নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার উপরে মানুষ সত্য, তার উপরে আল্লাহ! সঠিক বিচারের মালিক, সর্বশক্তিমান, মহা ক্ষমাশীল।

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান

আমি এক জন্ স্বাধীন চেতা মানুষ, ছাত্র জীবনে ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য ছিলাম, কর্ম জীবনে একজন সরকারী কর্মচারী (অব:), বর্তমানে একটি বেসরকারী কোম্পানীতে হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত আছি।

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

অর্থ -ছোট গল্প

১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:২৮

অর্থ-

এই পৃথিবীতে মানুষ সামাজিক লেন-দেন, টাকা যার মাপকঠি, আমরা বলি অর্থ। সেই অর্থ মানুষের জীবনকে করে বিকশিত, সচ্চল এবং সাভাবিক, কিন্ত সেই অর্থ কিভাবে আপনার আমার কাছে আসলো সেই টাই আসল ব্যাপার। আপনার অর্থ আপনার কাছে আসছে কঠিন পরিশ্রম ও সত্য ন্যায় নিষ্ঠার মাধ্যমে তবে সেটা আমি সাধু বাদ জানাবো এবং আমি বা সমাজ আপনাকে শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাবে এতে কোন সন্দেহ আছে বলে আমার জানা নাই বা থাকার কথা নয়। আর যদি সেই অর্থ আসে কোন গোপন পথে, বা কোন সাধারন মানুষের সার্থের পকেট থেকে তবে কেউকি আপনাকে বা আমাকে সম্মান দেখাবে, আমার তো মনে হয় না।



মি: মিটার রিডার সাহেব আমি তার নাম নিতে চাই না, আপনারাও নিবেন না বলে আমি আশাকরি, কারন অন্যের দোষটা একটু গোপন রাখতে চাই, কারন, আমি ঘৃনা করি অপরাদ কে কিন্ত অপরাধীকে নয়। তিনি গ্যাসের মিটার দেখেন এবং বিল করেন, বেশ ভাল, এটা গ্যাস কোম্পানীর একজন সামান্য চাকুরী হলেও তার দায়িত্বটা খুবই গুরুত্বপূর্ন বলে আমি মনে করি। আমার চাকুরীর পরে তিনি চাকুরীতে যোগদান করেন। বেশ হাসিখুশি ভদ্রলোক। আমি একদিন টিউশনি থেকে বাড়ী ফিরছিলাম তিনি আমাকে হাততুলে ডাক দিলেন। সাইকেল চালিয়ে তার কাছে গেলাম, বেশ কিছু দিনের জানাশোনা, ফেরীওয়ালার কাছথেকে একটা জামা কিনছেন, ২টো টাকা ধার নিবেন। ধার দিলাম তবে পাব বলে দিইনি। কারন ধারের টাকা বেশীরভাগই পাওয়া যায় না। সময়ের তালে তালে বেশ দিন হয়ে গেল, আমার সরকারী চাকুরী হয়ে হয়েছে। আমি খুলনাতে যোগদান করলাম। ৫ বছর পরে একদিন ফকিরাপুলের কাছে তাহার দেখা, রিক্সা করে বাসায় ফিরছেন। এই ভাই, এই মাষ্টার সাহের বলে ডাকতেছেন, চেয়ে দেখি, আমাকেই হাত নেড়ে নেড়ে ডাকছেন। প্রথমে একটু চিনতে দেরি হলেও পরে ঠিকই চিনতে পেরেছি। কাছে গেলাম, তিনি আমাকে রিক্সায় উঠতে বললেন, আমি বরাবরের মতই মাথা নেড়ে অসম্মতি জানালাম। কারন, আমার পকেটে টাকা না থাকলে রিক্সায় চড়ি না। তিন আমাকে আপ্যায়নের জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করলেন কিন্ত কেন যেন আমার মন সায় দিল না।

তিনি রিক্সা থেকে নেমে আমার পকেটে টাকা গুজে দিলেন আর বললেন, ভাই আমি আপনার কাছে দেনাদার তাই দেনা টা শোধ করতে চাই কিছু মনে করবেন না। আবছা আলোয় অতটা বুঝে উঠতে পারলাম না, কত টাকা, তবে আমি তার কাছে পাবো মাত্র দু'টাকা, হয়তো দু'টাকাই হবে। যাক জীবনে একটা ধারের টাকা পরিশোধ হলো। মালিবাগের মোড়ে আনারস কেনার জন্য দাড়ালাম, একটা আনারস দু টাকা বা দুইটা পাঁচ টাকা, ভাবলাম দুইটাই নিব, বাবা বেড়াতে এসেছে। দরদাম করলাম মানিব্যাগ বের করে তিন টাকা এবং ধারের টাকা বেড়করতে পকেটে হাত দিলাম, কারন আনারস ওয়ালাকে দিতে হবে মোট ৫ টাকা, কিন্ত পকেটে হাত দিয়ে দেখি পকেটে ২০০ টাকা, ফল ওয়ালা বলেন স্যার ৩ টাকা দিয়ে আনারস নিয়ে যান, ২ টাকা পরে দিয়েন, আমার কাছে ভাংতি নাই। কিন্ত আমার চিন্তা হলো, আমি মি: মিটার রিডার সাহেবের কাছে পাবো মাত্র দু টাকা কিন্ত উনি হয়তো ভুলে আমাকে দু'শত টাকা দিয়েছেন। তাকে খুজার জন্য ওনার সেই টিনের একচালা বাড়ীতে গেলাম. তিন্তু উনার সেই বাড়ীটা আমি খুজে পাচ্ছিলাম না। রিক্সাওয়ালা আমাকে বোঝাতে চেষ্টা করলো স্যার, বাড়ী এইটা, কিন্ত আমার ঐ বাড়ীতে ডুকতে সহস পাইতেছিনা। গেটে ঠুকতেছিলাম এমন সময় একলোক আমাকে না দেখেই বলে উঠলো লোক কি ভিখারী না অন্ধ কলিং বেল দেখতে পায় না? তার পর দেখলাম শারি করা কলিং বেল এবং নম্বার লেখা। একটি ৮/১০ বছরের মেয়ে এসে বলেন, কাকে চাই, রাতের বেলা কেন, আমি বোকার মত হয়ে গেলাম এর মধ্যে বাড়ীওয়ালা চেচিয়ে মেয়েটাকে বলতে লাগলো উনি আমার পরিচিত উপরে নিয়ে আস। হাফ ছেড়ে বাচলাম। ভাবতে ছিলাম কোন বিপদ এসে হাজির হলো কিনা। উপরে গেলাম, আমার চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতে পারতাম কিনা আমার জানা নাই।

আমার জীবনে বহু বিলাস বহুল বাড়ী আমি দেখেছি তবে এতসুন্দর করে বাড়ী তৈরী করতে আমি ইতি পূর্বে দেখিনি। ভাবলাম লোকটার যতেষ্ট রুচি আছে তাহা মানতে হবে।

আমি অন্য কিছু না বলে, আমি টাকা দু'শত ফিরিয়ে দিতে চেষ্টা করলাম কিন্তু কেন যেন মনে হলো তাকে অপমান করা হবে। তার পরও বললাম ভাই আপনী মনে হয় ভুলে আমাকে দু'শত টাকা দিয়েছে। তিন আমাকে যে উত্তর দিলেন তাতে আমার মানবতা তো লোভপেলোই, উপরন্ত মনে হলো আমি তার তুলনায় একজন ভিক্ষুক। তিনি আমার হাত চেপে ধরলেন এবং বললেন ভাই একটু নাস্তা খেয়ে যান, এই একটু নাস্তা যে এতকিছু হতে পারে আমার জানা ছিল না।

আমার মানবতার কোরবানী হয়ে গেল, হাত পা ঠান্ড হলে গেল। জানতে চাইলাম ভাই ইমারত মনে হয় লোন নিয়ে করেছেন। তিনি সগর্ভে বলে গেলেন না ভাই লোনের প্রয়োজন হয় নাই। মোটামুটি লোন ছাড়াই হয়ে গেল, একটু হাসলাম, আমার আর বুঝতে বাকী থাকলো না।



সংসারের যাতাকলে পিষ্ট হয়ে, অনেকের কথা তো ভুলেই গেলাম। ছেলেরা পড়াশনা করছে, বাবা-মা, সংসার সব মিলিয়ে দুনিয়াতে যেন আমি একজন কে তাহাই মাঝে মধ্যে ভুল হয়। অফিসে এসে হাতে পেপার নিতেই চোখে পড়লো, "একজন গ্যাস মিটার রিডারের ৫ টি বাড়ী, ঢাকার শহরের" প্রথমে সবার মতই অবাক হয়েছি পরে যখন পিছনের সেই কথা আমার মনে হলো। সভাব সুলভ ভাবে একটু হেসে নিজের কাজে হাত লাগালাম। কয়েক দিন পর খবরের কাগজে আসলো তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তার অর্থে হিসাব চলছে। যারা হিসাব করবে তারাও হয়তো তাদের হিসাব চুকিয়ে চলে যাবে। আহত মানবতা নিবৃতে কাদঁবে।



(বি:দ্র: লেখাটা পড়ে সমাজের ভালটুকুই গ্রহন করার অনুরোধ রইল, খারাপটা বর্জন করলে, আমি খুশি হবো। আমাদের সমাজটাকে একটু সুন্দর রাখতে চাই , পরবর্তী প্রজম্নের জন্য)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.