নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাষাহীন বাবুই

খেয়া ঘাট

ভাষাহীন বাবুই

খেয়া ঘাট › বিস্তারিত পোস্টঃ

লতিফ সিদ্দীকী ও অন্যান্য প্রসঙ্গ-

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:৪৮

এক সুবিস্তৃত জনমানবহীন ধূধূ মরুময় প্রান্তর। আর অতিদূরে বৃক্ষহীন , ঘাসহীন পাথুরে পাহাড়ের সারি। পশু নেই, পাখী নেই, মানুষ নেই , বৃক্ষ নেই, ফুল নেই, ঝরণা নেই। এমনি এক বিরানভূমে হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত, প্ররিশ্রান্ত, অবসন্ন দুজন পথহীন পথিক। একজন অত্যন্ত বয়স্ক ,আরেকজন একেবারেই কিশোর।দুজনার শরীর যেন আর চলেনা।

অবশেষে পাথরের ওপর বসে পড়লেন তারা। চারপাশে চেয়ে দেখলেন। নাঃ আশেপাশে কোথাও কোনো আশ্রয় নেই।
এমন সময় বৃদ্ধ শুনলেন -এক অলৌকিক শব্দ।
এ শব্দ আসে কোথা থেকে। এখানে যে কেউ নেই।
আবার শুনলেন ।সেই একই শব্দ। ওঠো । এখানে একটি ঘর তৈরী করো।
বৃদ্ধ ওঠে দাঁড়ালেন। তারপর চারপাশে অবাক দৃষ্টিতে তাকালেন।
এ কীভাবে সম্ভব। এই শুণ্যভূমে কীসের ঘর! কেন সেই ঘর! কার জন্য এ ঘর! ঘর বানানোর জন্যওতো আশে পাশে কিছুই নেই।

বৃদ্ধ এবার শুণলেন-আশে পাশে যা আছে তা দিয়েই শুরু করো।
পাথরের ওপর পাথর দিয়ে অশীতিপর বৃদ্ধ পিতা আর ছোট্ট কিশোর মিলে কোনো রকমে ঘরের মতো কিছু একটা দাঁড় করালেন।
এবার দুজনে আবার যাত্রা শুরু করবেন। কিন্তু আবারো সেই অলৌকিক শব্দ। কোথাও যেওনা তোমরা। এখানেই থাকো। আর চারপাশে মানুষকে এখানে আসার জন্য আহ্বান করো।
বৃদ্ধ এবার সত্যিই চমকে ওঠলেন। মানুষ থাকাতো দূরের কথা। আশেপাশে কোনো বৃক্ষ নেই, পশু নেই, পাখী নেই। ওপরের দিকে শুধু বিস্তৃত আসমান আর নীচে রুক্ষ এক উপত্যকা, ধু ধু প্রান্তর। তবে তিনি কাকে আহ্বান করবেন? কে শুণবে তার কথা !

আবারো সেই অলৌকিক শব্দ শোনা গেলো। তুমি মানুষদের আহ্বান করো। আমি বলছি, তোমার এই আহ্বান পৌঁছে যাবে সর্বত্র। আর এখানে প্রতিমুহুর্তে এমনকি একেবারে শেষসময় পর্যন্তও মানুষের আগমণ অব্যাহত থাকবে।
একজন অতি দূর্বল বৃদ্ধ মানুষ। যার কন্ঠ আরো ক্ষীণ। ভালো করে চীৎকারও করতে পারেন না। তিনি ভাবেন আর চিন্তা করেন। এখানে মানুষ আসবেই বা কোথা থেকে। তারওপর সারাক্ষণ এখানে মানুষ থাকবে। এও কীভাবে সম্ভব!

বৃদ্ধ কিশোরের কাঁধে ভর দিয়ে ওঠে দাঁড়ালেন। এরপর ভঙ্গুর, দুর্বল, ক্ষীণ কন্ঠে আহ্বান করলেন। চারদিকে চেয়ে দেখলেন। না কেউ আসেনা।
আসবেই বা কোথা থেকে। এ যে এক বিরান উপত্যকা।

তবে কি এই অলৌকিক আহ্বান মিথ্যা। যে আহ্বানে বলা হলো- তোমার এই বার্তা পৌঁছে যাবে সর্বত্র। দুনিয়ার চারপাশ থেকে এখানে এসে মানুষের জমায়েত হবে। মানুষের মিলন হবে।
তারপর কত দিন, কত মাস, কত বছর, কত হাজার বছর যে পার হয়ে গেলো-সেই আহ্বানের পর।

সেই হাজার হাজার বছর আগের কথা সত্যে পরিণত হলো। কী অলৌকিক একটা ব্যাপার। শুধু তাই না, দিনরাত চব্বিশটি ঘন্টা সেই জায়গায় আজ মানুষের অবস্থান। একটা সেকেণ্ডও যেন অপূর্ণ নেই। ঠিক যেমন হাজার বছর আগে বলা হয়েছিলো।
একেমন করে সম্ভব হলো! শরীর কি শিহরিত হয়? মনে কি ভাবনাজাগায়?

আর সেই ঘরে মানুষ পৌঁছেছেন প্লেনে করে, গাড়ীতে করে, জাহাজে করে, স্টীমারে করে, লন্চে করে, পায়ে হেঁটে। শিশু, কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ, মহিলা, পুরুষ, বাবা, মা, নানা, নাতি, স্বামী, স্ত্রী, পিতা, পুত্র, মা-কণ্যা, কালো, সাদা, এশিয়, আফ্রীকিয়, আমেরিকা, কানাডা,চীন -জাপান থেকে।
ওয়াশিংটনের হোয়াইট হাউসের পাশ থেকে যেমন সেখানে মানুষ গিয়েছেন, ঠিক তেমনি একেবারে আফ্রিকার গহিন গ্রাম থেকেও মানুষ গিয়ে সেই হাজার বছরের আগের আহ্বানে শামিল হয়েছেন। ইন্দোনেশিয়া, জাভা, আন্দামানের দ্বীপ থেকেও মানুষ গিয়ে হাজির হয়েছেন।
কেমন লাগে শুণতে?অলৌকিক মনে হয়? কেমন করে সেই আহ্বান পৌঁছে গেলো সর্বত্র।

যে জনমানবহীন প্রান্তরে ছিলো মাত্র দুজন মানুষ।আর আহ্বান করেছিলেন একমাত্র স্রষ্টার ওপর বিশ্বাস করে। হাজার বছর পরে সেই একই জায়গায় আজ উইকিতে দেখলাম- মানুষের সংখ্যা ১ জন না, ১ শত না, ১ হাজার না, ১০ হাজার না, ১ লক্ষ না ,২০১৪ সালে সেই ঘরকে কেন্দ্র করে জমায়েত হয়েছিলেন- বিশ লক্ষ ৪৯ হাজার ৫৩ জন মানুষ।
কী অলৌকিক মনে হয়? জ্বি। এটা একটা ঐতিহাসিক ঘরের গল্প । গাল গল্প না একেবারে সত্য ঘটনা। কী অবাক করা ব্যাপার। হাজার বছর আগে ঠিক যেরকম বলা হয়েছিলো আজ একেবারে অবিকল সেরকমই ঘটেছে। এটা হলো প্রাণপ্রিয় কাবা ঘরের ঘটনা।

এবার খেয়াল করুন। বলা হয়েছিলো মানুষের মিলন হবে। মিলন হয়েছে কিনা দেখেন।
প্রতিটি বড় ঘটনার আগে যেমন একবার রিহার্সেল করে নিতে হয়। ঠিক তেমনি শুধু দুটকরো সাদা কাপড় পড়ে ,( মৃত্যু মানুষের সাদা কাফন যেরকম) সবাই কিয়ামতের দিনে রাব্বুল আলামীনের দরবারে যেমন হাজির হবে তার একটা রিহার্সেল দিয়ে দেয়।
মানুষ অনুভব করে- এইভাবেই যেতে হবে। সাথে আর কিছুই রবেনা।
আর এই উপলব্ধি থেকেই এতো লক্ষ মানুষে মিলন মেলায় ঘটেনা কোনো রাহাজানি, কোনো শ্লীলতাহানি।সব পশু প্রবৃত্তি যেন মানুষ সেখানে গিয়ে বেমালুম ভুলে যায়। আর হাজার বছর আগে যেমন বলা হয়েছিলো-মানুষের মিলন হবে। ঠিক যেন অবিকল সেরকমই হয়েছে।
কী অলৌকিক মনে হয়?আজ হঠাৎ করে -এই ঘটনা কেন লিখলাম?
কারণ- কাবাঘরকে অত্যন্ত বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে একটি ছবি দেখে মনটা খুবই খারাপ হলো। এতো বেশী বিশ্রী ভাবে যে আঁকা হয়েছে সে বিবরণ দিতেই শরীর গুলিয়ে ওঠে। ছবিটা যোগ করারও আর ইচ্ছেও হলোনা।

"হিংসা ,আর ঘৃণায় ভরে আছে মানুষের মন
মানুষ যেন আজ হয়ে গেছে বিষাক্ত কীটের মতন।"

কিছুদিন আগে, জনাব লতিফ সাহেব কিছু কথা বলেছিলেন। উনার বক্তৃতার পর পুরো দেশে তোলপাড় হয়ে গেলো। উনার মস্তক বিদীর্ণ, ফাঁসিতে ঝুলানোর ঘোষণা আসলো। ভাবতে আশ্চর্য্য লাগে, কোরআন শরীফের কোথায় লিখা আছে- কেউ আল্লাহর বিরুদ্ধে বললেই তাকে ফাঁসিতে ঝোলাতে হবে? পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ মানুষ স্রষ্টায় বিশ্বাস করেন না।
ধর্মের বিরুদ্ধে বিষেদগার করেন। এখন এদের সবাইকে কি ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিতে হবে।
অথচ বলা হয়েছে,
"তবু যারা বিশ্বাস করেনা তুমি আছো, তাদের মার্জনা করো প্রভু।"

নবীসাঃ এর হাঁটার পথে যে বুড়ী প্রতিদিন কাঁটা বিছিয়ে রাখতেন ।বরং একদিন কাঁটা না দেখেই প্রিয় নবী উনাকে দেখতে গিয়েছিলেন। আহা! বেচারীর শরীর খারাপ হয়নিতো। তিনিতো তখন তলোয়ার নিয়েও যাননি, ফাঁসীর দড়িও সাথে নেননি। শুধু মানুষের জন্য তিনি রহমত আর হৃদয়ভরা দরদ নিয়ে বুড়িমাকে দেখতে গিয়েছিলেন।

তবে, লতিফ সাহেব বলেছিলেন- প্রতিবছর প্রায় ১ লক্ষ মানুষ হজ্জে যায়।
এভাবে এদের প্রতিবছরের টাকা যোগাড় হলেই কয়েকটি পদ্মা ব্রীজ হয়ে যেতো। কথাটিতো আসলেই সত্যি। খারাপ কি বলেছেন?
তবে এই জায়গায় তিনি মারাত্মক ভুল যুক্তি দিলেন। মেনে নিলাম, যে ১ লক্ষ মানুষ হজ্বে যায়, এদের বিশাল টাকা না হয় জলেই গেলো। তবে দেশে এতো মন্ত্রি, সুদখোর, টাউট, বাটপার ,মতলাববাজ ধনী মানুষের সংখ্যাতো কয়েক কোটি হবে। সুইচ ব্যাংকে যাদের মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার পড়ে আছে। ধরে নিলাম সে সংখ্যা হবে দেশের ১ কোটি লোক। এখন ১ লক্ষ লোক হজ্বে গেলে বাকি যে ৯৯ লক্ষ লোক যারা হজ্বে যায়না প্রতিবছর। সেই টাকায়তো ডজন ডজন ব্রীজ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু মাননীয় প্রেসিডেন্টকেতো দেখি বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়েই পার হতে।
বিগ্গজনদের কাছ থেকে এরকম অসার যুক্তিও বেশ অলৌকিক মনে হয়।

তবে মাননীয় লতিফ সাহেব বলতে পারতেন, লোক দেখানো হজ্বে যাওয়ার দরকার নেই। বরং হজ্বে যাওয়ার আগেই একজন মানুষকে আগে হাজ্বি হতে হয়। মানে হজ্বে যাওয়ার টাকাটা কোথা থেকে আসলো? এটা কি চুরির টাকা, ঘুষের টাকা, আদম পাচারের টাকা, লুটপাটের টাকা, চাঁদাবাজির টাকা, উপরির টাকা, উপঢৌকনের টাকা, সরকারি মাল আত্মসাতের টাকা, নাকি গরীবের হক মেরে দেওয়া টাকা ?-এই আয় যদি সৎ না হয় তবেতো আপনার হজ্বও স্বচ্ছ হলোনা। হাজ্বি হিসাবে নাম কামাই হলো-তবে টাকাটা কিন্ত জলেই গেলো।
লুটের টাকা দিয়ে হজ্ব। লুটের টাকা দিয়ে মসজিদ। এতো হাজ্বি, এতো নামাজি মানুষের শহর দূর্নীতিে প্রথম হয় কেমন করে?এও মাথায় আসেনা। এটাও অলৌকিক মনে হয়। সরকারকে শুধু দোষ দিয়ে লাভ কি? মানুষ হিসাবে বুকে হাত রেখে ভাবি -আমি নিজে আসলে কতটুকু সৎ।
ঢাকা শহর মসজিদের শহর হিসাবে গৌরবান্বিত হই। তবে সেটা মসজিদের শহর না হয়ে যদি দূর্নীতিমুক্ত সৎ মানুষের শহর হতো তাহলেই সবচেয়ে বেশী গৌরবান্বিত হতাম।

মন্তব্য ২৭ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:২৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লিখেছেন।

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:১৯

খেয়া ঘাট বলেছেন: বিনীত ধন্যবাদ ভাই।

২| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৩৫

আমিনুর রহমান বলেছেন:




চমৎকার +

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:২০

খেয়া ঘাট বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ রইলো ভাই।

৩| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৩৯

খেলাঘর বলেছেন:


লতিফ সিদ্দিকী যা ভাবে, তাই বলেছে; অন্যেরা যা ভাবে, তা বলে না।

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:২০

খেয়া ঘাট বলেছেন: লতিফ সিদ্দিকী যা ভাবে, তাই বলেছে; অন্যেরা যা ভাবে, তা বলে না।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++

৪| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৯

আবু শাকিল বলেছেন: চমৎকার কথা এবং কিছু দারুন যুক্তির কথা বলেছেন :)

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:২১

খেয়া ঘাট বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাইজান।

৫| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:০৮

মামুন রশিদ বলেছেন: ভালো লাগলো ভাইজান । একপেশে গোঁড়া অতি প্রতিক্রিয়াশীলতা দেখতে দেখতে চোখে বিরক্তি ধরে গেছে । ইসলামকে আল্লাহতায়া'লাই রক্ষা করবেন এবং করে চলেছেন । দু'চারজন উটকো লোক কিছু বললেই ইসলাম ধ্বংস হয়ে যাবে না । বরং ইসলাম যদি কখনো ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা হবে এর ভুল ব্যাখ্যায়, ভুল আচরণে । কোনখানকার কোন এক্টিভিস্ট রাজিব তার ফেবু ওয়ালে কি লিখলো, অমনি তার উপর হামলে পড়ে গলাটা কেটে দেয়া হলো । শুধু তাই নয়, পুরো দেশসুদ্ধ লোককে শাপলা চত্বরে নিয়ে আসা হলো নাস্তিকদের শায়েস্তা করার জন্য । অথচ শাপলা চত্বরের পাশেই বসে যে দেওয়ানবাগিহাগি সহ অন্য ভণ্ডরা ইসলামের নাম ভাঙিয়ে কুফরি করে করে ইসলামের বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে, সেটা ওনাদের চোখে পড়ে না ।

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:২২

খেয়া ঘাট বলেছেন: আমার পুরো পোস্টের চেয়ে আপনার মন্তব্যটাই বেশী যুক্তিগ্রাহ্য হয়েছে।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
বিনীত ধন্যবাদ মামুন অসাধারণ এই মন্তব্যটি করার জন্য।

৬| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৩

আজকের বাকের ভাই বলেছেন: অনেক ভালো হয়েছে।

লতিফের ফাসি হবে এমন দাবী শুধু কিছু লোকের, কিন্তু তার একটি বিচার হওয়া উচিত, কারণ তিনি ধর্মে আঘাত করেছেন। তা না হলে এমন কাজ সাধারণ লোকেও করবে, আর কিছু ধর্মান্ধ মন্দির, গীর্জায় হামলা করে ইসলামকে বিতর্কিত করবে।

কে কার উপসনা করে তা মুখ্য নয়, কার ধর্মে আঘাত করা কখনোই উচিত নয়।

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৮

খেয়া ঘাট বলেছেন: যখন ফাইল আটকে রাখা হয়-তখন একজন মানুষের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়।
যখন একদিকে সম্পদের পাহাড় তৈরী হয়, তখন অন্যদিকে হাজারো এতিম শিশুকে না খেয়ে থাকতে হয়।
যখন শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস হয়, তখন লাখো কোটি শিক্ষার্থীর জীবন বিপন্ন হয়।
যখন প্রতিটি সরকারের আমলে দেশের সম্পট লুটপাট করে বিদেশে পাচার হয়, তখন সাধারণ মানুষের অধিকার ক্ষুণ হয়।
যখন শেয়ার বাজারে মুক্তভাবে ডাকাতি হয়, তখন শত যুবককে পথে বসতে হয়।
যখন সড়কগুলো সব দানব হয়, তখন প্রতিদিন সাধারণ জনগণকে কোনো না কোনো জায়গায় লাশ হয়ে ঘরে ফিরতে হয়।
যখন ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তায় সীমাহীন দূর্ভোগের যানযট হয়, তখন এম্বুলেন্সের রোগীকে রাস্তার মাঝেই শেষ নিঃশ্বাস নিতে হয়।
যখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো রণক্ষেত্র হয়, তখন সোনালী স্বপ্নে বিভোর কত তাজা প্রাণ অকালে মৃত্যু মুখে পতিত হয়।
যখন বিশ্বজিত, আবুবকরের মতো যুবকদের রাস্তায় পিটিয়ে , জ্বালিয়ে পুড়িয়ে, চাবুকের আঘাতে নৃশংসভাবে খুন করা হয় তখন অসহায় মায়ের আর্তনাদে খোদার আরশ প্রকম্পিত হয়।
কিন্তু ধর্মের ওপর আঘাত হলে এসবের কিছুই হয়না। আমার মায়ের ফজরে জায়নামাজে বসা বন্ধ হয়না। নীরবে,নিভৃতে, গোপনে বাপের তাসবিহ পাঠ বন্ধ হয়না। মসজিদ থেকে সুরেলা কন্ঠের আযানের ধ্বনি বন্ধ হয়না। সিপারা, আম্পারা, কোরআন বুকে নিয়ে নিষ্পাপ শিশুদের ভোরে মক্তবে যাওয়া বন্ধ হয়না। কাবা শরীফের গিলাফে কোনো মলিনতা স্পর্শ করেনা। হাজরে আসওয়াদ পাথর কেউ লুটে নিয়ে যায়না। জমজমকূপের পানি অপবিত্র হয়না। শয়তানের ওপর পাথর নিক্ষেপ করা মূলতবি হয়না।
ধর্মে বিশ্বাস, ধর্মে শ্রদ্ধা, ধর্ম ভালোবাসা এতো ঠুনকো না যে-কোনো লতিফের , কোনো মন্ত্রীর, কোনো প্রেসিডেন্টের মুখ থেকে কিছু বের হলো আর সবকিছু একেবারে তছনছ হয়ে গেলো।

তবে হ্যাঁ। অন্তরে আঘাত লাগে, বুকে ব্যথা লাগে। আমার বাবা-মাকে কেউ গালি দিলে যেরকম লাগে। বরং তার চেয়ে বেশীই লাগে। কিন্তু-এজন্য গর্দান নিয়ে নিতে হবে? ফাঁসি দিয়ে দিতে হবে?কারাগারে পাঠাতে হবে?

প্রিয় কবি নজরুলের একটা কবিতার লাইন খুব শেয়ার হচ্ছে দেখলাম।
"রাসুলের অপমানে যদি নাই কাঁদে মন,
কে বলে মুসলিম তারে কাফের সেই জন" -ঠিক এরকম মনে হয়।

হ্যাঁ। আগেও বলেছি। মন কাঁদে। খুব কাঁদে। কিন্তু নজরুলও কি বলেছেন। যে অপমান করলো-তাকে কতল করে ফেলতে হবে?

যাক ভাই। একেক মানুষের চিন্তা একেকরকম। আমার চিন্তাটাও ভুল হতে পারে। হয়তো ১০০ ভাগই ভুল।তবে এই মারমার, কাটকাট, জ্বালাও পোড়াও এসব আর ভালো লাগেনা। ভালো থাকবেন ভাই। আল্লাহ আমাদের সবার সহায় হোন।

৭| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৭

পার্সিয়াস রিবর্ণ বলেছেন: বেশ লাগলো !! মুগ্ধতা জানালাম ।


++

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৫৬

খেয়া ঘাট বলেছেন: বিনম্র ধন্যবাদ ভাই।

৮| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২০

মনিরা সুলতানা বলেছেন: ধর্ম যখন ব্যাবসা ...

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৫৬

খেয়া ঘাট বলেছেন: ১০০% ঠিক আপু। অনেক ধন্যবাদ রইলো

৯| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৫৮

আলাপচারী বলেছেন: +++

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১০

খেয়া ঘাট বলেছেন: বিনীত ধন্যবাদ ভাই।

১০| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:২৬

কলমের কালি শেষ বলেছেন: এইসব নিয়ে কিছু বলার নাই । :(

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৪৫

খেয়া ঘাট বলেছেন: কলমের কালি শেষ:)

১১| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ ভোর ৪:৩১

প্রবাসী পাঠক বলেছেন: ধর্ম আমাদের সকলের কাছেই খুব সেন্সেটিভ একটি বিশ্বাস। ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করলে কম বেশি সবারই খারাপ লাগে। এই খারাপ লাগাকে কেউ কেউ আবার উগ্রপন্থায় রিএক্ট করেন। এই রিএক্ট করার আগে একবারও ভাবেন না সত্যিকার অর্থে ধর্মে কি বলেছে। ইসলাম ধর্ম সহনশীল হবার কথা বলে। কিন্তু কিছু কিছু গোষ্ঠীর উগ্রতার কারণে আজ গোটা ইসলাম ধর্মকে উগ্রবাদী ধর্ম বলে মনে করে অনেকেই।

আবার একই সাথে অনেকে নিজেকে মুক্তমনা হিসাবে জাহির করার জন্য অতি উতসাহি হয়ে ধর্মকে নিয়ে কটূক্তি করেন। ধর্মকে যারা ব্যবসায় পরিণত করেছে তাদেরকে নিয়ে যে কোন সমালোচনা গ্রহণযোগ্য। কিন্তু ধর্ম ব্যবসায়ীদের জন্য ধর্মকে আঘাত করা যায় না এই জ্ঞানটুকুও তারা হারিয়ে ফেলেন। ইসলাম ধর্মের লেবাসে অনেকেই খুব ভালো ভাবেইই ধর্ম ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। ছোট্ট একটা উদাহরণ দিচ্ছি- বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে ওয়াজ মাহফিল একটি ধর্মীয় রীতিতে পরিণত হয়েছে। মসজিদ এবং মাদ্রাসা থেকে এই মাহফিলের আয়োজন করা হয়ে থাকে। সেখানে চাঁদা তলার জন্য আলাদা আলেম আনা হয়। তাদের কাজই হয় ধর্মীয় বয়ান দিয়ে মসজিদ কিংবা মাদ্রাসার জন্য সাহায্য তোলা। যাদের ওয়াজ মাহফিল এর আয়োজনের সরাসরি অভিজ্ঞতা আছেন তারা জানবেন। এখানে উক্ত আলেম পারসেন্টিজ এর উপর টাকা তোলার কন্টাকে আসেন। এখন প্রশ্ন আসে এই আলেম কি ইসলামের জন্য আসেন নাকি নিজের ব্যবসার জন্য আসেন? ধর্ম নিয়ে অনেক অধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলার কেউ নেই। মামুন ভাই তার কমেন্টে সুন্দর একটি দিক তুলে এনেছেন।

আর লতিফ সিদ্দিকি ধর্মকে নিয়ে কটূক্তির পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি নিয়েও কথা বলেছেন। দুর্নীতি নিয়ে বলেছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সেই দুর্নীতি নিয়ে কারো মাথা ব্যাথা নেই। সবাই আছেন ধর্ম অবমাননা নিয়ে। লতিফ সিদ্দিকির কথায় ধর্মের বিন্দুমাত্র ক্ষতি হবে না। কিন্তু সরকার আর সরকারের উপদেষ্টা নিয়ে উনি যা বলেছেন তা যদি সত্যি হয় তাহলে আমাদের দেশের ক্ষতি হচ্ছে এটা নিশ্চিত।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:৪০

খেয়া ঘাট বলেছেন: সেখানে চাঁদা তলার জন্য আলাদা আলেম আনা হয়। তাদের কাজই হয় ধর্মীয় বয়ান দিয়ে মসজিদ কিংবা মাদ্রাসার জন্য সাহায্য তোলা। যাদের ওয়াজ মাহফিল এর আয়োজনের সরাসরি অভিজ্ঞতা আছেন তারা জানবেন। এখানে উক্ত আলেম পারসেন্টিজ এর উপর টাকা তোলার কন্টাকে আসেন। - আমি এরকম অনেক ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী।

দুর্নীতি নিয়ে বলেছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সেই দুর্নীতি নিয়ে কারো মাথা ব্যাথা নেই। সবাই আছেন ধর্ম অবমাননা নিয়ে। লতিফ সিদ্দিকির কথায় ধর্মের বিন্দুমাত্র ক্ষতি হবে না। কিন্তু সরকার আর সরকারের উপদেষ্টা নিয়ে উনি যা বলেছেন তা যদি সত্যি হয় তাহলে আমাদের দেশের ক্ষতি হচ্ছে এটা নিশ্চিত।
++++++++++++++++

আপনাদের কমেন্টগুলো পেয়ে এতটুকু ভরসা পাই যে ,এখনো সমস্ত স্বার্থের উর্ধ্বে ওঠে,কারো চাটুকারিতা না করে, বিবেক অন্ধ না হয়ে কিছু মানুষ যৌক্তিকভাবে সবকিছুকে বিশ্লেষণ করে।

এই মন্তব্যগুলো খুবই দরকার ছিলো। ভালো লাগলো ভাই।অনেক বেশীই ভালো লাগলো।

১২| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:০১

শুন্য পুরন কর বলেছেন: good , thanks.

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ ভোর ৬:৪৮

খেয়া ঘাট বলেছেন: বিনীত ধন্যবাদ রইলো।

১৩| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৪

সুমন কর বলেছেন: চমৎকার গুছিয়ে লিখেছেন।

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৮

খেয়া ঘাট বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ রইলো সুমন ভাই।

১৪| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:১০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ঢাকা শহর মসজিদের শহর হিসাবে গৌরবান্বিত হই।

তবে সেটা মসজিদের শহরের পাশাপাশি যদি দূর্নীতিমুক্ত সৎ মানুষের শহর হতো তাহলেই সবচেয়ে বেশী গৌরবান্বিত হতাম।


++++++++++++++++++++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.