নারীকে কেন এমন শান্তি থেকে সরিয়ে দিচ্ছো? তার প্রয়োজন, অসহায়ত্ব, ব্যক্তিত্বহীনতা বা অর্থনৈতিক লোভ লালসাকে কাজে লাগিয়ে তার চরিত্রে কথা এই কালিমা লেপে দিচ্ছ, যে কালিমা তুমি তোমার মাকে, বোনকে প্রয়োজন হলে জীবন দিয়ে দিবা তাও লাগতে দিবেনা? কাপুরুষ, বর্বর অসভ্য মানুষ ধ্বিক্কার তোমাদেরকে।
আরো লজ্জার কথা মেয়েরা তাদের নিজেদেরেকে এমন করে বিলিয়ে দিচ্ছে, সস্তা করে তুলছে, লোভ লালসায় আচ্ছন্ন হয়ে পরছে, যা খুশি চলাফেরা করছে এ সুযোগ গুলোকেই কাজে লাগাচ্ছে এই সুযোগ সন্ধানী নোংরা মানুষেরা। আমি তো একটি নারীর ঘটনা দিয়ে লেখা শুরু করেছিলাম।এমন হাজারো ইতিহাস আছে যার কারনে নারী আজ বিদ্ধংশী হয়ে উঠেছে। যার জন্য কখনও পরিবার কখনও সমাজ দায়ী। নেশার উপকরণে সায়লাব সারা দেশ। নিজেকে প্রদর্শনীর উপকরণ করে কারো লালসা মিটাচ্ছে নিজের ব্যক্তিত্বকে নিলামে তুলে দিয়েছে বুঝে না বুঝে।
নারী! এসব ছেড়ে চলে আসো শান্তির পতাকা তলে। তুমি একা নও, তোমার সাথে আছেন তোমার আমার সৃষ্টিকর্তা যিনি তার সৃষ্টিকে সত্যিকারের ভালোবাসেন। ভুল করে ফেলেছো, ফিরে আসতে পারবেনা ভেবনাতো, চলে আসো। তোমার মাঝে রয়েছে বিলিয়ণ সম্ভাবনা ও প্রতিভা। জীবন এত ক্ষুদ্র নয়, একটা ভুল করে পঁচা শামুকে পা কেটে গেলে শেষ হয়ে যাবে? তুমি সর্বোচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হবে। তুমি এই পৃথিবী সৃষ্টির ইতিহাস জানবে। শানিত করবে মেধার তরবারী। তুমি গর্ভে ধরবে পবিত্র আত্মাদের যারা এই সমাজ পরিবর্তন করে তোমাকে একদিন উপহার দিবে একটি শান্তিময় সমাজ ব্যবস্থা। আলহামদুলিল্লাহ!
তানিয়া
৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস; ২০১৬ইং

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:১৪

ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
Roses are red
VioLets are bLue
Today's the Women's Day
ALL haiL to you! B-)

০৮ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:২০

তানিয়া হাসান খান বলেছেন: তোমাকে অনেক ধন্যবাদ ভাতিজা :)

২| ০৮ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:২৬

কথাকথিকেথিকথন বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন । নারী শরীরকে মেলে ধরার জন্য নয়, জ্ঞানকে মেলে ধরার জন্য ।

০৮ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৩০

তানিয়া হাসান খান বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.