নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার উপরে মানুষ সত্য, তার উপরে আল্লাহ! সঠিক বিচারের মালিক, সর্বশক্তিমান, মহা ক্ষমাশীল।

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান

আমি এক জন্ স্বাধীন চেতা মানুষ, ছাত্র জীবনে ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য ছিলাম, কর্ম জীবনে একজন সরকারী কর্মচারী (অব:), বর্তমানে একটি বেসরকারী কোম্পানীতে হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত আছি।

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফুল- ছোট গল্প

১২ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:৪১

আমার ছোট ছেলে, আমাকে বলতে লাগলো, "বাবা ফুল ফুল" আরে মোর জ্বালা ফুল কোথায়, দেখতে পেলাম একটি ১২/১৩ বছরের মেয়ে ছেড়া জামা গায়ে গাড়ীর কাছে কাছে ফুল বিক্রয় করছে। ফুল কত জানতে চাইলাম , "সাহেব আপনী যা দেন" বুকের গভীরের ফুস ফুস ভেদ করে নি:শ্বাস বেড়িয়ে এলো্। কিছুই বলতে পারলাম না, শুধু জানালাম তোমাকে কত দিলে হবে। ১০/২০ টাকা? দেন স্যার, আমি তাকে ২০ টাকা দিয়ে বিদায় দিলাম বটে কিন্তু মনের গভীরের ষন্ত্রনা তো মোটেই ঘুচাতে পারলাম না সে বার বার শুধু আমার পাজরের এপাশে ওপাশে শুধুই বেদনা দিতে লাগলো্। আমি কি এই দেশকে স্বাধীন করেছি?



আর সেই গান টা বার বার মনে আসতে লাগলো,

"আমি একটি ফুলকে বাচাবো বলে যুদ্ধ করি,

একটি মুখের হাসির জন্য যুদ্ধ করি,"

কোথায় সেই হাসি? হাসি নাই, কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। আমার দেশের মানষ গুলোর হাসি......... এরা আসলেই কি হাসতে ভূলে গেল। পরাধীন জীবন দশা থেকে নীজকে, জাতীকে, আমার দেশকে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনেময় যে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনলাম, আমরা কি তার প্রকৃত স্বাদ পেয়েছি। এটা আমার স্বাধীন দেশ, আমরা সবাই মিলেমিশে বসবাস করবো, কোথায় সেই আনন্দ?

স্ত্রী-সন্তাদেরকে বাসায় রেখে মনের যন্ত্রনা ঘুচাতে বেড়িয়ে পড়লাম। আবার সেই সোনারগা হোটেলের পাশে হাটতে হাটতে, আজও দেখা হয়ে গেল সেই মেয়েটার সাথে, জানতে চাইলাম তারা কোথায় থাকে। কোথায় তার বাবা-মা, তাহাদের জীবনের সংবাদ টুকু জানার অদম্য ইচ্ছাকে সামাল দিতে পারলাম না, একে একে তার কাছ থেকে সব সংবাদ নিয়ে নিলাম। এতে আমার কৌতহল আরো বেড়ে গেল, তার বাবার নামের সাথে জড়িয়ে আছে এক সহমুক্তি যোদ্ধার নাম, হ্যাঁ তাই সেই আমার সেই সহমুক্তিযোদ্ধা, কিন্ত চেনার উপায় খুজে পাচ্ছিলাম না। তার পর সে অবলিলায় আমাকে চিনতে পারলেন। পরিচয় হলো তার সাথে কিন্ত ততদিনে তিনি মৃতু পথযাত্রী, আমি আমার মনের কষ্ট মনে নিয়ে বাসায় ফিরতেছিলা, আর মনে একটি প্রতিক্রিয়া জন্মাতে লাগলো, আবার হাতে অস্ত্র তুলে নি, আবার যুদ্ধ করি, সমস্ত অন্যায়কে নি:শেষ করে দিই। দু:খে ও রাগে শরীর থরথর করে কাপছে, বয়ষ বড়ছে, কিন্তু কাউকে কিছু বলতে ভাল লাগছে না। শরীর থেকে কয়েক ফোটা লোনা জন বেরিয়ে আসলো, মাথা ঘোরাচ্ছে, বাসায় ফিরলাম। নিজের থেকে কিছু টাকা সাহায্যের জন্য এবং কিছু খাবার নিয়ে গেলাম সেই আমার সহযোদ্ধার বসতির কুঠুরীতে কিন্ত কি নির্মম পরিহাস, গতদিন তার মরদেহ আজিমপুরে সমাহিত করে তার সেই গর্ভিত মু্ক্তিযোদ্ধার সন্তানরা কোথায় চলে গেল আর খুজে পেলাম না। এভাবেই হারিয়ে যাচ্ছে শত সহস্র মুক্তিযোদ্ধারা এবং তাদের গর্ভিত পিতা-মাতার সন্তানরা, যাদের কেউ কখনও মনে রাখবে কিনা আমার জানা নাই, এরা কোন টাকার বিনেময়ে বা কোন কিছুর লোভে দেশ স্বাধীন করে নাই। এরা তার দেশ মাতৃকাকে ভালবাসে, এদের সতিকারের ইতিহাস হয়তোবা কেউ মনে রাখবে বা রাখবে না। তবে এরাই প্রকৃত মু্ক্তিযোদ্ধা, আমি তাদের সালাম করি।



বেশ কিছু দিন পরে গ্রামের বাড়ীতে খবর নিলাম তারা কেউই গ্রামের বাড়িতে থাকে না। ইচ্ছা করে আবার সেই সোনারগাঁ বতমানে রুপসী বাংলার কাছে গেলাম এবং একটা ফুল কিনে গর্ভিত মুক্তিযোদ্ধার কবর খুজতে গেলাম কিন্ত কোথাও তার নাম পেলাম না। মনের গভীর থেকে একটি নি:শ্বাস বেড়িয়ে এলো্। দুইটি চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে সুধুই দোয়া করলাম, ঐ গর্ভিত মুক্তিযোদ্ধার জন্য, তাদের মত শত সহস্র মুক্তিকামী জনতার জন্য, যাদের ত্যাগের বিনেময়ে এই দেশ আজ স্বাধীনতার মুখ দেখেছে। কিন্তু আমার আফসোস সেই মুক্তিযোদ্ধাদের কথা কি দেশ, জাতী মনে রাখে না রাখছে বা রাখবে তবু ও তারা দেশ ও জাতীর জন্য যুদ্ধ করবে এটাই বিধির বিধান।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:১১

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান বলেছেন: আমি এই লেখাটি এই দেশের গর্ভিত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য লিখেছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.