নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কে. এম. রাফসান রাব্বি

যান্ত্রিক নগরীর যান্ত্রিক মানুষগুলোর ভিড়ে আমি এক অযান্ত্রিক পথচারী। ফেসবুকঃ https://www.facebook.com/km.rafsaan

কে. এম. রাফসান রাব্বি › বিস্তারিত পোস্টঃ

অসুস্থ শিক্ষাব্যবস্থাঃ গিনিপিগ ছাত্রসমাজ

০২ রা অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:৩৮

বহুতদিন পর কোন সিরিয়াস বিষয় নিয়ে লিখতে বসলাম। বিষয় অবশ্যম্ভাবীভাবেই শিক্ষাব্যবস্থা। কারণ এর প্যারাটাই গত কয়েক মাসে সবচাইতে বেশি খাইতে হইছে এবং সামনেও খাইতে হবে।

আমাদের দেশের উচ্চতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলা আসলেই পাংখা। তাহারা প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে বহুত হাউকাউ করলেও এই ফাঁস হওয়া প্রশ্নের রেজাল্টরেই সবচাইতে বেশি মূল্য দেয়। এইটা নিয়ে কারো হাউকাউ নাই। বিশেষত ইঞ্জিনিয়ারিং ভার্সিটিগুলো। যদিও তারাই প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে সবচাইতে বেশি হাউকাউ করেছে কিন্তু তারাই ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে জিপিএ কে সবচাইতে বেশি গুরুত্ব দেয় আর নির্দিষ্ট জিপিএর নিচে কাউকে পরীক্ষা দিতে দেয় না। ফেল করা ছেলে ডাবল গোল্ডেন পাইলেও তার পরীক্ষা দেবার যোগ্যতা আছে আর সারা জীবন ফার্স্ট-সেকেন্ড হওয়া ছেলে ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে এক সাব্জেক্টে এ+ মিস করায় তার সেখানে পরীক্ষা দেবারই যোগ্যতা নেই! অর্থাৎ সে সেখানে পড়ার যোগ্য না অযোগ্য সেটা প্রমাণ করার সুযোগটাও তাকে দেয়া হচ্ছে না। অথচ তার চেয়ে অনেক কম যোগ্য ছেলে এই বালের পরীক্ষার রেজাল্টের উপর ভিত্তি করেই পরীক্ষা দেবার সুযোগ পাচ্ছে যদিও সে জীবনের ক্লাস পরীক্ষায় ন্যুনতম পাশ নম্বরটাও উঠাতে পারতনা।

এই অ্যাডমিশনের টাইমটা বড়ই অদ্ভুত! এ যেন নিজের স্বপ্নগুলো একে একে মরতে দেখার এক সময়। নিজের স্বপ্নগুলোকে এক এক করে মরতে দেখে ছেলেটি বা মেয়েটি স্বপ্ন দেখতেও বড্ড ভয় পাই। নতুন করে স্বপ্ন দেখাটা যেন নতুন করে আরেকটি স্বপ্নভঙ্গের জন্ম দেয়া! এক একটা পরীক্ষা যায় আর তার স্বপ্ন দিক চেঞ্জ করে। কিন্তু একসময় সে দিক ভুলে এক পথহারা পথিক হয়ে যায়। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও জিপিএ কম থাকায় সে অনেক ভার্সিটিতে পরীক্ষায় দিতে পারছে না। আবার অনেক সময় দেখা যায়, ভাল পরীক্ষা দিলেও ডিজিটাল জালিয়াতির জন্য সে ভাল পজিশন করতে পারছে না অথচ অনেক অযোগ্য শিক্ষার্থীও ভাল পজিশন করছে দুর্নীতি করে। এসব সে সহ্য করতে পারে না। জীবনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে যায়। আর এতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করে পরিবারের আত্মীয় স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীর তীর্যক খোঁচা।

এই শিক্ষাব্যবস্থার যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে কত ছেলে-মেয়ে যে তাদের জীবনের ইতি ঘটিয়েছে সে খবর কি তারা রাখেন? শারীরিক মৃত্যুর কথা তো খুব কমই মিডিয়ায় আসে, কিন্তু মানসিক মৃত্যুর খবর কয়জনইবা রাখেন......

আচ্ছা, তাহলে এ থেকে উত্তরণের উপায় কি? আমি খুব ক্ষুদ্র একজন মানুষ। এ নিয়ে মতামত দেবার মত যোগ্যতা আমার নেই। তারপরেও খানিকটা দুঃসাহস করছি। আজকে জাফর ইকবাল স্যারের লেখাটা পড়ে খুব ভাল লাগল। তিনি সম্মিলিত পরীক্ষা পদ্ধতির ব্যাপারে কথা বলেছেন। ওখান থেকেই আমার মাথায় চিন্তাটা আসে। আচ্ছা যদি SAT পরীক্ষার স্ট্যান্ডার্ডের একটা পরীক্ষা বাংলাদেশে নেয়া যেত আর যেখানে সবচাইতে ভাল রেজাল্ট যারা করত তাদের উচ্চ শিক্ষার জন্য সরকার থেকে বাইরের নামীদামী ভার্সিটিতে পড়ার সুযোগ করে দেয়া হত। এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষার্থী তাদের স্কোরের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় আর সাব্জেক্ট চয়েস করতে পারত। সেখানে শুধু পরীক্ষার রেজাল্টটা নয় সাথে একাডেমিক রেজাল্টও বিবেচনায় আনা হত। একাডেমিক রেজাল্ট বলতে শুধু SSC-HSC নয়, তার বিভিন্ন ক্লাসের টার্ম পরীক্ষার পারফরমেন্সও বিচারের আওতায় আনা হত। এছাড়াও সহশিক্ষামূলক কার্যক্রমগুলোকেও আলাদাভাবে মূল্যায়ন করা হত। তাহলে একজন শিক্ষার্থীকে মূল্যায়ন করার ক্ষেত্রটা অনেক বড় হত। জানি বিষয়টা অনেক সময়সাপেক্ষ, তবে অসম্ভব কি?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.